নরসিংদীতে ভূমিকম্পে অধিকাংশ ভবন, সড়ক ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফাটল দেখা দিয়েছে। জনমনে আতঙ্ক এখনো কাটেনি। শনিবার সকাল থেকে বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায় ভূমিকম্পের ভয়াবহ প্রভাব।
পলাশ রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের প্রধান ফটকের সামনের রাস্তায় ফাটল দেখা গেছে। লেবুপাড়া এলাকায় একটি গরুর খামারের মাটি ধসে গিয়ে গরু শতাধিক প্রাণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। অনেক বহুতল ভবন হেলে পড়েছে, ঘোড়াশাল তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রে যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়েছে এবং আগুনও ধরেছে।

শীতলক্ষ্যা নদীর ওপর পুরোনো রেলসেতুতেও ফাটল দেখা দিয়েছে। সরকারি খাদ্য গুদামগুলিতেও ব্যাপক ফাটল দেখা গেছে।
নদীর তীরে বসবাসরত মানুষও আতঙ্কিত। রফিক আহমেদ জানান, ভূমিকম্পের সময় নদীর পানি প্রচণ্ড ঢেউ তুলেছিল। আর আব্দুল সাত্তার বলেন, কারখানায় কম্পন শুরু হলে কর্মীরা দৌড়াদৌড়ি করতে গিয়ে আহত হয়েছিলেন।
পলাশ রেসিডেন্সিয়াল মডেল কলেজের পাশের দোকানদার ফজলু মিয়া জানান, মাটির হঠাৎ কম্পনে কলেজের গেটে ফাটল দেখা গেছে। ঝিনুক মিয়া বলেন, এক মুহূর্তে মনে হয়েছিল যেন জীবনের শেষ মুহূর্ত। ঘোড়াশাল বাজারের দোকানদাররা জিনিসপত্র ভেঙে যাওয়ায় ক্ষতির মুখে পড়েছেন।

দেশের আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভূকম্পন পর্যবেক্ষণ কেন্দ্র জানায়, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল নরসিংদীর মাধবদীতে। যুক্তরাষ্ট্রের ইউএসজিএস অনুযায়ী, কেন্দ্রস্থল নরসিংদী সদর থেকে প্রায় ১৪ কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিণপশ্চিমে। গুগল ম্যাপ অনুযায়ী, কেন্দ্রস্থল পলাশ উপজেলার ডাঙ্গা গ্রাম।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের একটি টিম ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ফাটল ধরা মাটির নমুন সংগ্রহ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করছে। সাবেক অধ্যাপক ড. আ. স. ম. ওবায়দুল্লাহ জানান, নমুনা বিশ্লেষণ করে ভূমিকম্পের প্রকৃতি ও গভীরতা নির্ধারণ করা হবে।

জেলা প্রশাসন এবং পলাশ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণে কাজ করছেন। ইতিমধ্যেই শতাধিক মাটির ঘর এবং অর্ধশতাধিক সরকারি-বেসরকারি ভবনে ফাটল ও ক্ষয়ক্ষতি ধরা পড়েছে। ভূমিকম্পের সময়ে পলাশ উপজেলায় মারা যাওয়া দুই ব্যক্তির পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছে।
এমআর/সবা























