বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কর্তৃক আয়োজিত ২দিনব্যাপি আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় তরুণ কলাম লেখক সম্মেলনের ২য় দিনের পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার (১০ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবসা প্রশাসন অনুষদের অডিটোরিয়ামে মো. ইত্তেখারুল ইসলাম সিফাতের সভাপতিত্বে গিরেন্দ্র চক্রবর্তী ও কারিশমা আনান ইরিনের সঞ্চালনায় এই প্রোগ্রাম অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইমেরিটাস অধ্যাপক ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় উপ- উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক ড.সেকান্দর চৌধুরী, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) অধ্যাপক বেণু কুমার দে এবং বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. শেখ সাদী।
অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে ড. আতিউর রহমান বলেন, “একদিনে বড় লেখক হওয়া যায় না তার জন্য ইঞ্চি ইঞ্চি করে আগাতে হবে কখনও হাল ছাড়া যাবেনা। এমন লিখা লিখতে হবে যা পাঠ করলে মনকে ছুঁয়ে যাবে চারদিক থেকে তোমার জন্য অনুপ্রেরণা আসবে। আপনি ভালো লেখক হতে হলে ভালো বই পড়তে হবে। আপনি যখন লিখবেন তখন লিখছেন মনে না করে মনে করবেন আমি বলছি কারণ আপনার লিখাটা মানুষের মাঝে পড়ার মত তুলে উঠাতে হবে। ভালো লেখক হতে হলে আপনাকে চারদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আপনার লিখা বন্ধুদের পড়াতে পারেন বন্ধুরা বলেদিবে আপনার লিখাটা আরেকটু ভালো করতে পারতে কোথায় কি সমস্যা ছিল বন্ধুদের কাছ থেকে শিখতে পারবেন। লেখালেখির জন্য উপযুক্ত সময় হচ্ছে ভোরবেলা। ভোরবেলায় লিখলে লেখাতে মনোযোগ দেওয়া যায়। আপনার লেখার কেউ সমালোচনা করলে তা আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করতে হবে। নিজের লেখার মাঝে সবসময় নিজস্ব একটা শৈলী তৈরী করতে হবে। বক্তব্য শেষে প্রশ্নপর্বে শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে ড. মো. আবু তাহের বলেন, আমার অনেক লিখা প্রকাশ করতে আমি নিজে প্রিন্টে কাজ করতাম, বাইন্ডিং করতাম। আমার লিখা কয়েকটি গ্রন্থগুলো হল দৃষ্টির সীমানা, সময়ের জলছাপ, সমকালীন প্রবাহ, বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবার্ষিকী, হৃদয়ে বঙ্গবন্ধু। আমি এখনও ফজরের পর সকাল ৭টা পর্যন্ত লেখালেখি করি। আমি আপনাদেরকে বলবো আপনি ভালো লেখক হতে হলে সবসময় লেগে থাকতে হবে এবং বেশি বেশি বই পড়তে হবে। পৃথিবী বিক্ষ্যাত লেখকদের লিখা বইগুলো পড়তে হবে। আপনাকে অবশ্যই পরিশ্রমি হতে হবে।
উপ-উপাচার্য (একাডেমিক) ড. সেকান্দর বলেন, তরুণদেরকে লেখালেখিতে আগ্রহী করে তুলতে তাদেরকে বিক্ষ্যাত লেখকদের লিখা এবং জীবনী পড়তে হবে। নিজেদের মেধা বিকশিত করতে সব সময় পরিশ্রমি হতে হবে। আপনি দুইলাইন লেখতে হলে আগে দুইশত লাইন পড়তে হবে। লেখকের লিখা গ্রহনযোগ্য করতে সাবলীলভাবে উপস্থাপন করতে হবে।
উপ-উপাচার্য (প্রশাসন) অধ্যাপক বেনু কুমার দে বলেন, লেখালেখি করতে হবে সমাজের অসংগতিপূর্ণ বিষয়গুলো নিয়ে। আমি আপনাদেরকে বলবো আপনারা কয়েকটা বিষয়ে জোরদিয়ে লিখালেখি করবেন সেগুলো হলো নারীর অধিকার, ডিজিটাল প্রযুক্তির আসক্তি এবং মাদকাসক্ত। সাম্রাজ্যেবাদীরা চাচ্ছে আমরা যেন সামনের দিকে আগাতে না পারি। তারা চাচ্ছে আমাদের তরুণ প্রজন্মকে ধ্বংসের দারপ্রান্তে নিয়ে যেতে। আশা করি আপনাদের লেখালেখির মাধ্যমে সমাজ এবং দেশ উপকার পাবে।
অনুষ্ঠানে প্যানেল আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন চবি ক্রিমিনোলজি এন্ড পুলিশ সায়েন্স বিভাগের চেয়ারম্যান মো. সাখাওয়াত হোসেন, দৈনিক প্রতিদিনের সংবাদপত্রের উপ- সম্পাদক কাজী আবুল মনসুর এবং প্রাবন্ধিক, সাহিত্যিক ও কলামিস্ট কামরুল হাসান বাদল। উল্লেখ্য, গত পহেলা জুলাই বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরাম চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক ১ম পর্ব অনুষ্ঠিত হয়েছে।

























