১২:৪৯ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৫ পদে ৭০ লাখ টাকার বিনিময়ে মাদ্রাসায় নিয়োগ বানিজ্য!

কুড়িগ্রামে ৫ পদে ৭০ লাখ টাকার বিনিময়ে সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নে অবস্থিত  চর হলোখানা এমদাদিয়া আলিম মাদরাসায় নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।
গত ১ জানুয়ারি,সোমবার জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগপত্র দায়ের করেন চাকুরি প্রত্যাশী ভুক্তভুগিরা।
অভিযোগপত্র সুত্রে জানা যায়,মাদরাসাটির সুপার আবু বক্কর সিদ্দিক,মাদরাসার সহকারি অধ্যক্ষ, হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, কম্পিউটার অপারেটর, নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া পদে গত ৪ই নভেম্বর ২২ইং তারিখে জনবল নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। এতে চাকুরির জন্য আবেদন করেন ৪৩ জন প্রার্থী।
পরে ডিসেম্বরের ২২ তারিখে এই ৪৩ জন প্রার্থীকে নিয়ে লিখিত ও মৌখিক পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ফলাফল প্রকাশ না করা হলেও,চাকুরি প্রত্যাশীরা জানতে পারেন,পাঁচ পদেই পদেই মাদরাসা সুপার আবু বক্কর সিদ্দিকের পরিবারের সদস্য ও নিকট আত্মীয়দের চূড়ান্ত করা হয়েছে।
চূড়ান্ত মনোনীত ব্যাক্তিরা হলেন,সহকারি অধ্যক্ষ পদে তার নিকট আত্মীয় মো. নজির হোসেন,হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে অধ্যক্ষের আপন জামাতা আসাদুজ্জামান কুকিল, নিরাপত্তাকর্মী পদে অধ্যক্ষের ভাতিজা জাহাঙ্গীর আলম, কম্পিউটার অপারেটর পদে অধ্যক্ষের মামাতো ভাইয়ের ছেলে সোহেল রানা এবং আয়া পদে চাচাত ভাইয়ের পুত্রবধূ সেলিনা বেগম।
হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকুরি প্রত্যাশী আল-আমিন বলেন,’অধ্যক্ষ নিজের আপন জামাতাকে নিয়োগ দেয়া প্রায় চূড়ান্ত করেছে। বিষয়টি জানতে পেরে আমরা কয়েকজন ডিসি অফিস বরাবর অভিযোগ করেছি। আশা করছি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ পাতানো নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ পরীক্ষা অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করবে এবং যোগ্য প্রার্থীকে নিয়োগ দিবেন।’
নিরাপকর্মী পদে আরেক চাকুরি প্রত্যাশী মো. ওবাইদুল হক বলেন,’সকল পদে অধ্যক্ষ সাহেব তার পরিবারের সদস্যদের নিয়োগ দেয়ার প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছেন। এখানে মাদ্রাসাটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সুপার দুজনে ৭০ লাখ টাকার বিনিময়ে ৫পদেই ৫জনকে চুড়ান্ত করেছেন। এসব দেখে মনে হচ্ছে দেশে নিয়ম বলতে কিছু নেই। আমি অবিলম্বে এটির সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করছি।’
এ বিষয়ে জানার জন্য অভিযুক্ত মাদরাসাটির সুপার আবু বক্কর সিদ্দিককে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার ব্যবহৃত ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তার বাড়িতে গিয়েও তাকে সরাসরি পাওয়া যায়নি।
আরেক অভিযুক্ত মাদ্রাসাটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও হলোখানার ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রেজা বলেন,’কে কি অভিযোগ করছে জানি না। আমি বর্তমানে ঢাকায় আছি,কুড়িগ্রামে একসাথে চা খেতে খেতে কথা হবে।’
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা মাধ্যমিক অফিসার মো. জহুরুল হক বলেন, ‘মাদরাসার নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়গুলো আমি দেখি না। মাদরাসা অধিদপ্তর সরাসরি হস্তক্ষেপ করে থাকেন।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন,’এ বিষয়ে আমিএকটি অভিযোগপত্র পেয়েছি।একটি তদন্ত কমিটি করে বিষয়টি খতিয়ে দেখবো। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।
জনপ্রিয় সংবাদ

মেঘনায় দুই লঞ্চের সংঘর্ষে ৮ জন নিহত

৫ পদে ৭০ লাখ টাকার বিনিময়ে মাদ্রাসায় নিয়োগ বানিজ্য!

আপডেট সময় : ০৩:৩৮:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৪
কুড়িগ্রামে ৫ পদে ৭০ লাখ টাকার বিনিময়ে সদর উপজেলার হলোখানা ইউনিয়নে অবস্থিত  চর হলোখানা এমদাদিয়া আলিম মাদরাসায় নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ উঠেছে।
গত ১ জানুয়ারি,সোমবার জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগপত্র দায়ের করেন চাকুরি প্রত্যাশী ভুক্তভুগিরা।
অভিযোগপত্র সুত্রে জানা যায়,মাদরাসাটির সুপার আবু বক্কর সিদ্দিক,মাদরাসার সহকারি অধ্যক্ষ, হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর, কম্পিউটার অপারেটর, নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া পদে গত ৪ই নভেম্বর ২২ইং তারিখে জনবল নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে মাদরাসা কর্তৃপক্ষ। এতে চাকুরির জন্য আবেদন করেন ৪৩ জন প্রার্থী।
পরে ডিসেম্বরের ২২ তারিখে এই ৪৩ জন প্রার্থীকে নিয়ে লিখিত ও মৌখিক পরিক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ফলাফল প্রকাশ না করা হলেও,চাকুরি প্রত্যাশীরা জানতে পারেন,পাঁচ পদেই পদেই মাদরাসা সুপার আবু বক্কর সিদ্দিকের পরিবারের সদস্য ও নিকট আত্মীয়দের চূড়ান্ত করা হয়েছে।
চূড়ান্ত মনোনীত ব্যাক্তিরা হলেন,সহকারি অধ্যক্ষ পদে তার নিকট আত্মীয় মো. নজির হোসেন,হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে অধ্যক্ষের আপন জামাতা আসাদুজ্জামান কুকিল, নিরাপত্তাকর্মী পদে অধ্যক্ষের ভাতিজা জাহাঙ্গীর আলম, কম্পিউটার অপারেটর পদে অধ্যক্ষের মামাতো ভাইয়ের ছেলে সোহেল রানা এবং আয়া পদে চাচাত ভাইয়ের পুত্রবধূ সেলিনা বেগম।
হিসাব সহকারী কাম কম্পিউটার অপারেটর পদে চাকুরি প্রত্যাশী আল-আমিন বলেন,’অধ্যক্ষ নিজের আপন জামাতাকে নিয়োগ দেয়া প্রায় চূড়ান্ত করেছে। বিষয়টি জানতে পেরে আমরা কয়েকজন ডিসি অফিস বরাবর অভিযোগ করেছি। আশা করছি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ পাতানো নিয়োগ পরীক্ষা বাতিল করে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ পরীক্ষা অনুষ্ঠানের ব্যবস্থা করবে এবং যোগ্য প্রার্থীকে নিয়োগ দিবেন।’
নিরাপকর্মী পদে আরেক চাকুরি প্রত্যাশী মো. ওবাইদুল হক বলেন,’সকল পদে অধ্যক্ষ সাহেব তার পরিবারের সদস্যদের নিয়োগ দেয়ার প্রস্তুতি চূড়ান্ত করেছেন। এখানে মাদ্রাসাটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও সুপার দুজনে ৭০ লাখ টাকার বিনিময়ে ৫পদেই ৫জনকে চুড়ান্ত করেছেন। এসব দেখে মনে হচ্ছে দেশে নিয়ম বলতে কিছু নেই। আমি অবিলম্বে এটির সুষ্ঠু তদন্তের দাবি করছি।’
এ বিষয়ে জানার জন্য অভিযুক্ত মাদরাসাটির সুপার আবু বক্কর সিদ্দিককে একাধিকবার ফোন করা হলেও তার ব্যবহৃত ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়। পরে তার বাড়িতে গিয়েও তাকে সরাসরি পাওয়া যায়নি।
আরেক অভিযুক্ত মাদ্রাসাটির ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি ও হলোখানার ইউপি চেয়ারম্যান রেজাউল করিম রেজা বলেন,’কে কি অভিযোগ করছে জানি না। আমি বর্তমানে ঢাকায় আছি,কুড়িগ্রামে একসাথে চা খেতে খেতে কথা হবে।’
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা মাধ্যমিক অফিসার মো. জহুরুল হক বলেন, ‘মাদরাসার নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়গুলো আমি দেখি না। মাদরাসা অধিদপ্তর সরাসরি হস্তক্ষেপ করে থাকেন।’
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন,’এ বিষয়ে আমিএকটি অভিযোগপত্র পেয়েছি।একটি তদন্ত কমিটি করে বিষয়টি খতিয়ে দেখবো। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।