ঢাকা ০৬:৩০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

রাজশাহী ও চাপাইনবাবগঞ্জে দুইজনের প্রাণঘাতি হাতিটিকে যেভাবে ধরা হলো

পায়ের চাপায় পিষ্ট করে শিশুসহ দুই জনকে হত্যাকারী পাগলা হয়ে যাওয়া সার্কাসের হাতিটিকে ঢাকা থেকে আসা উদ্ধারকারী দল রাজশাহীর তানোরে উদ্ধার করেছে। বৃহস্পতিবার বেলা তিনটার দিকে চেতনানাশক ট্রাংকুলাইজার ব্যবহার করে হাতিটিকে অচেতন করে আটক করা হয়।
এর আগে বেলা একটার দিকে চেতনানাশক ট্রাংকুলাইজার ব্যবহার করে আটক করার পর হাতিটি শিকল ছিঁড়ে ছুটে গিয়েছিল।
হাতিটির আক্রমণে দুইজনের মৃত্যু হওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী হাতিটিকে ধরার পর নির্বিচার ঢিল ছুড়তে থাকেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ তিনজনকে আটক করে। হাতিটিকে তার মালিকের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বুধবার হাতিটির পায়ের চাপায় পিষ্ট হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের কিশোর মোবাশ্বির (১৩) মারা যায়। পরে হাতিটি পালিয়ে রাজশাহীর তানোরে চলে যায়। সেখানে হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে রামাপদ মুন্ডা (৩৮) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়। রামাপদ উপজেলার জুমারপাড়া গ্রামের ললিত মুন্ডার ছেলে।

ঢাকা থেকে আসা উদ্ধারকারী দল সকালে তানোরে যায়। ঘটনাস্থল তানোরের ধামধুম গ্রাম থেকে হাতিটি সরে গিয়ে বৈধ্যপুর কবরস্থানে অবস্থান নিয়েছে। হাতির আতঙ্কে ১০ গ্রামের মানুষ মাঠে নামতে পারেননি।

রাজশাহী বন বিভাগের বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন্য প্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, হাতিটি তারা ধরতে পেরেছেন। তবে প্রথমে ধারার ২০ মিনিট পর হাতিটি শিকল ছিঁড়ে ছুটে চলে যায়। এর প্রায় দুই ঘণ্টা পর চেতনানাশক ট্রাংকুলাইজার ব্যবহার করে হাতিটিকে অচেতন করা হয়। তখন হাজার হাজার মানুষ হাতিটিকে ঘিরে ধরে মারতে আসেন। তারা হাতিকে লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়তে থাকেন। এ অবস্থায় হাতিটি ফের ছুটে যেতে পারে, এমন আশঙ্কায় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তিনজনকে আটক করে।
তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিল্লাল হোসেন বলেন, আটক তিনজনকে পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। হাতিটির মালিকের বাড়ি বগুড়ার মহাস্থানগড় এলাকায়। মালিকের পক্ষে সাকিল হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে হাতিটি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে স্থানীয় লোকজন বলছেন, বাধাইড় ইউনিয়নের জুমারপাড়া, ধামধুম, ঝিনারপাড়া, ঝিনাইখোর, শিবরামপুর, ছাইদাড়া, তালুকদারপাড়া, খাগড়া কান্দর, ঘোলকন্দর ও বাধাইড় গ্রামের মানুষ হাতি নিয়ে আতঙ্কে ভুগছিলেন। বুধবার ও বৃস্পতিবার হাতিকে ধরতে পুরো উপজেলা প্রশাসন তানোরের ধামধুম গ্রামে অবস্থান নিয়েছিল। প্রথমে ফায়ার সার্ভিস থেকে পানি দিয়েও হাতিকে তাড়ানো যায়নি। চেতনানাশক ট্রাংকুলাইজারও লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

ট্যাগস :

রাজশাহী ও চাপাইনবাবগঞ্জে দুইজনের প্রাণঘাতি হাতিটিকে যেভাবে ধরা হলো

আপডেট সময় : ০৮:৫৭:৩১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ নভেম্বর ২০২৩

পায়ের চাপায় পিষ্ট করে শিশুসহ দুই জনকে হত্যাকারী পাগলা হয়ে যাওয়া সার্কাসের হাতিটিকে ঢাকা থেকে আসা উদ্ধারকারী দল রাজশাহীর তানোরে উদ্ধার করেছে। বৃহস্পতিবার বেলা তিনটার দিকে চেতনানাশক ট্রাংকুলাইজার ব্যবহার করে হাতিটিকে অচেতন করে আটক করা হয়।
এর আগে বেলা একটার দিকে চেতনানাশক ট্রাংকুলাইজার ব্যবহার করে আটক করার পর হাতিটি শিকল ছিঁড়ে ছুটে গিয়েছিল।
হাতিটির আক্রমণে দুইজনের মৃত্যু হওয়ায় ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী হাতিটিকে ধরার পর নির্বিচার ঢিল ছুড়তে থাকেন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ তিনজনকে আটক করে। হাতিটিকে তার মালিকের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।
বুধবার হাতিটির পায়ের চাপায় পিষ্ট হয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলের কিশোর মোবাশ্বির (১৩) মারা যায়। পরে হাতিটি পালিয়ে রাজশাহীর তানোরে চলে যায়। সেখানে হাতির পায়ে পিষ্ট হয়ে রামাপদ মুন্ডা (৩৮) নামের এক যুবকের মৃত্যু হয়। রামাপদ উপজেলার জুমারপাড়া গ্রামের ললিত মুন্ডার ছেলে।

ঢাকা থেকে আসা উদ্ধারকারী দল সকালে তানোরে যায়। ঘটনাস্থল তানোরের ধামধুম গ্রাম থেকে হাতিটি সরে গিয়ে বৈধ্যপুর কবরস্থানে অবস্থান নিয়েছে। হাতির আতঙ্কে ১০ গ্রামের মানুষ মাঠে নামতে পারেননি।

রাজশাহী বন বিভাগের বন্য প্রাণী ব্যবস্থাপনা ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বন্য প্রাণী পরিদর্শক জাহাঙ্গীর কবির বলেন, হাতিটি তারা ধরতে পেরেছেন। তবে প্রথমে ধারার ২০ মিনিট পর হাতিটি শিকল ছিঁড়ে ছুটে চলে যায়। এর প্রায় দুই ঘণ্টা পর চেতনানাশক ট্রাংকুলাইজার ব্যবহার করে হাতিটিকে অচেতন করা হয়। তখন হাজার হাজার মানুষ হাতিটিকে ঘিরে ধরে মারতে আসেন। তারা হাতিকে লক্ষ্য করে ঢিল ছুড়তে থাকেন। এ অবস্থায় হাতিটি ফের ছুটে যেতে পারে, এমন আশঙ্কায় পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে তিনজনকে আটক করে।
তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বিল্লাল হোসেন বলেন, আটক তিনজনকে পরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। হাতিটির মালিকের বাড়ি বগুড়ার মহাস্থানগড় এলাকায়। মালিকের পক্ষে সাকিল হোসেন নামের এক ব্যক্তিকে হাতিটি বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে স্থানীয় লোকজন বলছেন, বাধাইড় ইউনিয়নের জুমারপাড়া, ধামধুম, ঝিনারপাড়া, ঝিনাইখোর, শিবরামপুর, ছাইদাড়া, তালুকদারপাড়া, খাগড়া কান্দর, ঘোলকন্দর ও বাধাইড় গ্রামের মানুষ হাতি নিয়ে আতঙ্কে ভুগছিলেন। বুধবার ও বৃস্পতিবার হাতিকে ধরতে পুরো উপজেলা প্রশাসন তানোরের ধামধুম গ্রামে অবস্থান নিয়েছিল। প্রথমে ফায়ার সার্ভিস থেকে পানি দিয়েও হাতিকে তাড়ানো যায়নি। চেতনানাশক ট্রাংকুলাইজারও লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।