০৪:২৩ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

ডান-বামপন্থি দলগুলোর তুমুল বিরোধ রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি

সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি কী হবে সেটি নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে বামপন্থি এবং ডানপন্থি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তুমুল বিরোধ দেখা দিয়েছে। গতকাল রোববার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার ১৯তম দিনের বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকের শুরুতে পুলিশ কমিশন নিয়ে আলোচনা হয়। এরপর রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি নিয়ে আলোচনায় আসলে ডানপন্থি রাজনৈতিক দলগুলো এবং বামপন্থি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়।
সংবিধানের মূলনীতির ব্যাপারে কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে উল্লেখিত ৩টি মূলনীতি অর্থাৎ- সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার। এগুলোর সঙ্গে গণতন্ত্র এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতিকে মূলনীতি হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি বাহাত্তরের সংবিধানে থাকা অথবা পঞ্চম সংশোধনীতে যোগ হওয়া কোনো মূলনীতি যোগ হবে নাকি হবে না, এটা আগামী সংসদের এখতিয়ারের ওপরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
সিপিবি, ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ (মার্কসবাদী) সহ বেশ কয়েকটি বামপন্থি রাজনৈতিক দলের মতে, বাংলাদেশ এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হয়েছে। তার ভিত্তিতেই বাহাত্তরের সংবিধান প্রণয়ন করা হয়েছে। সেই মূলনীতি একেবারেই পরিবর্তন করা মানে মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা। বাহাত্তরের সংবিধানের মূলনীতির ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। কমিশন যদি এ ব্যাপারে তাদের ওপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয় তাহলে তারা কমিশনের সঙ্গে আর আলোচনা চালিয়ে না যাওয়ারও ঘোষণা দেন।
অপরদিকে বিএনপি, জামায়াত, এবি পার্টিসহ ডানপন্থি দলগুলো কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত। একই সঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সংবিধানে ‘আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা’র বিষয়টি সংযোজন করার প্রস্তাব দেন। এ ব্যাপারেও ডানপন্থি সব দলই ঐকমত্যে পৌঁছেছে। তবে মূলনীতির ব্যাপারে একটু ভিন্নমত এনসিপি। তাদের মতে, বাহাত্তরের সংবিধানের কোনো মূলনীতিই না রেখে নতুন করে যে বিষয়গুলো আসছে সেসবকেই মূলনীতি করা। ১৯তম দিনের বৈঠকে দুপুরের মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগে এসব বিষয় নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক বিতর্ক হয়। এ সময় কমিশনের সহ সভাপতি ড. আলী রীয়াজকেও উত্তেজিত হয়ে অনেক বক্তাকে থামাতে দেখা যায়।

জনপ্রিয় সংবাদ

মেঘনায় দুই লঞ্চের সংঘর্ষে ৮ জন নিহত

ডান-বামপন্থি দলগুলোর তুমুল বিরোধ রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি

আপডেট সময় : ০৭:২০:৪২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৮ জুলাই ২০২৫

সংবিধান অনুযায়ী রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি কী হবে সেটি নিয়ে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে বামপন্থি এবং ডানপন্থি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে তুমুল বিরোধ দেখা দিয়েছে। গতকাল রোববার রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় দফার ১৯তম দিনের বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকের শুরুতে পুলিশ কমিশন নিয়ে আলোচনা হয়। এরপর রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি নিয়ে আলোচনায় আসলে ডানপন্থি রাজনৈতিক দলগুলো এবং বামপন্থি রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে বিরোধ দেখা দেয়।
সংবিধানের মূলনীতির ব্যাপারে কমিশনের প্রস্তাব অনুযায়ী, স্বাধীনতার ঘোষণাপত্রে উল্লেখিত ৩টি মূলনীতি অর্থাৎ- সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার। এগুলোর সঙ্গে গণতন্ত্র এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা ও সম্প্রীতিকে মূলনীতি হিসেবে প্রস্তাব করা হয়েছে। পাশাপাশি বাহাত্তরের সংবিধানে থাকা অথবা পঞ্চম সংশোধনীতে যোগ হওয়া কোনো মূলনীতি যোগ হবে নাকি হবে না, এটা আগামী সংসদের এখতিয়ারের ওপরে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
সিপিবি, ওয়ার্কার্স পার্টি, বাসদ (মার্কসবাদী) সহ বেশ কয়েকটি বামপন্থি রাজনৈতিক দলের মতে, বাংলাদেশ এক রক্তক্ষয়ী সংগ্রামের মধ্য দিয়ে পাকিস্তান থেকে স্বাধীন হয়েছে। তার ভিত্তিতেই বাহাত্তরের সংবিধান প্রণয়ন করা হয়েছে। সেই মূলনীতি একেবারেই পরিবর্তন করা মানে মুক্তিযুদ্ধকে অস্বীকার করা। বাহাত্তরের সংবিধানের মূলনীতির ব্যাপারে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। কমিশন যদি এ ব্যাপারে তাদের ওপর সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয় তাহলে তারা কমিশনের সঙ্গে আর আলোচনা চালিয়ে না যাওয়ারও ঘোষণা দেন।
অপরদিকে বিএনপি, জামায়াত, এবি পার্টিসহ ডানপন্থি দলগুলো কমিশনের প্রস্তাবের সঙ্গে একমত। একই সঙ্গে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ সংবিধানে ‘আল্লাহর ওপর পূর্ণ আস্থা’র বিষয়টি সংযোজন করার প্রস্তাব দেন। এ ব্যাপারেও ডানপন্থি সব দলই ঐকমত্যে পৌঁছেছে। তবে মূলনীতির ব্যাপারে একটু ভিন্নমত এনসিপি। তাদের মতে, বাহাত্তরের সংবিধানের কোনো মূলনীতিই না রেখে নতুন করে যে বিষয়গুলো আসছে সেসবকেই মূলনীতি করা। ১৯তম দিনের বৈঠকে দুপুরের মধ্যাহ্নভোজের বিরতির আগে এসব বিষয় নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে ব্যাপক বিতর্ক হয়। এ সময় কমিশনের সহ সভাপতি ড. আলী রীয়াজকেও উত্তেজিত হয়ে অনেক বক্তাকে থামাতে দেখা যায়।