ঢাকা ০৮:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

যানজটের শহরে মেট্রো রেল, অপেক্ষার অবসান রাজধানীবাসীর

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশ পর্যন্ত মেট্রো রেলের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে স্বপ্ন ও অপেক্ষার অবসান ঘটল মেগাসিটি ঢাকা শহরের বাসিন্দাদের। অবশেষে পূর্ণতা পায় দেশের প্রথম মেট্রো রেল লাইন এমআরটি-৬। এতদিন উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রো রেল চলাচল করত। এখন থেকে উত্তরা হতে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রো রেলের চলাচল শুরু। মেট্রো রেলে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দূরত্বের পথ মাত্র ৩৮ মিনিটে পার হতে পারবেন যাত্রীরা। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পুরো পথের জন্য ভাড়া গুণতে হবে ১০০ টাকা। মেট্রো রেলে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী, প্রতিদিন ৫ লাখ যাত্রী পরিবহনের সুযোগ পাবে; ফলে ঢাকার যানজট অনেকটাই কমে আসবে। আগারগাঁও মতিঝিল অংশ উদ্বোধনের পাশাপাশি মতিঝিল-কমলাপুরের বর্ধিত অংশের নির্মাণকাজও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। মতিঝিল-কমলাপুরের বর্ধিত অংশ ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে শেষ হবে বলে জানান সেতুমন্ত্রী। প্রতিটি ট্রেন ২৩০০ জন যাত্রী নিয়ে ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারবে। তবে বাঁকযুক্ত এলাকায় গতি কমে যাবে। মেট্রো রেল প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী এবং প্রতিদিন ৫ লাখ যাত্রী বহন করতে সক্ষম হবে এবং প্রতি চার মিনিটে প্রতি স্টেশনে একটি করে ট্রেন আসবে। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) মেট্রোরেল নির্মাণ করছে এবং প্রকল্পে সহজ শর্তে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে। জাইকা প্রকল্পের জন্য ১৯ হাজার ৫০০ শত কোটি টাকা দিয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর রাজধানীর ওপর যানজটের চাপ কমাতে নানা উদ্যোগ নেয়। যানজট নিরসনে রাজধানীজুড়ে মেট্রো রেল নির্মাণের উদ্যোগের পাশাপাশি ফ্লাইওভার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ অনেকগুলো ফ্লাইওভারও দেশে যানজট নিরসনে ভূমিকা রাখছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমআরটি লাইন-৫ এর নির্মাণকাজেরও উদ্বোধন করেন। এমআরটি-৫ এর আওতায় হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার পাতাল রেল আর সাড়ে ৬ কিলোমিটার উড়াল সড়ক নির্মাণ করা এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্পটি ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ১৯ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা দিচ্ছে জাইকা। বাকি ১৩ হাজার ৭৫৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা বহন করছে বাংলাদেশ সরকার। মেট্রো রেল নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১২ সালের ১৮ ডিসেম্বর একনেকে অনুমোদিত হয়। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাইকার সাথে চুক্তি সই হয়। প্রথমে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন-৬ নির্মাণের কথা ছিল। যাত্রীদের সুবিধা বিবেচনায় সেটি কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারণ করতে অনুশাসন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত দূরত্ব ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার। বর্তমানে বর্ধিত অংশের অর্থাৎ মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রো রেল সম্প্রসারণের কাজ চলছে। যদিও নির্মাণকাজের শুরুতে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রো রেল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১৬টি স্টেশন রয়েছে। নির্মাণ ও আনুষঙ্গিক কিছু কাজ বাকি থাকায় প্রথম পর্যায়ে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত সকালে ৭টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চার ঘণ্টা চলবে। মতিঝিল থেকে আগারগাঁও অংশে শুধু মতিঝিল, সচিবালয় ও ফার্মগেট এই তিন স্টেশনে থামবে মেট্রো রেল। প্রতি ১০ মিনিট পরপর ট্রেন ছাড়বে। আপাতত বিজয় সরণি, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে মেট্রো রেল থামবে না। তবে আগারগাঁও থেকে উত্তরা পর্যন্ত আগের মতো রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলবে।
মেট্রো রেল উত্তরা থেকে পল্লবী, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, খামারবাড়ি, ফার্মগেট, শাহবাগ, টিএসসি, দোয়েল চত্বর হয়ে প্রেস ক্লাবের সামনে দিয়ে মতিঝিল পর্যন্ত যাবে। এ পথের দূরত্ব ২০ কিলোমিটচার। এই পথের স্টেশনগুলো হচ্ছেÑ উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওরান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয় ও মতিঝিল। প্রতিটি ট্রেনে ২ হাজার ৩০৮ জন যাত্রীর ধারণক্ষমতা রয়েছে।
উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা। উত্তরা থেকে পল্লবী ও মিরপুর-১১ পর্যন্ত ৩০ টাকা, মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া ৪০ টাকা, শেওড়াপাড়া ৫০ টাকা এবং আগারগাঁও পর্যন্ত ৬০ টাকা নির্ধারিত। মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রো রেল চালু হওয়ায় উত্তরা থেকে আগারগাঁও-বিজয় সরণি পর্যন্ত ৬০ টাকা, ফার্মগেট ৭০ টাকা, কারওয়ান বাজার-শাহবাগ ৮০ টাকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রেস ক্লাব পর্যন্ত ৯০ টাকা এবং মতিঝিল পর্যন্ত ১০০ টাকা নির্ধারিত। বিপুলসংখ্যক যাত্রী মেট্রো রেলে যাতায়াত করার ফলে মেট্রো রেলের নিচে অবস্থিত সড়কে ছোট-বড় যানবাহনের সংখ্যা কমে আসবে। এতে একদিকে কর্মঘণ্টা বাঁচবে, অপরদিকে গাড়ির জ্বালানি এবং পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতের ব্যয়ও কমে আসবে। সমীক্ষার সূত্রমতে, সময় সাশ্রয়ের কারণে দৈনিক ৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা এবং গাড়ির অপারেশন খরচ বাবদ আরো ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা সাশ্রয় হবে, যা জিডিপির প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সহায়ক হবে। তিনটি ধাপে মেট্রো রেলের নির্মাণকাজ শেষ হচ্ছে, প্রথম ধাপে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত, দ্বিতীয় ধাপে আগারগাঁও হতে মতিঝিল পর্যন্ত কাজ প্রায় শেষ এবং তৃতীয় ধাপে মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত নির্মাণকাজ চলছে। ঢাকায় ২০৩০ সালের মধ্যে মোট ছয়টি রুটে মেট্রো রেল চালুর ঘোষণা রয়েছে। এর মধ্যে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত অংশের কাজ শুরু হয়ে গেছে। এই রুটটি যুক্ত করবে পূর্বাচলকেও। গাবতলী থেকে দাশেরকান্দি পর্যন্ত রুটটিতে অর্থায়ন চূড়ান্ত হয়েছে। অন্য দুটি রুট হলোÑ এমআরটি-৪ যেটি কমলাপুর থেকে যাবে নারায়ণগঞ্জের মদনপুরে এবং এমআরটি-২ যেটি গাবতলী থেকে নিউ মার্কেট হয়ে যাবে নারায়ণগঞ্জের ফুলকুঁড়ি। এটি যুক্ত করবে সদরঘাটকেও। আর এভাবেই ঢাকা নগরবাসীকে যানজট মুক্ত করবে স্বপ্নের মেট্রো রেল।

ট্যাগস :

যানজটের শহরে মেট্রো রেল, অপেক্ষার অবসান রাজধানীবাসীর

আপডেট সময় : ০৭:১৫:১১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৩

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক আগারগাঁও থেকে মতিঝিল অংশ পর্যন্ত মেট্রো রেলের উদ্বোধনের মধ্য দিয়ে স্বপ্ন ও অপেক্ষার অবসান ঘটল মেগাসিটি ঢাকা শহরের বাসিন্দাদের। অবশেষে পূর্ণতা পায় দেশের প্রথম মেট্রো রেল লাইন এমআরটি-৬। এতদিন উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত মেট্রো রেল চলাচল করত। এখন থেকে উত্তরা হতে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রো রেলের চলাচল শুরু। মেট্রো রেলে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দূরত্বের পথ মাত্র ৩৮ মিনিটে পার হতে পারবেন যাত্রীরা। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত পুরো পথের জন্য ভাড়া গুণতে হবে ১০০ টাকা। মেট্রো রেলে ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী, প্রতিদিন ৫ লাখ যাত্রী পরিবহনের সুযোগ পাবে; ফলে ঢাকার যানজট অনেকটাই কমে আসবে। আগারগাঁও মতিঝিল অংশ উদ্বোধনের পাশাপাশি মতিঝিল-কমলাপুরের বর্ধিত অংশের নির্মাণকাজও উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। মতিঝিল-কমলাপুরের বর্ধিত অংশ ২০২৪ সালের জুনের মধ্যে শেষ হবে বলে জানান সেতুমন্ত্রী। প্রতিটি ট্রেন ২৩০০ জন যাত্রী নিয়ে ১০০ থেকে ১১০ কিলোমিটার গতিতে চলতে পারবে। তবে বাঁকযুক্ত এলাকায় গতি কমে যাবে। মেট্রো রেল প্রতি ঘণ্টায় ৬০ হাজার যাত্রী এবং প্রতিদিন ৫ লাখ যাত্রী বহন করতে সক্ষম হবে এবং প্রতি চার মিনিটে প্রতি স্টেশনে একটি করে ট্রেন আসবে। জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) মেট্রোরেল নির্মাণ করছে এবং প্রকল্পে সহজ শর্তে ঋণ সহায়তা দিচ্ছে। জাইকা প্রকল্পের জন্য ১৯ হাজার ৫০০ শত কোটি টাকা দিয়েছে। আওয়ামী লীগ সরকার ২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর রাজধানীর ওপর যানজটের চাপ কমাতে নানা উদ্যোগ নেয়। যানজট নিরসনে রাজধানীজুড়ে মেট্রো রেল নির্মাণের উদ্যোগের পাশাপাশি ফ্লাইওভার নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েসহ অনেকগুলো ফ্লাইওভারও দেশে যানজট নিরসনে ভূমিকা রাখছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এমআরটি লাইন-৫ এর নির্মাণকাজেরও উদ্বোধন করেন। এমআরটি-৫ এর আওতায় হেমায়েতপুর থেকে ভাটারা পর্যন্ত সাড়ে ১৩ কিলোমিটার পাতাল রেল আর সাড়ে ৬ কিলোমিটার উড়াল সড়ক নির্মাণ করা এমআরটি লাইন-৬ প্রকল্পটি ৩৩ হাজার ৪৭২ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা হচ্ছে। এর মধ্যে ১৯ হাজার ৭১৮ কোটি টাকা ঋণ সহায়তা দিচ্ছে জাইকা। বাকি ১৩ হাজার ৭৫৩ কোটি ৫২ লাখ টাকা বহন করছে বাংলাদেশ সরকার। মেট্রো রেল নির্মাণ প্রকল্পটি ২০১২ সালের ১৮ ডিসেম্বর একনেকে অনুমোদিত হয়। ২০১৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে জাইকার সাথে চুক্তি সই হয়। প্রথমে উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ২০ কিলোমিটার দীর্ঘ এমআরটি লাইন-৬ নির্মাণের কথা ছিল। যাত্রীদের সুবিধা বিবেচনায় সেটি কমলাপুর পর্যন্ত সম্প্রসারণ করতে অনুশাসন দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত দূরত্ব ১ দশমিক ৬ কিলোমিটার। বর্তমানে বর্ধিত অংশের অর্থাৎ মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত মেট্রো রেল সম্প্রসারণের কাজ চলছে। যদিও নির্মাণকাজের শুরুতে মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রো রেল নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছিল ২১ হাজার ৯৮৫ কোটি টাকা। উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ১৬টি স্টেশন রয়েছে। নির্মাণ ও আনুষঙ্গিক কিছু কাজ বাকি থাকায় প্রথম পর্যায়ে আগারগাঁও থেকে মতিঝিল পর্যন্ত সকালে ৭টা থেকে সাড়ে ১১টা পর্যন্ত চার ঘণ্টা চলবে। মতিঝিল থেকে আগারগাঁও অংশে শুধু মতিঝিল, সচিবালয় ও ফার্মগেট এই তিন স্টেশনে থামবে মেট্রো রেল। প্রতি ১০ মিনিট পরপর ট্রেন ছাড়বে। আপাতত বিজয় সরণি, কারওয়ান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্টেশনে মেট্রো রেল থামবে না। তবে আগারগাঁও থেকে উত্তরা পর্যন্ত আগের মতো রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত চলবে।
মেট্রো রেল উত্তরা থেকে পল্লবী, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, খামারবাড়ি, ফার্মগেট, শাহবাগ, টিএসসি, দোয়েল চত্বর হয়ে প্রেস ক্লাবের সামনে দিয়ে মতিঝিল পর্যন্ত যাবে। এ পথের দূরত্ব ২০ কিলোমিটচার। এই পথের স্টেশনগুলো হচ্ছেÑ উত্তরা উত্তর, উত্তরা সেন্টার, উত্তরা দক্ষিণ, পল্লবী, মিরপুর-১১, মিরপুর-১০, কাজীপাড়া, শেওড়াপাড়া, আগারগাঁও, বিজয় সরণি, ফার্মগেট, কারওরান বাজার, শাহবাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ সচিবালয় ও মতিঝিল। প্রতিটি ট্রেনে ২ হাজার ৩০৮ জন যাত্রীর ধারণক্ষমতা রয়েছে।
উত্তরা থেকে মতিঝিল পর্যন্ত ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ১০০ টাকা। উত্তরা থেকে পল্লবী ও মিরপুর-১১ পর্যন্ত ৩০ টাকা, মিরপুর-১০ ও কাজীপাড়া ৪০ টাকা, শেওড়াপাড়া ৫০ টাকা এবং আগারগাঁও পর্যন্ত ৬০ টাকা নির্ধারিত। মতিঝিল পর্যন্ত মেট্রো রেল চালু হওয়ায় উত্তরা থেকে আগারগাঁও-বিজয় সরণি পর্যন্ত ৬০ টাকা, ফার্মগেট ৭০ টাকা, কারওয়ান বাজার-শাহবাগ ৮০ টাকা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও প্রেস ক্লাব পর্যন্ত ৯০ টাকা এবং মতিঝিল পর্যন্ত ১০০ টাকা নির্ধারিত। বিপুলসংখ্যক যাত্রী মেট্রো রেলে যাতায়াত করার ফলে মেট্রো রেলের নিচে অবস্থিত সড়কে ছোট-বড় যানবাহনের সংখ্যা কমে আসবে। এতে একদিকে কর্মঘণ্টা বাঁচবে, অপরদিকে গাড়ির জ্বালানি এবং পরিচালন ও রক্ষণাবেক্ষণ খাতের ব্যয়ও কমে আসবে। সমীক্ষার সূত্রমতে, সময় সাশ্রয়ের কারণে দৈনিক ৮ কোটি ৩৮ লাখ টাকা এবং গাড়ির অপারেশন খরচ বাবদ আরো ১ কোটি ১৮ লাখ টাকা সাশ্রয় হবে, যা জিডিপির প্রবৃদ্ধি বাড়াতে সহায়ক হবে। তিনটি ধাপে মেট্রো রেলের নির্মাণকাজ শেষ হচ্ছে, প্রথম ধাপে উত্তরা থেকে আগারগাঁও পর্যন্ত, দ্বিতীয় ধাপে আগারগাঁও হতে মতিঝিল পর্যন্ত কাজ প্রায় শেষ এবং তৃতীয় ধাপে মতিঝিল থেকে কমলাপুর পর্যন্ত নির্মাণকাজ চলছে। ঢাকায় ২০৩০ সালের মধ্যে মোট ছয়টি রুটে মেট্রো রেল চালুর ঘোষণা রয়েছে। এর মধ্যে বিমানবন্দর থেকে কমলাপুর পর্যন্ত অংশের কাজ শুরু হয়ে গেছে। এই রুটটি যুক্ত করবে পূর্বাচলকেও। গাবতলী থেকে দাশেরকান্দি পর্যন্ত রুটটিতে অর্থায়ন চূড়ান্ত হয়েছে। অন্য দুটি রুট হলোÑ এমআরটি-৪ যেটি কমলাপুর থেকে যাবে নারায়ণগঞ্জের মদনপুরে এবং এমআরটি-২ যেটি গাবতলী থেকে নিউ মার্কেট হয়ে যাবে নারায়ণগঞ্জের ফুলকুঁড়ি। এটি যুক্ত করবে সদরঘাটকেও। আর এভাবেই ঢাকা নগরবাসীকে যানজট মুক্ত করবে স্বপ্নের মেট্রো রেল।