নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়ায় হরতাল সমর্থনে মিছিলের জন্য জড়ো হওয়ার সময় বিএনপির সাথে পুলিশের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় পুলিশ টিয়ার গ্যাস ও শটগানের গুলি ছুড়লে বিএনপির লোকজনও পাল্টা ইট-পাটকেল ছোড়েন। এতে যুবদলের কয়েকজন কর্মী গুলিবিদ্ধ হন। রোববার (২৯ অক্টোবর) সকাল পৌনে ৭টা দিকে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব এলাকায় ওই ঘটনা ঘটে। এর আগে সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা-কর্মীরা মিছিল করলে তাদের সাথে পুলিশের ধস্তাধস্তি হয়। এ সময় পুলিশ গণতন্ত্র মঞ্চের ও জেএসডি (রব) মহানগর শাখার আহ্বায়ক মোতালেব মাস্টারের হাত থেকে ব্যানার কেড়ে নিয়ে তাকে আটক করে।

সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা-নারায়নগঞ্জ লিংক রোডের ফতুল্লার ভুইগড়ে পাসপোর্ট অফিসের সামনে হরতালের সমর্থনে বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভীর নেতৃত্বে মিছিল করেছে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা। এসময় আরো উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহ অর্থ বিষয়ক সম্পাদক মাহমুদুর রহমান সুমন, জেলা যুবদলের সদস্য সচিব মশিউর রহমান রনি, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি নাহিদ হাসান ভুঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক জোবায়ের জিকু, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সদস্য সচিব সালাহউদ্দিন সালু, সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক রফিকুল ইসলাম ভুঁইয়া্সহ নেতাকর্মীরা। মিছিল শুরু করে ঢাকা নারায়ণগঞ্জ মহাসড়কে যান চলাচল বন্ধ করে দেন বিএনপি নেতাকর্মীরা। এসময় সড়কে টায়ারে অগ্নিসংযোগ করে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। পরে পুলিশ আসার আগেই নেতাকর্মীরা চলে যান।
সকালে সিদ্ধিরগঞ্জের সাইনবোর্ড মিতালি মার্কেট এর সামনে থেকে আটক হয়েছেন সিদ্ধিরগঞ্জ থানা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও ২নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ইকবাল হোসেন এবং তার ভগ্নিপতি ২নং ওয়ার্ড বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মোক্তার হোসেন, সহ-সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম, ফারুক, ইসমাইলসহ ৭ জন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল পৌনে ১১টার দিকে শহরের মিশনপাড়াস্থ রামকৃষ্ণ মিশনের সামনে উৎসব পরিবহনের একটি বাস ভাংচুর করে আগুন ধরিয়ে দিলে বাসের ৬টি সিট পুড়ে যায়। অপর দিকে ডনচেম্বারের সামনে বন্ধু পরিবহনের একটি বাসের গ্লাস ভাংচুর করে তাতে আগুন ধরানোর চেষ্টা করা হয়। আগুন ধরানোর উপকরণ বাসের ভেতর রেখে ম্যাচ বা ম্যাচলাইট আনতে গেলে দ্রুত চালক বাস নিয়ে চাষাঢ়ার দিকে চলে যায়।
সকালে আড়াইহাজারের পাঁচরুখী এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করলে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। এসময়ে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতাকর্মীদের দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপের ঘটনা ঘটে। বান্টি বাজার থেকে পাচরুখী পুরো এলাকায় রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। সংঘর্ষের ঘটনায় প্রায় এক ঘন্টা ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। এসময় কয়েকজন গুলিবিদ্ধ সহ কমপক্ষে ১৫ জন নেতাকর্মী আহত হয়েছে।

নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল বলেন, সকাল থেকেই বিএনপি ও অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা বিভিন্নস্থানে বিক্ষিপ্তভাবে আগুন জ্বালিয়ে গাড়ি ভাঙচুর করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করতে চেষ্টা করেছে। পুলিশ নিজের কাজ করতে এগিয়ে গেলে ওরা পুলিশের ওপরও হামলা করে। পরবর্তীতে পুলিশ টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পিকেটিং ও জ্বালাও পোড়াওয়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত কয়েকজনকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। এর মধ্যে একজন কাউন্সিলর রয়েছেন ইকবাল নামে।