০৮:৪৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মুরগির খামারে ভয়াবহ অ্যান্টিবায়োটিক, ঝুঁকিতে জনস্বাস্থ্য

  • ৯৩ দশমিক ২ শতাংশে মুরগির উৎপাদন চক্রে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার
  • মানুষ ও প্রাণী উভয়ের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি

দেশের সাতটি জেলায় বাণিজ্যিক মুরগির খামারে অ্যান্টিবায়োটিকের নির্বিচার ব্যবহারের প্রমাণ মিলেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য এক বড় ধরনের হুমকি তৈরি করছে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল নেচারে প্রকাশিত ওই গবেষণা প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে।
গবেষণাটি যৌথভাবে পরিচালনা করেছে বাংলাদেশের ইনস্টিটিউট অব এপিডেমোলজি, ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ (আইইডিসিআর), আইসিডিডিআর,বি, অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল সেন্টার ফর এপিডেমোলজি অ্যান্ড পপুলেশন হেলথ, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্স ইউনিভার্সিটি এবং যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাসে সাতটি জেলার ৩৪০টি বাণিজ্যিক খামারে পরিচালিত এক ‘ক্রস-সেকশনাল’ সমীক্ষায় দেখা গেছে, এসব খামারের ৯৩ দশমিক ২ শতাংশে মুরগির উৎপাদন চক্রে অন্তত একবার অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়েছে। গবেষণায় অংশ নেওয়া ৩৪০টি খামারের মধ্যে ব্রয়লার খামার ১০৯টি (৭৮ শতাংশ অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার), সোনালি মুরগির খামার ১২২টি (৬৭ দশমিক ২ শতাংশ ব্যবহার), ডিম পাড়া লেয়ার খামার ১০৯টি (৪১ দশমিক ৩ শতাংশ ব্যবহার)। জরিপ শুরুর আগের ১৪ দিনের তথ্য অনুসারে, ৬৭ শতাংশ খামারিই তাদের মুরগিকে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পশুপালনে অতি মাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) বা জীবাণুনাশক ওষুধ প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি করছে, যা মানুষ ও প্রাণী উভয়ের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি। এর ফলে সাধারণ সংক্রমণও ভবিষ্যতে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠতে পারে। গবেষণায় বাংলাদেশের পোলট্রি শিল্পে নির্বিচারে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের চিত্র উঠে এসেছে। এর ফলে, মাংসে ওষুধের অবশিষ্টাংশ থেকে শুরু করে জীবাণুনাশক প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। তাই খামারিদের এই ধরনের ওষুধ ব্যবহার সম্পর্কিত জ্ঞান, মনোভাব ও অনুশীলন (কেএএপি) উন্নয়নে প্রশিক্ষণ জরুরি, যাতে প্রাণীর স্বাস্থ্য, মানুষের স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ রক্ষা করা সম্ভব হয়।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

শীতে বাড়ছে রোগ-বালাই

মুরগির খামারে ভয়াবহ অ্যান্টিবায়োটিক, ঝুঁকিতে জনস্বাস্থ্য

আপডেট সময় : ০৭:২৫:৪৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২১ অগাস্ট ২০২৫
  • ৯৩ দশমিক ২ শতাংশে মুরগির উৎপাদন চক্রে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার
  • মানুষ ও প্রাণী উভয়ের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি

দেশের সাতটি জেলায় বাণিজ্যিক মুরগির খামারে অ্যান্টিবায়োটিকের নির্বিচার ব্যবহারের প্রমাণ মিলেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণায়। যা জনস্বাস্থ্যের জন্য এক বড় ধরনের হুমকি তৈরি করছে। আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন বিজ্ঞান বিষয়ক জার্নাল নেচারে প্রকাশিত ওই গবেষণা প্রতিবেদনে এই চিত্র উঠে এসেছে।
গবেষণাটি যৌথভাবে পরিচালনা করেছে বাংলাদেশের ইনস্টিটিউট অব এপিডেমোলজি, ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড রিসার্চ (আইইডিসিআর), আইসিডিডিআর,বি, অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল সেন্টার ফর এপিডেমোলজি অ্যান্ড পপুলেশন হেলথ, চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি অ্যান্ড অ্যানিমেল সায়েন্স ইউনিভার্সিটি এবং যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়ার আরও কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান। গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর থেকে অক্টোবর মাসে সাতটি জেলার ৩৪০টি বাণিজ্যিক খামারে পরিচালিত এক ‘ক্রস-সেকশনাল’ সমীক্ষায় দেখা গেছে, এসব খামারের ৯৩ দশমিক ২ শতাংশে মুরগির উৎপাদন চক্রে অন্তত একবার অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়েছে। গবেষণায় অংশ নেওয়া ৩৪০টি খামারের মধ্যে ব্রয়লার খামার ১০৯টি (৭৮ শতাংশ অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার), সোনালি মুরগির খামার ১২২টি (৬৭ দশমিক ২ শতাংশ ব্যবহার), ডিম পাড়া লেয়ার খামার ১০৯টি (৪১ দশমিক ৩ শতাংশ ব্যবহার)। জরিপ শুরুর আগের ১৪ দিনের তথ্য অনুসারে, ৬৭ শতাংশ খামারিই তাদের মুরগিকে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, পশুপালনে অতি মাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল রেজিস্ট্যান্স (এএমআর) বা জীবাণুনাশক ওষুধ প্রতিরোধক্ষমতা তৈরি করছে, যা মানুষ ও প্রাণী উভয়ের জন্য মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি। এর ফলে সাধারণ সংক্রমণও ভবিষ্যতে অপ্রতিরোধ্য হয়ে উঠতে পারে। গবেষণায় বাংলাদেশের পোলট্রি শিল্পে নির্বিচারে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের চিত্র উঠে এসেছে। এর ফলে, মাংসে ওষুধের অবশিষ্টাংশ থেকে শুরু করে জীবাণুনাশক প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হওয়ার ঝুঁকি রয়েছে, যা জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক পরিণতি ডেকে আনতে পারে। তাই খামারিদের এই ধরনের ওষুধ ব্যবহার সম্পর্কিত জ্ঞান, মনোভাব ও অনুশীলন (কেএএপি) উন্নয়নে প্রশিক্ষণ জরুরি, যাতে প্রাণীর স্বাস্থ্য, মানুষের স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ রক্ষা করা সম্ভব হয়।