০১:৫৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
রেমাল ও বন্যায় কৃষির ক্ষতি কাটাতে সরকারের ব্যাপক উদ্যোগ

২ লাখ ২৭ হাজার কৃষক পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায়

❖ ১৬ কোটি ১১ লাখ টাকার বীজ ও সার বিতরণের টার্গেট
❖ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৩৭ হাজারেরও বেশি কৃষক
❖ ক্ষতির পরিমাণ ১ হাজার ৫৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা

➤আগামী মৌসুমের জন্য উপকরণ সহায়তা বাড়ানোর পাশাপাশি কৃষকদের সঙ্গে কৃষি কর্মকর্তাদের নিবিড়ভাবে কাজ করতে হবে- অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম, কৃষি অর্থনীতিবিদ
➤মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এ ছাড়া আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষেত থেকে সর্বোচ্চ ভালো ফসল পাওয়ার উপায়গুলো কৃষকদের দেখানো হচ্ছে- কৃষিবিদ বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, মহাপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর

বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। এ দেশে বেশিরভাগ মানুষ কৃষিখাতের মাধ্যমে তাদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। কৃষি নির্ভরশীল এ দেশে বিভিন্ন সময় নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এই খাত। বিশেষ করে দিনদিন এই শিল্পের নির্ভরশীলতা কমে যাচ্ছে। সরকার এই খাতের অগ্রগতি বৃদ্ধির জন্য জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তার ধারাবাহিকতায় এ বছর প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে গত বছরের তুলনায় কৃষি খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে ২ হাজার ৩৭৯ কোটি টাকা। বাজেট বাড়ানো হলেও প্রান্তিক পর্যায়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে কৃষকরা। বিশেষ করে বর্তমানে দেশে ঘনঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হচ্ছে কৃষকরা। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় রেমালে দেশের ৫০ জেলায় প্রায় ৬২ হাজার ৮০০ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ১ হাজার ৫৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৩৭ হাজারেরও বেশি কৃষক। আর এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানাচ্ছে, গত ২৬ ও ২৭ মে উপকূলসহ দেশের উপর দিয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল আঘাত হানে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাস ও ভারি বৃষ্টিপাতে পানিতে তলিয়ে যায় বিস্তীর্ণ জনপদ। লবণ পানির প্রবেশ ও জলাবদ্ধতার কারণে ১৪টি কৃষি অঞ্চলের ৫০টি জেলার ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। প্রায় ১ লাখ ৭১ হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে জানায় কৃষি মন্ত্রণালয়। ১৪ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর ফসলি জমির মধ্যে ক্ষতির এ পরিমাণ খুবই কম বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলো হচ্ছে- ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরিশাল, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, রাজশাহী, নাটোর, বগুড়া, জয়পুরহাট, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, নড়াইল, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড়ে আউশ বীজতলা, আউশ আবাদ, বোরো, বোনা আমন, গ্রীষ্মকালীন সবজি, পাট, ভুট্টা, তিল, মুগ, আদা, হলুদ, মরিচ, চীনাবাদাম, আম, লিচু, পেঁপে, কলা, পেয়ারা, পান, আখ ও তরমুজ ফসলের ক্ষতি হয়। তবে বেশি ক্ষতি হয়েছে আউশ ধান ও বীজতলা। অধিদপ্তর ফসলের ক্ষতির একটি হিসাব তৈরি করেছে। তাতে দেখা গেছে, ৬২ হাজার ৭৮৩ দশমিক ৮২ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। এ ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৫৯ কোটি ৫০ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। আর কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৩৭ হাজার ২৩৪ জন।

এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) জানিয়েছে, ২৫ জেলার ক্ষতিগ্রস্ত ২ লাখ ২৭ হাজার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে। তাদের মাঝে প্রায় ১৬ কোটি ১১ লাখ টাকার বীজ ও সার বিতরণ করা হবে। কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের সব জেলাসহ উপকূলীয় ২৫ জেলার ২ লাখ ২৭ হাজার ৭০৪ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। সংস্থাটি জানায়, এসব কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার প্রদানের জন্য ১৬ কোটি ১১ লাখ ৫২ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রত্যেক কৃষককে বিনামূল্যে ৫ কেজি করে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের রোপা আমনের বীজ এবং ১০ কেজি করে ডিএপি ও এমওপি সার দেয়া হবে। তালিকভুক্ত কৃষকদের মাঝে এই কৃষি উপকরণ প্রদান করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। আনুষ্ঠানিকভাবে এসব উপকরণ বিতরণের জন্য কৃষিমন্ত্রীর পটুয়াখালীতে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে ডিএইর শীর্ষ সূত্র জানিয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ১৫ জেলার ২১ হাজার ৫৫ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় আনার কথা জানায় ডিএই। এতে বরাদ্দ করা হয় ১ কোটি ৪৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকা।

কৃষি অর্থনীতিবিদ ও ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিকসের পরিচালক অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কৃষকদের এখনই প্রণোদনা দিতে হবে। আগামী মৌসুমের জন্য উপকরণ সহায়তা বাড়ানোর পাশাপাশি কৃষকদের সঙ্গে কৃষি কর্মকর্তাদের নিবিড়ভাবে কাজ করতে হবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ বাদল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা খুব দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত জেলার কৃষকের কাছে প্রণোদনা পৌঁছানোর পরিকল্পনা করছি। ঘূর্ণিঝড়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ২৫ জেলার প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষককে পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় যে টাকা বরাদ্দ দিয়েছে তা দিয়ে কৃষি উপকরণ দেয়া হবে। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় কৃষকের পাশেই আছে। মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এ ছাড়া আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষেত থেকে সর্বোচ্চ ভালো ফসল পাওয়ার উপায়গুলো কৃষকদের দেখানো হচ্ছে।’

জনপ্রিয় সংবাদ

রেমাল ও বন্যায় কৃষির ক্ষতি কাটাতে সরকারের ব্যাপক উদ্যোগ

২ লাখ ২৭ হাজার কৃষক পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায়

আপডেট সময় : ০৭:৫২:২৯ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ২৬ জুন ২০২৪

❖ ১৬ কোটি ১১ লাখ টাকার বীজ ও সার বিতরণের টার্গেট
❖ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৩৭ হাজারেরও বেশি কৃষক
❖ ক্ষতির পরিমাণ ১ হাজার ৫৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা

➤আগামী মৌসুমের জন্য উপকরণ সহায়তা বাড়ানোর পাশাপাশি কৃষকদের সঙ্গে কৃষি কর্মকর্তাদের নিবিড়ভাবে কাজ করতে হবে- অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম, কৃষি অর্থনীতিবিদ
➤মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এ ছাড়া আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষেত থেকে সর্বোচ্চ ভালো ফসল পাওয়ার উপায়গুলো কৃষকদের দেখানো হচ্ছে- কৃষিবিদ বাদল চন্দ্র বিশ্বাস, মহাপরিচালক, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর

বাংলাদেশ কৃষিপ্রধান দেশ। এ দেশে বেশিরভাগ মানুষ কৃষিখাতের মাধ্যমে তাদের জীবন জীবিকা নির্বাহ করে। কৃষি নির্ভরশীল এ দেশে বিভিন্ন সময় নানা প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এই খাত। বিশেষ করে দিনদিন এই শিল্পের নির্ভরশীলতা কমে যাচ্ছে। সরকার এই খাতের অগ্রগতি বৃদ্ধির জন্য জোর প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তার ধারাবাহিকতায় এ বছর প্রস্তাবিত ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে গত বছরের তুলনায় কৃষি খাতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে ২ হাজার ৩৭৯ কোটি টাকা। বাজেট বাড়ানো হলেও প্রান্তিক পর্যায়ে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে কৃষকরা। বিশেষ করে বর্তমানে দেশে ঘনঘন প্রাকৃতিক দুর্যোগের সম্মুখীন হচ্ছে কৃষকরা। সম্প্রতি ঘূর্ণিঝড় রেমালে দেশের ৫০ জেলায় প্রায় ৬২ হাজার ৮০০ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এতে আর্থিক ক্ষতির পরিমাণ ১ হাজার ৫৯ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৩৭ হাজারেরও বেশি কৃষক। আর এই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে নানা উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের একটি দায়িত্বশীল সূত্র জানাচ্ছে, গত ২৬ ও ২৭ মে উপকূলসহ দেশের উপর দিয়ে প্রবল ঘূর্ণিঝড় রেমাল আঘাত হানে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে জলোচ্ছ্বাস ও ভারি বৃষ্টিপাতে পানিতে তলিয়ে যায় বিস্তীর্ণ জনপদ। লবণ পানির প্রবেশ ও জলাবদ্ধতার কারণে ১৪টি কৃষি অঞ্চলের ৫০টি জেলার ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়। প্রায় ১ লাখ ৭১ হাজার হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয় বলে জানায় কৃষি মন্ত্রণালয়। ১৪ লাখ ৩০ হাজার হেক্টর ফসলি জমির মধ্যে ক্ষতির এ পরিমাণ খুবই কম বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা। ক্ষতিগ্রস্ত জেলাগুলো হচ্ছে- ভোলা, পটুয়াখালী, বরগুনা, পিরোজপুর, ঝালকাঠি, বরিশাল, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, নোয়াখালী, ফেনী, লক্ষ্মীপুর, ঢাকা, নারায়ণগঞ্জ, গাজীপুর, নরসিংদী, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, টাঙ্গাইল, কিশোরগঞ্জ, জামালপুর, কুমিল্লা, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, হবিগঞ্জ, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, রাজশাহী, নাটোর, বগুড়া, জয়পুরহাট, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, রংপুর, যশোর, ঝিনাইদহ, মাগুরা, কুষ্টিয়া, চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, খুলনা, বাগেরহাট, সাতক্ষীরা, নড়াইল, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, রাজবাড়ী, শরীয়তপুর, সুনামগঞ্জ ও মৌলভীবাজার।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ঘূর্ণিঝড়ে আউশ বীজতলা, আউশ আবাদ, বোরো, বোনা আমন, গ্রীষ্মকালীন সবজি, পাট, ভুট্টা, তিল, মুগ, আদা, হলুদ, মরিচ, চীনাবাদাম, আম, লিচু, পেঁপে, কলা, পেয়ারা, পান, আখ ও তরমুজ ফসলের ক্ষতি হয়। তবে বেশি ক্ষতি হয়েছে আউশ ধান ও বীজতলা। অধিদপ্তর ফসলের ক্ষতির একটি হিসাব তৈরি করেছে। তাতে দেখা গেছে, ৬২ হাজার ৭৮৩ দশমিক ৮২ হেক্টর জমির ফসল সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। এ ক্ষতির আর্থিক পরিমাণ প্রায় ১ হাজার ৫৯ কোটি ৫০ লাখ ৯৮ হাজার টাকা। আর কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন ৫ লাখ ৩৭ হাজার ২৩৪ জন।

এদিকে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর (ডিএই) জানিয়েছে, ২৫ জেলার ক্ষতিগ্রস্ত ২ লাখ ২৭ হাজার ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে। তাদের মাঝে প্রায় ১৬ কোটি ১১ লাখ টাকার বীজ ও সার বিতরণ করা হবে। কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে বরিশাল ও খুলনা বিভাগের সব জেলাসহ উপকূলীয় ২৫ জেলার ২ লাখ ২৭ হাজার ৭০৪ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে বলে জানিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। সংস্থাটি জানায়, এসব কৃষকের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার প্রদানের জন্য ১৬ কোটি ১১ লাখ ৫২ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। প্রত্যেক কৃষককে বিনামূল্যে ৫ কেজি করে উচ্চ ফলনশীল (উফশী) জাতের রোপা আমনের বীজ এবং ১০ কেজি করে ডিএপি ও এমওপি সার দেয়া হবে। তালিকভুক্ত কৃষকদের মাঝে এই কৃষি উপকরণ প্রদান করা হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা। আনুষ্ঠানিকভাবে এসব উপকরণ বিতরণের জন্য কৃষিমন্ত্রীর পটুয়াখালীতে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে বলে ডিএইর শীর্ষ সূত্র জানিয়েছে। তবে তাৎক্ষণিকভাবে ১৫ জেলার ২১ হাজার ৫৫ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষককে পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় আনার কথা জানায় ডিএই। এতে বরাদ্দ করা হয় ১ কোটি ৪৮ লাখ ৯৫ হাজার টাকা।

কৃষি অর্থনীতিবিদ ও ঢাকা স্কুল অব ইকোনমিকসের পরিচালক অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে কৃষকদের এখনই প্রণোদনা দিতে হবে। আগামী মৌসুমের জন্য উপকরণ সহায়তা বাড়ানোর পাশাপাশি কৃষকদের সঙ্গে কৃষি কর্মকর্তাদের নিবিড়ভাবে কাজ করতে হবে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কৃষিবিদ বাদল চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা খুব দ্রুত ক্ষতিগ্রস্ত জেলার কৃষকের কাছে প্রণোদনা পৌঁছানোর পরিকল্পনা করছি। ঘূর্ণিঝড়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত ২৫ জেলার প্রান্তিক ও ক্ষুদ্র কৃষককে পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় আনা হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় যে টাকা বরাদ্দ দিয়েছে তা দিয়ে কৃষি উপকরণ দেয়া হবে। ইতোমধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের তালিকা তৈরির কাজ শুরু হয়েছে। কৃষি মন্ত্রণালয় কৃষকের পাশেই আছে। মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা সার্বক্ষণিক কৃষকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন। এ ছাড়া আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষেত থেকে সর্বোচ্চ ভালো ফসল পাওয়ার উপায়গুলো কৃষকদের দেখানো হচ্ছে।’