ঢাকা ০৭:৫৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

আবেগ

জেলা প্রতিনিধি , নেত্রকোণা।

আবেগ এক অদৃশ্য বস্তু। পৃথিবীতে যত গুলো অদৃশ্য বস্তু আছে তার মাঝে আবেগ হল অন্যতম। সে তো প্রতিদিনের সাথী,অতি নিকট, অতি কাছের আপন জন। আবেগ ভাল-মন্দ হতে পারে। আবার আবেগের অপপ্রয়োগ আছে। আবেগের খেলা খেলে যারা,তারা অপপ্রয়োগ করে বিনা পুঁজিতে কৌশলে অন্যের ধন রপ্ত করে। অর্থাৎ এর তেলেসমাতি পাওয়ার অতুলনীয়। মনকে রাঙায় আবার মনকে চুপসে ও দেয়, সে আর অন্য কিছু নয়, আবেগ। সে মন ও মননের খেলায় সীমাবদ্ধ থাকে না।কাঊকে সমৃদ্ধ করে আবার কাউকে করে দেওলিয়া। কাউকে লৌকিক ভাবে আবার কাঊকে অলৌকিকভাবে সমৃদ্ধ করে থাকে। আবেগ জাগানো দক্ষ লোকই করে বাজিমাত। কোন কথাকে, কোন বস্তুকে রাঙিয়ে চোখ ধাঁধাঁনো উপস্থাপন এক ধরণের আবেগ। নিঃস্ব -সর্বস্বান্ত এ আবেগেই করে থাকে। বর্তমানে ফুলের ব্যবসা তো খুবই জাঁকজমক,বেশ উপার্জন ও হয়।ফুলের সৌন্দর্যের আড়ালে যে আবেগ লুকিয়ে থাকে তার বিনিময়েই তো পয়সা। মানুষের মনকে নিয়ে প্রহসন এটা একেবারে নতুন নয়। তবে ঘষেমেজে একে আধুনিক করে প্রয়োগ করা হচ্ছে। আবেগের খেলা খেলে যারা তারা হৃদয়হীন মানুষ। নিজের অস্তিত্বের জন্য পরিবার,সমাজ তথা গোটা রাষ্ট্র ধ্বংস হওয়া তাদের কাছে যায় আসে না। ভাঙা ও গড়ার আবেগে গড়ার যে নান্দনিক জৌলস রয়েছে তা বর্তমান বিশ্বকে পরিপক্ক করেছে। আবেগ নামক অদৃশ্য বস্তুটির ক্ষমতা সীমাহীন। এর তলা গলা কোনটি হাতড়ানো সম্ভব নয়।আসলেই আবেগই শক্তি,আবেগই মুক্তি। সে মুক্তির পথ ক’জনাই পেয়েছে!

এক সময় জ্ঞানহীন, অক্ষর জ্ঞানহীন গ্রাম্য গোঁয়ার মানুষের অস্রই ছিল একমাত্র আবেগের প্রয়োগ। সে ক্ষেত্রে আজকাল আধুনিক সময়ে শিক্ষিত মানুষেরা আরো প্রশিক্ষিত হয়ে এর ব্যবহার বহুগুনে সাফল্যের দ্বার উন্মোচন করেছে আর এখানে শিকার দূর্বলেরা। দূর্বলেরা তো চির কালই সবলের অধিগ্রাসেই থাকে।

গোটা গোটা কালো অক্ষরে সীমাবদ্ধ কাগজের পাতায় লিখা মুরুব্বির ভাষণের ন্যায়,”দেশীয় পন্য

কিনে হন ধন্য” কে শুনে কার কথা। দেশীয় স্বকীয়তা আর থাকল কোথায়?কথায় বলে বাহিরে ফিট ফাট ভেতরে সদর ঘাট।” যাকে বলে মাকাল ফল। এ মাকাল ফল টা আবেগীয় মানুষের কাছে সুন্দর ও মনোহর। কাজে আসুক বা নাই বা আসুক। দেশ প্রেম তো পর দেশের আবেগের কাছে বিক্রি হচ্ছে।

কলা দেখানো আর বাঁদর নাচানো। বাঁদরের ইমোশন হল কলা আর  দর্শকের ইমোশন হল বাঁদরের নাচ।কলা প্রতি বাঁদরের ইমোশনের বাস্তবতা আছে কিন্তু দর্শকের ইমোশনে কেবলই ইমোশন। বাঁজাচ্ছে বাঁশি সাপুড়িয়া নাচছে সাপ। গাধার সামনে মূলো ঝুলানো আর মূলোর আবেগে গাধার অনিশ্চিত পথ চলা।

যে জিনিসের যত বেশি খারাপ অবস্থা তার ক্যানভাস টা একটু বেশি অর্থাৎ একটু বেশিই পিউর। আগে ক্যানভাস টা ছিল সীমিত পর্যায়ে, ট্রেন, বাসে কিংবা বাজারে। এখন এটাকে জাতীয়করণ করা হয়েছে ডিস, টিভি বিভিন্ন চ্যানেলের মাধ্যমে।

ইমোশন এমন একটি ফাঁদ যে পড়েছে সেই মরেছে।বিপদ বিপন্ন মানুষ কুসংস্কার এবং Emotion  এ পড়ে পার্থিব এবং আধ্যাত্বিক উভয়েই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। আবেগময় মানুষই ভাল কিছু করে আবার তারাই রসাতলে যায়। এ আবেগের ব্যবহারের উপর নির্ভর করে একটি সুস্থ্য সমাজ তথা রাষ্ট্র। সমাজের প্রতিনিধি থেকে শুরু করে একেবারে রাষ্ট্রীয় শীর্ষ পর্যন্ত এর চলে চরম খেলা। আবেগ আছে বলেই ভালোবাসা আছে, আছে পৃথিবী। সমাজ বিবর্তনের সাথে সাথে আবেগের কৌশল ও পরিবর্তন হয় এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মানুষের মধ্যে এর সুষ্ঠু চর্চা এনে দিতে পারে এক সুগঠিত সমাজ, রাষ্ট্র কিংবা পৃথিবী।

ট্যাগস :

আবেগ

আপডেট সময় : ০৬:৪০:৫৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ অক্টোবর ২০২৩

জেলা প্রতিনিধি , নেত্রকোণা।

আবেগ এক অদৃশ্য বস্তু। পৃথিবীতে যত গুলো অদৃশ্য বস্তু আছে তার মাঝে আবেগ হল অন্যতম। সে তো প্রতিদিনের সাথী,অতি নিকট, অতি কাছের আপন জন। আবেগ ভাল-মন্দ হতে পারে। আবার আবেগের অপপ্রয়োগ আছে। আবেগের খেলা খেলে যারা,তারা অপপ্রয়োগ করে বিনা পুঁজিতে কৌশলে অন্যের ধন রপ্ত করে। অর্থাৎ এর তেলেসমাতি পাওয়ার অতুলনীয়। মনকে রাঙায় আবার মনকে চুপসে ও দেয়, সে আর অন্য কিছু নয়, আবেগ। সে মন ও মননের খেলায় সীমাবদ্ধ থাকে না।কাঊকে সমৃদ্ধ করে আবার কাউকে করে দেওলিয়া। কাউকে লৌকিক ভাবে আবার কাঊকে অলৌকিকভাবে সমৃদ্ধ করে থাকে। আবেগ জাগানো দক্ষ লোকই করে বাজিমাত। কোন কথাকে, কোন বস্তুকে রাঙিয়ে চোখ ধাঁধাঁনো উপস্থাপন এক ধরণের আবেগ। নিঃস্ব -সর্বস্বান্ত এ আবেগেই করে থাকে। বর্তমানে ফুলের ব্যবসা তো খুবই জাঁকজমক,বেশ উপার্জন ও হয়।ফুলের সৌন্দর্যের আড়ালে যে আবেগ লুকিয়ে থাকে তার বিনিময়েই তো পয়সা। মানুষের মনকে নিয়ে প্রহসন এটা একেবারে নতুন নয়। তবে ঘষেমেজে একে আধুনিক করে প্রয়োগ করা হচ্ছে। আবেগের খেলা খেলে যারা তারা হৃদয়হীন মানুষ। নিজের অস্তিত্বের জন্য পরিবার,সমাজ তথা গোটা রাষ্ট্র ধ্বংস হওয়া তাদের কাছে যায় আসে না। ভাঙা ও গড়ার আবেগে গড়ার যে নান্দনিক জৌলস রয়েছে তা বর্তমান বিশ্বকে পরিপক্ক করেছে। আবেগ নামক অদৃশ্য বস্তুটির ক্ষমতা সীমাহীন। এর তলা গলা কোনটি হাতড়ানো সম্ভব নয়।আসলেই আবেগই শক্তি,আবেগই মুক্তি। সে মুক্তির পথ ক’জনাই পেয়েছে!

এক সময় জ্ঞানহীন, অক্ষর জ্ঞানহীন গ্রাম্য গোঁয়ার মানুষের অস্রই ছিল একমাত্র আবেগের প্রয়োগ। সে ক্ষেত্রে আজকাল আধুনিক সময়ে শিক্ষিত মানুষেরা আরো প্রশিক্ষিত হয়ে এর ব্যবহার বহুগুনে সাফল্যের দ্বার উন্মোচন করেছে আর এখানে শিকার দূর্বলেরা। দূর্বলেরা তো চির কালই সবলের অধিগ্রাসেই থাকে।

গোটা গোটা কালো অক্ষরে সীমাবদ্ধ কাগজের পাতায় লিখা মুরুব্বির ভাষণের ন্যায়,”দেশীয় পন্য

কিনে হন ধন্য” কে শুনে কার কথা। দেশীয় স্বকীয়তা আর থাকল কোথায়?কথায় বলে বাহিরে ফিট ফাট ভেতরে সদর ঘাট।” যাকে বলে মাকাল ফল। এ মাকাল ফল টা আবেগীয় মানুষের কাছে সুন্দর ও মনোহর। কাজে আসুক বা নাই বা আসুক। দেশ প্রেম তো পর দেশের আবেগের কাছে বিক্রি হচ্ছে।

কলা দেখানো আর বাঁদর নাচানো। বাঁদরের ইমোশন হল কলা আর  দর্শকের ইমোশন হল বাঁদরের নাচ।কলা প্রতি বাঁদরের ইমোশনের বাস্তবতা আছে কিন্তু দর্শকের ইমোশনে কেবলই ইমোশন। বাঁজাচ্ছে বাঁশি সাপুড়িয়া নাচছে সাপ। গাধার সামনে মূলো ঝুলানো আর মূলোর আবেগে গাধার অনিশ্চিত পথ চলা।

যে জিনিসের যত বেশি খারাপ অবস্থা তার ক্যানভাস টা একটু বেশি অর্থাৎ একটু বেশিই পিউর। আগে ক্যানভাস টা ছিল সীমিত পর্যায়ে, ট্রেন, বাসে কিংবা বাজারে। এখন এটাকে জাতীয়করণ করা হয়েছে ডিস, টিভি বিভিন্ন চ্যানেলের মাধ্যমে।

ইমোশন এমন একটি ফাঁদ যে পড়েছে সেই মরেছে।বিপদ বিপন্ন মানুষ কুসংস্কার এবং Emotion  এ পড়ে পার্থিব এবং আধ্যাত্বিক উভয়েই ক্ষতিগ্রস্থ হয়। আবেগময় মানুষই ভাল কিছু করে আবার তারাই রসাতলে যায়। এ আবেগের ব্যবহারের উপর নির্ভর করে একটি সুস্থ্য সমাজ তথা রাষ্ট্র। সমাজের প্রতিনিধি থেকে শুরু করে একেবারে রাষ্ট্রীয় শীর্ষ পর্যন্ত এর চলে চরম খেলা। আবেগ আছে বলেই ভালোবাসা আছে, আছে পৃথিবী। সমাজ বিবর্তনের সাথে সাথে আবেগের কৌশল ও পরিবর্তন হয় এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু মানুষের মধ্যে এর সুষ্ঠু চর্চা এনে দিতে পারে এক সুগঠিত সমাজ, রাষ্ট্র কিংবা পৃথিবী।