০৪:০৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৬, ১৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মিরপুরের ঝিলপাড় বস্তিতে আগুন

কবুতরসহ ঘর-বাড়ি পুড়ে ছাই

রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী এলাকার ঝিলপাড় বস্তিতে অগ্নিকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। মুহুর্তের মধ্যে পুরো বস্তিতে আগুন ছড়িয়ে পড়লে আশপাশে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে একে একে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ৮টি ইউনিট ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে টানা দেড়ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে সবুজ বাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার লিমা খানম।

তিনি বলেন, গতকাল দুপুর পৌনে ১টায় মিরপুরের ১২ নম্বর সেকশনের পল্লবী থানাধীন ঝিলপাড় বস্তিতে আগুন লাগে। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা আগুন নেভানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে তারা বিষয়টি আমাদের কন্ট্রোল রুমকে জানায়। আমরা দুপুর ১২টা ৫৭ মিনিটে আগুন লাগার খবর পাই। এরপর মিরপুর ক্যান্টনমেন্টসহ বিভিন্ন স্টেশন থেকে একে একে ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছে টানা একঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে দুপুর ২টার দিকে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। তবে একে হতাহতের কোনো খবর মেলেনি। আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও জানাতে পারেননি লিমা খানম।

এদিকে বস্তির বাসিন্দা ও পরিচালক মো. বিসু মিয়া বলেন, এখানে অধিকাংশ মানুষজন কবুতর লালন-পালন করত। এসব কবুতর বাণিজ্যিকভাবে পালন করা হতো। অনেক দামি-দামি কবুতর ছিল। আগুন লাগার পর কিছু-কিছু কবুতরের খাঁচা বের করা সম্ভব হলেও কিছু কবুতর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আর ভেতরে থাকা কবুতরের খাঁচাগুলো বের করা যায়নি। সেগুলো সেখানেই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সিফাত হোসেন নামের একজন বলেন, দুপুরে কাজের জন্য বাইরে ছিলাম। আমারও ৫ জোড়া কবুতর ছিল। এগুলোর মধ্যে এক জোড়া সরাতে পেরেছি। বাকি ৪টি খাঁচা সরাতে পারিনি। আমি বাণিজ্যিকভাবে এই কবুতর বেচাকেনা করতাম। শুধু আমি নই, এখানে অনেকেই কবুতর পালত। অনেক বড় ক্ষতি হয়েছে। শতাধিক ঘরবাড়িসহ জিনিসপত্র এবং টাকা-পয়সার সঙ্গে এই কবুতরগুলোও আগুনে পুড়ে মারা গেছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বিষয়ুটি নিশ্চিত করে সবুজ বাংলাকে বলেন, আজ দুপুর ১২টা ৫৭ মিনিটে মিরপুর-১২ নম্বর সেকশনের পল্লবী থানার ঝিলপাড় বস্তিতে আগুন লাগার সংবাদ পাই। এরপর মিরপুর, পল¬বী এবং কুর্মিটোলা ফায়ার স্টেশন থেকে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে আসেন। আগুন নেভাতে আমরা অনবরত চেষ্টা চালাতে থাকি। আগুন লাগার খবরে ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। পরে একযোগে কাজ করে দুপুর আড়াইটার দিকে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে এ ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি তদন্ত সাপেক্ষে জানা যাবে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা।

এদিকে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রাজধানীর মিরপুর-১২ নম্বরের ঝিলপাড় বস্তিতে আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। এরপর ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার ফাইটারদের সঙ্গে একযোগে কাজ করে সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

উল্লেখ্য, গত বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর মিরপুর-১৪ নম্বরে বাগানবাড়ি বস্তিতে আগুন লাগে। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট প্রায় আধা ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। ওই ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও বস্তির প্রায় ৩০টির মতো বাড়িঘর পুড়ে যায়।

 

 

স/মিফা

মিরপুরের ঝিলপাড় বস্তিতে আগুন

আপডেট সময় : ০৭:১০:০৪ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২০ ফেব্রুয়ারী ২০২৪

রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী এলাকার ঝিলপাড় বস্তিতে অগ্নিকাণ্ড সংঘটিত হয়েছে। মুহুর্তের মধ্যে পুরো বস্তিতে আগুন ছড়িয়ে পড়লে আশপাশে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়। খবর পেয়ে একে একে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ৮টি ইউনিট ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে টানা দেড়ঘন্টার চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়েছে। গতকাল সোমবার বিকেলে সবুজ বাংলাকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স সদর দপ্তরের নিয়ন্ত্রণ কক্ষের ডিউটি অফিসার লিমা খানম।

তিনি বলেন, গতকাল দুপুর পৌনে ১টায় মিরপুরের ১২ নম্বর সেকশনের পল্লবী থানাধীন ঝিলপাড় বস্তিতে আগুন লাগে। আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে স্থানীয়রা আগুন নেভানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়। পরে তারা বিষয়টি আমাদের কন্ট্রোল রুমকে জানায়। আমরা দুপুর ১২টা ৫৭ মিনিটে আগুন লাগার খবর পাই। এরপর মিরপুর ক্যান্টনমেন্টসহ বিভিন্ন স্টেশন থেকে একে একে ফায়ার সার্ভিসের ৮টি ইউনিট ও সেনাবাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌছে টানা একঘন্টা চেষ্টা চালিয়ে দুপুর ২টার দিকে আগুন নেভাতে সক্ষম হয়। তবে একে হতাহতের কোনো খবর মেলেনি। আগুন লাগার কারণ ও ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণও জানাতে পারেননি লিমা খানম।

এদিকে বস্তির বাসিন্দা ও পরিচালক মো. বিসু মিয়া বলেন, এখানে অধিকাংশ মানুষজন কবুতর লালন-পালন করত। এসব কবুতর বাণিজ্যিকভাবে পালন করা হতো। অনেক দামি-দামি কবুতর ছিল। আগুন লাগার পর কিছু-কিছু কবুতরের খাঁচা বের করা সম্ভব হলেও কিছু কবুতর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। আর ভেতরে থাকা কবুতরের খাঁচাগুলো বের করা যায়নি। সেগুলো সেখানেই পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। সিফাত হোসেন নামের একজন বলেন, দুপুরে কাজের জন্য বাইরে ছিলাম। আমারও ৫ জোড়া কবুতর ছিল। এগুলোর মধ্যে এক জোড়া সরাতে পেরেছি। বাকি ৪টি খাঁচা সরাতে পারিনি। আমি বাণিজ্যিকভাবে এই কবুতর বেচাকেনা করতাম। শুধু আমি নই, এখানে অনেকেই কবুতর পালত। অনেক বড় ক্ষতি হয়েছে। শতাধিক ঘরবাড়িসহ জিনিসপত্র এবং টাকা-পয়সার সঙ্গে এই কবুতরগুলোও আগুনে পুড়ে মারা গেছে।
ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদপ্তরের মিডিয়া সেলের কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বিষয়ুটি নিশ্চিত করে সবুজ বাংলাকে বলেন, আজ দুপুর ১২টা ৫৭ মিনিটে মিরপুর-১২ নম্বর সেকশনের পল্লবী থানার ঝিলপাড় বস্তিতে আগুন লাগার সংবাদ পাই। এরপর মিরপুর, পল¬বী এবং কুর্মিটোলা ফায়ার স্টেশন থেকে ফায়ার সার্ভিস কর্মীরা ঘটনাস্থলে আসেন। আগুন নেভাতে আমরা অনবরত চেষ্টা চালাতে থাকি। আগুন লাগার খবরে ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। পরে একযোগে কাজ করে দুপুর আড়াইটার দিকে আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়। তবে এ ঘটনায় হতাহতের কোনো খবর পাওয়া যায়নি। ভয়াবহ এ অগ্নিকাণ্ডের কারণ ও ক্ষয়ক্ষতি তদন্ত সাপেক্ষে জানা যাবে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা।

এদিকে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, রাজধানীর মিরপুর-১২ নম্বরের ঝিলপাড় বস্তিতে আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসকে সহায়তায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়। এরপর ফায়ার সার্ভিসের ফায়ার ফাইটারদের সঙ্গে একযোগে কাজ করে সেনাবাহিনীর সদস্যরা।

উল্লেখ্য, গত বুধবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে রাজধানীর মিরপুর-১৪ নম্বরে বাগানবাড়ি বস্তিতে আগুন লাগে। পরে খবর পেয়ে ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিট প্রায় আধা ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। ওই ঘটনায় কেউ হতাহত না হলেও বস্তির প্রায় ৩০টির মতো বাড়িঘর পুড়ে যায়।

 

 

স/মিফা