০২:২৬ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নোয়াখালীতে সাংবাদিক দম্পতির শখের ছাদবাগানে দুর্লভ মরিচ, দাম লাখ টাকা

  • সবুজ বাংলা
  • আপডেট সময় : ০৯:১৮:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩
  • 105

নোয়াখালী প্রতিনিধি 

করোনায় যখন বাসায় বসে সময় কাটাচ্ছেন ঠিক তখনই মাথায় আসে ছাদ বাগানেরে। প্রথমে ফলজ গাছের চারা দিয়ে শুরু করেন ছাদবাগান। সে ছাদ বাগানে বর্তমানে ১৪০ প্রজাতির ফলজ ও ওষুধি গাছের মধ্যে মিললো বিশ্বের সবচেয়ে দামি মরিচ চারাপিতা। দেখতে গোলাকার প্রতিকেজি চারাপিতা মরিচের দাম ২৬ হাজার মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় ২৮ লাখেরও বেশি। দামি এই মরিচ গাছ দেখতে প্রতিনিয়ত ছাদবাগানে ভিড় করছে শত শত মানুষ।

নোয়াখালী জেলা সদরের কালিতারা বাজার এলাকায় দোতলা বাড়ির ছাদে ২০১৯ সালে সখের বশে বাগান গড়ে তোলেন সাংবাদিক দিলদার উদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী স্কুল শিক্ষিকা সালমা ইমাম শিল্পী। ছাদবাগানে গত দুই বছর আগে স্থান পায় দুইটি মরিচ গাছ। এ গাছ গুলো দেড় বছর থেকে ফল দিয়ে আসছে। যা থেকে দুইশত মরিচ খেয়েছেন দিয়েছেন প্রতিবেশীদের ও। যার মধ্যে একটি গাছ মারা গেছে বর্তমানে আর একটি গাছ আছে। উত্তর আমেরিকার পেরুর সুগন্ধি জাতের এ মরিচের নাম ‘চারাপিতা’। এটি বিশ্বের ‘সবচেয়ে দামি’ মরিচ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এই জাতের এক কেজি শুকনা মরিচের দাম ২৬ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ সাড়ে ২৮ লাখ টাকা।

এ ছাড়া তাদের ছাদবাগানে মাত্র ৪ বছরের মাথায় ছাদবাগনে স্থান পেয়েছে পার্সিমন, পিচফল, ট্যাং ফল, পিনাট বার্টার, মিয়াজাকি আম, রামভুটানসহ ১৪০ প্রজাতির দুর্লভ ফলজ ও ওষুধি গাছ।

সাংবাদিক দিলদার হোসেন জানান, ২০২১ সালে
তাঁর যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী মেয়ের শাশুড়ি দেশে আসার সময় সেখান থেকে কয়েকটি মরিচ এনেছিলেন। এর মধ্যে দুটি মরিচ তাঁকে দিলে সেগুলোর বীজ তিনি ছাদের টবের মাটিতে পুঁতে রাখেন। কয়েক দিনের মাথায় দুটি চারা গাছ জন্মায়। এরপর দুটি গাছেই দেড় মাসের মাথায় ফুল ও মরিচ ধরে। যা গত দেড় বছরে তিনি গাছ দুটি থেকে দুই শতাধিক মরিচ তুলেছেন। তখন এ মরিচের দাম তিনি জানতেন না।

তিনি জানান, এক গাছে বছর খানেক মরিচ ধরে।এর পর এ গাছ মারা যায়। এক বছর মরিচ ধরার পর মরে যাওয়া দেখে তিনি গত আঘষ্ট মাসে ইউটিউবে প্রথম এ মরিচ গাছ সম্পর্কে জানতে পারেন । ইউটিউবে এ মরিচ গাছে আকাশচুম্বী দাম ও বিশ্বজুড়ে এর দুষ্প্রাপ্যতার কথা জেনে বিস্মিত হন তিনি । তবে এ দেশের আবহাওয়া এ গাছটি যত্ন নিলে চাষাবাদের জন্য ভালো উপযোগী হবে।

তিনি আরো জানান , পরে আমি ওই দিনই মরিচগাছটির আশপাশ থেকে সব আগাছা পরিষ্কার করে গাছটির পরিচর্যা শুরু করি। তখন গাছটিতে চারটি পাকা মরিচ ছিল। মরিচগুলো সংগ্রহ করে বাসায় নিয়ে রাখি। এরপর ওই মরিচ থেকে বীজ নিয়ে বীজতলা তৈরি করি, যা থেকে ২০টি চারা উৎপাদিত হয়। এর মধ্য থেকে তিনি আটটি চারা এরই মধ্যে টবে স্থানান্তর করেছেন। বাকিগুলো এখনো বীজতলায় আছে। বর্তমানে ছোট-বড় মিলে তার বাগানে ২৭টি মরিচ গাছ আছে।

এ দিকে তার স্ত্রী সালমা ইমাম শিল্পী জানান, এই গাছটির এত দাম আমদের আগে জানা ছিল না । তবে এ মরিচে ঝাল কম তরকারিতে দিলে সুগন্ধ ছড়ায়। এ মরিচ ধরার পর প্রথম অবস্থায় সাদা, এরপর সবুজ, পরে হলুদ, তারপর কমলা এবং সবশেষে টুকটুকে লাল বর্ণ ধারণ করে। মরিচ গুলো আকারে ছোট হওয়ায় দেখতে অনেক সুন্দর।

এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নোয়াখালীর প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা গৌর ব্রত ভৌমিক জানান, কোন কৃষক যদি এই মরিচ চাষাবাদে আগ্রহী হন তাহলে তাদের পক্ষ থেকে সব ধরণের প্রযুক্তিগত সহযোগিতা প্রদান করা হবে।

জনপ্রিয় সংবাদ

মেঘনায় দুই লঞ্চের সংঘর্ষে ৮ জন নিহত

নোয়াখালীতে সাংবাদিক দম্পতির শখের ছাদবাগানে দুর্লভ মরিচ, দাম লাখ টাকা

আপডেট সময় : ০৯:১৮:৩৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩

নোয়াখালী প্রতিনিধি 

করোনায় যখন বাসায় বসে সময় কাটাচ্ছেন ঠিক তখনই মাথায় আসে ছাদ বাগানেরে। প্রথমে ফলজ গাছের চারা দিয়ে শুরু করেন ছাদবাগান। সে ছাদ বাগানে বর্তমানে ১৪০ প্রজাতির ফলজ ও ওষুধি গাছের মধ্যে মিললো বিশ্বের সবচেয়ে দামি মরিচ চারাপিতা। দেখতে গোলাকার প্রতিকেজি চারাপিতা মরিচের দাম ২৬ হাজার মার্কিন ডলার। যা বাংলাদেশি টাকায় ২৮ লাখেরও বেশি। দামি এই মরিচ গাছ দেখতে প্রতিনিয়ত ছাদবাগানে ভিড় করছে শত শত মানুষ।

নোয়াখালী জেলা সদরের কালিতারা বাজার এলাকায় দোতলা বাড়ির ছাদে ২০১৯ সালে সখের বশে বাগান গড়ে তোলেন সাংবাদিক দিলদার উদ্দিন ও তাঁর স্ত্রী স্কুল শিক্ষিকা সালমা ইমাম শিল্পী। ছাদবাগানে গত দুই বছর আগে স্থান পায় দুইটি মরিচ গাছ। এ গাছ গুলো দেড় বছর থেকে ফল দিয়ে আসছে। যা থেকে দুইশত মরিচ খেয়েছেন দিয়েছেন প্রতিবেশীদের ও। যার মধ্যে একটি গাছ মারা গেছে বর্তমানে আর একটি গাছ আছে। উত্তর আমেরিকার পেরুর সুগন্ধি জাতের এ মরিচের নাম ‘চারাপিতা’। এটি বিশ্বের ‘সবচেয়ে দামি’ মরিচ হিসেবে বিবেচনা করা হয়। যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে এই জাতের এক কেজি শুকনা মরিচের দাম ২৬ হাজার ডলার। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ সাড়ে ২৮ লাখ টাকা।

এ ছাড়া তাদের ছাদবাগানে মাত্র ৪ বছরের মাথায় ছাদবাগনে স্থান পেয়েছে পার্সিমন, পিচফল, ট্যাং ফল, পিনাট বার্টার, মিয়াজাকি আম, রামভুটানসহ ১৪০ প্রজাতির দুর্লভ ফলজ ও ওষুধি গাছ।

সাংবাদিক দিলদার হোসেন জানান, ২০২১ সালে
তাঁর যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী মেয়ের শাশুড়ি দেশে আসার সময় সেখান থেকে কয়েকটি মরিচ এনেছিলেন। এর মধ্যে দুটি মরিচ তাঁকে দিলে সেগুলোর বীজ তিনি ছাদের টবের মাটিতে পুঁতে রাখেন। কয়েক দিনের মাথায় দুটি চারা গাছ জন্মায়। এরপর দুটি গাছেই দেড় মাসের মাথায় ফুল ও মরিচ ধরে। যা গত দেড় বছরে তিনি গাছ দুটি থেকে দুই শতাধিক মরিচ তুলেছেন। তখন এ মরিচের দাম তিনি জানতেন না।

তিনি জানান, এক গাছে বছর খানেক মরিচ ধরে।এর পর এ গাছ মারা যায়। এক বছর মরিচ ধরার পর মরে যাওয়া দেখে তিনি গত আঘষ্ট মাসে ইউটিউবে প্রথম এ মরিচ গাছ সম্পর্কে জানতে পারেন । ইউটিউবে এ মরিচ গাছে আকাশচুম্বী দাম ও বিশ্বজুড়ে এর দুষ্প্রাপ্যতার কথা জেনে বিস্মিত হন তিনি । তবে এ দেশের আবহাওয়া এ গাছটি যত্ন নিলে চাষাবাদের জন্য ভালো উপযোগী হবে।

তিনি আরো জানান , পরে আমি ওই দিনই মরিচগাছটির আশপাশ থেকে সব আগাছা পরিষ্কার করে গাছটির পরিচর্যা শুরু করি। তখন গাছটিতে চারটি পাকা মরিচ ছিল। মরিচগুলো সংগ্রহ করে বাসায় নিয়ে রাখি। এরপর ওই মরিচ থেকে বীজ নিয়ে বীজতলা তৈরি করি, যা থেকে ২০টি চারা উৎপাদিত হয়। এর মধ্য থেকে তিনি আটটি চারা এরই মধ্যে টবে স্থানান্তর করেছেন। বাকিগুলো এখনো বীজতলায় আছে। বর্তমানে ছোট-বড় মিলে তার বাগানে ২৭টি মরিচ গাছ আছে।

এ দিকে তার স্ত্রী সালমা ইমাম শিল্পী জানান, এই গাছটির এত দাম আমদের আগে জানা ছিল না । তবে এ মরিচে ঝাল কম তরকারিতে দিলে সুগন্ধ ছড়ায়। এ মরিচ ধরার পর প্রথম অবস্থায় সাদা, এরপর সবুজ, পরে হলুদ, তারপর কমলা এবং সবশেষে টুকটুকে লাল বর্ণ ধারণ করে। মরিচ গুলো আকারে ছোট হওয়ায় দেখতে অনেক সুন্দর।

এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর নোয়াখালীর প্রশিক্ষণ কর্মকর্তা গৌর ব্রত ভৌমিক জানান, কোন কৃষক যদি এই মরিচ চাষাবাদে আগ্রহী হন তাহলে তাদের পক্ষ থেকে সব ধরণের প্রযুক্তিগত সহযোগিতা প্রদান করা হবে।