রাজধানীর বিভিন্ন ছবি ও ফ্রেম বাঁধাই দোকানে দেখা যাচ্ছে নতুন এক দৃশ্য। আগে যেখানে দোকানগুলোতে শোভা পেত বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বড় বড় ছবি, সেখানে এখন জায়গা নিচ্ছেন বিএনপি নেতারা। দোকানের তাকজুড়ে শোভা পাচ্ছে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া, শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান ও তারেক রহমানের ফ্রেমবন্দি প্রতিকৃতি।
দোকানিদের নীরবতা
এ বিষয়ে মতামত জানতে চাইলে অনেক দোকান মালিকই প্রকাশ্যে কিছু বলতে রাজি হননি। তবে একটি ফ্রেম দোকানের মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, “আমরা বাজারে যেটার চাহিদা থাকে, সেটাই রাখি। মানুষ যা বেশি কিনতে চায়, সেটাই বেশি শোভা পায়।”
সম্ভাব্য রাজনৈতিক ইঙ্গিত
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন, ২০২৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে জনগণের মধ্যে পরিবর্তনের পূর্বাভাস দোকানগুলোর এই ছবি বিন্যাসে প্রতিফলিত হচ্ছে। অনেকের ধারণা, বিএনপি আগামী নির্বাচনে ক্ষমতায় আসতে পারে—এমন প্রত্যাশা থেকেই সাধারণ মানুষ এবং ব্যবসায়ীরা নেতাদের প্রতিকৃতির প্রতি ঝুঁকছেন।

বিশ্লেষকদের মন্তব্য
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক রাজনৈতিক বিশ্লেষক বলেন, “ফ্রেম দোকানে নেতাদের ছবি কোনটি বেশি বিক্রি হচ্ছে, তা আসলে জনমতের সূক্ষ্ম প্রতিফলন। এটি সরাসরি রাজনীতির মাপকাঠি নয়, তবে একটি প্রবণতা বোঝায়।” এবার যদিও এবার নতুন ভোটারদের পছন্দের তালিকায় কোন দল সেটা এখনই বলা মুসকিল। নতুন ভোটার এমন অনেকের সঙ্গে কথা তারা জানান, দোকানে দোকানে যেহেতু নেতাদের ছবি শোভা পাচ্ছে তাহলে এটি নিছক অবাস্তব কিছু নয়।
এদিকে, নাম প্রকাশে একজন সাবেক নির্বাচন পর্যবেক্ষক যুক্ত করেন, “দোকানিরা সবসময় ব্যবসার স্বার্থে জনমানুষের চাহিদার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলে। তাই এখানে জনগণের মনোভাবের প্রতিফলন থাকলেও এটি চূড়ান্ত নয়। তবে পরিবর্তনের ইঙ্গিত অবশ্যই আছে।”
পরিবর্তনের প্রতীক?
রাজনৈতিক সচেতন মহল বলছে, দোকানের দেওয়ালে টানানো ছবি শুধু সাজসজ্জা নয়, এটি জনমতেরও প্রতিফলন। আগে আওয়ামী লীগের নেতাদের ছবি ছিল সর্বাধিক দৃশ্যমান, এখন তা ক্রমে প্রতিস্থাপিত হচ্ছে বিএনপি নেতাদের প্রতিকৃতিতে।
এই পরিবর্তন সাময়িক নাকি দীর্ঘস্থায়ী—তা নির্ভর করবে আগামী নির্বাচনের ফলাফলের ওপর। তবে আপাতত রাজধানীর ফ্রেম বাজারে বিএনপি নেতাদের ছবি যেন এক ধরনের “রাজনৈতিক ইঙ্গিত” হিসেবেই প্রতীয়মান হচ্ছে।
এমআর/সবা

























