লিওনেল মেসির ফুটবল ক্যারিয়ারের অন্যতম স্মরণীয় মুহূর্ত, ২০০৯ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে করা তার প্রিয় হেড গোলকে কেন্দ্র করে তৈরি একটি ডিজিটাল শিল্পকর্ম বিক্রি হয়েছে ১.৮৭ মিলিয়ন ডলারে, টাকায় যা প্রায় ২২ কোটি। বিশ্বখ্যাত শিল্পী রেফিক আনাদল এই অনন্য ডিজিটাল আর্ট তৈরি করেন কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সহায়তায়। বিশ্বের খ্যাতনামা নিলাম সংস্থা ক্রিস্টিজে অনুষ্ঠিত এই অনলাইন নিলামে কে এই রেকর্ডমূল্য দিয়ে কিনেছেন, তা প্রকাশ করা হয়নি।
‘আ গোল ইন লাইফ: মেসি ভার্সেস রেফিক আনাদল’ শীর্ষক এই শিল্পকর্মটি থেকে প্রাপ্ত পুরো অর্থ মেসির বর্তমান ক্লাব ইন্টার মায়ামি সিএফ ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে ইউনিসেফসহ একাধিক দাতব্য সংস্থায় যাবে। এই অর্থ আর্জেন্টিনা, মেক্সিকো, হন্ডুরাস, হাইতি ও এল সালভাদরে শিশুদের শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়ন কর্মকাণ্ডে ব্যবহৃত হবে।
বিশ্বখ্যাত শিল্পী রেফিক আনাদল জানান, এটি কেবল দুজন মানুষের যৌথ কাজ নয়, বরং খেলাধুলা ও শিল্পকলার এক অনন্য সংলাপ। ‘এটা কেবল শিল্পীর সঙ্গে শিল্পীর নয়, বরং খেলাধুলা ও প্রযুক্তির সম্মিলন। আর এ কারণেই এটি এতটা শক্তিশালী ও আবেগপ্রবণ।’
২০০৯ সালের ২৭ মে, রোমের স্টাদিও অলিম্পিকোতে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে চ্যাম্পিয়নস লিগ ফাইনালে জাভির বাড়ানো বলটি মাথা দিয়ে জালে পাঠিয়ে ইতিহাস গড়েন বার্সেলোনার মেসি। ৬ ফুট ২ ইঞ্চি রিও ফার্ডিন্যান্ডের ওপরে লাফিয়ে উঠে এই গোলটি করেছিলেন মাত্র ৫ ফুট ৭ ইঞ্চি উচ্চতার ‘লা পুলগা’। গোলের সময় তার জুতা পা থেকে খুলে গেলেও আনন্দে দুই হাত মেলে উল্লাসে ভেসে যান তিনি। মেসি সেই স্মৃতিচারণ করে বলেন, “অনেক সুন্দর গোল করেছি, এটি আমার সবচেয়ে প্রিয়। কারণ এটি ছিল হেড, এবং আমি খুব উচ্চতায় লাফিয়েছিলাম, যা আমার জন্য খুব বিরল।”
শিল্পকর্মটি ১৬কে রেজুলিউশনে তৈরি করা হয়েছে। এতে মেসির শরীরের ১৭টি পয়েন্ট ট্র্যাক করে থ্রিডি রূপে গঠন করা হয়েছে তার চলাফেরা। পাশাপাশি মেসির হৃদস্পন্দন, নিঃশ্বাস ও কণ্ঠস্বরের আবেগভরা সুরগুলো ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছে ব্যাকগ্রাউন্ড সাউন্ডস্কেপ।
নিউইয়র্কের রকফেলার সেন্টারে ১২ জুলাই থেকে ১০ দিনব্যাপী এই শিল্পকর্মটি জনসাধারণের জন্য প্রদর্শিত হয়। ক্রিস্টিজের ডিজিটাল সেলস ম্যানেজার সেবাস্টিয়ান সানচেজ জানান, হাজার হাজার ফুটবলভক্ত, সংগ্রাহক ও শিল্পানুরাগীরা এটি দেখতে ভিড় করেছিলেন। নিলাম শুরু হয়েছিল ১.৫ মিলিয়ন ডলার থেকে।
এই প্রকল্প নিয়ে মেসি বলেন, ‘আমার জীবনের এক বিশেষ মুহূর্তকে ঘিরে এমন একটি উদ্যোগ, যেটি অন্যদের জীবনে উন্নতি আনতে পারে — এর অংশ হতে পারা সত্যিই গর্বের।’
আরকে/সবা


























