একদিকে হাস্যোজ্জ্বল নবীনেরা অন্যদিকে পুরোনোদের অশ্রুসিক্ত বিদায়। আনন্দ আর অশ্রুর মধ্যে দিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংস্কৃত বিভাগ বরণ করে নিল নতুনদের আর বিদায় জানাল পুরনো শিক্ষার্থীদের।
বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) সকাল ১০ টায় বিশ্ববিদ্যালয়ে এমনই আবেগঘন পরিবেশের মধ্যে দিয়ে আয়োজিত হয় নবীন বরণ ও বিদায় অনুষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের মিলনায়তনে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে সংস্কৃত বিভাগের ৪৯ ব্যাচকে আনুষ্ঠানিকভাবে বরণ করে নেওয়া হয়। একই অনুষ্ঠানে বিদায় জানানো হয় স্নাতকোত্তর পর্যায়ের বিভাগের ৪৪ ব্যাচের শিক্ষার্থীদের। এসময় নবীন শিক্ষার্থীদের ফুল দিয়ে বরণ করা হয় এবং বিদায়ী শিক্ষার্থীদের ক্রেস্ট ও দিয়ে সম্মাননা প্রদান করা হয়। এসময় বিভাগের স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পরিক্ষায় ফলফলের ভিত্তিতে প্রথম ও দ্বিতীয় স্থান অধিকারী মাস্টার্সের শিক্ষার্থীদের পুরষ্কার প্রদান করা হয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই স্বাগত বক্তব্য রাখেন সংস্কৃত বিভাগের প্রভাষক হিমেল কর্মকার। বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী সঞ্জয় কুমারের সঞ্চালনায় বিভাগের সভাপতি ড. রাজপতি দাশের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোঃ ইকবাল শাহীন খান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপ-উপাচার্য ( একাডেমী) অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ শামীম উদ্দিন খান বলেন,আজ যারা বিদায় নিতে যাচ্ছো, আমরা তাদের বিদায় দিচ্ছি না। কারণ আজ থেকে তোমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যালামনাইয়ের অংশ৷ এই বিদায় তোমাদের বিদায় না। তোমাদের অর্জিত জ্ঞান দিয়ে কর্মক্ষেত্রে সফলতার সাক্ষর রাখতে হবে। টাকা ও ক্ষমতার পিছনে দৌড়ানোর দরকার নাই, ক্ষমতা তোমার পিছনে দৌড়ায় এমন অবস্থান তৈরি করতে হবে। এখান থেকে যা কিছু অর্জন করেছো তা সকলের মধ্য বিকাশিত করতে হবে। তোমরা ফিরবে বিভাগের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে, ফিরবে হবে আরও উচ্চতর গবেষণার জন্য।
নবীন শিক্ষার্থীদের উদ্দ্যেশ্যে উপ-উপাচার্য বলেন, নবীনরা এখনো ঘোরের মধ্যে আছে। আমাদের সময় বিশ্ববিদ্যালয়ের এতো সুবিধা ছিল না। অনেক কষ্ট করে যাতায়াত করতে হতো। এখন অনেক কিছুই সহজ হয়েছে৷ হয়তো সময়ের প্রয়োজনে আরও সুযোগ-সুবিধার প্রয়োজন। আমরা সে লক্ষ্যেও কাজ করে যাচ্ছি।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. মোঃ ইকবাল শাহীন খান বলেন, সংস্কৃত সাহিত্যের যে শক্তি আছে তা একটি সম্পদ। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাস, ঐতিহ্য ও বরেণ্য শিক্ষকদের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে তিনি বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ঐতিহ্য ধারণ করে নবীনদের দেশের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হবে।
সভাপতির বক্তব্যে সংস্কৃত বিভাগের সভাপতি সহযোগী অধ্যাপক ড. রাজপতি দাশ বলেন, প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে নিজের অবস্থান সুদৃঢ় করতে হলে ছাত্রজীবনের প্রতিটি মুহুর্তকে কাজে লাগাতে হবে। তিনি শিক্ষার্থীদেরকে সময়ের প্রতি নিষ্ঠাবান থেকে সম্মানিত শিক্ষকমণ্ডলীর আদেশ–উপদেশ মেনে জ্ঞান আহরণে ব্রতী হবার পরামর্শ দেন। একইসাথে যথাসময়ে শিক্ষাজীবন শেষ করে দেশ–জাতির কল্যাণে নিজেকে নিয়োজিত করার আহবান জানান। তিনি নবীনদের বিশ্ববিদ্যালয় পরিমণ্ডলে স্বাগত জানান এবং বিদায়ী শিক্ষার্থীদের অভিনন্দন জানান।
এসময় বিভাগের সম্মানিত শিক্ষকবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। এরপর বিকাল থেকে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজনের মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠানের মূল কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘটে।
















