০৩:২০ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ০১ জানুয়ারী ২০২৬, ১৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

সুদিন ফিরছে সোনালি আঁশে

◉ বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসছে বন্ধ থাকা ২০টি পাটকল
◉ বৈশ্বিক রপ্তানি আয়ের ৭২ শতাংশ এখন বাংলাদেশের দখলে
◉ সবক’টি মিল চালু হলে ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে

❖নতুন পাটকল উৎপাদনে এলে বরং এটি আমাদের জন্য ইতিবাচক একটি প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরি হবে- আবদুল বারেক খান, মহাসচিব, বিজেএমএ   

❖পরিবেশবান্ধব পাট ও পাটপণ্যের চাহিদা মেটাতে ও পাটকে বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি- কৃষিবিদ ড. মো. আল-মামুন, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট

 

 

 

সুদিন ফিরছে সোনালি আঁশে। পাটের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলার ঐতিহ্য, অর্থনীতি। একসময় বাংলাদেশের প্রধান অর্থকারী ফসল ছিল পাট। এই পাটশিল্পের ওপর নির্ভর করে স্বাধীনতার পরবর্তীকালে পাটের উন্নয়নের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে পাটকল স্থাপন করা হয়েছিল। কালের পরিক্রমায় আস্তে আস্তে এই শিল্প তার জৌলুস হারিয়ে ফেলে। পাটের দাপট কমতে থাকে ’৯০ এর দশকে, যখন দেশে দেশে সিনথেটিক ও প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার শুরু হয়। তবে বর্তমানে প্রাকৃতিক পণ্য হিসেবে বিশ্বব্যাপী এখন চাহিদা বাড়ছে পাটপণ্যের। পাটের সেই দিন ফিরাতে পাট উৎপাদন বাড়াতে, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের চাকা নতুন করে ঘুরছে আবার। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এবার বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসছে বন্ধ থাকা ২০টি পাটকল। প্রথম পর্যায়ে ৬টি পাটকলের বাণিজ্যিক উৎপাদন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

 

বিশ্বের শীর্ষ পাট উৎপাদনকারী দেশ বাংলাদেশ। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সর্বশেষ স্ট্যাটিস্টিক্যাল বুলেটিনের তথ্যমতে, ২০২০-২১ অর্থবছরে ভারতে পাটের উৎপাদন ৯ লাখ ৮০ হাজার টন। আর বাংলাদেশের উৎপাদন ছিল ১৪ লাখ ৮ হাজার টন। ভারতে পাট উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাংলাদেশ শীর্ষস্থান দখল করেছে।

 

পাট খাতের বৈশ্বিক রপ্তানি আয়ের ৭২ শতাংশ এখন বাংলাদেশের দখলে। পাট কৃষিজাত পণ্য হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় এখন থেকে পণ্য রপ্তানিতে মিলবে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা। গত অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্যে রপ্তানি আয় হয় ৯১ কোটি ২০ লাখ ডলার।

 

পাট ও পাট জাতীয় ফসলের উন্নত জাত উদ্ভাবন, পাটচাষিদের প্রশিক্ষণ প্রদান ও উদ্বুদ্ধকরণ, উন্নতমানের পাটবীজসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহের ফলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাট উৎপাদন বেড়েছে। জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার-জেডিপিসির নিবন্ধিত উদ্যোক্তারা বিভিন্ন ধরনের দৃষ্টিনন্দন ও শৈল্পিক গুণসম্পন্ন নতুন নতুন ডিজাইনের বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন করছেন এবং বিশ্ববাজারে বহুমুখী পাটজাত পণ্যকে জনপ্রিয় করতে প্রচার-প্রচারণাসহ বিদেশে বিভিন্ন মেলার আয়োজনের কাজ চলমান। দেশের রপ্তানি বাণিজ্যকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে নগদ সহায়তা দিচ্ছে সরকার। এ ছাড়া পাটবীজ উৎপাদনে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে একটি রোডম্যাপও তৈরি করা হয়েছে।

 

লিজ দেয়া পাটকলগুলোর মধ্যে যে ৬ পাটকল বাণিজ্যিকভাবে পণ্য উৎপাদনের জন্য চালু হবে- পাটকলগুলো হচ্ছে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশালের বাংলাদেশ জুট মিলস, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার কেএফডি, সিরাজগঞ্জের রায়পুরের জাতীয় জুট মিলস, যশোরের রাজঘাটের জুট ইন্ডাস্ট্রিজ, খুলনার দৌলতপুর জুট মিলস ও যশোরের রাজঘাটের কার্পেটিং জুট মিলস লিমিটেড।

 

ক্রমাগত লোকসানের কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত ২৭টি পাটকলের সব এখন বন্ধ। ২০২০ সালের ১ জুলাই ২৫টি পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়। দুটি পাটকল বন্ধ হয় আরও আগেই। বন্ধ হওয়ার আগে ২৫টি পাটকলে ২৬ হাজার শ্রমিক কাজ করতেন। ৩৪ হাজার ৭৫৭ জন স্থায়ী শ্রমিকের পাওনা বাবদ নগদে ও সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে ৩ হাজার ৫১০ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।

পাট মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, এসব পাটকলে বস্ত্র ও পাটের ব্যাকওয়ার্ড ও ফরওয়ার্ড লিঙ্কেজ পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানির কার্যক্রম চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। সবক’টি মিল বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় চালু হলে ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

 

লিজ নেওয়া পাটকলের অবস্থান নিয়ে জানতে চাইলে বেসরকারি মালিকানাধীন জুট অ্যালায়েন্সের কর্মকৌশল কর্মকর্তা (সিএসও) আল কাজী বলেন, ২০ ধরনের বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন করবেন তারা। এর মধ্যে উচ্চ চাহিদার লেমিনেটেড হেসিয়ান রয়েছে। উৎপাদিত সব পণ্যই রপ্তানিমুখী।

 

দৌলতপুর জুট মিলের ব্যবস্থাপনায় এসেছে বেসরকারি খাতের ফরচুন গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইউনি ওয়ার্ল্ড ফুটওয়্যার টেকনোলজি। পাটপণ্যের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি ওই পাটকলে জুতাও তৈরি করবে। গত ৪ সেপ্টেম্বর মূল কারখানাসহ পাটকলের প্রায় ১৪ একর জায়গা ইজারা দেওয়া হয় ফরচুন গ্রুপকে। মাসিক সাড়ে ৯ লাখ টাকায় ৩০ বছরের জন্য এই ইজারা দেওয়া হয়েছে। প্রতি পাঁচ বছর পরপর ১০ শতাংশ হারে ভাড়া বাড়ানো হবে। মিলটিতে উৎপাদিত পাটপণ্য ভারত, তুরস্ক, কানাডা ও ইউরোপে রপ্তানি করার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

 

নতুন করে এই উদ্যোগের ফলে বেসরকারি খাতের বর্তমান পাটকলগুলো প্রতিযোগিতায় পড়বে কি না জানতে চাইলে বিজেএমএ মহাসচিব আবদুল বারেক খান বলেন, নতুন পাটকল উৎপাদনে এলে প্রতিযোগিতা কিছু নেই বরং এটি হচ্ছে আমাদের জন্য ইতিবাচক একটি প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরি হবে। এতে পাট খাত লাভবান হবে।

 

পাট শিল্পের আগামীর সম্ভাবনা নিয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, কৃষিবিদ ড. মো. আল-মামুন বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা ডব্লিউটিও গাড়ির বডিতে ব্যবহারকৃত কাচ, অ্যাজবেস্টস্ ও প্লাস্টিকের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব পাট ব্যবহারের জন্য গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে। বর্তমান টেকসই উন্নয়নের যুগে বিশ্বব্যাপী পরিবেশবান্ধব পাট ও পাটপণ্যের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে। এই চাহিদা মেটাতে পাটকে বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।

সুদিন ফিরছে সোনালি আঁশে

আপডেট সময় : ০৬:১০:১৪ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১ জুন ২০২৪

◉ বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসছে বন্ধ থাকা ২০টি পাটকল
◉ বৈশ্বিক রপ্তানি আয়ের ৭২ শতাংশ এখন বাংলাদেশের দখলে
◉ সবক’টি মিল চালু হলে ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে

❖নতুন পাটকল উৎপাদনে এলে বরং এটি আমাদের জন্য ইতিবাচক একটি প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরি হবে- আবদুল বারেক খান, মহাসচিব, বিজেএমএ   

❖পরিবেশবান্ধব পাট ও পাটপণ্যের চাহিদা মেটাতে ও পাটকে বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি- কৃষিবিদ ড. মো. আল-মামুন, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউট

 

 

 

সুদিন ফিরছে সোনালি আঁশে। পাটের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলার ঐতিহ্য, অর্থনীতি। একসময় বাংলাদেশের প্রধান অর্থকারী ফসল ছিল পাট। এই পাটশিল্পের ওপর নির্ভর করে স্বাধীনতার পরবর্তীকালে পাটের উন্নয়নের জন্য রাষ্ট্রীয়ভাবে পাটকল স্থাপন করা হয়েছিল। কালের পরিক্রমায় আস্তে আস্তে এই শিল্প তার জৌলুস হারিয়ে ফেলে। পাটের দাপট কমতে থাকে ’৯০ এর দশকে, যখন দেশে দেশে সিনথেটিক ও প্লাস্টিক পণ্যের ব্যবহার শুরু হয়। তবে বর্তমানে প্রাকৃতিক পণ্য হিসেবে বিশ্বব্যাপী এখন চাহিদা বাড়ছে পাটপণ্যের। পাটের সেই দিন ফিরাতে পাট উৎপাদন বাড়াতে, দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলের চাকা নতুন করে ঘুরছে আবার। বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় এবার বাণিজ্যিক উৎপাদনে আসছে বন্ধ থাকা ২০টি পাটকল। প্রথম পর্যায়ে ৬টি পাটকলের বাণিজ্যিক উৎপাদন উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।

 

বিশ্বের শীর্ষ পাট উৎপাদনকারী দেশ বাংলাদেশ। জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সর্বশেষ স্ট্যাটিস্টিক্যাল বুলেটিনের তথ্যমতে, ২০২০-২১ অর্থবছরে ভারতে পাটের উৎপাদন ৯ লাখ ৮০ হাজার টন। আর বাংলাদেশের উৎপাদন ছিল ১৪ লাখ ৮ হাজার টন। ভারতে পাট উৎপাদন কমে যাওয়ায় বাংলাদেশ শীর্ষস্থান দখল করেছে।

 

পাট খাতের বৈশ্বিক রপ্তানি আয়ের ৭২ শতাংশ এখন বাংলাদেশের দখলে। পাট কৃষিজাত পণ্য হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় এখন থেকে পণ্য রপ্তানিতে মিলবে সব ধরনের সুযোগ-সুবিধা। গত অর্থবছরে পাট ও পাটজাত পণ্যে রপ্তানি আয় হয় ৯১ কোটি ২০ লাখ ডলার।

 

পাট ও পাট জাতীয় ফসলের উন্নত জাত উদ্ভাবন, পাটচাষিদের প্রশিক্ষণ প্রদান ও উদ্বুদ্ধকরণ, উন্নতমানের পাটবীজসহ প্রয়োজনীয় উপকরণ সরবরাহের ফলে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে পাট উৎপাদন বেড়েছে। জুট ডাইভারসিফিকেশন প্রমোশন সেন্টার-জেডিপিসির নিবন্ধিত উদ্যোক্তারা বিভিন্ন ধরনের দৃষ্টিনন্দন ও শৈল্পিক গুণসম্পন্ন নতুন নতুন ডিজাইনের বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন করছেন এবং বিশ্ববাজারে বহুমুখী পাটজাত পণ্যকে জনপ্রিয় করতে প্রচার-প্রচারণাসহ বিদেশে বিভিন্ন মেলার আয়োজনের কাজ চলমান। দেশের রপ্তানি বাণিজ্যকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে পাটজাত পণ্য রপ্তানিতে নগদ সহায়তা দিচ্ছে সরকার। এ ছাড়া পাটবীজ উৎপাদনে কৃষি মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে একটি রোডম্যাপও তৈরি করা হয়েছে।

 

লিজ দেয়া পাটকলগুলোর মধ্যে যে ৬ পাটকল বাণিজ্যিকভাবে পণ্য উৎপাদনের জন্য চালু হবে- পাটকলগুলো হচ্ছে নরসিংদীর পলাশ উপজেলার ঘোড়াশালের বাংলাদেশ জুট মিলস, চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ার কেএফডি, সিরাজগঞ্জের রায়পুরের জাতীয় জুট মিলস, যশোরের রাজঘাটের জুট ইন্ডাস্ট্রিজ, খুলনার দৌলতপুর জুট মিলস ও যশোরের রাজঘাটের কার্পেটিং জুট মিলস লিমিটেড।

 

ক্রমাগত লোকসানের কারণে রাষ্ট্রায়ত্ত ২৭টি পাটকলের সব এখন বন্ধ। ২০২০ সালের ১ জুলাই ২৫টি পাটকল বন্ধের সিদ্ধান্ত কার্যকর হয়। দুটি পাটকল বন্ধ হয় আরও আগেই। বন্ধ হওয়ার আগে ২৫টি পাটকলে ২৬ হাজার শ্রমিক কাজ করতেন। ৩৪ হাজার ৭৫৭ জন স্থায়ী শ্রমিকের পাওনা বাবদ নগদে ও সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে ৩ হাজার ৫১০ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়েছে।

পাট মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, এসব পাটকলে বস্ত্র ও পাটের ব্যাকওয়ার্ড ও ফরওয়ার্ড লিঙ্কেজ পণ্য উৎপাদন ও রপ্তানির কার্যক্রম চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। সবক’টি মিল বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় চালু হলে ৫০ হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে।

 

লিজ নেওয়া পাটকলের অবস্থান নিয়ে জানতে চাইলে বেসরকারি মালিকানাধীন জুট অ্যালায়েন্সের কর্মকৌশল কর্মকর্তা (সিএসও) আল কাজী বলেন, ২০ ধরনের বহুমুখী পাটপণ্য উৎপাদন করবেন তারা। এর মধ্যে উচ্চ চাহিদার লেমিনেটেড হেসিয়ান রয়েছে। উৎপাদিত সব পণ্যই রপ্তানিমুখী।

 

দৌলতপুর জুট মিলের ব্যবস্থাপনায় এসেছে বেসরকারি খাতের ফরচুন গ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান ইউনি ওয়ার্ল্ড ফুটওয়্যার টেকনোলজি। পাটপণ্যের পাশাপাশি প্রতিষ্ঠানটি ওই পাটকলে জুতাও তৈরি করবে। গত ৪ সেপ্টেম্বর মূল কারখানাসহ পাটকলের প্রায় ১৪ একর জায়গা ইজারা দেওয়া হয় ফরচুন গ্রুপকে। মাসিক সাড়ে ৯ লাখ টাকায় ৩০ বছরের জন্য এই ইজারা দেওয়া হয়েছে। প্রতি পাঁচ বছর পরপর ১০ শতাংশ হারে ভাড়া বাড়ানো হবে। মিলটিতে উৎপাদিত পাটপণ্য ভারত, তুরস্ক, কানাডা ও ইউরোপে রপ্তানি করার সুযোগ তৈরি হয়েছে।

 

নতুন করে এই উদ্যোগের ফলে বেসরকারি খাতের বর্তমান পাটকলগুলো প্রতিযোগিতায় পড়বে কি না জানতে চাইলে বিজেএমএ মহাসচিব আবদুল বারেক খান বলেন, নতুন পাটকল উৎপাদনে এলে প্রতিযোগিতা কিছু নেই বরং এটি হচ্ছে আমাদের জন্য ইতিবাচক একটি প্রতিযোগিতার পরিবেশ তৈরি হবে। এতে পাট খাত লাভবান হবে।

 

পাট শিল্পের আগামীর সম্ভাবনা নিয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ পাট গবেষণা ইনস্টিটিউটটের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, কৃষিবিদ ড. মো. আল-মামুন বলেন, বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা ডব্লিউটিও গাড়ির বডিতে ব্যবহারকৃত কাচ, অ্যাজবেস্টস্ ও প্লাস্টিকের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব পাট ব্যবহারের জন্য গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশ দিয়েছে। বর্তমান টেকসই উন্নয়নের যুগে বিশ্বব্যাপী পরিবেশবান্ধব পাট ও পাটপণ্যের ব্যাপক চাহিদা তৈরি হয়েছে। এই চাহিদা মেটাতে পাটকে বিশ্বময় ছড়িয়ে দিতে আমরা কাজ করে যাচ্ছি।