০৩:৫৭ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৬, ১৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
সবুজ বাংলায় খবর প্রকাশের জের

স্ট্যান্ড রিলিজ রেলওয়ে ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা দীপংকর

দীর্ঘদিন ধরে নানা অভিযোগের পাহাড় মাথায় নিয়ে অবশেষে স্ট্যান্ড রিলিজ হলেন বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা দীপংকর তঞ্চঙ্গ্যা। দুর্নীতি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় তাকে ১৭ সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ট্রেনিং একাডেমিতে বদলি করা হয়। এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হয় স্মারক নং- ০৫.০০.০০০০.১৩২.১৯.০০২.২৫-১০৬৫ মূলে।

এর আগে ১০ আগস্ট জাতীয় দৈনিক সবুজ বাংলায় প্রকাশিত “ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ” শিরোনামের প্রতিবেদনে দীপংকর তঞ্চঙ্গ্যার নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য উঠে আসে। সংবাদটি প্রকাশের পর রেল অঙ্গনে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। বিষয়টি পৌঁছে যায় রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক, মহাপরিচালক, সচিবসহ উর্ধ্বতন পর্যায়ে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হলে প্রমাণিত হয় তার অনৈতিক কর্মকাণ্ড।

সূত্র জানায়, বদলির খবর ছড়িয়ে পড়লে অনেক ভুক্তভোগী আনন্দে মিষ্টি বিতরণ করেন। বদলির একদিন আগেও ২৩ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তিনি অফিসে বসে নানা বাণিজ্যিক লাইসেন্সে ব্যাকডেট দিয়ে স্বাক্ষর করেন এবং বড় অংকের অর্থ লেনদেন সম্পন্ন করেন। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করেছেন প্রধান সহকারী ইসতিয়াক আহমেদ, ট্রেসার কাউসার হাফিজ ও অফিস সহকারী জিন্নাতুন নুর নাহার।

অভিযোগ রয়েছে, বান্দরবনের রোয়াংছড়ি উপজেলায় তিনি নির্মাণ করেছেন বিলাসবহুল বাড়ি এবং ব্যক্তিগত নামে ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন। সরকারি কর্মচারী আচরণবিধি ভেঙে পছন্দের ঠিকাদারকে টেন্ডারের গোপন তথ্য দিয়েছেন এবং বিভিন্ন স্থানের ভূমি লিজ দিতে ঘুষ নিয়েছেন। প্রতি সোমবার “শুনানি”র নামে দুই পক্ষ বা তিন পক্ষকে ডেকে ভুয়া নিষ্পত্তির আয়োজন করতেন, যা দুর্নীতির অন্যতম কৌশল হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

এদিকে, রেলওয়ের উচ্ছেদ অভিযান, বাণিজ্যিক লাইসেন্স, কৃষি লাইসেন্স, জলাশয় ইজারা ও গুদাম ভাড়াসহ বিভিন্ন খাতে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীদের অনেকে অভিযোগ করেন, অফিসের তিন কর্মকর্তা—ইসতিয়াক আহমেদ, কাউসার হাফিজ ও জিন্নাতুন নুর নাহার—মিলে পুরো অফিসকে প্রভাবিত করে রেখেছিলেন। অর্থের বিনিময়ে তারা নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে ভূমি সংক্রান্ত কাজ সম্পন্ন করতেন।

একজন ভুক্তভোগী বলেন, “এই তিনজন ছাড়া অফিসে কোনো কাজ সম্ভব ছিল না। যেদিকে টাকা পেতেন সেদিকেই নিয়ম মানা ছাড়াই ফাইল পাশ করতেন। এদের না সরালে দুর্নীতি বন্ধ হবে না।”

সূত্র জানায়, বদলির আদেশ ঠেকাতে দীপংকর তঞ্চঙ্গ্যা সরকারের উচ্চপর্যায়ে তদবিরও চালান, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি ব্যর্থ হন। ফলে তার দীর্ঘদিনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়ে তাকে বর্তমান দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো।

এমআর/সবা

সবুজ বাংলায় খবর প্রকাশের জের

স্ট্যান্ড রিলিজ রেলওয়ে ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা দীপংকর

আপডেট সময় : ০৪:১৭:০৪ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫

দীর্ঘদিন ধরে নানা অভিযোগের পাহাড় মাথায় নিয়ে অবশেষে স্ট্যান্ড রিলিজ হলেন বাংলাদেশ রেলওয়ের বিভাগীয় ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তা দীপংকর তঞ্চঙ্গ্যা। দুর্নীতি ও অনৈতিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত থাকার প্রমাণ মেলায় তাকে ১৭ সেপ্টেম্বর জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের ট্রেনিং একাডেমিতে বদলি করা হয়। এ সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন জারি হয় স্মারক নং- ০৫.০০.০০০০.১৩২.১৯.০০২.২৫-১০৬৫ মূলে।

এর আগে ১০ আগস্ট জাতীয় দৈনিক সবুজ বাংলায় প্রকাশিত “ভূ-সম্পত্তি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ” শিরোনামের প্রতিবেদনে দীপংকর তঞ্চঙ্গ্যার নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির তথ্য উঠে আসে। সংবাদটি প্রকাশের পর রেল অঙ্গনে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়। বিষয়টি পৌঁছে যায় রেলওয়ের মহাব্যবস্থাপক, মহাপরিচালক, সচিবসহ উর্ধ্বতন পর্যায়ে। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু হলে প্রমাণিত হয় তার অনৈতিক কর্মকাণ্ড।

সূত্র জানায়, বদলির খবর ছড়িয়ে পড়লে অনেক ভুক্তভোগী আনন্দে মিষ্টি বিতরণ করেন। বদলির একদিন আগেও ২৩ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ১১টা পর্যন্ত তিনি অফিসে বসে নানা বাণিজ্যিক লাইসেন্সে ব্যাকডেট দিয়ে স্বাক্ষর করেন এবং বড় অংকের অর্থ লেনদেন সম্পন্ন করেন। এ কাজে তাকে সহযোগিতা করেছেন প্রধান সহকারী ইসতিয়াক আহমেদ, ট্রেসার কাউসার হাফিজ ও অফিস সহকারী জিন্নাতুন নুর নাহার।

অভিযোগ রয়েছে, বান্দরবনের রোয়াংছড়ি উপজেলায় তিনি নির্মাণ করেছেন বিলাসবহুল বাড়ি এবং ব্যক্তিগত নামে ফ্ল্যাট ক্রয় করেছেন। সরকারি কর্মচারী আচরণবিধি ভেঙে পছন্দের ঠিকাদারকে টেন্ডারের গোপন তথ্য দিয়েছেন এবং বিভিন্ন স্থানের ভূমি লিজ দিতে ঘুষ নিয়েছেন। প্রতি সোমবার “শুনানি”র নামে দুই পক্ষ বা তিন পক্ষকে ডেকে ভুয়া নিষ্পত্তির আয়োজন করতেন, যা দুর্নীতির অন্যতম কৌশল হয়ে দাঁড়িয়েছিল।

এদিকে, রেলওয়ের উচ্ছেদ অভিযান, বাণিজ্যিক লাইসেন্স, কৃষি লাইসেন্স, জলাশয় ইজারা ও গুদাম ভাড়াসহ বিভিন্ন খাতে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। ভুক্তভোগীদের অনেকে অভিযোগ করেন, অফিসের তিন কর্মকর্তা—ইসতিয়াক আহমেদ, কাউসার হাফিজ ও জিন্নাতুন নুর নাহার—মিলে পুরো অফিসকে প্রভাবিত করে রেখেছিলেন। অর্থের বিনিময়ে তারা নিয়ম-নীতি উপেক্ষা করে ভূমি সংক্রান্ত কাজ সম্পন্ন করতেন।

একজন ভুক্তভোগী বলেন, “এই তিনজন ছাড়া অফিসে কোনো কাজ সম্ভব ছিল না। যেদিকে টাকা পেতেন সেদিকেই নিয়ম মানা ছাড়াই ফাইল পাশ করতেন। এদের না সরালে দুর্নীতি বন্ধ হবে না।”

সূত্র জানায়, বদলির আদেশ ঠেকাতে দীপংকর তঞ্চঙ্গ্যা সরকারের উচ্চপর্যায়ে তদবিরও চালান, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তিনি ব্যর্থ হন। ফলে তার দীর্ঘদিনের দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নিয়ে তাকে বর্তমান দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দেওয়া হলো।

এমআর/সবা