ঢাকা ০৫:৪৮ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

গাইবান্ধায় বাড়ছে আলু চাষ, বীজ সংকটে কৃষক

আব্দুল কাফি সরকার ,গাইবান্ধা

অস্থির পণ্য বাজারে অন্যান্য নিত্যপণ্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলছে আলুর দামও। বর্তমানে প্রতিকেজি খাবার আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা
দরে। তাই এ বছরে অধিক লাভের স্বপ্নে কৃষকরা ঝুঁকছেন এই চাষাবাদে। ইতোমধ্যে কেউ করছেন জমি প্রস্তুত, আবার কেউ কেউ আলু রোপণও শুরু করেছেন। তবে বীজের সংকটের কারণে কৃষক অতিরিক্ত দামে কিনছেন আলু বীজ। এর ফলে চাষাবাদে চরম হিমসিমে পড়ছেন তারা।
সম্প্রতি গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর ও গোবিন্দগঞ্জসহ জেলার প্রত্যান্ত অঞ্চলে ঘুরে দেখা গেছে কৃষকদের আলু চাষাবাদের দৃশ্য। তারা জমি
প্রস্তুতসহ বীজ রোপণে চরম ব্যস্ত সময় পার করছেন।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানিয়েছে, চলতি রবি মৌসুমে জেলার ৭ উপজেলায় ১০ হাজার ৩১৮ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এরই মধ্যে প্রায় ৭৫০ হেক্টর অর্জিত হয়েছে।
আর গত বছরে আলু আবাদ হয়েছিল ৯ হাজার ৫৯০ হেক্টর। তবে চলতি মৌসুমের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে এতে প্রায় ২ লাখ ৪৯ হাজার ৩৪০
মেট্রিকটন আলু উৎপাদন হতে পারে। এ থেকে জেলায় বার্ষিক চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ১৫১ মেট্রিকটন।
ওই বিভাগটি আরও জানায়, চলতি মৌসুমের জন্য ১৫ হাজার ৯০০ মেট্রিকটন আলু বীজ মজুদ রাখা হয়। এর মধ্যে সোমবার (৩০ অক্টোবর) পর্যন্ত ৫ হাজার ৬৪২ মেট্রিকটন বীজ রোপণ করা হয়েছে। তবে কৃষকের মোট চাহিদা রয়েছে ১৭ হাজার ২৪ মেট্রিকটন।
জানা যায়, গেল খরিপ মৌসুম থেকে আলুসহ শাক-সবজির দামবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তাই চলতি রবি মৌসুমে আলু চাষাবাদে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে অনেকটাই। তবে এ বছরে স্থানীয়ভাবে বীজের সংকট থাকায় মুন্সীগঞ্জ জেলা থেকে বেশি দামে বীজ সংগ্রহ করছে প্রান্তিক কৃষক। সেই সঙ্গে সার-কিটনাশক ও অন্যান্য কৃষি উপকরণের দাম বেশি থাকায় আলু চাষে হিমসিম খাচ্ছেন বলে তাদের অভিযোগ। তবুও লাভের আশায় মাঠে ঘাম ঝড়াচ্ছেন তারা। বিশেষ করে জেলার সাদুল্লাপুর ও গোবিন্দগঞ্জ এলাকায় ব্যাপক চাষাবাদের দৃশ্য দেখা গেছে।
ধাপেরহাট এলাকার কৃষক আব্দুল লতিফ উদ্দিন বলেন, আলু চাষের জন্য ইতোমধ্যে সাড়ে ৩ বিঘা জমি প্রস্তুত করেছি। এতে প্রায় ৯৫০ কেজি
বীজের দরকার। স্থানীয়ভাবে বীজের সংকট থাকায় মুন্সীগঞ্জ জেলা থেকে অধিক দামে বীজ সংগ্রহ করছি। কৃষক মাসুদ রানা বলেন, গত বছর
এক একর জমিতে আলু চাষ করে লাভবান হয়েছি। এ বছরের খাবার আলুর দাম ভালো থাকায় চলতি মৌসুমে দেড় একর জমিতে বীজ রোপণ শুরু
করেছি। এতে প্রতিবিঘা খরচ হবে প্রায় ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলে বিঘায় ৮০ থেকে ৮৫ মণ উৎপাদন সম্ভব।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, চলতি রবি মৌসুমে আলু বীজের কোন সংকট নেই। কৃষকদের
আগ্রহ অনুযায়ী আমরা যেসব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি তা ছেড়ে যেতে পারে। ফলন ভালো পেতে তাদের সর্বাত্নকভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে।

ট্যাগস :

গাইবান্ধায় বাড়ছে আলু চাষ, বীজ সংকটে কৃষক

আপডেট সময় : ০৪:৩১:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ নভেম্বর ২০২৩

আব্দুল কাফি সরকার ,গাইবান্ধা

অস্থির পণ্য বাজারে অন্যান্য নিত্যপণ্যের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েই চলছে আলুর দামও। বর্তমানে প্রতিকেজি খাবার আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা
দরে। তাই এ বছরে অধিক লাভের স্বপ্নে কৃষকরা ঝুঁকছেন এই চাষাবাদে। ইতোমধ্যে কেউ করছেন জমি প্রস্তুত, আবার কেউ কেউ আলু রোপণও শুরু করেছেন। তবে বীজের সংকটের কারণে কৃষক অতিরিক্ত দামে কিনছেন আলু বীজ। এর ফলে চাষাবাদে চরম হিমসিমে পড়ছেন তারা।
সম্প্রতি গাইবান্ধার সাদুল্লাপুর ও গোবিন্দগঞ্জসহ জেলার প্রত্যান্ত অঞ্চলে ঘুরে দেখা গেছে কৃষকদের আলু চাষাবাদের দৃশ্য। তারা জমি
প্রস্তুতসহ বীজ রোপণে চরম ব্যস্ত সময় পার করছেন।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ জানিয়েছে, চলতি রবি মৌসুমে জেলার ৭ উপজেলায় ১০ হাজার ৩১৮ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এরই মধ্যে প্রায় ৭৫০ হেক্টর অর্জিত হয়েছে।
আর গত বছরে আলু আবাদ হয়েছিল ৯ হাজার ৫৯০ হেক্টর। তবে চলতি মৌসুমের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে এতে প্রায় ২ লাখ ৪৯ হাজার ৩৪০
মেট্রিকটন আলু উৎপাদন হতে পারে। এ থেকে জেলায় বার্ষিক চাহিদা রয়েছে ১ লাখ ১৭ হাজার ১৫১ মেট্রিকটন।
ওই বিভাগটি আরও জানায়, চলতি মৌসুমের জন্য ১৫ হাজার ৯০০ মেট্রিকটন আলু বীজ মজুদ রাখা হয়। এর মধ্যে সোমবার (৩০ অক্টোবর) পর্যন্ত ৫ হাজার ৬৪২ মেট্রিকটন বীজ রোপণ করা হয়েছে। তবে কৃষকের মোট চাহিদা রয়েছে ১৭ হাজার ২৪ মেট্রিকটন।
জানা যায়, গেল খরিপ মৌসুম থেকে আলুসহ শাক-সবজির দামবৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। তাই চলতি রবি মৌসুমে আলু চাষাবাদে কৃষকদের আগ্রহ বেড়েছে অনেকটাই। তবে এ বছরে স্থানীয়ভাবে বীজের সংকট থাকায় মুন্সীগঞ্জ জেলা থেকে বেশি দামে বীজ সংগ্রহ করছে প্রান্তিক কৃষক। সেই সঙ্গে সার-কিটনাশক ও অন্যান্য কৃষি উপকরণের দাম বেশি থাকায় আলু চাষে হিমসিম খাচ্ছেন বলে তাদের অভিযোগ। তবুও লাভের আশায় মাঠে ঘাম ঝড়াচ্ছেন তারা। বিশেষ করে জেলার সাদুল্লাপুর ও গোবিন্দগঞ্জ এলাকায় ব্যাপক চাষাবাদের দৃশ্য দেখা গেছে।
ধাপেরহাট এলাকার কৃষক আব্দুল লতিফ উদ্দিন বলেন, আলু চাষের জন্য ইতোমধ্যে সাড়ে ৩ বিঘা জমি প্রস্তুত করেছি। এতে প্রায় ৯৫০ কেজি
বীজের দরকার। স্থানীয়ভাবে বীজের সংকট থাকায় মুন্সীগঞ্জ জেলা থেকে অধিক দামে বীজ সংগ্রহ করছি। কৃষক মাসুদ রানা বলেন, গত বছর
এক একর জমিতে আলু চাষ করে লাভবান হয়েছি। এ বছরের খাবার আলুর দাম ভালো থাকায় চলতি মৌসুমে দেড় একর জমিতে বীজ রোপণ শুরু
করেছি। এতে প্রতিবিঘা খরচ হবে প্রায় ২২ থেকে ২৫ হাজার টাকা। ফলন ভালো হলে বিঘায় ৮০ থেকে ৮৫ মণ উৎপাদন সম্ভব।
গাইবান্ধা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক খোরশেদ আলম বলেন, চলতি রবি মৌসুমে আলু বীজের কোন সংকট নেই। কৃষকদের
আগ্রহ অনুযায়ী আমরা যেসব লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি তা ছেড়ে যেতে পারে। ফলন ভালো পেতে তাদের সর্বাত্নকভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে।