জুলাই জাতীয় সনদের খসড়ায় থাকা বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আপত্তি-মতামত তুলেছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে সংলাপে বসা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল। সেগুলো আমলে নিয়েছে কমিশন। রাজনৈতিক দলের দেওয়া আপত্তি-মতামত গুরুত্বে নিয়ে পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও ভাষাগত সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে জাতীয় ঐকমত্য কমিশন।
গতকাল বুধবার কমিশন নিজেদের মধ্যে এ বিষয়ে বৈঠক করে। সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়ে বলা হয়, দলগুলোর মতামত সমন্বয় করে খসড়ায় আবার সংশোধনী আনার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে কমিশন।
কমিশন সদস্য বদিউল আলম মজুমদার দেশ রূপান্তরকে বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর দেওয়া মতামত পর্যালোচনা চলছে। তাদের দেওয়া মতামতের যৌক্তিকতা সম্পর্কে বোঝার চেষ্টা করছি। সবগুলো রাজনৈতিক দল না হলেও কিছু দলের সঙ্গে খুব শিগগিরই আবার বসব জানিয়ে তিনি বলেন, বিশেষ করে জুলাই সনদকে সংবিধানের ওপরে প্রাধান্য দেওয়ার একটি বিষয় একাধিক দলের মতামতে এসেছে। সেটি আরও পরিষ্কার করার চেষ্টা করা হচ্ছে। এ সমস্ত কিছু বিষয় পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও ভাষাগত ত্রুটি বের করে সংশোধন করা হবে।
কমিশন সংশ্লিষ্ট আরেক সদস্য বলেন, জুলাই সনদ পরিবর্তন, পরিবর্ধন ও সংশোধনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। খসড়ার যে সব বিষয়ে দলগুলো আপত্তি তুলেছে সেগুলো নিয়ে বিশেষ করে অঙ্গীকারনামা ও পটভূমিতে যেসব বিষয়ে দলগুলোর আপত্তি রয়েছে সেগুলোর ভাষাগত পরিবর্তন করা হবে।
গত ১৬ আগস্ট ৩০টি রাজনৈতিক দল ও জোটের কাছে জুলাই জাতীয় সনদ-২০২৫ এর পূর্ণাঙ্গ সমন্বিত খসড়া রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে পাঠায় জাতীয় ঐকমত্য কমিশন। এর মধ্যে ইসলামী ঐক্যজোট ছাড়া ২৯টি দল ও জোট তাদের মতামত কমিশনে পাঠিয়েছে। দলগুলোর মতামতের সারসংক্ষেপ নিয়ে বুধবার বৈঠক করে ঐকমত্য কমিশন।
ঐকমত্য কমিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, সভায় জুলাই জাতীয় সনদের সমন্বিত খসড়ার ওপর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের কাছ থেকে প্রাপ্ত মতামতগুলো নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয়। জাতীয় সনদে কীভাবে এসব মতামতের প্রতিফলন ঘটানো যায় তা বিশ্লেষণ করা হয়। মতামতগুলোকে যথাযথ গুরুত্ব দিয়ে জাতীয় সনদের চূড়ান্ত রূপ নির্ধারণ এবং প্রয়োজনীয় আইনি ও নীতিগত কাঠামো গঠনের বিষয়েও আলোচনা হয়। পাশাপাশি সনদ বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে সরকার সামনে সম্ভাব্য বিকল্পগুলোও বৈঠকে আলোচিত হয়।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ বলেন, রাজনৈতিক দলগুলোর আপত্তি ও পরামর্শগুলো গুরুত্ব দিয়ে পুনর্বিবেচনা করছে কমিশন। যাতে সমন্বিতভাবে সবার মতামতের প্রতিফলন ঘটানো যায় এবং একই সঙ্গে সনদের আইনি ও সাংবিধানিক দিকও বিবেচনায় থাকে।
অধ্যাপক আলী রীয়াজ ছাড়াও বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন কমিশনের সদস্য সফর রাজ হোসেন, বিচারপতি মো. এমদাদুল হক, ড. বদিউল আলম মজুমদার, ড. ইফতেখারুজ্জামান, ড. মো. আইয়ুব মিয়া এবং ঐকমত্য গঠন প্রক্রিয়ায় যুক্ত প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী মনির হায়দার।




















