কুড়িগ্রামের চিলমারীতে নওমুসলিম নববধু আমেনা বেগম (২৩) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় স্বামীকে হন্য হয়ে খুঁজছে পুলিশ। সোমবার (৬ নভেম্বর) এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ওই নববধুর স্বামী শাহাবুদ্দিনকে একমাত্র আসামী করা হয়। স্থানীয় গ্রাম পুলিশ সদস্য শরিফুল ইসলাম বাদী হয়ে এ মামলাটি দায়ের করেন।
চিলমারী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হারেছুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, মামলায় শাহাবুদ্দিন নামে একজনকে একমাত্র আসামী করা হয়েছে। আসামী গ্রেফতারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, হত্যাকাণ্ডের ১৭ দিন আগে নবমুসলিম আমেনা বেগম কে বিয়ে করেন উলিপুর উপজেলার হাতিয় বেগাপাড়ার বাগুয়া অনন্তপুর এলাকার আবতাব উদ্দিনের ছেলে শাহাবুদ্দিন। শাহাবুদ্দিন সাবেক বিজিবি সদস্য ছিলেন। পিলখানার নারকীয় হত্যাণ্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত হয়ে ৫ বছর জেল খাটেন। গত কয়েকমাস যাবত সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে পরিচয়ের সুত্রধরে হত্যাকাণ্ডের ১৭ দিন আগে নগদ দেড়লক্ষ টাকা দেনমোহর দিয়ে আমেনা বেগমকে বিয়ে করেন তিনি। শাহাবুদ্দিনের ঘরে আরো এক স্ত্রী ও ২ সন্তান রয়েছে বলে জানাগেছে।
এর আগে ২০১৫ সালে আমেনা বেগম হরিজন সম্প্রদায় থেকে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন, জোড়গাছ নতুন বাজার এলাকার জ্ঞানচাঁদ রবিদাসের মেয়ে। তার পূর্ব নাম ছিলো আদুরী রাণী।
২০১৫ সালে লালমনির হাট রেলপথে টিকিট কালেক্টর মোহাম্মদ আলীকে বিয়ে করতে গিয়ে আদুরী রাণী ধর্মান্তরিত হয়ে আমেনা বেগম হন। সে বিয়েটিও মোবাইল ফোনে পরিচয়ের সুত্রধরে হয়েছিল। কিন্তু বিয়ের ২ বছরের মাথায় মোহাম্মদ আলীর মৃত্যু হলে সেখান থেকে বিতারিত হয়ে চিলমারী ফিরে এসে বিভিন্ন জনের বাড়ীতে কাজ করে জীবিকা নিবার্হ করতেন। গত একবছর আগে আমেনা বেগমকে স্বাবলম্বি করতে একটি সামাজিক সংগঠন তাকে একটি মুদি দোকান তুলে দেন। উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুরাতন বাজার বাঁধ এলাকায় খাস জায়গায় ঘর তুলে দেয়া হয়। সেখানে আমেনা বেগম বসবাস করে আসছিলেন।
শাহাবুদ্দিনকে বিয়ে করার পর প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বেরুতেন না আমেনা বেগম। স্বামীকে নিয়েই সব সময় ঘরে থাকতেন। ঘটনার দিন দুপুর পেরিয়ে গেলেও ঘরের দরজায় তালাবদ্ধ দেখতে পেয়ে প্রতিবেশীরা জানালা দিয়ে ভেতরে আমেনাকে নিথর অবস্থায় দেখতে পায়। খবর পেয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম আশেক আঁকা ঘটনাস্থলে এসে পুলিশকে খবর দেয়। পরে পুলিশ এসে ঘরের দরজার তালা ভেঙ্গে ভেতর থেকে আমেনার মরদেহ উদ্ধার করে।
ঘটনার পর থেকে আমেনার স্বামী শাহাবুদ্দিন গা ঢাকা দেন।