আওয়ামী লীগের ঘোষিত ‘লকডাউন’ কর্মসূচি সামনে রেখে রাজধানী ঢাকা এবং দেশের অন্যান্য এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্কতায় রয়েছে। সম্ভাব্য নাশকতা প্রতিরোধে ডিএমপি, র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব), বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও সেনাবাহিনীকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। পুলিশ ও র্যাব রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকা, হোটেল, মেস, বিশ্ববিদ্যালয় হল ও গণপরিবহন স্থলগুলোতে টহল, তল্লাশি ও গোয়েন্দা নজরদারি জোরদার করেছে।
এবারের লকডাউনকে কেন্দ্র করে সরকারের পক্ষ থেকে সতর্ক করা হয়েছে যে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে উসকানি, বিভ্রান্তি ও নাশকতার প্রচারণা চলছে। সোমবার (১০ নভেম্বর) রাজধানীর ধানমন্ডি, মোহাম্মদপুর, আগারগাঁও, মিরপুর ও বাংলামোটরে একাধিক ককটেল বিস্ফোরণ এবং মেরুল বাড্ডা, শাহজাদপুর ও সায়েন্সল্যাব এলাকায় তিনটি বাসে আগুনের ঘটনা ঘটেছে। যদিও কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি, তবু নগরবাসীর মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, সব ঘটনার তদন্ত চলছে এবং সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়েছে।

ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) জানিয়েছে, রাজধানীতে এক লাখ গ্যাস বেলুন ব্যবহার করে রাজনৈতিক বার্তা ছড়ানোর পরিকল্পনায় ২৫ জন নেতাকর্মীকে ইতোমধ্যে গ্রেফতার করা হয়েছে। ডিএমপি সদরদফরের নির্দেশে ৫০ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের যেকোনো পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রস্তুত থাকতে বলা হয়েছে। ১০ নভেম্বর থেকে ঢাকার প্রবেশপথ, হোটেল, মেস ও বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় বিশেষ তল্লাশি শুরু হয়েছে।
ডিএমপি ও র্যাবের উভয় সূত্র নিশ্চিত করেছে, ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগের দেশে বড় ধরনের সংঘাত সৃষ্টির সক্ষমতা নেই। তবে তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিভ্রান্তি ও উসকানিমূলক প্রচারণা চালাচ্ছে। বিদেশে থাকা কিছু নেতা অনলাইনে নাশকতা উসকানি ছড়ানোর চেষ্টা করছে, যদিও দেশের ভেতরে তাদের সাংগঠনিক নেটওয়ার্ক দুর্বল।
পুলিশ সদরদফতরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পিআর) এ এইচ এম শাহাদাত হোসেন জানিয়েছেন, “আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রাখতে আগাম তথ্যের ভিত্তিতে গোয়েন্দা তৎপরতা চলছে। কেউ অবৈধ কর্মকাণ্ড, নাশকতা বা সংঘর্ষের চেষ্টা করলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম বলেছেন, “ফ্যাসিবাদ সরকার পালিয়ে গেছে, জনগণই তাদের প্রতিরোধ করবে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দেশের নিরাপত্তার দায়িত্বে রয়েছে এবং থাকবে।”
গুরুত্বপূর্ণভাবে, বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, আওয়ামী লীগের ঘোষিত লকডাউন মূলত রাজনৈতিক প্রতীকী প্রতিবাদ, তবে এর আড়ালে বিভ্রান্তি ও আতঙ্ক সৃষ্টি করার কৌশল থাকতে পারে। তাই গোয়েন্দা নজরদারি, জনসচেতনতা এবং তল্লাশি কার্যক্রম সমান গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে।
এমআর/সবা
























