০৮:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

কাঁটাতারে ঘেরা এমভি আবদুল্লাহর সতর্ক প্রহরায় যুদ্ধজাহাজ

❖দস্যুতা ঠেকাতে প্রস্তুত উচ্চ চাপের ফায়ার হোস
❖নাবিকদের সুরক্ষায় প্রস্তুত গোপন কুঠুরি

মুক্তিপণ দিয়ে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হয়ে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ এখন দুবাইয়ের পথে রয়েছে। জাহাজটি এখনো সমুদ্রপথের উচ্চ ঝুঁকিপ্রবণ এলাকা অতিক্রম না করায় জলদস্যুদের আক্রমণের শঙ্কা এখনো কাটেনি। তাই আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী জাহাজটিতে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। জাহাজটি ঝুঁকিমুক্ত রাখতে পুরো ডেকের চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে। বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় দুবাইয়ের পথে রয়েছে টানা একমাসের জিম্মিদশা থেকে মুক্ত ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ। জাহাজটির চারপাশে রাখা হয়েছে কড়া সতর্ক প্রহরা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নৌবাহিনীর দুটি যুদ্ধজাহাজ এমভি আব্দুল্লাহকে দিচ্ছে বিশেষ নিরাপত্তা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে দৈনিক সবুজ বাংলাকে এসব তথ্য জানিয়েছেন জাহাজটির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম কর্তৃপক্ষ।

প্রতিষ্ঠানটি জানায়, আন্তর্জাতিক কিছু নিয়ম অনুযায়ী এই নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্য দিয়েই আগামী ২২ এপ্রিল (সোমবার) দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে সোমালিয় জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পাওয়া বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ।

প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে প্রকাশিত বেশ কিছু ছবিতে দেখা যায়, কাঁটাতার দিয়ে দেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা। এতে আবারও যাতে কোনো জলদস্যু উঠতে না পারে, সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, নিরাপদ জায়গায় যাওয়ার আগ পর্যন্ত থাকছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর জাহাজ। এছাড়া আবারও কোনো জলদস্যু হামলা করলে, তা প্রতিহতে নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। জাহাজটির মালিক প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জাহাজটি বর্তমানে আরব সাগর পাড়ি দিচ্ছে। ফলে সোমালি উপকূল থেকে জাহাজটির দূরত্ব বেশি নয়। এ কারণেই পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ীই এই বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা।

কেএসআরএম গ্রুপের হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে জাহাজটির চারপাশ কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। দস্যুরা হানা দিলে যাতে উচ্চ চাপে পানি ছিটানো যায়, সেজন্য জাহাজের ডেকে ফায়ার হোস প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আবার কোনো বিপদ হলে নাবিকেরা যাতে জাহাজে সুরক্ষিত স্থানে লুকাতে পারেন, সে জন্য ‘সিটাডেল’ (জাহাজের গোপন কুঠুরি) প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

গত ১২ মার্চ সোমালিয়ার দস্যুরা ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি জিম্মি করে। দেশটির উপকূল থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে ভারত মহাসাগর থেকে জাহাজটি ছিনতাই করা হয়। পরবর্তীতে মুক্তিপণের টাকা নিয়ে তৃতীয় পক্ষের সঙ্গে দর কষাকষি হয়। সমঝোতা শেষে সবকিছু চূড়ান্ত হওয়ার পর দস্যুরা তাদের ছেড়ে দিতে সম্মত হন। ছিনতাইয়ের ৩২ দিন পর, অর্থাৎ ৩৩ দিনের জিম্মিদশা থেকে গত ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাতে জাহাজটি মুক্ত হয়।

জনপ্রিয় সংবাদ

কাঁটাতারে ঘেরা এমভি আবদুল্লাহর সতর্ক প্রহরায় যুদ্ধজাহাজ

আপডেট সময় : ০৫:২৬:১৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৭ এপ্রিল ২০২৪

❖দস্যুতা ঠেকাতে প্রস্তুত উচ্চ চাপের ফায়ার হোস
❖নাবিকদের সুরক্ষায় প্রস্তুত গোপন কুঠুরি

মুক্তিপণ দিয়ে সোমালিয়ার জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হয়ে বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আবদুল্লাহ এখন দুবাইয়ের পথে রয়েছে। জাহাজটি এখনো সমুদ্রপথের উচ্চ ঝুঁকিপ্রবণ এলাকা অতিক্রম না করায় জলদস্যুদের আক্রমণের শঙ্কা এখনো কাটেনি। তাই আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী জাহাজটিতে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। জাহাজটি ঝুঁকিমুক্ত রাখতে পুরো ডেকের চারপাশে কাঁটাতারের বেড়া দেওয়া হয়েছে। বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থায় দুবাইয়ের পথে রয়েছে টানা একমাসের জিম্মিদশা থেকে মুক্ত ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ। জাহাজটির চারপাশে রাখা হয়েছে কড়া সতর্ক প্রহরা। ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) নৌবাহিনীর দুটি যুদ্ধজাহাজ এমভি আব্দুল্লাহকে দিচ্ছে বিশেষ নিরাপত্তা। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে দৈনিক সবুজ বাংলাকে এসব তথ্য জানিয়েছেন জাহাজটির মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম কর্তৃপক্ষ।

প্রতিষ্ঠানটি জানায়, আন্তর্জাতিক কিছু নিয়ম অনুযায়ী এই নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্য দিয়েই আগামী ২২ এপ্রিল (সোমবার) দুবাইয়ের আল হামরিয়া বন্দরে পৌঁছানোর কথা রয়েছে সোমালিয় জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্তি পাওয়া বাংলাদেশি পতাকাবাহী জাহাজ এমভি আব্দুল্লাহ।

প্রতিষ্ঠানটির পক্ষ থেকে প্রকাশিত বেশ কিছু ছবিতে দেখা যায়, কাঁটাতার দিয়ে দেওয়া হয়েছে বিশেষ নিরাপত্তা। এতে আবারও যাতে কোনো জলদস্যু উঠতে না পারে, সেই ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। শুধু তাই নয়, নিরাপদ জায়গায় যাওয়ার আগ পর্যন্ত থাকছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের নৌবাহিনীর জাহাজ। এছাড়া আবারও কোনো জলদস্যু হামলা করলে, তা প্রতিহতে নেওয়া হয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। জাহাজটির মালিক প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জাহাজটি বর্তমানে আরব সাগর পাড়ি দিচ্ছে। ফলে সোমালি উপকূল থেকে জাহাজটির দূরত্ব বেশি নয়। এ কারণেই পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ীই এই বিশেষ নিরাপত্তার ব্যবস্থা।

কেএসআরএম গ্রুপের হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা গেছে, নিরাপত্তা জোরদারের অংশ হিসেবে জাহাজটির চারপাশ কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে রাখা হয়েছে। দস্যুরা হানা দিলে যাতে উচ্চ চাপে পানি ছিটানো যায়, সেজন্য জাহাজের ডেকে ফায়ার হোস প্রস্তুত রাখা হয়েছে। আবার কোনো বিপদ হলে নাবিকেরা যাতে জাহাজে সুরক্ষিত স্থানে লুকাতে পারেন, সে জন্য ‘সিটাডেল’ (জাহাজের গোপন কুঠুরি) প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

গত ১২ মার্চ সোমালিয়ার দস্যুরা ২৩ নাবিকসহ এমভি আবদুল্লাহ জাহাজটি জিম্মি করে। দেশটির উপকূল থেকে ৬০০ নটিক্যাল মাইল দূরে ভারত মহাসাগর থেকে জাহাজটি ছিনতাই করা হয়। পরবর্তীতে মুক্তিপণের টাকা নিয়ে তৃতীয় পক্ষের সঙ্গে দর কষাকষি হয়। সমঝোতা শেষে সবকিছু চূড়ান্ত হওয়ার পর দস্যুরা তাদের ছেড়ে দিতে সম্মত হন। ছিনতাইয়ের ৩২ দিন পর, অর্থাৎ ৩৩ দিনের জিম্মিদশা থেকে গত ১৩ এপ্রিল দিবাগত রাতে জাহাজটি মুক্ত হয়।