০২:৪৫ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

হামার গ্রামোত তো থাকি থাকি কারেন্ট যাওছে

একদিকে মৃদু তাপপ্রবাহ অন্যদিকে বিদ্যুৎ এর ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে চরম বিপাকে পড়েছে মানুষ। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে এ অবস্থা বিরাজ করছে রংপুর বিভাগে। রংপুর মহানগরীতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১০-১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ মিললেও গ্রামে দিন-রাত মিলে ৬-৮ ঘণ্টারও কম সময় বিদ্যুৎ পাচ্ছে গ্রাহকরা। অস্বাভাবিক লোডশেডিংয়ে হাঁপিয়ে উঠেছে জনজীবন।রংপুরসহ বিভাগের আট জেলার সর্বত্র লোডশেডিংয়ে নাভিশ্বাস সব বয়সী মানুষের। ঘণ্টায় ঘণ্টায় বিদ্যুৎ যাওয়া-আসার কারণে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে জনমনে। রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ১ ও ২-এর গ্রাহকসহ গোটা বিভাগের প্রায় ১ কোটি গ্রাহক দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এদিকে কয়েক দিনের বৃষ্টির পর মৃদু তাপপ্রবাহ চলছে রংপুর অ লে। তাপপ্রবাহের ফলে গরম অনুভূত হচ্ছে বেশি, এর সঙ্গে অসহনীয় লোডশেডিংয়ে অস্বস্তি বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে নারী, বয়স্ক ও শিশুদের। বাড়ছে মৌসুমি জ্বর-সর্দি ও অন্যান্য অসুস্থতা। দ্রুত লোডশেডিং বন্ধ করাসহ নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতে জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রংপুরের সাধারণ মানুষ বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে সারা দেশের মধ্যে রংপুর বিভাগেই সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে, যা এখন অসহনীয় পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে। এর প্রভাব ছোট বড় কলকারখানা ও ব্যবসায়েও পড়তে শুরু করেছে। ব্যাঘাত ঘটছে উৎপাদন কার্যক্রমে। বিলাসবহুল শপিংমল, বিপণী বিতানসহ ছোট-বড় মার্কেটগুলোতে কেনা-বেচায় মন্দাভাব সৃষ্টি হয়েছে। গ্রাহকরা অভিযোগ করে বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি গ্রাহকের কাছ থেকে ইচ্ছেমতো বিল আদায় করছে। মিটার ভাড়া ও ডিমান্ড চার্জ নিচ্ছে, যা একেবারেই অযৌক্তিক। অথচ সেবার মান নেই। ঘন ঘন বিদ্যুৎ যাওয়া-আসা করে। এতে গ্রাহকরা নানা সমস্যায় পড়ছেন। লোডশেডিংয়ের কারণে অনেকের ফ্রিজ, টিভিসহ অন্যান্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জামও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জানা যায়, রংপুর মহানগরীর ২টি সমিতির প্রতিটির আওতায় গড়ে ৫ থেকে ৭ লক্ষ গ্রাহক এবং ৮ থেকে ১০ হাজার কিলোমিটারের বেশি বৈদ্যুতিক লাইন রয়েছে। প্রতিটি সমিতিতে বিদ্যুতের চাহিদা গড়ে ৭০ থেকে ১২০ মেগাওয়াট পর্যন্ত। কিন্তু চাহিদার অনেক কম বিদ্যুৎ পাচ্ছে সমিতিগুলো। ঘাটতি থেকে যাচ্ছে ৩০-৪০ মেগাওয়াট। একই অবস্থা রংপুর জেলা ও বিভাগের অন্য জেলাগুলোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিরও।রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর গ্রাহক পীরগাছা উপজেলার কান্দি বাজার এলাকার আমিনুল ইসলাম জুয়েল বলেন, একদিকে গরম আর অন্যদিকে বিদ্যুতের ঘনঘন যাওয়া-আসা। বার বার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কোনো প্রতিকার পাইনি। রংপুর নগরীর নজিরেরহাট এলাকার গ্রাহক জাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন গড়ে ১০-১২ বার লোডশেডিং হচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকায় ফ্রিজসহ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফ্রিজে রাখা খাবার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নগরীর হাজীপাড়া শাপলা চত্ত্বর এলাকার ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন বলেন, গত ১৫ বছর ধরে শুধু বিদ্যুতের উন্নতি কথা শুনেছি। এখন হাসিনার পতনের পর তা বাস্তবে দেখছি। বিদ্যুৎ কখন যাবে আর কখন আসবে তা বলা মুশকিল। প্রচন্ড গরম আর লোডশেডিংয়ে জীবন শেষ। দোকানে বসে থাকাও সম্ভব হচ্ছে না। অসহ্য লোডশেডিংয়ের কারণে ব্যবসার অবস্থাও খারাপ। আক্ষেপ রংপুর জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটের মোবাইলফোন ব্যবসায়ী অমিত হাসান বলেন, লোডশেডিং আর প্রচন্ড গরমে মার্কেটের অবস্থা খুবই খারাপ। জেনারেটর দিয়ে কতক্ষণ থাকা যায়। আগের মতো এখন কাজও করতে পারছি না। রংপুর সদর উপজেলার পাগলাপীর বাজার এলাকার মজিবর রহমান বলেন, হামার গ্রামোত তো থাকি থাকি কারেন্ট যাওছে। কোন দিন থাকি পরিস্থিতি ভালো হইবে, তাক তো পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের লোকেরা কবার পাওছে না। পরিস্থিতি কবে নাগাদ স্বাভাবিক হবে-তার কোনো সদুত্তর নেই বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে। তবে গ্যাস ও ডিজেল সংকটসহ বিদ্যুৎ উৎপাদনে কিছু ব্যাঘাত ঘটায় চাহিদার তুলনায় কম বিদ্যুৎ মিলছে বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা। সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ অফিস তথ্য সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ১৬ জেলায় নেসকো ও পল্লী বিদ্যুতের চাহিদা ২ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট। তবে সরবরাহ মিলছে এক হাজার ৭০০ থেকে এক হাজার ৮০০ মেগাওয়াট। চাহিদার তুলনায় ঘাটতি প্রায় ৯০০ মেগাওয়াটের ঊর্ধ্বে। অন্যদিকে রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় পল্লী বিদ্যুৎ ও নেসকো মিলে চাহিদা এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট। সেখানে মিলেছে ৮০০ মেগাওয়াটেরও কম। চাহিদার তুলনায় ঘটতি ৪০০ মেগাওয়াটের বেশি। রংপুর বিদ্যুৎ বিভাগের নর্দান ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কো¤পানি (নেসকো) সূত্রে জানা যায়, জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদার তুলনায় অনেক কম বিদ্যুৎ পাওয়ায় ঘন ঘন লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। অবস্থা স্বাভাবিক হতে কত দিন সময় লাগবে তা জানাতে পারেননি কোনো কর্মকর্তা। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলো সুত্রে জানা যায়, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম পাওয়ায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে। এছাড়া প্রায়ই বৈদ্যুতিক লাইনে ত্রুটি দেখা দিচ্ছে। এসব কারণে ঠিকমতো বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট তথ্য সূত্রে জানা যায়, রংপুরের শঠিবাড়ি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতায় ৬ লক্ষাধিক গ্রাহক রয়েছে। সমিতিতে দৈনিক চাহিদা রয়েছে ১২০ থেকে ১৩০ মেগাওয়াট। তবে বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ মেগাওয়াট। ঘাটতি রয়েছে ৩০ থেকে ৪০ মেগাওয়াট। রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর তারাগঞ্জ জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. মনোয়ার হোসেন সুমন বলেন, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কিছুটা কম পাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বরাদ্দ ঠিকমতো পেলে গ্রাহকের আর সমস্যা থাকবে না। তারাগঞ্জ জোনে বিদ্যুতের চাহিদা ১৮ মেগাওয়াট, সেখানে বর্তমানে মিলছে মাত্র ৫ মেগাওয়াট। রংপুর বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন বলেন, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম পাওয়ায় লোডশেডিং হচ্ছে। অবস্থা উত্তরণে চেষ্টা চলছে। রংপুর বিভাগের সচেতন নাগরিকগণ বলেন, দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন শুরু না করা হলে এ অ লে আরও লোডশেডিং বৃদ্ধি পাবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বড়পুকুরিয়া কয়লভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন শুরু করা প্রয়োজন। শিক্ষার্থীরা চার্জার লাইট ও মোমবাতি জ¦ালিয়ে লেখাপড়া করছে। এদিকে রংপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক দিন ধরে রংপুর অ লে তাপমাত্রা ৩২-৩৫ ডিগ্রিতে ওঠা-নামা করছে। আপাতত এ অ লে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।

 

 

জনপ্রিয় সংবাদ

মেঘনায় দুই লঞ্চের সংঘর্ষে ৮ জন নিহত

হামার গ্রামোত তো থাকি থাকি কারেন্ট যাওছে

আপডেট সময় : ০৪:২৩:১৩ অপরাহ্ন, বুধবার, ১১ সেপ্টেম্বর ২০২৪

একদিকে মৃদু তাপপ্রবাহ অন্যদিকে বিদ্যুৎ এর ঘন ঘন লোডশেডিংয়ে চরম বিপাকে পড়েছে মানুষ। এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে এ অবস্থা বিরাজ করছে রংপুর বিভাগে। রংপুর মহানগরীতে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ১০-১২ ঘণ্টা বিদ্যুৎ মিললেও গ্রামে দিন-রাত মিলে ৬-৮ ঘণ্টারও কম সময় বিদ্যুৎ পাচ্ছে গ্রাহকরা। অস্বাভাবিক লোডশেডিংয়ে হাঁপিয়ে উঠেছে জনজীবন।রংপুরসহ বিভাগের আট জেলার সর্বত্র লোডশেডিংয়ে নাভিশ্বাস সব বয়সী মানুষের। ঘণ্টায় ঘণ্টায় বিদ্যুৎ যাওয়া-আসার কারণে চরম ক্ষোভ দেখা দিয়েছে জনমনে। রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ১ ও ২-এর গ্রাহকসহ গোটা বিভাগের প্রায় ১ কোটি গ্রাহক দুর্ভোগ পোহাচ্ছেন। এদিকে কয়েক দিনের বৃষ্টির পর মৃদু তাপপ্রবাহ চলছে রংপুর অ লে। তাপপ্রবাহের ফলে গরম অনুভূত হচ্ছে বেশি, এর সঙ্গে অসহনীয় লোডশেডিংয়ে অস্বস্তি বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি সমস্যা হচ্ছে নারী, বয়স্ক ও শিশুদের। বাড়ছে মৌসুমি জ্বর-সর্দি ও অন্যান্য অসুস্থতা। দ্রুত লোডশেডিং বন্ধ করাসহ নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিতে জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। রংপুরের সাধারণ মানুষ বলেন, চলমান পরিস্থিতিতে সারা দেশের মধ্যে রংপুর বিভাগেই সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং দেওয়া হচ্ছে, যা এখন অসহনীয় পর্যায়ে গিয়ে ঠেকেছে। এর প্রভাব ছোট বড় কলকারখানা ও ব্যবসায়েও পড়তে শুরু করেছে। ব্যাঘাত ঘটছে উৎপাদন কার্যক্রমে। বিলাসবহুল শপিংমল, বিপণী বিতানসহ ছোট-বড় মার্কেটগুলোতে কেনা-বেচায় মন্দাভাব সৃষ্টি হয়েছে। গ্রাহকরা অভিযোগ করে বলেন, পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি গ্রাহকের কাছ থেকে ইচ্ছেমতো বিল আদায় করছে। মিটার ভাড়া ও ডিমান্ড চার্জ নিচ্ছে, যা একেবারেই অযৌক্তিক। অথচ সেবার মান নেই। ঘন ঘন বিদ্যুৎ যাওয়া-আসা করে। এতে গ্রাহকরা নানা সমস্যায় পড়ছেন। লোডশেডিংয়ের কারণে অনেকের ফ্রিজ, টিভিসহ অন্যান্য বৈদ্যুতিক সরঞ্জামও নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জানা যায়, রংপুর মহানগরীর ২টি সমিতির প্রতিটির আওতায় গড়ে ৫ থেকে ৭ লক্ষ গ্রাহক এবং ৮ থেকে ১০ হাজার কিলোমিটারের বেশি বৈদ্যুতিক লাইন রয়েছে। প্রতিটি সমিতিতে বিদ্যুতের চাহিদা গড়ে ৭০ থেকে ১২০ মেগাওয়াট পর্যন্ত। কিন্তু চাহিদার অনেক কম বিদ্যুৎ পাচ্ছে সমিতিগুলো। ঘাটতি থেকে যাচ্ছে ৩০-৪০ মেগাওয়াট। একই অবস্থা রংপুর জেলা ও বিভাগের অন্য জেলাগুলোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিরও।রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর গ্রাহক পীরগাছা উপজেলার কান্দি বাজার এলাকার আমিনুল ইসলাম জুয়েল বলেন, একদিকে গরম আর অন্যদিকে বিদ্যুতের ঘনঘন যাওয়া-আসা। বার বার বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে জানানো হলেও কোনো প্রতিকার পাইনি। রংপুর নগরীর নজিরেরহাট এলাকার গ্রাহক জাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতিদিন গড়ে ১০-১২ বার লোডশেডিং হচ্ছে। বিদ্যুৎ না থাকায় ফ্রিজসহ বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। ফ্রিজে রাখা খাবার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নগরীর হাজীপাড়া শাপলা চত্ত্বর এলাকার ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন বলেন, গত ১৫ বছর ধরে শুধু বিদ্যুতের উন্নতি কথা শুনেছি। এখন হাসিনার পতনের পর তা বাস্তবে দেখছি। বিদ্যুৎ কখন যাবে আর কখন আসবে তা বলা মুশকিল। প্রচন্ড গরম আর লোডশেডিংয়ে জীবন শেষ। দোকানে বসে থাকাও সম্ভব হচ্ছে না। অসহ্য লোডশেডিংয়ের কারণে ব্যবসার অবস্থাও খারাপ। আক্ষেপ রংপুর জেলা পরিষদ সুপার মার্কেটের মোবাইলফোন ব্যবসায়ী অমিত হাসান বলেন, লোডশেডিং আর প্রচন্ড গরমে মার্কেটের অবস্থা খুবই খারাপ। জেনারেটর দিয়ে কতক্ষণ থাকা যায়। আগের মতো এখন কাজও করতে পারছি না। রংপুর সদর উপজেলার পাগলাপীর বাজার এলাকার মজিবর রহমান বলেন, হামার গ্রামোত তো থাকি থাকি কারেন্ট যাওছে। কোন দিন থাকি পরিস্থিতি ভালো হইবে, তাক তো পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের লোকেরা কবার পাওছে না। পরিস্থিতি কবে নাগাদ স্বাভাবিক হবে-তার কোনো সদুত্তর নেই বিদ্যুৎ বিভাগের কাছে। তবে গ্যাস ও ডিজেল সংকটসহ বিদ্যুৎ উৎপাদনে কিছু ব্যাঘাত ঘটায় চাহিদার তুলনায় কম বিদ্যুৎ মিলছে বলে দাবি করছেন সংশ্লিষ্টরা। সংশ্লিষ্ট বিদ্যুৎ অফিস তথ্য সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে রংপুর ও রাজশাহী বিভাগের ১৬ জেলায় নেসকো ও পল্লী বিদ্যুতের চাহিদা ২ হাজার ৬০০ থেকে ২ হাজার ৭০০ মেগাওয়াট। তবে সরবরাহ মিলছে এক হাজার ৭০০ থেকে এক হাজার ৮০০ মেগাওয়াট। চাহিদার তুলনায় ঘাটতি প্রায় ৯০০ মেগাওয়াটের ঊর্ধ্বে। অন্যদিকে রংপুর বিভাগের ৮ জেলায় পল্লী বিদ্যুৎ ও নেসকো মিলে চাহিদা এক হাজার ২০০ মেগাওয়াট। সেখানে মিলেছে ৮০০ মেগাওয়াটেরও কম। চাহিদার তুলনায় ঘটতি ৪০০ মেগাওয়াটের বেশি। রংপুর বিদ্যুৎ বিভাগের নর্দান ইলেক্ট্রিসিটি সাপ্লাই কো¤পানি (নেসকো) সূত্রে জানা যায়, জাতীয় গ্রিড থেকে চাহিদার তুলনায় অনেক কম বিদ্যুৎ পাওয়ায় ঘন ঘন লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। অবস্থা স্বাভাবিক হতে কত দিন সময় লাগবে তা জানাতে পারেননি কোনো কর্মকর্তা। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতিগুলো সুত্রে জানা যায়, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম পাওয়ায় লোডশেডিং করতে হচ্ছে। এছাড়া প্রায়ই বৈদ্যুতিক লাইনে ত্রুটি দেখা দিচ্ছে। এসব কারণে ঠিকমতো বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যাচ্ছে না। সংশ্লিষ্ট তথ্য সূত্রে জানা যায়, রংপুরের শঠিবাড়ি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতায় ৬ লক্ষাধিক গ্রাহক রয়েছে। সমিতিতে দৈনিক চাহিদা রয়েছে ১২০ থেকে ১৩০ মেগাওয়াট। তবে বরাদ্দ পাওয়া যাচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ মেগাওয়াট। ঘাটতি রয়েছে ৩০ থেকে ৪০ মেগাওয়াট। রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর তারাগঞ্জ জোনাল অফিসের ডিজিএম মো. মনোয়ার হোসেন সুমন বলেন, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কিছুটা কম পাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। বরাদ্দ ঠিকমতো পেলে গ্রাহকের আর সমস্যা থাকবে না। তারাগঞ্জ জোনে বিদ্যুতের চাহিদা ১৮ মেগাওয়াট, সেখানে বর্তমানে মিলছে মাত্র ৫ মেগাওয়াট। রংপুর বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী ইকবাল হোসেন বলেন, চাহিদার তুলনায় বরাদ্দ কম পাওয়ায় লোডশেডিং হচ্ছে। অবস্থা উত্তরণে চেষ্টা চলছে। রংপুর বিভাগের সচেতন নাগরিকগণ বলেন, দিনাজপুরের বড়পুকুরিয়া কয়লভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন শুরু না করা হলে এ অ লে আরও লোডশেডিং বৃদ্ধি পাবে। দ্রুত সময়ের মধ্যে বড়পুকুরিয়া কয়লভিত্তিক তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন শুরু করা প্রয়োজন। শিক্ষার্থীরা চার্জার লাইট ও মোমবাতি জ¦ালিয়ে লেখাপড়া করছে। এদিকে রংপুর আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা যায়, গত কয়েক দিন ধরে রংপুর অ লে তাপমাত্রা ৩২-৩৫ ডিগ্রিতে ওঠা-নামা করছে। আপাতত এ অ লে বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।