ঢাকা সিলেট মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার দেশব্যাপী ৭২ ঘন্টার অবরোধের সমর্থনে বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এসময় ঘটনাস্থল ও আশেপাশের এলাকা রণক্ষেত্রে পরিনত হয়। এসময় ৫ পুলিশ সদস্য ও কয়েকজন আওয়ামীলীগের নেতাকর্মীসহ অর্ধশতাধিক বিএনপি নেতাকর্মী আহত হবার খবর পাওয়া গেছে। এসময় কয়েকজন বিএনপি নেতাকর্মী গুলিবিদ্ধ হলেও তাৎক্ষণিক তাদের নাম পরিচয় জানা যায়নি। সংঘর্ষকালে ৩ পুলিশ সদস্যকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এর মধ্যে পুলিশ সদস্য নুরুল হকের অবস্থা আশংকাজনক বলে জানিয়েছে পুলিশ। মঙ্গলবার (৩১ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ৮ টায় উপজেলার পাঁচরুখী এলাকায় মহাসড়কে শুরু হয় অবরোধ। এছাড়া ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের বন্দরের মদনপুরে দুটি কাভার্ডভ্যানে এবং ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পুরাতন সড়কের পাগলা তালতলা এলাকায় একটি বাসে আগুন দেয়া হয়েছে। সকাল সাড়ে ৭ টার দিকে নারায়ণগঞ্জে বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা রিজভীর নেতৃত্বে মহাসড়কে পিকেটিং করেছে বিএনপি নেতাকর্মীরা।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা যায়, সকাল সাড়ে ৮ টায় অবরোধের সমর্থনে নারায়ণগঞ্জ জেলার আড়াইহাজার থানার পাঁচরুখী এলাকায় ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে মিছিল বের করে বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ। মিছিলে শত শত নেতাকর্মী অংশ নেয়। মিছিল থেকে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অগ্নিসংযোগ করে অবরোধ সফলে নামা স্লোগান দেন নেতাকর্মীরা। মিছিলটি মহাসড়কে কিছুক্ষণ অবস্থান করার পর পুলিশ বাধা দিলে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এসময় বিএনপি নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ও পুলিশ টিয়াস গ্যাস ও গুলি ছুড়ে। এক পর্যায়ে পুলিশকে ঘিরে ফেলে পিটিয়ে ও জখম করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এসময় ৫টি বাস ভাংচুর, মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবরোধ করে বিএনপির নেতাকর্মীরা। এক পর্যায়ে আওয়ামীলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা লাঠিসোটা সহ আসলে তাদেরকেও ধাওয়া দেয় বিএনপির নেতাকর্মীরা। এসময় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া ইট পাটকেল নিক্ষেপে কয়েকজন আওয়ামীলীগ নেতাকর্মী গুরুতর আহত হন। খবর পেয়ে অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অবরুদ্ধ পুলিশ সদস্যদের উদ্ধার করে। উভয় পক্ষের সংঘর্ষে অর্ধশতাধিক বিএনপির নেতাকর্মী ও ৫ পুলিশ সদস্য আহত হন।
পুলিশের উপর হামলার খবর শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে যান নারায়ণগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল সহ পুলিশের উর্ধতনরা। সকাল ১১ টার দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
বিএনপির কেন্দ্রীয় সহ আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ জানান, আমাদের অর্ধশতাধিক নেতাকর্মী পুলিশ ও আওয়ামীলীগের হামলায় আহত হয়েছেন। পুলিশ আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে আমাদের উপর নির্বিচারে গুলি করেছে। তবুও আমরা ৭২ ঘন্টা রাজপথে থেকে অবরোধ সফল করবো।
আড়াইহাজার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান উল্লাহ জানান, বিএনপির নেতাকর্মীরা সড়কে নৈরাজ্য করতে গেলে পুলিশ বাধা দেয়। এসময় পুলিশকে লক্ষ্য করে তারা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে টিয়ারগ্যাস নিক্ষেপ করে। বিএনপির নেতাকর্মীদের হামলায় ৫ পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। কয়েকজনকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। এর মধ্যে নুরুল হক নামে এক পুলিশ সদস্যের অবস্থা আশংকাজনক।