বুধবার- ২৯ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

বুধবার- ২৯ নভেম্বর, ২০২৩ খ্রিস্টাব্দ

প্রচ্ছদ /

মার্কিন রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে বৈঠক শেষে সিইসি

নরসিংদীতে চাঞ্চল্যকর পৌর মেয়র লোকমান হত্যাকান্ডের ১২ বছর,বিচারিক তদন্ত চলমান

Add Your Heading Text Here

জাহিদুল ইসলাম জাহিদ, নরসিংদী প্রতিনিধি

নরসিংদীর চাঞ্চল্যকর পৌর মেয়র ও শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লোকমান হোসেন হত্যা মামলার অভিযোগপত্রের বিরুদ্ধে বাদির দেওয়া নারাজির বিচারিক তদন্ত চলামান রয়েছে। আগামীকাল বৃহস্পতিবার মামলার শুনানীর দিন ধার্য রয়েছে। এদিকে লোকমান হোসেনের ১২তম মৃত্যুবাষির্কী উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচির ঘোষণা করেছে নরসিংদী জেলা ও শহর আওয়ামীলীগ এবং জনবন্ধু লোকমান ফাউন্ডেশনের নেতাকর্মীরা। তারা প্রয়াত লোকমান হোসেনের সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পন, দোয়া মাহফিল ও গণভোজসহ বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করেছে বলে জানিয়েছেন।
মামলার বাদী ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ১ নভেম্বর পৌর মেয়র লোকমান হোসেনকে জেলা আওয়ামীলীগ কার্যালয়ে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।
এ হত্যার ঘটনায় নিহতের ছোট ভাই নরসিংদী শহর আওয়ামীলীগের সভাপতি মো. কামরুজ্জামান কামরুল বাদী হয়ে তৎকালীন ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী রাজিউদ্দিন আহমেদ রাজুর ছোট ভাই সালাহউদ্দিন আহমেদ বাচ্চুকে প্রধান আসামী করে ১৪ জনের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তৎকালীন জেলা গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশীদ মন্ডল প্রায় দীর্ঘ ৮ মাস তদন্ত শেষে ২০১২ সালের ২৪ জুন সালাহউদ্দিন আহমেদ বাচ্চুসহ এজাহারভুক্ত ১১ আসামীকে বাদ দিয়ে ১২ জনের বিররুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন আদালতে। এতে মামলার এজাহারভুক্ত তিন নম্বর আসামী শহর আওয়ামীলীগের সাবেক কোষাধ্যক্ষ মোবারক হোসেন, এজাহারভুক্ত দুই নম্বর আসামী নরসিংদী পৌর পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহ-সভাপতি আবদুল মতিন সরকার, তার ছোট ভাই শহর যুবলীগের সাবেক সভাপতি আশরাফুল ইসলাম সরকারসহ ১২ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। এদিকে অভিযোগপত্র দাখিলের আগেই মোবারক হোসেন মোবা ছাড়া সবাই আদালতের মাধ্যমে জামিনে বের হয়ে যান। দীর্ঘ ৭ বছর পর গত ২০১৮ সালের ২৯ অক্টোবর মোবারক হোসেন মোবাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। তিনিও বর্তমানে জামিনে মুক্ত
রয়েছেন। এরই মধ্যে গত ২০২১ সালে চার্জশীটভুক্ত আসামী আবদুল মতিন সরকার দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর মারা গেছেন।

এ দিকে পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রের প্রতি অনাস্থা জানিয়ে ২০১২ সালের ২৪ জুলাই নরসিংদীর চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেটের আদালতে নারাজি দেন মামলার বাদি মো. কামরুজ্জামান কামরুল। আদালত ২৫ জুলাই নারাজি আবেদন খারিজ করে অভিযোগপত্র বহাল রাখেন। পরবর্তীতে ২৮ আগস্ট নারাজি আবেদন খারিজের বিরুদ্ধে জেলা ও দায়রা জজ আদালতে আপিল করেন বাদী। আদালত ২ সেপ্টেম্বর সেই আবেদন গ্রহণ করে ৪ নভেম্বর শুনানি শেষে ফের নারাজি আবেদন খারিজ করেন। এরপর উচ্চ আদালতে যান বাদী। তিনি ওই অভিযোগপত্র বাতিল করে বিচার বিভাগীয় তদন্তের দাবি জানিয়ে নিম্ন আদালতে বিচারকার্য স্থগিত রাখতে রিট পিটিশন দাখিল করেন। আদালত বাদীর আবেদনটি আমলে নিয়ে নিম্ন আদালতে বিচারকার্য স্থগিত করে দেন।
এ ঘটনায় জামিনে বের হয়ে আসামীরা সুপ্রীম কোর্টের আপিল ডিভিশনে
মামলার কার্যক্রম স্থগিত রাখতে রিট পিটিশন দাখিল করেন। এরই ধারাবিকতায় দীর্ঘ কয়েক বছর ধরে শুনানীর অপেক্ষায় থাকার পর আদালত ২০১৯ সালের ১৪ জানুয়ারি আসামীদের করার রিট পিটিশনটি নিষ্পত্তি করে বাদীর নারাজি আবেদন গ্রহণ করতে এবং বাদী ও স্বাক্ষীগণের জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলাটি পুনঃতদন্তের নির্দেশ দেন। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২০১৯ সালের ২৫ জুন নরসিংদী জজ আদালতের মূখ্য বিচারিক হাকিম মো. রকিবুল ইসলাম শুধুমাত্র বাদী কামরুজ্জামানের জবানবন্দি গ্রহন করে তদন্ত শেষ করে দেন। এ ঘটনায় বাদী জেলা ও দায়রা জজ আদালতে রিভিশন আবেদন করেন। আদালত রিভিশন শুনানী শেষে পুনরায় বিচারিক তদন্তের নির্দেশ দেন। বর্তমানে বিচারিক তদন্ত চলামান রয়েছে। বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আসাদ আলী বলেন, মামলাটি বর্তমানে বিচারিক তদন্তাধীন রয়েছে। আগামী ২ নভেম্বর শুনানীন দিন ধার্য রয়েছে।
এ দিকে মামলার বাদী ও নরসিংদী জেলা আওয়ামীলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কামরুজ্জামান কামরুল বলেন, পুলিশের দেওয়া অভিযোগপত্রটি সঠিক ছিল না। সেখানে অভিযুক্ত ১৪ আসামীর মধ্যে ১১ আসামীকেই বাদ দেওয়া হয়েছিল। যতদিন পর্যন্ত প্রকৃত আসামীদেরকে বিচারের আওতায় না আনা হবে ততদিন আমরা আইনি লড়াই চালিয়ে যাবো।

ট্যাগঃ

সম্পর্কিত আরো খবর

জনপ্রিয়