ঢাকা ০৯:৫৮ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ০৬ ডিসেম্বর ২০২৩, ২২ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

দীর্ঘ সাতমাস একাই জীবনযুদ্ধ করেছেন জিংপা বম

আকাশ মারমা মংসিং,বান্দরবান

মুখে রা নেই, বিমর্ষ। বেদনা অনুধাবনশক্তি হারিয়েছেন কবেই। তারপরও দুই চোখ স্যাঁতসেঁতে। পেটে তখন সাত মাসের বাচ্চা। কষ্টের যন্ত্রণায় মুখে হাসি ফুটেনি । শুধু দু’চোখে অশ্রু ভরাজল। এদিকে এলাকার আশাপাশে পাহাড়ের বিমূর্ষ গোলাগুলির শব্দ। সে শব্দের আওয়াজ শুধু কানে বাজে। গুলির আতঙ্কে পুরো গ্রামটির ফাকাঁ। ভয়ে গ্রামের মানুষরা পালিয়েছেন নির্জন জঙ্গলে কেউ পালিয়েছেন নিজ আত্বীয় বাসায়। দীর্ঘ সাতমাস কখনো খেয়ে কখনো বা সারাদিন না খেয়ে সন্তাদের নিয়ে গ্রামটিতে জীবনের সংগ্রাম চালিয়েছেন একাই। পুরো গ্রাম শুশান ও নিস্তদ্ধতা। গ্রামের সন্তাদের নিয়ে তিনি একাই ছিলেন। তখন গর্ভের প্রস্রবের ব্যথায় চিৎকার করেছিলেন একাই। আশাপাশে জঙ্গলে পালিয়ে থাকা গ্রামবাসীরা শুনে ছুটে আসেন তার কাছে। ভয়ে আতঙ্কে থাকলেও তাদের সহযোগিতায় নিজের প্রাণকে বাজি রেখে পহেলা অক্টোবরের শিশুটিকে পৃথিবীতে আলো দেখান শিশুটির মা জিংপা বম(৩০)। শিশুটির নাম রাখা হয় ড্রামফেন চাং বম, তার বয়স এখন দেড়মাস।

এমন হৃদয়স্পর্শী ঘটনাটি ঘটেছে রোয়াংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৬নং পাইক্ষ্যং পাড়া গ্রামের জিংপা বম(৩০) নামে এক মায়ের সাথে। প্রায় দীর্ঘ সাতমাস পাইক্ষ্যং পাড়াতে ভয়, আতঙ্ক, দুঃখভরা কষ্টের জীবন নিয়ে নিজ সন্তানের জন্য গ্রামে একাই সংগ্রাম চালিয়ে এসেছিলেন এই নারী। নতুন প্রজন্ম শিশু সহ তার সন্তান রয়েছে দুইজন। নবজাতক শিশুটির জন্য মায়ের এই জীবনযুদ্ধের কথা হৃদয়স্পর্শী নাড়া দেয় সবার মাঝে।

এভাবে তার ছেলেটির জন্য কখনো খেয়ে আবার না খেয়ে একাই সাতমাস কাটিয়েছেন গ্রামে। গতকাল সকালে পাইক্ষ্যং পাড়াতে জিংপা বম বাড়ি থেকে তোলা।

জিংপা বম(৩০) তিনি পাইক্ষ্যং পাড়াতে বসবাস করেন। তার স্বামী ভোয়ালিয়াং বম একজন কৃষক। জুম ও বাগানে ফলমুল চাষ করেই সংসার চলে। কিন্তু কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফের নির্যাতন, অত্যাচার কারণে গ্রামে মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। একে একে সব পরিবার লোকজন গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যান। কেউ ভয়ে জঙ্গলে আবার কেউ আত্বীয়দের বাসায় আশ্রয় নিয়েছেন। তখন জিংপা বম(৩০) পেটে সাতমাস ধরে গর্ভেধারণ করেছেন ড্রামফেন চাং বম নামে এক নবজাতকের। ভয় আর আতঙ্ক নিয়ে তিনি বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাননি। দীর্ঘ সাতমাস একাকিত্ব ভাবে সেই গ্রামের জীবন যুদ্ধ চালিয়েছেন নিজ সন্তানের জন্য। কখনো ভাত খেয়েছেন কখনো বা না খেয়ে ক্ষুধার্থ সহ্য নিয়ে গ্রামের মধ্যে একাই রাত কাটিয়েছেন। দীর্ঘ আটমাস সংগ্রামের পর সে গ্রাম থেকে পালিয়ে যাওয়া লোকজন অনেকেই ফিরতে শুরু করেছেন। কিন্তু জিংপা বমের(৩০) কোন আনন্দ নাই। তিনি মনে করেন এখনো পুরো গ্রামে একাই বসবাস করছেন।

জীবন সংগ্রাম বিষয়ে কথা হয় জিংপা বমের সাথে। তিনি কান্না কণ্ঠস্বরে বলেন, এলাকায় মধ্যে গুলাগুলি পর আতঙ্কে পাড়াবাসীরা সবাই পালিয়ে গেছে। আমার ছেলে- মেয়েকে নিয়ে কোথাও যেতে পারিনি। সন্তাদেরকে নিয়ে আমি পাড়াতে একা থেকে গেছি। যেহেতু পাড়াতে ঝামেলা হতে পারে সেজন্য বাবা মা তারাও চলে গেছে। কখনো খেয়ে আবার কখনো না খেয়ে থাকতে হয়েছে। বাজারের যাওয়া মানুষ নাই। কিন্তু একদিন গভীর রাতে আমার পেট ব্যাথা শুরু হয়। চিৎকার শুনে জঙ্গল থেকে ৪ জন মহিলা ছুটে এসেছেন। তারপর আমি ছেলে সন্তান জন্ম হয়।

জিংপা বম বলেন, পাড়ায় একবারের চুপচাপ। কোন শব্দ নাই। টানা পাচঁ মাস কখনো খায় কখনো না খেয়ে কাটিয়েছি। মানুষজন সাথে কথা বলব সেই সুযোগও হয়ে উঠেনি। তাছাড়া এখন ঘরে চাউল নাই। বিভিন্ন সমস্যার কারণে জুমের ধান চাষ করতে পারিনি এবছরে। কি করব না করব কিছুই বুজতে পারছি নাহ।

রোয়াংছড়ি সদর থেকে পাইক্ষ্যং পাড়া গ্রামের দুরত্ব প্রায় ১২ কিলোমিটার। গ্রামের সবাই বম সম্প্রদায়ের বসবাস। গ্রামের পরিবারের সংখ্যা ৯৭টি। কিন্তু গ্রামে ফিরেছেন ৫৭ পরিবার। এখনো ৪০ টি পরিবার ফিরে আসেনি। পাইক্ষ্যং পাড়াতে প্রবেশের মুখে জিংপা বমের(৩০) তার মাচাং ঘরটি। সেই ঘরের ভিতর তার ছেলে ড্রামফেন চাং বম দোলনায় ঘুমিয়ে আছেন। নবজাতক শিশুটি জানেই নাহ তার মায়ের জীবনযুদ্ধের বিমর্ষ কথা। কি হয়েছে কি ঘটেছে গ্রামে মানুষদের সাথে। তবুও শিশুটির ফুটফুটে ফর্সা মুখে তার মুচকি হাসি। শিশুটি এখন তার মায়ের কোলে ঘুমিয়ে আছেন।

অন্যদিকে বাড়িতে দেখা দিয়েছে খাবার সংকট। নির্দিষ্ট সময়ে জুম চাষ করতে না পেরে তার বড় দিদি কাজ থেকে দশ হাড়ি ধান ধা্র নিয়েছেন। সে ধান দিয়ে কোনমতে সংসার টেনে চালাচ্ছেন। টানা আটমাস কোন কৃষিপণ্যে উৎপাদিত করতে পারেননি। এই ধান শেষ হলে কি রকবেন সেটি নিয়ে চিন্তায় ঘুরপাক।

তার স্বামী দলিয়ান বম বলেন, খুব কষ্টের মধ্যে দিন যাচ্ছে আমাদের।ঘরে ধান নাই খাবার নাই। মানুষ থেকে কয়েক হাড়ি ধান ধার নিয়েছি এইটা শেষ হলে কি করব জানি নাহ। আগের মত যদি শান্তি ফিরয়ে আসলে গ্রামবাসীদের জন্য খুব ভালো হবে।

পাইক্ষ্যং পাড়াবাসী লালকিম বম (৭৫) বলেন, গ্রামের সবাই পালিয়েছিল। মেয়েটি তার সন্তানদের নিয়ে গ্রামে মধ্যে একাই বাড়িতে ছিল। বাচ্চা হওয়ার আগে মাত্র চারজন সাথে ছিলাম। বাচ্চাগুলোকে দেখাশোনা করতাম। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়াতেই আমরা খুশি।

রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নের ৩৪১ নং পাইক্ষ্যং মৌজাতে গ্রাম রয়েছে ১২টি। শংখ মনি পাড়া, রনিন পাড়া, মুনরেম পাড়া, লুংলেই পাড়া, ব্যাঙছড়ি মারমা পাড়া, রেপু তংচগ্যা পাড়া, ব্যাঙছড়ি পূর্ণবাসন পাড়া, কাপ্লাং পাড়া, খামতাং পাড়া ও পাইক্ষ্যং পাড়া ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। তাছাড়া সেসব গ্রামের লোকজনদের মাঝে খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। তাছাড়া বিশ্বযুদ্ধের মতন এমন ঘটনা যেন অন্য মায়ের সাথে না ঘটুক সে প্রত্যশা করেন জিংপা বম।

রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহ্লা অং মারমা জানান, পাড়াবাসীরা বিভিন্ন সমস্যা কারণের গ্রাম ছেড়ে অন্যত্রে চলে গিয়েছিল। দীর্ঘ ৮ মাস পর এলাকার লোকজন ফিরতে শুরু করেছে। গ্রামবাসীদেরকে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগীতা করা হবে বলে জানান তিনি।

ট্যাগস :

দীর্ঘ সাতমাস একাই জীবনযুদ্ধ করেছেন জিংপা বম

আপডেট সময় : ১১:২৪:২০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ নভেম্বর ২০২৩

আকাশ মারমা মংসিং,বান্দরবান

মুখে রা নেই, বিমর্ষ। বেদনা অনুধাবনশক্তি হারিয়েছেন কবেই। তারপরও দুই চোখ স্যাঁতসেঁতে। পেটে তখন সাত মাসের বাচ্চা। কষ্টের যন্ত্রণায় মুখে হাসি ফুটেনি । শুধু দু’চোখে অশ্রু ভরাজল। এদিকে এলাকার আশাপাশে পাহাড়ের বিমূর্ষ গোলাগুলির শব্দ। সে শব্দের আওয়াজ শুধু কানে বাজে। গুলির আতঙ্কে পুরো গ্রামটির ফাকাঁ। ভয়ে গ্রামের মানুষরা পালিয়েছেন নির্জন জঙ্গলে কেউ পালিয়েছেন নিজ আত্বীয় বাসায়। দীর্ঘ সাতমাস কখনো খেয়ে কখনো বা সারাদিন না খেয়ে সন্তাদের নিয়ে গ্রামটিতে জীবনের সংগ্রাম চালিয়েছেন একাই। পুরো গ্রাম শুশান ও নিস্তদ্ধতা। গ্রামের সন্তাদের নিয়ে তিনি একাই ছিলেন। তখন গর্ভের প্রস্রবের ব্যথায় চিৎকার করেছিলেন একাই। আশাপাশে জঙ্গলে পালিয়ে থাকা গ্রামবাসীরা শুনে ছুটে আসেন তার কাছে। ভয়ে আতঙ্কে থাকলেও তাদের সহযোগিতায় নিজের প্রাণকে বাজি রেখে পহেলা অক্টোবরের শিশুটিকে পৃথিবীতে আলো দেখান শিশুটির মা জিংপা বম(৩০)। শিশুটির নাম রাখা হয় ড্রামফেন চাং বম, তার বয়স এখন দেড়মাস।

এমন হৃদয়স্পর্শী ঘটনাটি ঘটেছে রোয়াংছড়ি উপজেলার সদর ইউনিয়নের ৬নং পাইক্ষ্যং পাড়া গ্রামের জিংপা বম(৩০) নামে এক মায়ের সাথে। প্রায় দীর্ঘ সাতমাস পাইক্ষ্যং পাড়াতে ভয়, আতঙ্ক, দুঃখভরা কষ্টের জীবন নিয়ে নিজ সন্তানের জন্য গ্রামে একাই সংগ্রাম চালিয়ে এসেছিলেন এই নারী। নতুন প্রজন্ম শিশু সহ তার সন্তান রয়েছে দুইজন। নবজাতক শিশুটির জন্য মায়ের এই জীবনযুদ্ধের কথা হৃদয়স্পর্শী নাড়া দেয় সবার মাঝে।

এভাবে তার ছেলেটির জন্য কখনো খেয়ে আবার না খেয়ে একাই সাতমাস কাটিয়েছেন গ্রামে। গতকাল সকালে পাইক্ষ্যং পাড়াতে জিংপা বম বাড়ি থেকে তোলা।

জিংপা বম(৩০) তিনি পাইক্ষ্যং পাড়াতে বসবাস করেন। তার স্বামী ভোয়ালিয়াং বম একজন কৃষক। জুম ও বাগানে ফলমুল চাষ করেই সংসার চলে। কিন্তু কুকি-চিন ন্যাশনাল ফ্রন্ট কেএনএফের নির্যাতন, অত্যাচার কারণে গ্রামে মানুষের মাঝে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। একে একে সব পরিবার লোকজন গ্রাম ছেড়ে পালিয়ে যান। কেউ ভয়ে জঙ্গলে আবার কেউ আত্বীয়দের বাসায় আশ্রয় নিয়েছেন। তখন জিংপা বম(৩০) পেটে সাতমাস ধরে গর্ভেধারণ করেছেন ড্রামফেন চাং বম নামে এক নবজাতকের। ভয় আর আতঙ্ক নিয়ে তিনি বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাননি। দীর্ঘ সাতমাস একাকিত্ব ভাবে সেই গ্রামের জীবন যুদ্ধ চালিয়েছেন নিজ সন্তানের জন্য। কখনো ভাত খেয়েছেন কখনো বা না খেয়ে ক্ষুধার্থ সহ্য নিয়ে গ্রামের মধ্যে একাই রাত কাটিয়েছেন। দীর্ঘ আটমাস সংগ্রামের পর সে গ্রাম থেকে পালিয়ে যাওয়া লোকজন অনেকেই ফিরতে শুরু করেছেন। কিন্তু জিংপা বমের(৩০) কোন আনন্দ নাই। তিনি মনে করেন এখনো পুরো গ্রামে একাই বসবাস করছেন।

জীবন সংগ্রাম বিষয়ে কথা হয় জিংপা বমের সাথে। তিনি কান্না কণ্ঠস্বরে বলেন, এলাকায় মধ্যে গুলাগুলি পর আতঙ্কে পাড়াবাসীরা সবাই পালিয়ে গেছে। আমার ছেলে- মেয়েকে নিয়ে কোথাও যেতে পারিনি। সন্তাদেরকে নিয়ে আমি পাড়াতে একা থেকে গেছি। যেহেতু পাড়াতে ঝামেলা হতে পারে সেজন্য বাবা মা তারাও চলে গেছে। কখনো খেয়ে আবার কখনো না খেয়ে থাকতে হয়েছে। বাজারের যাওয়া মানুষ নাই। কিন্তু একদিন গভীর রাতে আমার পেট ব্যাথা শুরু হয়। চিৎকার শুনে জঙ্গল থেকে ৪ জন মহিলা ছুটে এসেছেন। তারপর আমি ছেলে সন্তান জন্ম হয়।

জিংপা বম বলেন, পাড়ায় একবারের চুপচাপ। কোন শব্দ নাই। টানা পাচঁ মাস কখনো খায় কখনো না খেয়ে কাটিয়েছি। মানুষজন সাথে কথা বলব সেই সুযোগও হয়ে উঠেনি। তাছাড়া এখন ঘরে চাউল নাই। বিভিন্ন সমস্যার কারণে জুমের ধান চাষ করতে পারিনি এবছরে। কি করব না করব কিছুই বুজতে পারছি নাহ।

রোয়াংছড়ি সদর থেকে পাইক্ষ্যং পাড়া গ্রামের দুরত্ব প্রায় ১২ কিলোমিটার। গ্রামের সবাই বম সম্প্রদায়ের বসবাস। গ্রামের পরিবারের সংখ্যা ৯৭টি। কিন্তু গ্রামে ফিরেছেন ৫৭ পরিবার। এখনো ৪০ টি পরিবার ফিরে আসেনি। পাইক্ষ্যং পাড়াতে প্রবেশের মুখে জিংপা বমের(৩০) তার মাচাং ঘরটি। সেই ঘরের ভিতর তার ছেলে ড্রামফেন চাং বম দোলনায় ঘুমিয়ে আছেন। নবজাতক শিশুটি জানেই নাহ তার মায়ের জীবনযুদ্ধের বিমর্ষ কথা। কি হয়েছে কি ঘটেছে গ্রামে মানুষদের সাথে। তবুও শিশুটির ফুটফুটে ফর্সা মুখে তার মুচকি হাসি। শিশুটি এখন তার মায়ের কোলে ঘুমিয়ে আছেন।

অন্যদিকে বাড়িতে দেখা দিয়েছে খাবার সংকট। নির্দিষ্ট সময়ে জুম চাষ করতে না পেরে তার বড় দিদি কাজ থেকে দশ হাড়ি ধান ধা্র নিয়েছেন। সে ধান দিয়ে কোনমতে সংসার টেনে চালাচ্ছেন। টানা আটমাস কোন কৃষিপণ্যে উৎপাদিত করতে পারেননি। এই ধান শেষ হলে কি রকবেন সেটি নিয়ে চিন্তায় ঘুরপাক।

তার স্বামী দলিয়ান বম বলেন, খুব কষ্টের মধ্যে দিন যাচ্ছে আমাদের।ঘরে ধান নাই খাবার নাই। মানুষ থেকে কয়েক হাড়ি ধান ধার নিয়েছি এইটা শেষ হলে কি করব জানি নাহ। আগের মত যদি শান্তি ফিরয়ে আসলে গ্রামবাসীদের জন্য খুব ভালো হবে।

পাইক্ষ্যং পাড়াবাসী লালকিম বম (৭৫) বলেন, গ্রামের সবাই পালিয়েছিল। মেয়েটি তার সন্তানদের নিয়ে গ্রামে মধ্যে একাই বাড়িতে ছিল। বাচ্চা হওয়ার আগে মাত্র চারজন সাথে ছিলাম। বাচ্চাগুলোকে দেখাশোনা করতাম। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়াতেই আমরা খুশি।

রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নের ৩৪১ নং পাইক্ষ্যং মৌজাতে গ্রাম রয়েছে ১২টি। শংখ মনি পাড়া, রনিন পাড়া, মুনরেম পাড়া, লুংলেই পাড়া, ব্যাঙছড়ি মারমা পাড়া, রেপু তংচগ্যা পাড়া, ব্যাঙছড়ি পূর্ণবাসন পাড়া, কাপ্লাং পাড়া, খামতাং পাড়া ও পাইক্ষ্যং পাড়া ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। তাছাড়া সেসব গ্রামের লোকজনদের মাঝে খাবার সংকট দেখা দিয়েছে। তাছাড়া বিশ্বযুদ্ধের মতন এমন ঘটনা যেন অন্য মায়ের সাথে না ঘটুক সে প্রত্যশা করেন জিংপা বম।

রোয়াংছড়ি সদর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মেহ্লা অং মারমা জানান, পাড়াবাসীরা বিভিন্ন সমস্যা কারণের গ্রাম ছেড়ে অন্যত্রে চলে গিয়েছিল। দীর্ঘ ৮ মাস পর এলাকার লোকজন ফিরতে শুরু করেছে। গ্রামবাসীদেরকে ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে সার্বিক সহযোগীতা করা হবে বলে জানান তিনি।