⏺সারা দেশে পাঁচ শতাধিক ইফতার মাহফিলের প্রস্তুতি
⏺প্রথম দিনে ঢাকায় এতিম-আলেমদের নিয়ে ইফতার
পবিত্র রমজান মাসকে ঘিরে বরাবরের মত এবারও ইফতার রাজনীতিতে মনযোগ দিয়েছে বিএনপি। কেন্দ্র থেকে তৃণমুল পর্যায়ে ইফতার মাহফিল আয়োজনের পাশাপাশি নানা কর্মসূচিতে ব্যস্ত থাকবে দলটি। কেন্দ্রীয়ভাবে ঢাকায় কয়েকটি ছাড়াও জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে দলীয়ভাবে বিএনপির পাঁচ শতাধিক ইফতার আয়োজনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানা গেছে। সূত্রমতে, এসব ইফতারে গুরুত্ব পাবেন চলমান আন্দোলনে নির্যাতিত নেতাকর্মী এবং তাদের পরিবারের সদস্যরা। কেন্দ্রীয়ভাবে এতিম, রাজনীতিবিদ, কূটনীতিক, পেশাজীবী এবং গুম-খুন নির্যাতনের শিকার নেতাকর্মীদের পরিবারের সদস্যদের সম্মানে ইফতার আয়োজন করা হবে।
দীর্ঘদিনের দলীয় রীতি অনুযায়ী গতকাল মঙ্গলবার প্রথম রোজায় এতিম ও আলেমদের সম্মানে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে বিএনপি। এরমধ্য দিয়েই মূলত দলটির ইফতার কর্মসূচি শুরু হলো। রাজধানীর ইস্কাটনে লেডিট ক্লাবে আয়োজিত এ ইফতারে প্রধান অতিথি হিসেবে ভাচুয়ালি যুক্ত হন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের সভাপতিত্বে এ ইফতারের বিএনপির সিনিয়র নেতৃবৃন্দ, আলেম-ওলামা ও এতিম শিশুরা অংশ নেন।
ইফতার মাহফিলের পাশাপাশি সাজাপ্রাপ্ত, কারাবন্দি এবং অসহায় নেতাকর্মীদের পরিবারের জন্য দলের পক্ষ থেকে পাঠানো হবে ইফতারসামগ্রী। রোজার মাসে রাজপথে তেমন কোনো কর্মসূচি না থাকলেও বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ইস্যুতে লিফলেট বিতরণের মতো কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে বলে বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন।
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেন, সরকারদলীয় লোকদের লুটপাট ও নিত্যপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধির কারণে দেশের মানুষ কষ্টে আছে। এ পরিস্থিতিতে জনগণের দল হিসেবে বিএনপি রমজানেও সাধ্যমতো জনগণের পাশে থাকবে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকে বিএনপিতে নানামুখী সংকট দেখা দিয়েছে। ক্ষোভ ও হতাশা তৈরি হয়েছে সংগঠনের তৃণমূলে। অনেক জায়গায় কমিটি হালনাগাদ ও পুনর্গঠন না হওয়ায় সাংগঠনিক স্থবিরতা দেখা দিয়েছে। আর সাংগঠনিক এসব সংকট উত্তরণে রোজার মাসকে কাজে লাগাতে চায় দলটি। পাশাপাশি ইফতার মাহফিলের মাধ্যমে তৃণমূলের নেতাকর্মীদের চাঙ্গা করতে চান নেতারা।
জানা গেছে, রোজার মাসে বিএনপির সিনিয়র নেতারা তৃণমূলে যাবেন। নিজের এলাকা ছাড়াও অন্যান্য জেলায় যাবেন গুরুত্বপূর্ণ নেতারা। এ সময় তারা স্থানীয় বিএনপি ও অঙ্গ-সংগঠনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে কথা বলে সার্বিক পরিস্থিতি সম্পর্কে অবগত হবেন। নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত রাখতে বিভিন্ন অঙ্গ-সংগঠনের কমিটি পূর্ণাঙ্গ ও পুনর্গঠনের চেষ্টা করছে বিএনপি। পাশাপাশি বিভিন্ন মিত্র দল এবং জোটের উদ্যোগে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে বিএনপির সিনিয়র নেতারা অংশগ্রহণ করবেন। এভাবে পুরো রমজান মাসেই ঘরোয়া রাজনীতি আর ধর্মীয় কর্মকাণ্ডে ব্যস্ত থাকবেন দলটির নেতাকর্মীরা। সব মিলিয়ে রোজার মাসকে দল গোছানোর জন্য সাংগঠনিক মাস হিসেবে নিচ্ছে দলটির হাইকমান্ড। সম্প্রতি এ নিয়ে দলের জাতীয় স্থায়ী কমিটি, সাংগঠনিক টিম এবং ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে পৃথক ভার্চুয়াল বৈঠক করেছেন দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে হামলা-মামলা এবং গ্রেপ্তার-হয়রানিতে বিপর্যস্ত বিএনপির নেতাকর্মীরা। বিশেষ করে তৃণমূলের অসংখ্য নেতাকর্মীর পারিবারিক স্বাভাবিক জীবন বিঘ্ন হচ্ছে। অনেকের ব্যবসা-বাণিজ্য বন্ধের উপক্রম। এসবের মধ্যেও সারা দেশে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ রেখে সাংগঠনিক শক্তি মজবুত করতে চায় বিএনপি। দলটির নীতিনির্ধারকদের মতে, রমজানকেন্দ্রিক সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডে সরকার নমনীয় থাকবে। তাই রমজানে ইফতার মাহফিলের পাশাপাশি বিভিন্ন ইউনিট কমিটি পুনর্গঠনে কাজ করা হবে।




















