১২:৪৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৬, ১৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

বৃক্ষরোপণে জোর দুই সিটির

⦿ঢাকায় বনভূমি মাত্র ২ শতাংশ
⦿এ পর্যন্ত সোয়া লাখ বিভিন্ন জাতের গাছ রোপণ
⦿আরো কয়েক লাখ বৃক্ষরোপণের টার্গেট

শিল্পনগরী ঢাকায় দেশের যেকোনো অঞ্চলের থেকে তাপমাত্রা বেশি অনুভূত হয়। ফলে চলমান তাপদাহে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রাজধানীবাসীকে। গবেষণা বলছে, ঢাকার মতো জনবহুল শহরে ২০ শতাংশ বনভূমি থাকা উচিত হলেও, আছে মাত্র ২ শতাংশ। তবে পরিস্থিতি পরিবর্তনে বৃক্ষরোপণে জোর দিচ্ছে ঢাকার দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন। দুই সিটি করপোরেশন সূত্র বলছে, বিগত কয়েক বছরে সড়ক, খাল পাড় ও পার্কগুলোতে ১ লাখ ১৫ হাজার বিভিন্ন প্রাজতির গাছ রোপণ করা হয়েছে। এছাড়াও আরো কয়েক লাখ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপণ করা হবে বলে জানিয়েছে তারা।

 

 

আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী এনভায়রনমেন্টাল চ্যালেঞ্জে প্রকাশিত ‘ঢাকা নগরের সবুজ এলাকার বর্তমান অবস্থা ও ঐতিহাসিক পরিবর্তন’ শিরোনামের নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়, ১৯৮৯ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সময়ে ঢাকায় ৫৬ শতাংশ গাছপালা কমে গেছে। পরের বছরগুলোয় ঢাকায় গাছপালা নতুন করে বাড়েনি; বরং আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

 

 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের গবেষণা বলছে, এখন ঢাকার মাত্র ২ শতাংশ এলাকায় বনভূমি রয়েছে। আর এর ৭০ শতাংশই রয়েছে মিরপুর ও এর আশপাশের এলাকায়।

 

 

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) ২০২৩ সালের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ঢাকার সবুজ এলাকা সবচেয়ে বেশি কমেছে। ১৯৯৫ সালে ঢাকা শহরে সবুজ এলাকা ও ফাঁকা জায়গা ছিল ৫২ বর্গ কিলোমিটারে বেশি। পরের পাঁচ বছরে এটি বেড়ে ৬০ বর্গকিলোমিটার ছাড়িয়েছিল। কিন্তু এরপর কমতে থাকে। ২০১৫ সালে ঢাকা শহরে দুই সিটি করপোরেশন নতুন যুক্ত হওয়া ওয়ার্ডগুলো ছাড়া সবুজ এলাকা ও ফাঁকা জায়গা ছিল ৫৩ দশমিক ১১ বর্গ কিলোমিটার। ২০২৩ সালে তা কমে ২৯ দশমিক ৮৫ বর্গকিলোমিটারে দাঁড়িয়েছে।

 

 

 

এমন পরিস্থিতিতে ঢাকায় নতুন করে সবুজায়নে জোর দিয়েছে দুই সিটি করপোরেশন। সিটি এলাকাভুক্ত পার্ক, সড়কের ডিভাইডার ও খাল পাড়ে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপণ করছে তারা। শুধু গাছ রোপণই নয়, গাছ রক্ষণাবেক্ষণেও দেওয়া হয়েছে গুরুত্ব।

 

 

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসাইন জানান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত এলাকার যেসব খাল উদ্ধার করা হয়েছে সেসব খালের পাড়, সড়ক ডিভাইডার পার্কগুলোতে ৮০ হাজার বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপণ করা হয়েছে। আরো ১ লাখ ২০ হাজার গাছ রোপণ করা হবে। এছাড়া গাছ রক্ষণাবেক্ষণে ৪৮ জন মালি নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

 

 

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাসের জানান, গাছ রোপণ আমাদের একটি চলমান কার্যক্রম। বিগত ৪ বছরে দক্ষিণ সিটি এলাকায় পার্কগুলোতে ৩৫ হাজার গাছ রোপণ করা হয়েছে।

 

 

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন বস্তি এলাকা ও রাস্তার পাশে গাছ লাগানো শুরু করেছি। পর্যায়ক্রমে আরো গাছ লাগানো হবে। তবে নগরবাসীকে তাদের ছাদ, বারান্দা ও বাড়ির পাশের খালি জায়গাতেও গাছ লাগাতে হবে। সবার সম্মিলিত চেষ্টায় আমরা ঢাকার তাপমাত্রা কমাতে পারব বলে আশা করি।

বৃক্ষরোপণে জোর দুই সিটির

আপডেট সময় : ০৪:৩৫:৪০ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

⦿ঢাকায় বনভূমি মাত্র ২ শতাংশ
⦿এ পর্যন্ত সোয়া লাখ বিভিন্ন জাতের গাছ রোপণ
⦿আরো কয়েক লাখ বৃক্ষরোপণের টার্গেট

শিল্পনগরী ঢাকায় দেশের যেকোনো অঞ্চলের থেকে তাপমাত্রা বেশি অনুভূত হয়। ফলে চলমান তাপদাহে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে রাজধানীবাসীকে। গবেষণা বলছে, ঢাকার মতো জনবহুল শহরে ২০ শতাংশ বনভূমি থাকা উচিত হলেও, আছে মাত্র ২ শতাংশ। তবে পরিস্থিতি পরিবর্তনে বৃক্ষরোপণে জোর দিচ্ছে ঢাকার দক্ষিণ ও উত্তর সিটি করপোরেশন। দুই সিটি করপোরেশন সূত্র বলছে, বিগত কয়েক বছরে সড়ক, খাল পাড় ও পার্কগুলোতে ১ লাখ ১৫ হাজার বিভিন্ন প্রাজতির গাছ রোপণ করা হয়েছে। এছাড়াও আরো কয়েক লাখ বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপণ করা হবে বলে জানিয়েছে তারা।

 

 

আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান সাময়িকী এনভায়রনমেন্টাল চ্যালেঞ্জে প্রকাশিত ‘ঢাকা নগরের সবুজ এলাকার বর্তমান অবস্থা ও ঐতিহাসিক পরিবর্তন’ শিরোনামের নিবন্ধে উল্লেখ করা হয়, ১৯৮৯ থেকে ২০২০ সাল পর্যন্ত সময়ে ঢাকায় ৫৬ শতাংশ গাছপালা কমে গেছে। পরের বছরগুলোয় ঢাকায় গাছপালা নতুন করে বাড়েনি; বরং আরও কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।

 

 

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবিজ্ঞান বিভাগের গবেষণা বলছে, এখন ঢাকার মাত্র ২ শতাংশ এলাকায় বনভূমি রয়েছে। আর এর ৭০ শতাংশই রয়েছে মিরপুর ও এর আশপাশের এলাকায়।

 

 

বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্ল্যানার্সের (বিআইপি) ২০২৩ সালের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০১৫ সাল থেকে ২০২৩ সাল পর্যন্ত ঢাকার সবুজ এলাকা সবচেয়ে বেশি কমেছে। ১৯৯৫ সালে ঢাকা শহরে সবুজ এলাকা ও ফাঁকা জায়গা ছিল ৫২ বর্গ কিলোমিটারে বেশি। পরের পাঁচ বছরে এটি বেড়ে ৬০ বর্গকিলোমিটার ছাড়িয়েছিল। কিন্তু এরপর কমতে থাকে। ২০১৫ সালে ঢাকা শহরে দুই সিটি করপোরেশন নতুন যুক্ত হওয়া ওয়ার্ডগুলো ছাড়া সবুজ এলাকা ও ফাঁকা জায়গা ছিল ৫৩ দশমিক ১১ বর্গ কিলোমিটার। ২০২৩ সালে তা কমে ২৯ দশমিক ৮৫ বর্গকিলোমিটারে দাঁড়িয়েছে।

 

 

 

এমন পরিস্থিতিতে ঢাকায় নতুন করে সবুজায়নে জোর দিয়েছে দুই সিটি করপোরেশন। সিটি এলাকাভুক্ত পার্ক, সড়কের ডিভাইডার ও খাল পাড়ে বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপণ করছে তারা। শুধু গাছ রোপণই নয়, গাছ রক্ষণাবেক্ষণেও দেওয়া হয়েছে গুরুত্ব।

 

 

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসাইন জানান, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের আওতাভুক্ত এলাকার যেসব খাল উদ্ধার করা হয়েছে সেসব খালের পাড়, সড়ক ডিভাইডার পার্কগুলোতে ৮০ হাজার বিভিন্ন প্রজাতির গাছ রোপণ করা হয়েছে। আরো ১ লাখ ২০ হাজার গাছ রোপণ করা হবে। এছাড়া গাছ রক্ষণাবেক্ষণে ৪৮ জন মালি নিয়োগ প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

 

 

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের (ডিএসসিসি) জনসংযোগ কর্মকর্তা আবু নাসের জানান, গাছ রোপণ আমাদের একটি চলমান কার্যক্রম। বিগত ৪ বছরে দক্ষিণ সিটি এলাকায় পার্কগুলোতে ৩৫ হাজার গাছ রোপণ করা হয়েছে।

 

 

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের (ডিএনসিসি) মেয়র আতিকুল ইসলাম বলেন, আমরা ঢাকা শহরের বিভিন্ন বস্তি এলাকা ও রাস্তার পাশে গাছ লাগানো শুরু করেছি। পর্যায়ক্রমে আরো গাছ লাগানো হবে। তবে নগরবাসীকে তাদের ছাদ, বারান্দা ও বাড়ির পাশের খালি জায়গাতেও গাছ লাগাতে হবে। সবার সম্মিলিত চেষ্টায় আমরা ঢাকার তাপমাত্রা কমাতে পারব বলে আশা করি।