০৫:৫০ অপরাহ্ন, বুধবার, ৩১ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৭ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

এনআইডি প্রদানে হয়রানি

নির্বাচন কমিশনের ১৩ কার্যালয়ে দুদকের অভিযান

এনআইডি সংশোধনের নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, দীর্ঘসূত্রতা, কাগজপত্র আটকে রাখা এবং দালালদের মাধ্যমে সেবা গ্রহীতাদের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ছিল বহুদিন ধরেই। দুদকের এই অভিযান সেইসব অনিয়ম রোধে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তৈরি ও সংশোধনে ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগে একযোগে দেশের ১৩টি জেলা নির্বাচন অফিসে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার সকালে দুদকের বিভিন্ন জেলা কার্যালয় থেকে সমন্বিতভাবে এ অভিযান শুরু হয়।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন, নবায়ন ও অন্যান্য সরকারি সেবার ক্ষেত্রে ঘুষ লেনদেন ও দালাল চক্রের মাধ্যমে হয়রানির অভিযোগের ভিত্তিতে সারা দেশের ১৩টি জেলা নির্বাচন অফিসে একযোগে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। যে ১৩টি জেলায় অভিযান চলে সেগুলো হলো-রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, নওগাঁ, বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, রংপুর, ঠাকুরগাঁও, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ ও জামালপুর। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি অফিসে সরেজমিনে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।
এর আগেও একাধিকবার সরকারি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছে দুদক। গত ৭ মে বিআরটিএ’র ৩৫টি অফিসে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও ফিটনেস সনদ ইস্যুতে দালালদের মাধ্যমে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে অভিযান চালানো হয়। ২৯ এপ্রিল দুর্নীতির অভিযোগে এলজিইডি’র ৩৬টি কার্যালয়ে এবং ১৬ এপ্রিল দেশের ৩৫টি সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে অভিযান পরিচালিত হয়। সুশাসন ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন প্রতিষ্ঠায় ধারাবাহিকভাবে এসব অভিযান পরিচালনা করে যাচ্ছে দুদক। সচেতন নাগরিক সমাজ এ উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও অনেকে দাবি করছেন দলীয় প্রভাবমুক্ত, নিরপেক্ষ ও কার্যকর ব্যবস্থাই পারে স্থায়ীভাবে দুর্নীতি দমন করতে।
এনআইডি সংশোধন, সংগ্রহ, এলাকা স্থানান্তর, আর্থিক লেনদেন ও সেবা প্রত্যাশীদের হয়রানির অভিযোগে নওগাঁয় জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল দুপুরে দুদকের একটি দল এ অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় তারা টাকা লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে। অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় নওগাঁর উপ-সহকারী পরিচালক মেহবুবা খাতুন রিতা জানান, সেবা প্রত্যাশীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে প্রথমে ছদ্মবেশে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে প্রবেশ করা হয়। এ সময় প্রত্যেক সেবা প্রত্যাশীদের কাছ থেকে টাকা নিতে দেখা যায়।
তিনি বলেন, এই অফিসে নগদ টাকা লেনদেনের সুযোগ নেই। কিন্তু তারা নগদ টাকা লেনদেন ও প্রত্যেক সেবা প্রত্যাশীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত চার্জ হিসেবে ১০০ টাকা নিচ্ছে। মেহবুবা খাতুন রিতা বলেন, পরবর্তীতে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে ডেকে সরেজমিনে এমন কর্মকাণ্ড দেখানো হয়। পরে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়। যাচাই-বাছাই শেষে কমিশনের কাছে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। টাকা লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করে জেলা নির্বাচন অফিসার মো. আব্দুল মোত্তালিব বলেন, নির্বাচন অফিসে সরাসরি নগদ টাকা লেনদেনের কোনো সুযোগ নেই। এনআইডির ক্ষেত্রে যে ফি নির্ধারণ করা আছে, অনলাইন ব্যাংকিং বা চালানের মাধ্যমে জমা দিয়ে অফিসে আসতে হয়।

জনপ্রিয় সংবাদ

হাদির খুনি ফয়সালের ভিডিওবার্তা নিয়ে যা জানা গেল

এনআইডি প্রদানে হয়রানি

আপডেট সময় : ০৭:২০:০৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৪ জুন ২০২৫

এনআইডি সংশোধনের নামে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, দীর্ঘসূত্রতা, কাগজপত্র আটকে রাখা এবং দালালদের মাধ্যমে সেবা গ্রহীতাদের কাছ থেকে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ ছিল বহুদিন ধরেই। দুদকের এই অভিযান সেইসব অনিয়ম রোধে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) তৈরি ও সংশোধনে ঘুষ ও দুর্নীতির অভিযোগে একযোগে দেশের ১৩টি জেলা নির্বাচন অফিসে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল সোমবার সকালে দুদকের বিভিন্ন জেলা কার্যালয় থেকে সমন্বিতভাবে এ অভিযান শুরু হয়।
দুদকের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. আকতারুল ইসলাম গণমাধ্যমকে জানান, জাতীয় পরিচয়পত্র সংশোধন, নবায়ন ও অন্যান্য সরকারি সেবার ক্ষেত্রে ঘুষ লেনদেন ও দালাল চক্রের মাধ্যমে হয়রানির অভিযোগের ভিত্তিতে সারা দেশের ১৩টি জেলা নির্বাচন অফিসে একযোগে এনফোর্সমেন্ট অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। যে ১৩টি জেলায় অভিযান চলে সেগুলো হলো-রাজশাহী, পাবনা, বগুড়া, নওগাঁ, বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, রংপুর, ঠাকুরগাঁও, কুড়িগ্রাম, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ ও জামালপুর। এরই মধ্যে বেশ কয়েকটি অফিসে সরেজমিনে অনিয়মের প্রমাণ পাওয়া গেছে বলে একটি সূত্রে জানা গেছে।
এর আগেও একাধিকবার সরকারি সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানে অভিযান চালিয়েছে দুদক। গত ৭ মে বিআরটিএ’র ৩৫টি অফিসে ড্রাইভিং লাইসেন্স ও ফিটনেস সনদ ইস্যুতে দালালদের মাধ্যমে ঘুষ লেনদেনের অভিযোগে অভিযান চালানো হয়। ২৯ এপ্রিল দুর্নীতির অভিযোগে এলজিইডি’র ৩৬টি কার্যালয়ে এবং ১৬ এপ্রিল দেশের ৩৫টি সাব-রেজিস্ট্রার অফিসে অভিযান পরিচালিত হয়। সুশাসন ও দুর্নীতিমুক্ত প্রশাসন প্রতিষ্ঠায় ধারাবাহিকভাবে এসব অভিযান পরিচালনা করে যাচ্ছে দুদক। সচেতন নাগরিক সমাজ এ উদ্যোগকে স্বাগত জানালেও অনেকে দাবি করছেন দলীয় প্রভাবমুক্ত, নিরপেক্ষ ও কার্যকর ব্যবস্থাই পারে স্থায়ীভাবে দুর্নীতি দমন করতে।
এনআইডি সংশোধন, সংগ্রহ, এলাকা স্থানান্তর, আর্থিক লেনদেন ও সেবা প্রত্যাশীদের হয়রানির অভিযোগে নওগাঁয় জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে অভিযান চালিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল দুপুরে দুদকের একটি দল এ অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় তারা টাকা লেনদেনের প্রমাণ পেয়েছে। অভিযানে নেতৃত্ব দেওয়া দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় নওগাঁর উপ-সহকারী পরিচালক মেহবুবা খাতুন রিতা জানান, সেবা প্রত্যাশীদের কাছ থেকে অভিযোগ পেয়ে প্রথমে ছদ্মবেশে জেলা নির্বাচন কার্যালয়ে প্রবেশ করা হয়। এ সময় প্রত্যেক সেবা প্রত্যাশীদের কাছ থেকে টাকা নিতে দেখা যায়।
তিনি বলেন, এই অফিসে নগদ টাকা লেনদেনের সুযোগ নেই। কিন্তু তারা নগদ টাকা লেনদেন ও প্রত্যেক সেবা প্রত্যাশীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত চার্জ হিসেবে ১০০ টাকা নিচ্ছে। মেহবুবা খাতুন রিতা বলেন, পরবর্তীতে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে ডেকে সরেজমিনে এমন কর্মকাণ্ড দেখানো হয়। পরে জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে প্রয়োজনীয় নথিপত্র সংগ্রহ করা হয়। যাচাই-বাছাই শেষে কমিশনের কাছে বিস্তারিত প্রতিবেদন দাখিল করা হবে। টাকা লেনদেনের বিষয়টি অস্বীকার করে জেলা নির্বাচন অফিসার মো. আব্দুল মোত্তালিব বলেন, নির্বাচন অফিসে সরাসরি নগদ টাকা লেনদেনের কোনো সুযোগ নেই। এনআইডির ক্ষেত্রে যে ফি নির্ধারণ করা আছে, অনলাইন ব্যাংকিং বা চালানের মাধ্যমে জমা দিয়ে অফিসে আসতে হয়।