ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকার আমন ধানের খেতে পানি না থাকায় ব্যাপকভাবে আক্রমণ করেছে ইঁদুর। ইঁদুরে কাটার ফলে মুচি ধরা ধানের গাছ চরমভাবে ক্ষতির মুখে পরেছে। উপজেলার অনুরাগ চর, গৌরিপাশা, শংকরপাশা সহ কয়েকটি গ্রামের কৃষকদের সাথে কথা বলে এই খবর পাওয়া গেছে।
গৌরিপাশা এলাকার কৃষক মিলন হাওলাদার বলেন,এবছর এমনিতেই দীর্ঘদিন পানির উচ্চতা বেশি থাকায় কিছু ধানের চারা এমনিতেই পচে নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। এখন আবার খেতে পানি শুকিয়ে যাওয়ায় ইঁদুর আক্রমণ করেছে, যার ফলে মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ধানের মুচি আশা চারাও।
শংকরপাশা এলাকার কৃষক ওমর আলী বলেন, আমাদের এই এলাকাতে ইঁদুরের প্রকোপ অত্যধিক বেশি।ইঁদুর নিধনে ঔষধ প্রয়োগ করেও কাজ হচ্ছে না।উপজেলা কৃষি দপ্তর থেকেও ইঁদুর নিধনের সরকারি কোনো সহায়তায় আমাদের কাছে পৌঁছেনি।আমরা দিশেহারা হয়ে পরেছি।
উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি ও নলছিটি পৌরসভার কাউন্সিলর ফিরোজ আলম খান বলেন,আমরা কৃষকদের এই বিপদে তাদের সাথেই আছি। সর্বোচ্চ সহযোগিতার চেষ্টা করব। কিন্তু ইঁদুর নিধনে সরকারি কোনো বরাদ্দের খবর আমার জানা নেই।
উপজেলার অপর কৃষক নেতা বালী তূর্য বলেন, এমনিতেই আমাদের কৃষকরা বিভিন্ন সময়ে লোকসানের মুখে পরে যাচ্ছেন, তারউপর ইঁদুরের আক্রমণ আরও বেশি ক্ষতি করছে।কৃষির প্রতি এমনিতেই নতুন প্রজন্মের অনীহা বেড়েছে, পুরোনো কৃষকদের এই লোকসান সামাল দেয়া না গেলে প্রান্তিক পর্যায়ে কৃষি কিছুটা হুমকিতে পড়বে বলে শঙ্কা রয়েছে। এই সময়ে ইঁদুর নিধনের জন্য সরকারি কোনো বরাদ্দ কিংবা সহায়তা পেলে কৃষকরা খুবই উপকৃত হতো। তাই আমি কৃষি দপ্তরের কর্মকর্তাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি যাতে কৃষকদের এই বিপদে তারা পাসে থাকেন।
নলছিটি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সানজি আরা শাওন বলেন, আমরা কৃষকদের সকল সমস্যায় পাশে আছি। ইঁদুর নিধনে সেরকম সরকারি কোনো বরাদ্দ না থাকলেও আমরা তাদেরকে যে পরিমাণ শস্য নষ্ট হয়ে গেছে তা আগামী মৌসুমে তার ঘাটতি কাটিয়ে ওঠার জন্য সহযোগিতা করব। আমরা তাদেরকে বিভিন্ন রকম প্রশিক্ষণ দিয়ে ইঁদুর নিধনের নানাবিধ কৌশল শিখিয়ে দিচ্ছি।
ফসলের এমন ক্ষতির ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতির মুখে পড়েছেন কৃষকরা। ইঁদুর নিধনে সরকারি সহায়তা কামনা করেছেন তারা।