ঢাকা ০৭:৪৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০৭ ডিসেম্বর ২০২৩, ২৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

রামেক হাসপাতালে ৩ কোটি ৬২ লাখ টাকায় নির্মিত নতুন গাইনি ওটি’র কার্যক্রম শুরু

রোগীদের ক্রমবর্ধমান চাপ সামলিয়ে বাড়তি সেবা দিতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নতুন গাইনি অপারেশন থিয়েটার (ওটি) উদ্বোধনের প্রায় সাড়ে তিন মাস পর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রামেক হাসপাতালে ৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত গাইনি বিভাগের নতুন অপারেশন থিয়েটারটি উদ্বোধন করা হয়েছিল গত আগস্ট মাসের ২ তারিখে। কিন্তু যন্ত্রাংশের অভাবে তারা কর্যক্রম শরু করা সম্ভব হয়েছিলনা।

চলতি বছরের জুলাই মাসে এই ওটির অবকাঠামোগত নির্মাণ কাজ শেষ করে রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-২। শনিবার রামেক হাসপাতালের পরিচালক
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন ওটির কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
এ সময় শামীম আহাম্মদ বলেন, আজ গাইনি বিভাগের জন্য নতুন ওটির কার্যক্রম শুরু হলো। এর মধ্যে দিয়ে রামেক হাসপাতালের চিকিৎসাসেবার
মান আরেক ধাপ এগিয়ে গেল। কারণ রাজশাহীসহ গোটা উত্তরবঙ্গ এমন কী আশপাশের বিভাগের রোগীরাও এখানে সেবা নিতে আসেন। এসব রোগীদের
মধ্যে নারী রোগীর সংখ্যাই বেশি। গাইনি সংক্রান্ত বিভিন্ন সেবা গ্রহণের চাপও তাই অনেক বেশি।
তিনি আরও বলেন, এ হাসপাতালে গড়ে প্রতিদিন অর্ধশত প্রসূতি নারীর সিজার করা হয়। তাদের আগের অপারেশন থিয়েটার বেশ পুরোনো। এজন্য নতুন ওটির দাবি ছিল দীর্ঘ দিনের। যেখানে আধুনিক সব যন্ত্রপাতি থাকবে। তাই নতুন এ ওটি স্থাপন করা হয়েছে। এরইমধ্যে নতুন ওটির ৭০ শতাংশ চলে এসেছে। শিগগিরই শতভাগ যন্ত্রাংশই চলে আসবে। তাই স্বাস্থ্যসেবার মান আরও বাড়বে। এ সময় জানানো হয়, নতুন গাইনি ওটিতে প্রসূতি নারীদের অপারেশন (সিজার), স্ত্রী রোগের অপারেশন ও ল্যাপরোস্কোপিসহ বিভিন্ন ধরনের সার্জারি করা হবে।

রামেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে অনেক রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। তমধ্যে গড়ে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ নারীর ডেলিভারিসহ জটিল গাইনি অপারেশন করতে হয়। কিন্তু হাসপাতালে মাত্র একটি ওটি থাকায় গুরুতর রোগীদেরও দীর্ঘ সময় সিরিয়ালের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হতো। পাশাপাশি রোগীর চাপ বেশি থাকায় ডাক্তার-নার্সদেরও হিমশিম খেতে হত। এমন বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি পেতে ২০২২ সালে আধুনিক সুবিধা সংবলিত পৃথক গাইনি অপারেশন থিয়েটার নির্মাণের উদ্যোগ নেয় কর্তৃপক্ষ। নতুন এই ওটি’টি চালু হওয়ায় এখন রোগীদের আর দীর্ঘ সময় সিরিয়ালের জন্যঅপেক্ষা করতে হবেনা এবং ডাক্তার ও নার্সরাও সাচ্ছন্দে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এটি চালু হওয়ায় একদিকে যেমন বেশ কয়েকটি ওটি পাওয়া গেল সেই সঙ্গে চালু হলো লেপারেসকপি ও সপিস্টিকেটে (বিশেষ
অপারেশন) ওটি। এর আগে মাত্র একটি ওটিতে অপারেশন হওয়ার কারণে রোগীর চাপ সামাল দিতে কর্তৃপক্ষকে হিমশিম খেতে হচ্ছিল। এ ছাড়া লেপারেসকপি এবং সপিস্টিকেটে অপারেশন না হওয়া রোগীদের পাশাপাশি বিপাকে পড়তে হতো চিকিৎসকদের।
নতুন ওটির কার্যক্রম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা.
রোকেয়া খাতুন, অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসর ডা. নাহিদ সুলতানাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ডাক্তার, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। রাজশাহী গণপূর্ত-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী এ বি এম হুমায়ুন কবীর বলেন, রামেক হাসপাতালের গাইনি অপারেশন থিয়েটারের নির্মাণ কাজ ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে শুরু হয়। শেষ হয় চলতি বছরের জুলাই মাসে। এতে ব্যয় হয় ৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা। সব কাজ শেষে কর্তৃপক্ষের কাছে অপারেশন থিয়েটারটি হস্তান্তরও করা হয়েছে।

ট্যাগস :

রামেক হাসপাতালে ৩ কোটি ৬২ লাখ টাকায় নির্মিত নতুন গাইনি ওটি’র কার্যক্রম শুরু

আপডেট সময় : ১২:৫৫:৫৩ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৩

রোগীদের ক্রমবর্ধমান চাপ সামলিয়ে বাড়তি সেবা দিতে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতালে নতুন গাইনি অপারেশন থিয়েটার (ওটি) উদ্বোধনের প্রায় সাড়ে তিন মাস পর কার্যক্রম শুরু হয়েছে। রামেক হাসপাতালে ৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত গাইনি বিভাগের নতুন অপারেশন থিয়েটারটি উদ্বোধন করা হয়েছিল গত আগস্ট মাসের ২ তারিখে। কিন্তু যন্ত্রাংশের অভাবে তারা কর্যক্রম শরু করা সম্ভব হয়েছিলনা।

চলতি বছরের জুলাই মাসে এই ওটির অবকাঠামোগত নির্মাণ কাজ শেষ করে রাজশাহী গণপূর্ত বিভাগ-২। শনিবার রামেক হাসপাতালের পরিচালক
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এফ এম শামীম আহাম্মদ আনুষ্ঠানিকভাবে নতুন ওটির কার্যক্রম উদ্বোধন করেন।
এ সময় শামীম আহাম্মদ বলেন, আজ গাইনি বিভাগের জন্য নতুন ওটির কার্যক্রম শুরু হলো। এর মধ্যে দিয়ে রামেক হাসপাতালের চিকিৎসাসেবার
মান আরেক ধাপ এগিয়ে গেল। কারণ রাজশাহীসহ গোটা উত্তরবঙ্গ এমন কী আশপাশের বিভাগের রোগীরাও এখানে সেবা নিতে আসেন। এসব রোগীদের
মধ্যে নারী রোগীর সংখ্যাই বেশি। গাইনি সংক্রান্ত বিভিন্ন সেবা গ্রহণের চাপও তাই অনেক বেশি।
তিনি আরও বলেন, এ হাসপাতালে গড়ে প্রতিদিন অর্ধশত প্রসূতি নারীর সিজার করা হয়। তাদের আগের অপারেশন থিয়েটার বেশ পুরোনো। এজন্য নতুন ওটির দাবি ছিল দীর্ঘ দিনের। যেখানে আধুনিক সব যন্ত্রপাতি থাকবে। তাই নতুন এ ওটি স্থাপন করা হয়েছে। এরইমধ্যে নতুন ওটির ৭০ শতাংশ চলে এসেছে। শিগগিরই শতভাগ যন্ত্রাংশই চলে আসবে। তাই স্বাস্থ্যসেবার মান আরও বাড়বে। এ সময় জানানো হয়, নতুন গাইনি ওটিতে প্রসূতি নারীদের অপারেশন (সিজার), স্ত্রী রোগের অপারেশন ও ল্যাপরোস্কোপিসহ বিভিন্ন ধরনের সার্জারি করা হবে।

রামেক হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলা থেকে অনেক রোগী এই হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিতে আসেন। তমধ্যে গড়ে প্রতিদিন ৫০ থেকে ৬০ নারীর ডেলিভারিসহ জটিল গাইনি অপারেশন করতে হয়। কিন্তু হাসপাতালে মাত্র একটি ওটি থাকায় গুরুতর রোগীদেরও দীর্ঘ সময় সিরিয়ালের জন্য অপেক্ষায় থাকতে হতো। পাশাপাশি রোগীর চাপ বেশি থাকায় ডাক্তার-নার্সদেরও হিমশিম খেতে হত। এমন বিড়ম্বনা থেকে মুক্তি পেতে ২০২২ সালে আধুনিক সুবিধা সংবলিত পৃথক গাইনি অপারেশন থিয়েটার নির্মাণের উদ্যোগ নেয় কর্তৃপক্ষ। নতুন এই ওটি’টি চালু হওয়ায় এখন রোগীদের আর দীর্ঘ সময় সিরিয়ালের জন্যঅপেক্ষা করতে হবেনা এবং ডাক্তার ও নার্সরাও সাচ্ছন্দে তাদের দায়িত্ব পালন করতে পারবে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এটি চালু হওয়ায় একদিকে যেমন বেশ কয়েকটি ওটি পাওয়া গেল সেই সঙ্গে চালু হলো লেপারেসকপি ও সপিস্টিকেটে (বিশেষ
অপারেশন) ওটি। এর আগে মাত্র একটি ওটিতে অপারেশন হওয়ার কারণে রোগীর চাপ সামাল দিতে কর্তৃপক্ষকে হিমশিম খেতে হচ্ছিল। এ ছাড়া লেপারেসকপি এবং সপিস্টিকেটে অপারেশন না হওয়া রোগীদের পাশাপাশি বিপাকে পড়তে হতো চিকিৎসকদের।
নতুন ওটির কার্যক্রম উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের গাইনি বিভাগের প্রধান প্রফেসর ডা.
রোকেয়া খাতুন, অ্যাসিস্টেন্ট প্রফেসর ডা. নাহিদ সুলতানাসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ডাক্তার, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। রাজশাহী গণপূর্ত-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী এ বি এম হুমায়ুন কবীর বলেন, রামেক হাসপাতালের গাইনি অপারেশন থিয়েটারের নির্মাণ কাজ ২০২২ সালের ডিসেম্বর মাসে শুরু হয়। শেষ হয় চলতি বছরের জুলাই মাসে। এতে ব্যয় হয় ৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা। সব কাজ শেষে কর্তৃপক্ষের কাছে অপারেশন থিয়েটারটি হস্তান্তরও করা হয়েছে।