ঢাকা ০৫:৫১ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

ইলিশ খোজা নাকি চিরকুমার

আপনি তাচ্ছিল্যের স্বরে নিশ্চয়ই এটাই বলবেন – এটা আবার কে না জানে! এ প্রশ্নটি যদি করা হয় যে, মাছের রাজা কে? আবালবৃদ্ধবনিতা, ছুড়ি থেকে বুড়ি, নাপিত থেকে ধোপা, কুলীন থেকে অন্ত্যজ, ব্রাক্ষ্মণ থেকে শুদ্র সকলেই জানে ইলিশ হলো মাছের রাজা। তবে শৈশব, কৈশর, যৌবনকাল পেরিয়ে বুড়া বয়সের আনাগোনা শেষে কবর কিংবা শ্মশানে যাওয়ার আগ পর্যন্ত মাছের রাজাকে চিনলেও রাণী যে কে তা কেউ অদ্যাবধি জানতে পেরেছে বলে জানা যায়নি। জ্ঞানের বিশ্বে এ এক ট্র্যাজেডি কিনা ঠিক সিদ্ধান্তে আসা যায় না।  মাছের রাণী কে? জানলে নিশ্চয়ই এতোদিনে সোসাইল মিডিয়ার কোন ভট্ট লেখকের ফেসবুকে লিপিবদ্ধ হয়ে যেতো। কিংবা হোয়াটসঅ্যাপের গ্রুপে শেয়ারিং হতো। ইলিশ কি তবে রাণীহীন? কেন? ইলিশ কি খোজা নাকি? অথবা সে বুঝি চিরকুমার? ইলিশ কি ভবিষ্যৎ চিন্তায় চিরকুমার। চিরকুমার থাকলে প্রদানমন্ত্রী, প্রেসিডেন্ট বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হওয়া যায়। বড় সাহিত্যিকও হয়ে ওঠা যায়। এমনতর আশায় কি ইলিশ কৌমার্য ভাঙ্গেনি? এ রকম কানাঘুষা চলছিলো। সেখানেই জানা গেলো ইলিশ কেন বিয়ে করেনি।  এক প্রসন্ন বিমল প্রত্যুষে ইলিশ মাছের মনটা ছিলো ফুরফুরে। চিত্তপ্রসাদে বিগলিত হিয়ায়  বাঁশির সুর প্রলম্বিত হচ্ছিলো। কেন যেন ফূর্তি মনে ধরছিলো না। উপচিয়ে উপচিয়ে পড়ছিলো। শরতের ফোটা শুভ্র কাশফুল মনের ভেতরে লুকিয়ে থাকা প্রেমটাকে চাগিয়ে দিচ্ছিলো। সুখানুভূতিতে লেজ থেকে মাথা ছেয়ে ছিলো। এহেন জাগ্রত শারীরিক ও মানসিক অনুভূতিতে একজন অংশীজন না হলে আর কি করে জীবন চলে! কারো সাথে ভাগাভাগি না করে থাকা যায়? তাই রাজা এত্তেলা পাঠালেন ঘটক টাকি মাছকে। টাকি খবর পেয়ে খুশিতে তা-ধ্যাই তা-ধ্যাই ধ্যাই করতে করতে রাজ দরবারের দিকে রওয়ানা হলো। নিশ্চয়ই রাজার এবার বিয়েতে মন এসেছে। অবশ্য একটু একটু বুকের ভিতর ধুকপুক ধুকপুকও করছে। নিকাহের কথা পাড়তে গিয়ে আগের বার রাজার দাবড়ানি খেতে হয়েছে। এমনকি আবার এ প্রসঙ্গ তুললে টাকিকে শূলে চড়িয়ে প্রাণপাত করা হবে বলেও ইলিশ ভয় দিয়েছেন। ওরে বাবা! শূল তো এফোঁড় ওফোঁড় করে দেয়! পরাণবায়ু এক লহমায় ফুড়ুৎ দেয়।
ইলিশ টাকিকে সাফ জানিয়ে দিলেন যে, তিনি এবার বিয়ে করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তার এই প্রতিজ্ঞা লৌহতুল্য দন্ডের মতোই অদম্য। বিয়ে মুক্তির নয়, বন্ধনের। তবুও রাজা এবার ডোরে আটকা পড়তে প্রস্তুতি নিয়েছেন। আরো কেউ কেউ ছিলো। কিন্তু টাকি তার সাইজ ও পিচ্ছিল অবয়ব নিয়ে যেকোনো লক্ষ্যে খুব দ্রুত সেঁধিয়ে যেতে পারে বিধায় রাজা-ইলিশ টাকিকেই ঘটক হিসেবে নিযুক্তি দিলেন। টাকি মহাখুশি। খুশিতে কয়েকখানা। রাজার উপযুক্ত এক সঙ্গীনি জুটিয়ে সুপারগ্লু আঠায় লেপ্টে  দিতে পারলে খুশির চোটে রাজা যে রাজ উপঢৌকন দিবেন তা দিয়ে নিশ্চয়ই এই জলজগতের বাকি জীবনটুকু সুখ ও শান্তিতে কাটিয়ে দেয়া যাবে। ঘটক টাকির দিবানিশির মাত্রাহীন গৃহীত চেষ্টায় খুব শীঘ্রই একখানা মনোহরী পাত্রীর সন্ধান পাওয়া গেলো।
পাত্রীর নাম পাঙ্গাস। ইলিশ পাত্রীকে আবেগী ভাবনায় অপলক দৃষ্টিতে গভীর মনোযোগে দেখে নিলেন। পাঙ্গাসের ফর্সা মুখখানায় রক্তাভা। লজ্জায়। তৈলাক্ত স্কিন চকচক করছে। পাঙ্গাসের সৌম্য ঘাড় বেয়ে উজ্জ্বল আলো পুরো পিঠ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে। পাত্রীর রূপালী পৃষ্ঠদেশ ইলিশের কোথায় যেন ভালোলাগা বোধ তৈরী করছে। পাঙ্গাস ইলিশের রাণী হলে গোপন অভিসারে অনিন্দ্য সুখ ধরা দিবে। রূপবতীর আঁশহীন কোমল দেহবল্লভ বড্ড লোভনীয়। লাগবেই তো লোভ।  লোভ না থাকলে কি আর “লাভ” হয়! এ তো আর বালিদ্বীপের বিয়ে নয় যে, পাত্র-পাত্রীকে দাঁত ঘষে দিলেই লোভ আর কামনা  দূর হয়ে যাবে। ওই দুই প্রপঞ্চ বিয়েতে যদি না-ই থাকে, তবে আর বিয়ে কেন। রাণীকে তো ভালোবাসায় টইটম্বুর করে রাখতে হবে।  পাত্রী ইলিশের পছন্দ হলো। ঘটক টাকি খুশি হলো। “প্রতিটি লিঙ্গ একলা অর্ধেক” – ইলিশ আর অর্ধেক থাকবেন না ভেবে তারও তৃপ্তি ধরে না। চূড়ান্ত মত দেয়ার আগে ইলিশ পাত্রীর বংশ পরিচয় ও স্বভাবচরিত্রের খোঁজখবর নিলেন। সেথায় ঘটলো এক বিপত্তি। ইলিশ জানতে পারলেন যে, পাত্রী খাদ্যাভাসে বড় বেশি অশ্লীল ও অমার্জিত চরিত্রের। কি সব তার প্রিয় ভোজন। মানুষের ত্যাগ করা উচ্ছ্বিষ্ট।  রাণী হওয়ার পর সে  যদি ওসব রাজপ্রাসাদে খেতে চায়…। সে কী বিশ্রী ব্যাপার! কিংবা কোন একদিন আহারে বসে যদি রাজার পাতে ওসব তুলে দেয়…। ওহো ভাবতেই বমি আসে। ওয়াক ওয়াক থু…। তা রটে গেলে রাজ্যময় ঢিঁ ঢিঁ পড়ে যাবে। রাজা-রাণী মানুষের বিষ্ঠা খায়! ছিঃ ছিঃ! অতএব, এ পাত্রী নাকোচ। টাকিকে আরো বংশীয় ভালো পাত্রীর সন্ধানে রাজা নির্দেশ দিলেন। টাকি কিছুদিন সময় নিলো। খুঁজতে খুঁজতে টাকি এবার সুদর্শন রাজার যোগ্য পাত্রী খুঁজে বের করে আনলো। দুর্দান্ত সাহসী, শক্ত প্রাণা যদি না হয় তবে সে কেমন রাণী হবে। তাই অনেক ভেবে, জ্ঞানীদের মতো পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে টাকি পাত্রী হিসেবে বলবতী কৈ মাছকে রাজার নিকট পেশ করলো। রাজা পাত্রীর যোগ্যতা বিচারে সময় নিলেন। “বিয়েটা একটা রেমাঞ্চকর উপন্যাস, যার প্রথম পরিচ্ছেদেই নায়কের মৃত্যু হয়ে থাকে।” ইলিশ তার জীবনে এ প্রস্তাবনার কেবল প্রথম অংশটুকুরই সাক্ষাৎ  চান, বাকিটুকু না। যদিও রাণীর সান্নিধ্যে ইলিশকে প্রায়ই ছোট মৃত্যুকে বরণ করতে হবে। সে তো সব পুরুষকেই করতে হয়। বিয়ের অন্যতম প্রধান কারন তো এই ছোট ছোট মৃত্যুর স্বাদ নেয়া। সে তো সুখের মরণ! ইলিশ রাণীকে নিয়ে মধুর সুরেলা বিশুদ্ধ সঙ্গীত রচনা করবেন।  বিয়ে ছেলে খেলা না। বাকি জিন্দেগী যার সাথে সময় কাটাতে হবে, দিনে যাকে দর্শীতে হবে, রাতেও যাকে দেখভাল করতেই হবে সে যদি স্বভাবে-বৈশিষ্ট্যে খাপে খাপে না মিলে তবে তো বারোটা বাজবে। কৈ মাছ গাট্টাগোট্টা। লম্বায় বড়জোর ২৫ সেমি হবে। আহা খাটো হয়ে গেলো!  তবে প্রাণশক্তিতে ভরপুর। পানি ছাড়াই ৬ থেকে ১০ ঘন্টা বাঁচতে পারে। অথচ ইলিশকে পানির উপরে তুললে খুব বেশি হলে একঘন্টা টিকতে পারবেন। সাহস ও দুর্দান্ত প্রাণশক্তির গুণে কৈ মাছের অন্য সব দোষত্রুটি মাফ হয়ে যায় বিধায় কৈ রাণী হওয়ার যোগ্যতা রাখে বলেই রাজার ঠাওর হলো। তাই কৈকে রাজপ্রাসাদে তোলা যায়। রাজা দু-এক পল চুপচাপ ভেবে নিলেন। একটা সমস্যা। কৈ মাছের গায়ে শক্ত কাটা। ওটা দিয়ে সে যে কাউকে মুহূর্তেই  ঘায়েল করে দিতে পারে। রাণী অন্দরমহলে থাকবে। সেখানে রাজার সাথে মতবিরোধ দেখা দিতে পারে। একথা চিরন্তন সত্য যে,  নারী স্বভাবে চিরকালই বক্র। তাই রাণী কৈ’র সাথে কলহ-বিসংবাদ ঘটতেই পারে। যদিও বিয়ে তো হওয়া উচিত শান্তি ও পবিত্রতার প্রতীক। কলহ বাঁধলে কি হতে পারে। হাদিসে আছে, যদি আমি অন্য কাউকে সিজদা করতে আদেশ দিতাম তাহলে নারীদেরই বলতাম তাদের স্বামীদের সিজদা করতে।  ইলিশ কল্পনায় কৈ’র সূচালো শক্ত কাটা দেখতে পান। আর হাদিসের কথা শিকেয় তুলে নেন। বাপরে! ঝগড়ায় ক্রোধান্বিত রাণী ইলিশকে দিলো ঘাই। খুব বেশি দরকার নাই। ইলিশকে গোনে গোনে দুইটা ঘাই দিলেই হবে। তবেই রাজার ভব লীলা সাঙ্গ হবে তৎক্ষণাৎ। রাজার ভয়ে আত্মারাম খাচা ছাড়ার যোগার হলো। ভয়ের ফল এই, টাকিকে সঙ্গে সঙ্গে জানিয়ে দেয়া হলো যে এই পাত্রী দিয়ে তার চলবে না। টাকি বড় দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলো। রাজা তবে কেমন পাত্রী চান। টাকির বন্ধু পুঁটি। বন্ধুর কাছে পরামর্শ চাইলো – রাজার জন্য কোন জাতের পাত্রী খোঁজা দরকার। মাথাটা ছোট হলেও পুঁটির ঘটে বেশ বুদ্ধি। সোজা থেকে চক্করবক্কর সব রকম বুদ্ধি তার আছে। সে সমস্যাটা নিয়ে কিছুক্ষণ গভীর মনোযোগে ভেবে নিলো। তারপর বন্ধুকে পরামর্শ দিলো, “শোন ইলিশ আসলে মাছিদের স্বভাবহীন শান্ত, ভদ্র, নম্র পাত্রী চান। স্বভাবে রাণী যদি অতি চঞ্চলা হন তবে রাজার জীবন ত্রাহি ত্রাহি হয়ে ওঠবে। তাই তিনি কোমলমতি একজন সঙ্গীনি চান। তুমি সেরূপ ব্যবস্থা করো।” বন্ধুর পরামর্শ ভালো লাগলো। এরূপই খুঁজতে হবে। কিন্তু বড় মুস্কিল।  এই ডিজিটাল যুগে এমনটা কি পাওয়া যাবে? অন্যদিকে আছে নারীবাদী দর্শন। দাবানলের মতোই নারীবাদী দর্শন এখন চতুর্দিকে ছড়িয়েছে। সেখানে সমঅধিকারের হুক্কা হুয়া ডাকে কান ঝালাপালা। যদিও সেটা সম না ন্যায্য অধিকার হওয়া উচিত ছিলো। এই পরিবেশ-পরিস্থিতিতে পতিভক্ত সুমনা নারী কোথায় পাওয়া যায়? ভাবতে ভাবতে ভাবতে ভাবতে শেষে এক পাত্রী পাওয়া গেলো। পাত্রীর নাম ভেদা মাছ। ওর ডাক নাম রয়না। মাছের জগতে ও-ই সবচেয়ে ভদ্রগোছের। নিরিবিলি নিজের মতো থাকতে পছন্দ করে। অন্যের সাতপাঁচে সে নাই। বড়ই ধীরস্থির শান্তমনা। এই-ই হবে রাজার উপযুক্ত রাণী। রাজা পাত্রী ভেদা মাছকে দুদিনের জন্য রাজপ্রাসাদে রেখে দিলেন। পাত্রীর জীবনাচার দেখতে হবে। রাণীর জীবনযাপনের সূচি তো রাজাকে দৃশ্যমানভাবে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় প্রভাবিত করবে। যা রাজ্যশাসনেও পরোক্ষভাবে ইতিবাচক বা ঋণাত্মক মানে ভূমিকা পালন করবে। এমনও তো ঘটে, “রাজা করিতেছে রাজ্য-শাসন/রাজারে শাসিছে রাণী।” সুতরাং সাবধান, সাবধান।  রাণী বাছাইয়ে সতর্ক হতেই হবে। কয়েকদিন রাজা সম্ভাব্য রাণীকে পর্যবেক্ষণ করে দেখলেন। ভেদা বেশ আয়েশি। দিনের অর্ধেক কাটে রাজ-পালঙ্কে। ঘুমুতে যায় গভীর রাতে। কি করে এতো রাত অব্দি। বিলাসী মূর্তিতে নাটক-সিনেমা দেখে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিচরণ চলে। স্বভাবজাত অভ্যেসেই সকাল হয় তার দিনের অর্ধেক কেটে যাওয়া সময়ে। বেশ বেশ! রাণীর জীবনযাপন প্রণালি এমনতর না হলে সে আবার কেমন রাণী। কিন্তু তার চরিত্রের যে চরম আলস্য ভাব প্রতীয়মান হলো তা ইলিশ কি করে মেনে নিবেন। এ ভাব তো অমঙ্গলময়। “আলোস্য দোষের আকর।” ভেদা মাছের আরো এক প্রকৃতি রাজার খেয়ালে ধরা পড়লো। ভেদা তো একদমই বোকাসোকা, হাবাগোবা টাইপের। ঠিকমতো ডান-বাম, উত্তর-পশ্চিম চিহ্নিত করার সক্ষমতায় ভেদাকে পাওয়া গেলো না। তাহলে তো বিপদ! রাজাকে সারাটা জীবন তো একে ঘাড়ে নিয়েই বয়ে বেড়াতে হবে। এর চেয়ে মহাবিপদ জীবনে আর কী হতে পারে। ইস! শেষে এমন পাত্রী নিয়ে রাজা এতোটা মূল্যবান সময়ের অপচয় করছেন! ধ্যাততেরিকা! কী ট্র্যাজেডি! বিয়েটা আর হলো না। দান দান তিন দান। গুলি মারি বিয়ে- এই মনোভাবে রাজা ইলিশ বিয়ে না করার সেই যে পণ করলেন তা আজও বলবৎ রয়েই গেছে। তাই তো মাছের রাজার আর বিয়েই হলো না। সুতরাং, মাছের রাজ্যে রাজা আছে, রাণী নাই।

কবিতা 


পূর্বরঙ্গ
—————————
আধেক নয়, একটা পুরো রাত্রি আমার নিও তো।
যে রাতে এক শাপলা হাসে;
মায়াভরা বুকে ফোটে আমায় ভালোবেসে।
দীঘল একটা রাত্রি তুমি নিও তো!
দুজন মিলে কাব্য হবে
বুকজমিনে তুমিই র’বে
কথার পৃষ্ঠে কথা জুড়ে
নিখোঁজ হবো কোন সুদূরে!
এমন ধারার দীঘল রাত্রি সোহাগ ভরে নিও তো।

আমার জীবন যাপন থেকে-
আধেক নয়, একটা পুরো রাত্রি তুমি নিও তো।
নিদ্রাদেবী ছুটি নেবে
কুসুম তাতে ভ্রমর পাবে
এক্কা দোক্কা সুখের খেলায়
দেখা হবে মিলনমেলায়।
রঙীলা সেই দীঘল রাত্রি বুকে তুলে নিও তো।

 

লেখকঃড. ফারুক হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক

ই-মেইলঃ farooq.hossain@gmail.com

ইউনিভার্সিটি অফ ইনফরমেশন টেকনোলজি এন্ড সাইন্সেস

ট্যাগস :

ইলিশ খোজা নাকি চিরকুমার

আপডেট সময় : ১১:২৯:৫৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৩
আপনি তাচ্ছিল্যের স্বরে নিশ্চয়ই এটাই বলবেন – এটা আবার কে না জানে! এ প্রশ্নটি যদি করা হয় যে, মাছের রাজা কে? আবালবৃদ্ধবনিতা, ছুড়ি থেকে বুড়ি, নাপিত থেকে ধোপা, কুলীন থেকে অন্ত্যজ, ব্রাক্ষ্মণ থেকে শুদ্র সকলেই জানে ইলিশ হলো মাছের রাজা। তবে শৈশব, কৈশর, যৌবনকাল পেরিয়ে বুড়া বয়সের আনাগোনা শেষে কবর কিংবা শ্মশানে যাওয়ার আগ পর্যন্ত মাছের রাজাকে চিনলেও রাণী যে কে তা কেউ অদ্যাবধি জানতে পেরেছে বলে জানা যায়নি। জ্ঞানের বিশ্বে এ এক ট্র্যাজেডি কিনা ঠিক সিদ্ধান্তে আসা যায় না।  মাছের রাণী কে? জানলে নিশ্চয়ই এতোদিনে সোসাইল মিডিয়ার কোন ভট্ট লেখকের ফেসবুকে লিপিবদ্ধ হয়ে যেতো। কিংবা হোয়াটসঅ্যাপের গ্রুপে শেয়ারিং হতো। ইলিশ কি তবে রাণীহীন? কেন? ইলিশ কি খোজা নাকি? অথবা সে বুঝি চিরকুমার? ইলিশ কি ভবিষ্যৎ চিন্তায় চিরকুমার। চিরকুমার থাকলে প্রদানমন্ত্রী, প্রেসিডেন্ট বা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি হওয়া যায়। বড় সাহিত্যিকও হয়ে ওঠা যায়। এমনতর আশায় কি ইলিশ কৌমার্য ভাঙ্গেনি? এ রকম কানাঘুষা চলছিলো। সেখানেই জানা গেলো ইলিশ কেন বিয়ে করেনি।  এক প্রসন্ন বিমল প্রত্যুষে ইলিশ মাছের মনটা ছিলো ফুরফুরে। চিত্তপ্রসাদে বিগলিত হিয়ায়  বাঁশির সুর প্রলম্বিত হচ্ছিলো। কেন যেন ফূর্তি মনে ধরছিলো না। উপচিয়ে উপচিয়ে পড়ছিলো। শরতের ফোটা শুভ্র কাশফুল মনের ভেতরে লুকিয়ে থাকা প্রেমটাকে চাগিয়ে দিচ্ছিলো। সুখানুভূতিতে লেজ থেকে মাথা ছেয়ে ছিলো। এহেন জাগ্রত শারীরিক ও মানসিক অনুভূতিতে একজন অংশীজন না হলে আর কি করে জীবন চলে! কারো সাথে ভাগাভাগি না করে থাকা যায়? তাই রাজা এত্তেলা পাঠালেন ঘটক টাকি মাছকে। টাকি খবর পেয়ে খুশিতে তা-ধ্যাই তা-ধ্যাই ধ্যাই করতে করতে রাজ দরবারের দিকে রওয়ানা হলো। নিশ্চয়ই রাজার এবার বিয়েতে মন এসেছে। অবশ্য একটু একটু বুকের ভিতর ধুকপুক ধুকপুকও করছে। নিকাহের কথা পাড়তে গিয়ে আগের বার রাজার দাবড়ানি খেতে হয়েছে। এমনকি আবার এ প্রসঙ্গ তুললে টাকিকে শূলে চড়িয়ে প্রাণপাত করা হবে বলেও ইলিশ ভয় দিয়েছেন। ওরে বাবা! শূল তো এফোঁড় ওফোঁড় করে দেয়! পরাণবায়ু এক লহমায় ফুড়ুৎ দেয়।
ইলিশ টাকিকে সাফ জানিয়ে দিলেন যে, তিনি এবার বিয়ে করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। তার এই প্রতিজ্ঞা লৌহতুল্য দন্ডের মতোই অদম্য। বিয়ে মুক্তির নয়, বন্ধনের। তবুও রাজা এবার ডোরে আটকা পড়তে প্রস্তুতি নিয়েছেন। আরো কেউ কেউ ছিলো। কিন্তু টাকি তার সাইজ ও পিচ্ছিল অবয়ব নিয়ে যেকোনো লক্ষ্যে খুব দ্রুত সেঁধিয়ে যেতে পারে বিধায় রাজা-ইলিশ টাকিকেই ঘটক হিসেবে নিযুক্তি দিলেন। টাকি মহাখুশি। খুশিতে কয়েকখানা। রাজার উপযুক্ত এক সঙ্গীনি জুটিয়ে সুপারগ্লু আঠায় লেপ্টে  দিতে পারলে খুশির চোটে রাজা যে রাজ উপঢৌকন দিবেন তা দিয়ে নিশ্চয়ই এই জলজগতের বাকি জীবনটুকু সুখ ও শান্তিতে কাটিয়ে দেয়া যাবে। ঘটক টাকির দিবানিশির মাত্রাহীন গৃহীত চেষ্টায় খুব শীঘ্রই একখানা মনোহরী পাত্রীর সন্ধান পাওয়া গেলো।
পাত্রীর নাম পাঙ্গাস। ইলিশ পাত্রীকে আবেগী ভাবনায় অপলক দৃষ্টিতে গভীর মনোযোগে দেখে নিলেন। পাঙ্গাসের ফর্সা মুখখানায় রক্তাভা। লজ্জায়। তৈলাক্ত স্কিন চকচক করছে। পাঙ্গাসের সৌম্য ঘাড় বেয়ে উজ্জ্বল আলো পুরো পিঠ জুড়ে ছড়িয়ে পড়ছে। পাত্রীর রূপালী পৃষ্ঠদেশ ইলিশের কোথায় যেন ভালোলাগা বোধ তৈরী করছে। পাঙ্গাস ইলিশের রাণী হলে গোপন অভিসারে অনিন্দ্য সুখ ধরা দিবে। রূপবতীর আঁশহীন কোমল দেহবল্লভ বড্ড লোভনীয়। লাগবেই তো লোভ।  লোভ না থাকলে কি আর “লাভ” হয়! এ তো আর বালিদ্বীপের বিয়ে নয় যে, পাত্র-পাত্রীকে দাঁত ঘষে দিলেই লোভ আর কামনা  দূর হয়ে যাবে। ওই দুই প্রপঞ্চ বিয়েতে যদি না-ই থাকে, তবে আর বিয়ে কেন। রাণীকে তো ভালোবাসায় টইটম্বুর করে রাখতে হবে।  পাত্রী ইলিশের পছন্দ হলো। ঘটক টাকি খুশি হলো। “প্রতিটি লিঙ্গ একলা অর্ধেক” – ইলিশ আর অর্ধেক থাকবেন না ভেবে তারও তৃপ্তি ধরে না। চূড়ান্ত মত দেয়ার আগে ইলিশ পাত্রীর বংশ পরিচয় ও স্বভাবচরিত্রের খোঁজখবর নিলেন। সেথায় ঘটলো এক বিপত্তি। ইলিশ জানতে পারলেন যে, পাত্রী খাদ্যাভাসে বড় বেশি অশ্লীল ও অমার্জিত চরিত্রের। কি সব তার প্রিয় ভোজন। মানুষের ত্যাগ করা উচ্ছ্বিষ্ট।  রাণী হওয়ার পর সে  যদি ওসব রাজপ্রাসাদে খেতে চায়…। সে কী বিশ্রী ব্যাপার! কিংবা কোন একদিন আহারে বসে যদি রাজার পাতে ওসব তুলে দেয়…। ওহো ভাবতেই বমি আসে। ওয়াক ওয়াক থু…। তা রটে গেলে রাজ্যময় ঢিঁ ঢিঁ পড়ে যাবে। রাজা-রাণী মানুষের বিষ্ঠা খায়! ছিঃ ছিঃ! অতএব, এ পাত্রী নাকোচ। টাকিকে আরো বংশীয় ভালো পাত্রীর সন্ধানে রাজা নির্দেশ দিলেন। টাকি কিছুদিন সময় নিলো। খুঁজতে খুঁজতে টাকি এবার সুদর্শন রাজার যোগ্য পাত্রী খুঁজে বের করে আনলো। দুর্দান্ত সাহসী, শক্ত প্রাণা যদি না হয় তবে সে কেমন রাণী হবে। তাই অনেক ভেবে, জ্ঞানীদের মতো পুঙ্খানুপুঙ্খ বিশ্লেষণ করে টাকি পাত্রী হিসেবে বলবতী কৈ মাছকে রাজার নিকট পেশ করলো। রাজা পাত্রীর যোগ্যতা বিচারে সময় নিলেন। “বিয়েটা একটা রেমাঞ্চকর উপন্যাস, যার প্রথম পরিচ্ছেদেই নায়কের মৃত্যু হয়ে থাকে।” ইলিশ তার জীবনে এ প্রস্তাবনার কেবল প্রথম অংশটুকুরই সাক্ষাৎ  চান, বাকিটুকু না। যদিও রাণীর সান্নিধ্যে ইলিশকে প্রায়ই ছোট মৃত্যুকে বরণ করতে হবে। সে তো সব পুরুষকেই করতে হয়। বিয়ের অন্যতম প্রধান কারন তো এই ছোট ছোট মৃত্যুর স্বাদ নেয়া। সে তো সুখের মরণ! ইলিশ রাণীকে নিয়ে মধুর সুরেলা বিশুদ্ধ সঙ্গীত রচনা করবেন।  বিয়ে ছেলে খেলা না। বাকি জিন্দেগী যার সাথে সময় কাটাতে হবে, দিনে যাকে দর্শীতে হবে, রাতেও যাকে দেখভাল করতেই হবে সে যদি স্বভাবে-বৈশিষ্ট্যে খাপে খাপে না মিলে তবে তো বারোটা বাজবে। কৈ মাছ গাট্টাগোট্টা। লম্বায় বড়জোর ২৫ সেমি হবে। আহা খাটো হয়ে গেলো!  তবে প্রাণশক্তিতে ভরপুর। পানি ছাড়াই ৬ থেকে ১০ ঘন্টা বাঁচতে পারে। অথচ ইলিশকে পানির উপরে তুললে খুব বেশি হলে একঘন্টা টিকতে পারবেন। সাহস ও দুর্দান্ত প্রাণশক্তির গুণে কৈ মাছের অন্য সব দোষত্রুটি মাফ হয়ে যায় বিধায় কৈ রাণী হওয়ার যোগ্যতা রাখে বলেই রাজার ঠাওর হলো। তাই কৈকে রাজপ্রাসাদে তোলা যায়। রাজা দু-এক পল চুপচাপ ভেবে নিলেন। একটা সমস্যা। কৈ মাছের গায়ে শক্ত কাটা। ওটা দিয়ে সে যে কাউকে মুহূর্তেই  ঘায়েল করে দিতে পারে। রাণী অন্দরমহলে থাকবে। সেখানে রাজার সাথে মতবিরোধ দেখা দিতে পারে। একথা চিরন্তন সত্য যে,  নারী স্বভাবে চিরকালই বক্র। তাই রাণী কৈ’র সাথে কলহ-বিসংবাদ ঘটতেই পারে। যদিও বিয়ে তো হওয়া উচিত শান্তি ও পবিত্রতার প্রতীক। কলহ বাঁধলে কি হতে পারে। হাদিসে আছে, যদি আমি অন্য কাউকে সিজদা করতে আদেশ দিতাম তাহলে নারীদেরই বলতাম তাদের স্বামীদের সিজদা করতে।  ইলিশ কল্পনায় কৈ’র সূচালো শক্ত কাটা দেখতে পান। আর হাদিসের কথা শিকেয় তুলে নেন। বাপরে! ঝগড়ায় ক্রোধান্বিত রাণী ইলিশকে দিলো ঘাই। খুব বেশি দরকার নাই। ইলিশকে গোনে গোনে দুইটা ঘাই দিলেই হবে। তবেই রাজার ভব লীলা সাঙ্গ হবে তৎক্ষণাৎ। রাজার ভয়ে আত্মারাম খাচা ছাড়ার যোগার হলো। ভয়ের ফল এই, টাকিকে সঙ্গে সঙ্গে জানিয়ে দেয়া হলো যে এই পাত্রী দিয়ে তার চলবে না। টাকি বড় দুশ্চিন্তায় পড়ে গেলো। রাজা তবে কেমন পাত্রী চান। টাকির বন্ধু পুঁটি। বন্ধুর কাছে পরামর্শ চাইলো – রাজার জন্য কোন জাতের পাত্রী খোঁজা দরকার। মাথাটা ছোট হলেও পুঁটির ঘটে বেশ বুদ্ধি। সোজা থেকে চক্করবক্কর সব রকম বুদ্ধি তার আছে। সে সমস্যাটা নিয়ে কিছুক্ষণ গভীর মনোযোগে ভেবে নিলো। তারপর বন্ধুকে পরামর্শ দিলো, “শোন ইলিশ আসলে মাছিদের স্বভাবহীন শান্ত, ভদ্র, নম্র পাত্রী চান। স্বভাবে রাণী যদি অতি চঞ্চলা হন তবে রাজার জীবন ত্রাহি ত্রাহি হয়ে ওঠবে। তাই তিনি কোমলমতি একজন সঙ্গীনি চান। তুমি সেরূপ ব্যবস্থা করো।” বন্ধুর পরামর্শ ভালো লাগলো। এরূপই খুঁজতে হবে। কিন্তু বড় মুস্কিল।  এই ডিজিটাল যুগে এমনটা কি পাওয়া যাবে? অন্যদিকে আছে নারীবাদী দর্শন। দাবানলের মতোই নারীবাদী দর্শন এখন চতুর্দিকে ছড়িয়েছে। সেখানে সমঅধিকারের হুক্কা হুয়া ডাকে কান ঝালাপালা। যদিও সেটা সম না ন্যায্য অধিকার হওয়া উচিত ছিলো। এই পরিবেশ-পরিস্থিতিতে পতিভক্ত সুমনা নারী কোথায় পাওয়া যায়? ভাবতে ভাবতে ভাবতে ভাবতে শেষে এক পাত্রী পাওয়া গেলো। পাত্রীর নাম ভেদা মাছ। ওর ডাক নাম রয়না। মাছের জগতে ও-ই সবচেয়ে ভদ্রগোছের। নিরিবিলি নিজের মতো থাকতে পছন্দ করে। অন্যের সাতপাঁচে সে নাই। বড়ই ধীরস্থির শান্তমনা। এই-ই হবে রাজার উপযুক্ত রাণী। রাজা পাত্রী ভেদা মাছকে দুদিনের জন্য রাজপ্রাসাদে রেখে দিলেন। পাত্রীর জীবনাচার দেখতে হবে। রাণীর জীবনযাপনের সূচি তো রাজাকে দৃশ্যমানভাবে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় প্রভাবিত করবে। যা রাজ্যশাসনেও পরোক্ষভাবে ইতিবাচক বা ঋণাত্মক মানে ভূমিকা পালন করবে। এমনও তো ঘটে, “রাজা করিতেছে রাজ্য-শাসন/রাজারে শাসিছে রাণী।” সুতরাং সাবধান, সাবধান।  রাণী বাছাইয়ে সতর্ক হতেই হবে। কয়েকদিন রাজা সম্ভাব্য রাণীকে পর্যবেক্ষণ করে দেখলেন। ভেদা বেশ আয়েশি। দিনের অর্ধেক কাটে রাজ-পালঙ্কে। ঘুমুতে যায় গভীর রাতে। কি করে এতো রাত অব্দি। বিলাসী মূর্তিতে নাটক-সিনেমা দেখে, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিচরণ চলে। স্বভাবজাত অভ্যেসেই সকাল হয় তার দিনের অর্ধেক কেটে যাওয়া সময়ে। বেশ বেশ! রাণীর জীবনযাপন প্রণালি এমনতর না হলে সে আবার কেমন রাণী। কিন্তু তার চরিত্রের যে চরম আলস্য ভাব প্রতীয়মান হলো তা ইলিশ কি করে মেনে নিবেন। এ ভাব তো অমঙ্গলময়। “আলোস্য দোষের আকর।” ভেদা মাছের আরো এক প্রকৃতি রাজার খেয়ালে ধরা পড়লো। ভেদা তো একদমই বোকাসোকা, হাবাগোবা টাইপের। ঠিকমতো ডান-বাম, উত্তর-পশ্চিম চিহ্নিত করার সক্ষমতায় ভেদাকে পাওয়া গেলো না। তাহলে তো বিপদ! রাজাকে সারাটা জীবন তো একে ঘাড়ে নিয়েই বয়ে বেড়াতে হবে। এর চেয়ে মহাবিপদ জীবনে আর কী হতে পারে। ইস! শেষে এমন পাত্রী নিয়ে রাজা এতোটা মূল্যবান সময়ের অপচয় করছেন! ধ্যাততেরিকা! কী ট্র্যাজেডি! বিয়েটা আর হলো না। দান দান তিন দান। গুলি মারি বিয়ে- এই মনোভাবে রাজা ইলিশ বিয়ে না করার সেই যে পণ করলেন তা আজও বলবৎ রয়েই গেছে। তাই তো মাছের রাজার আর বিয়েই হলো না। সুতরাং, মাছের রাজ্যে রাজা আছে, রাণী নাই।

কবিতা 


পূর্বরঙ্গ
—————————
আধেক নয়, একটা পুরো রাত্রি আমার নিও তো।
যে রাতে এক শাপলা হাসে;
মায়াভরা বুকে ফোটে আমায় ভালোবেসে।
দীঘল একটা রাত্রি তুমি নিও তো!
দুজন মিলে কাব্য হবে
বুকজমিনে তুমিই র’বে
কথার পৃষ্ঠে কথা জুড়ে
নিখোঁজ হবো কোন সুদূরে!
এমন ধারার দীঘল রাত্রি সোহাগ ভরে নিও তো।

আমার জীবন যাপন থেকে-
আধেক নয়, একটা পুরো রাত্রি তুমি নিও তো।
নিদ্রাদেবী ছুটি নেবে
কুসুম তাতে ভ্রমর পাবে
এক্কা দোক্কা সুখের খেলায়
দেখা হবে মিলনমেলায়।
রঙীলা সেই দীঘল রাত্রি বুকে তুলে নিও তো।

 

লেখকঃড. ফারুক হোসেন, সহযোগী অধ্যাপক

ই-মেইলঃ farooq.hossain@gmail.com

ইউনিভার্সিটি অফ ইনফরমেশন টেকনোলজি এন্ড সাইন্সেস