০৮:৫৮ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নতুন মেরুতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক

ভারতে নতুন সরকার আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পান। সেই আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে তিনি সেখানে যান। এমন সফর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও দৃঢ় হবে এমনটিই প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানাচ্ছে, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে বেশ কিছু ইস্যু রয়েছে যেগুলো উভয় পক্ষই সমাধান করতে আগ্রহী। এরমধ্যে রয়েছে, তিস্তা নদীর পানিবন্টন চুক্তি ও সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনা। তিস্তা নদীর পানিবন্টন চুক্তি করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে। একইসঙ্গে উভয় দেশের মধ্যে চলমান যে ৫৪টি নদী রয়েছে সেগুলো নিয়ে একটি অভিন্ন পানি বন্টন নীতিমালা করতে চায় বাংলাদেশ। অন্যদিকে, বাংলাদেশের নাগরিকদের কাছে অন্যতম উদ্বেগের বিষয় সীমান্তে হত্যাকাণ্ড। আগামী দিনগুলোতে সীমান্তে হত্যা বন্ধে দুদেশই কার্যকর পদক্ষেপ নেবে এমনটিই প্রত্যাশা করে কূটনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানাচ্ছে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অনেকগুলো চুক্তি রয়েছে। এর মধ্যে ১০০ কোটি ডলার ঋণরেখা অনুমোদন, জনপরিবহন, সড়ক, রেলপথ সেতু আর অভ্যন্তরীন নৌপথের ১৪টি প্রকল্প বাস্তবায়নের চুক্তি, বন্দী বিনিময় চুক্তি, সীমান্ত হত্যা বন্ধে চুক্তি, ছিটমহল বিনিময় চুক্তি, নদীর পানি বন্টন চুক্তি, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি, উন্নয়ন সহযোগিতাবিষয়ক কাঠামোগত চুক্তি, দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ বৃদ্ধি বিষয়ক চুক্তি, উভয় দেশের মধ্যে পণ্য পরিবহন চুক্তি, রেল চুক্তি অন্যতম। এছাড়া দেশদুটির মধ্যে বেশকিছু সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে, ভারতের সাবরুমের মানুষে জন্য ফেনীর পানি প্রত্যাহার চুক্তি, চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্র বন্দর ব্যবহার করতে সমঝোতা স্বাক্ষর হয়েছে।
সূত্র জানায়, গত রোববার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আবারও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। এই অনুষ্ঠানে তিনি আমন্ত্রণ জানান প্রতিবেশী দেশগুলোর নেতৃবৃন্দকে। এরমধ্যে তার বিশেষ আমন্ত্রণ পান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সেই শপথ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। এরপর দুই প্রধানমন্ত্রী সৌজন্য সাক্ষাতে অংশ নেন। এই সফর প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, দুই নেতা আশা প্রকাশ করেছেন, বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও গভীর হবে।
তিনি বলেন, অত্যন্ত উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে রাষ্ট্রপতি ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভারতীয় সমকক্ষকে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, পরে দুই প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতি ভবনে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু আয়োজিত ভোজসভায় যোগ দেন। ভারতের সিনিয়র মন্ত্রীরা, বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল, আমন্ত্রিত সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানেরা নৈশভোজে অংশ নেন। সেখানে তাঁরা সংক্ষিপ্ত মতবিনিময় করেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তাঁদের মধ্যে কুশল বিনিময় হয়।
উভয় দেশের সম্পর্কের প্রত্যাশা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বহুমুখী সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে অনেক বিষয় জড়িত। যেহেতু উভয় সরকার দেশ পরিচালনায় অব্যাহত রয়েছেন, সেহেতু একসঙ্গে কাজ করার কিছু সুবিধা আছে। উভয় দেশের জনগণ বিভিন্ন দিক থেকে উপকৃত হচ্ছে, যার মধ্যে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থেকে যোগাযোগ রয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, আমাদের বহুমাত্রিক সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারিত এবং আরও গভীর হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

কক্সবাজারের ৪ টি আসনে মনোনয়নপত্র জমা পড়েছে ২৩

নতুন মেরুতে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক

আপডেট সময় : ০৭:৪০:০২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১৫ জুন ২০২৪

ভারতে নতুন সরকার আসার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নতুন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ পান। সেই আমন্ত্রণে সাড়া দিয়ে তিনি সেখানে যান। এমন সফর বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও দৃঢ় হবে এমনটিই প্রত্যাশা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানাচ্ছে, বাংলাদেশ-ভারতের মধ্যে বেশ কিছু ইস্যু রয়েছে যেগুলো উভয় পক্ষই সমাধান করতে আগ্রহী। এরমধ্যে রয়েছে, তিস্তা নদীর পানিবন্টন চুক্তি ও সীমান্ত হত্যা শূন্যে নামিয়ে আনা। তিস্তা নদীর পানিবন্টন চুক্তি করার জন্য দীর্ঘদিন ধরে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে। একইসঙ্গে উভয় দেশের মধ্যে চলমান যে ৫৪টি নদী রয়েছে সেগুলো নিয়ে একটি অভিন্ন পানি বন্টন নীতিমালা করতে চায় বাংলাদেশ। অন্যদিকে, বাংলাদেশের নাগরিকদের কাছে অন্যতম উদ্বেগের বিষয় সীমান্তে হত্যাকাণ্ড। আগামী দিনগুলোতে সীমান্তে হত্যা বন্ধে দুদেশই কার্যকর পদক্ষেপ নেবে এমনটিই প্রত্যাশা করে কূটনৈতিক বিশ্লেষকেরা।
কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানাচ্ছে, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অনেকগুলো চুক্তি রয়েছে। এর মধ্যে ১০০ কোটি ডলার ঋণরেখা অনুমোদন, জনপরিবহন, সড়ক, রেলপথ সেতু আর অভ্যন্তরীন নৌপথের ১৪টি প্রকল্প বাস্তবায়নের চুক্তি, বন্দী বিনিময় চুক্তি, সীমান্ত হত্যা বন্ধে চুক্তি, ছিটমহল বিনিময় চুক্তি, নদীর পানি বন্টন চুক্তি, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য চুক্তি, উন্নয়ন সহযোগিতাবিষয়ক কাঠামোগত চুক্তি, দ্বিপক্ষীয় বিনিয়োগ বৃদ্ধি বিষয়ক চুক্তি, উভয় দেশের মধ্যে পণ্য পরিবহন চুক্তি, রেল চুক্তি অন্যতম। এছাড়া দেশদুটির মধ্যে বেশকিছু সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে। এরমধ্যে রয়েছে, ভারতের সাবরুমের মানুষে জন্য ফেনীর পানি প্রত্যাহার চুক্তি, চট্টগ্রাম ও মংলা সমুদ্র বন্দর ব্যবহার করতে সমঝোতা স্বাক্ষর হয়েছে।
সূত্র জানায়, গত রোববার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আবারও প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। এই অনুষ্ঠানে তিনি আমন্ত্রণ জানান প্রতিবেশী দেশগুলোর নেতৃবৃন্দকে। এরমধ্যে তার বিশেষ আমন্ত্রণ পান বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি সেই শপথ অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন। এরপর দুই প্রধানমন্ত্রী সৌজন্য সাক্ষাতে অংশ নেন। এই সফর প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, দুই নেতা আশা প্রকাশ করেছেন, বিদ্যমান দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক আগামী দিনগুলোতে আরও গভীর হবে।
তিনি বলেন, অত্যন্ত উষ্ণ ও বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে রাষ্ট্রপতি ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভারতীয় সমকক্ষকে সুবিধাজনক সময়ে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান। শেখ হাসিনা ও নরেন্দ্র মোদির দূরদর্শী নেতৃত্বে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে।
পররাষ্ট্রমন্ত্রী জানান, পরে দুই প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রপতি ভবনে ভারতের রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু আয়োজিত ভোজসভায় যোগ দেন। ভারতের সিনিয়র মন্ত্রীরা, বাংলাদেশের প্রতিনিধিদল, আমন্ত্রিত সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধানেরা নৈশভোজে অংশ নেন। সেখানে তাঁরা সংক্ষিপ্ত মতবিনিময় করেন। সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে তাঁদের মধ্যে কুশল বিনিময় হয়।
উভয় দেশের সম্পর্কের প্রত্যাশা প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বহুমুখী সম্পর্ক রয়েছে। দুই দেশের মধ্যে অনেক বিষয় জড়িত। যেহেতু উভয় সরকার দেশ পরিচালনায় অব্যাহত রয়েছেন, সেহেতু একসঙ্গে কাজ করার কিছু সুবিধা আছে। উভয় দেশের জনগণ বিভিন্ন দিক থেকে উপকৃত হচ্ছে, যার মধ্যে দুই দেশের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক থেকে যোগাযোগ রয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আশা প্রকাশ করে বলেন, আমাদের বহুমাত্রিক সম্পর্ক ভবিষ্যতে আরও সম্প্রসারিত এবং আরও গভীর হবে।