ঢাকা ০৬:২৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বগুড়ার গোকুলে মাইকে ঘোষণা দিয়ে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ, সরকারদলীয় নেতাসহ ১৭ গাড়ি ভাঙচুর 

বগুড়ায় বিএনপির ডাকা সকাল সন্ধ্যা হরতালে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে ঢাকা-দিনাজপুর মহাসড়ক অবরোধ অন্তত ১৭ টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এক শিশুসহ অন্তত ১৩ জন আহত হওয়ার খবর পুলিশ জানিয়েছে।  রোববার দুপুর পর্যন্ত হরতাল সমর্থকদের হাতে ভাঙচুর হওয়ার গাড়ির মধ্যে বগুড়া সদর ইউএনওর যানবাহন ও একটি অ্যাম্বুলেন্সও রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সদর উপজেলা গোকুল এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা ঢাকা-দিনাজপুর মহাসড়ক অবরোধ করেন। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের সরিয়ে দিতে গেলে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় ভাঙচুর করা হয় বগুড়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি গাড়ি। পরে আরও কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করেন তারা। সেখানে এক শিশুসহ আহত হন কয়েকজন।
এ সময় স্থানীয় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে পুলিশকে সরে যেতে বলেন হরতালের সমর্থকেরা। দুপুরে র্যা পিড অ্যাকশ্যন ব্যাটালিয়ানের লোকজন গিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেন। পরে আবার বিএনপির নেতাকর্মীরা মহাসড়ক অবরোধ করেন।
গোকুলে ওই শিশু কীভাবে আহত হলেন, জানতে চাইলে বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম বলেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন কিনা আমি জানি না। সিনিয়র স্যারেরা বলতে পারবেন।
জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোকজন জড়ো করে সংঘর্ষে জড়িয়ে যান। তাদের সরিয়ে দিলে পুলিশের উপর চড়াও হন। এ সময় কয়েকজন আহত হন। এর মধ্যে একজন শিশু রয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে রোববার সকাল থেকে শহরের ফতেহ আলী বাজার এলাকার গালাপট্টি সড়কে জেলা বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে এই ধাওয়া পালটা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে।
এর আগে সকাল সাড়ে আটটার দিকে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিক রিগ্যানের নেতৃত্বে একটি মিছিল সাতমাথার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশের বাধায় আবার নবাববাড়ি সড়কের দলীয় কার্যালয়ে ফিরে আসে মিছিলটি। এরপর থেকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন।
পরে সকাল পৌনে দশটার দিকে আওয়ামী লীগের একটি দল গালাপট্টি সড়ক হয়ে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের দিকে আগানোর চেষ্টা করে। এ সময় দু পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পালটা ধাওয়া হয়। সেখানে কয়েক দফা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। এ ছাড়াও ইটপাটকেল ছোড়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন।
পরে বিএনপির নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের আয়োজন করে। এতে জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা, সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান তালুকদার লালুসহ একাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার বলেন, হরতালকে কেন্দ্র করে শহরের কয়েকটি স্থানে দফায় দফায় বিএনপির নেতাকর্মীদের সাথে উত্তপ্ত পরিস্থিরি সৃষ্টি হয়েছে। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পাঁচ রাউন্ড বুলেট নিক্ষেপ করা হয়। বর্তমানে সব ঠিক আছে। আশা করছি কোনো অপীতিকর ঘটনা ঘটবে না।
হরতালে রিকশা,অটোরিকশা চলাচল করলেও অফিস আদালতে যাওয়া মানুষরা পড়েছেন ভোগান্তিতে।
ট্যাগস :

বগুড়ার গোকুলে মাইকে ঘোষণা দিয়ে পুলিশের সাথে সংঘর্ষ, সরকারদলীয় নেতাসহ ১৭ গাড়ি ভাঙচুর 

আপডেট সময় : ০৮:৫৬:৪৬ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৩
বগুড়ায় বিএনপির ডাকা সকাল সন্ধ্যা হরতালে মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে ঢাকা-দিনাজপুর মহাসড়ক অবরোধ অন্তত ১৭ টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। এক শিশুসহ অন্তত ১৩ জন আহত হওয়ার খবর পুলিশ জানিয়েছে।  রোববার দুপুর পর্যন্ত হরতাল সমর্থকদের হাতে ভাঙচুর হওয়ার গাড়ির মধ্যে বগুড়া সদর ইউএনওর যানবাহন ও একটি অ্যাম্বুলেন্সও রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রোববার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সদর উপজেলা গোকুল এলাকায় বিএনপির নেতাকর্মীরা ঢাকা-দিনাজপুর মহাসড়ক অবরোধ করেন। আইন শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী তাদের সরিয়ে দিতে গেলে সংঘর্ষ বাধে। এ সময় ভাঙচুর করা হয় বগুড়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সরকারি গাড়ি। পরে আরও কয়েকটি গাড়িও ভাঙচুর করেন তারা। সেখানে এক শিশুসহ আহত হন কয়েকজন।
এ সময় স্থানীয় মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে পুলিশকে সরে যেতে বলেন হরতালের সমর্থকেরা। দুপুরে র্যা পিড অ্যাকশ্যন ব্যাটালিয়ানের লোকজন গিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের সরিয়ে দেন। পরে আবার বিএনপির নেতাকর্মীরা মহাসড়ক অবরোধ করেন।
গোকুলে ওই শিশু কীভাবে আহত হলেন, জানতে চাইলে বগুড়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শরাফত ইসলাম বলেন, গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হয়েছেন কিনা আমি জানি না। সিনিয়র স্যারেরা বলতে পারবেন।
জেলা পুলিশ সুপার সুদীপ কুমার চক্রবর্ত্তী বলেন, মসজিদের মাইকে ঘোষণা দিয়ে লোকজন জড়ো করে সংঘর্ষে জড়িয়ে যান। তাদের সরিয়ে দিলে পুলিশের উপর চড়াও হন। এ সময় কয়েকজন আহত হন। এর মধ্যে একজন শিশু রয়েছে। তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
এদিকে রোববার সকাল থেকে শহরের ফতেহ আলী বাজার এলাকার গালাপট্টি সড়কে জেলা বিএনপি ও আওয়ামী লীগের মধ্যে এই ধাওয়া পালটা ধাওয়া শুরু হয়। এ সময় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কয়েক রাউন্ড রাবার বুলেট নিক্ষেপ করেছে।
এর আগে সকাল সাড়ে আটটার দিকে জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক নূরে আলম সিদ্দিক রিগ্যানের নেতৃত্বে একটি মিছিল সাতমাথার দিকে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশের বাধায় আবার নবাববাড়ি সড়কের দলীয় কার্যালয়ে ফিরে আসে মিছিলটি। এরপর থেকে বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন।
পরে সকাল পৌনে দশটার দিকে আওয়ামী লীগের একটি দল গালাপট্টি সড়ক হয়ে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের দিকে আগানোর চেষ্টা করে। এ সময় দু পক্ষের মধ্যে ধাওয়া পালটা ধাওয়া হয়। সেখানে কয়েক দফা ককটেল বিস্ফোরণ ঘটে। এ ছাড়াও ইটপাটকেল ছোড়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় বিএনপির কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হন।
পরে বিএনপির নেতাকর্মীরা দলীয় কার্যালয়ের সামনে সমাবেশের আয়োজন করে। এতে জেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম বাদশা, সাধারণ সম্পাদক আলী আজগর তালুকদার হেনা, খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান তালুকদার লালুসহ একাধিক নেতাকর্মী অংশ নেন।
বগুড়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার স্নিগ্ধ আখতার বলেন, হরতালকে কেন্দ্র করে শহরের কয়েকটি স্থানে দফায় দফায় বিএনপির নেতাকর্মীদের সাথে উত্তপ্ত পরিস্থিরি সৃষ্টি হয়েছে। তখন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পাঁচ রাউন্ড বুলেট নিক্ষেপ করা হয়। বর্তমানে সব ঠিক আছে। আশা করছি কোনো অপীতিকর ঘটনা ঘটবে না।
হরতালে রিকশা,অটোরিকশা চলাচল করলেও অফিস আদালতে যাওয়া মানুষরা পড়েছেন ভোগান্তিতে।