০৯:৪৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৯ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৫ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নিয়ে দুই ভাগ রাজনৈতিক দলগুলো

  • প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নিয়ে একমত জামায়াত-এনসিপি, সায় নেই বিএনপির
  • দুই মেয়াদের ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকার বিপক্ষে বেশিরভাগ দল
  • ঐকমত্যের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোকে ছাড় দেওয়ার অনুরোধ আলী রীয়াজের

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ প্রস্তাবনা প্রশ্নে ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে একজন ব্যক্তির সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে ১০ বছর দায়িত্ব পালন করার বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবে জামায়াত-এনসিপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত পোষণ করেছে। তবে এতে সায় দেয়নি বিএনপিসহ তিনটি রাজনৈতিক দল। অন্য দুটি দল হলোÑ বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিএলডিপি) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (এনডিএম)। তবে কয়েকটি দল দুবারের পর একবার বিরতি দিয়ে আবার হতে পারবেন বলে মত দিয়েছে। গতকাল রোববার সকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির মিলনায়তনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের পঞ্চম দিনের সংলাপে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদবিষয়ক আলোচনায় এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়।
আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, গণতান্ত্রিক প্র্যাকটিস বন্ধ করা ঠিক হবে না। আলাদা আলাদা আলোচনা করে সমাধানে আসা কঠিন। আমরা তো সংস্কার চাই। তবে প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রের কোনো একটি বিভাগকে দুর্বল করে ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব হবে না। একজন স্বৈরাচার হয়েছিল, সেটি চিন্তা করে সংস্কার করে হাত-পা বেঁধে দেওয়া হলে সেটি ঠিক হবে না। দুই মেয়াদ হোক বা পাঁচ বছরের জন্য প্রধানমন্ত্রী হোক, বরং প্রধানমন্ত্রী কত বছর প্রধানমন্ত্রী থাকবেন, সেটা আলোচনা করা যেতে পারে।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ড. আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, সর্বোচ্চ দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু সেটি পূর্ণ মেয়াদ হতে হবে। কিন্তু কেউ মেয়াদ পূর্ণ না করতে পারলে সেটি অন্যভাবে বিবেচনায় নিতে হবে। বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, পরপর দুবার প্রধানমন্ত্রী হবেন। এরপর একবার গ্যাপ দিয়ে দুবার হবেন, আবার একবার গ্যাপ দিয়ে আবার দুবার হবেন। যতবার খুশি ততবার হবেন। আমজনতা দলের কার্যনির্বাহী সদস্য সাধনা মহল বলেন, এক ব্যক্তি দুবার প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন। একবার গ্যাপ দিয়ে আরেক মেয়াদে থাকতে পারবেন। এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, একজন ব্যক্তি পরপর দুবার প্রধানমন্ত্রী থাকবেন, তারপর একবার গ্যাপ দিয়ে আবার থাকতে পারবেন। ইসলামী আন্দোলনের মুখপাত্র গাজী আতাউর রহমান বলেন, ঐকমত্যের স্বার্থে আমরা সর্বোচ্চ দুবারের পক্ষে। সংকটের মূল জায়গা নিম্নকক্ষ নির্বাচন পদ্ধতি। বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, পুরো মেয়াদ সম্পন্ন না করা নিয়ে বিতর্ক আছে, তা বাদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সর্বোচ্চ দুবার বিবেচিত হবে। গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দুই মেয়াদের সমর্থন আছে। এটায় সিদ্ধান্তে আসা উচিত।
আলোচনা শেষে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, আজকের আলোচনার বিষয় ছিল প্রধানমন্ত্রী কয় মেয়াদ দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। প্রস্তাব ছিল, সর্বোচ্চ দুইবার শপথ নিতে পারবেন। বার ও মেয়াদ নিয়ে সংকট তৈরি হয়েছে। মেয়াদ একটা সময়কালকে বোঝায়। বার বলতে এক মেয়াদে একাধিকবার হতে পারে। সর্বশেষ অধিকাংশ দল সম্মত হয়েছে, একজন ব্যক্তি জীবদ্দশায় সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে। এই প্রস্তাবে তিনটি দল দ্বিমত পোষণ করেছেন। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সংবিধানকে কীভাবে জবাবদিহিমূলক এবং ক্ষমতাকে কীভাবে ভারসাম্যমূলক করা যায় এ নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। একজন ব্যক্তি দশ বছরের বেশি থাকতে পারবেন বলে আমরা চাচ্ছি। গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ভগ্নাংশ হোক আর পরিপূর্ণ হোক দুই মেয়াদের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী হবে না, এটা আগে প্রস্তাবনা ছিল। এনসিসি, দ্বিকক্ষ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক হবে কিনা, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মতো বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে। আমরা বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের পজিশন থেকে সরে আসছি ঐকমত্যের স্বার্থে। কিন্তু দুই তিনটি দল রিজিট পজিশনে আছে। এভাবে চলতে থাকলে কিয়ামত পর্যন্তও শতভাগ ঐকমত্য হবে না। এখানে ঐকমত্যের একটা মাপকাঠি নির্ধারণ করতে হবে।
এদিকে জাতীয় ঐকমত্যের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোকে ছাড় দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেছেন, একটু ছাড় দেওয়ার জায়গায় আসুন। আপনারা আসছেন, আরেকটু আগান। আরেকটু আগালে দ্রুত জুলাই সনদ করার মাধ্যমে এ অংশ (সংলাপ) শেষ করতে পারি। প্রত্যেকে একটু বিবেচনা করুন। আমরা এখানে এসেছি বিশেষ পরিস্থিতিতে, সে পরিস্থিতিটা অন্তত কঠিন ও কঠোর। ১৬ বছরের সংগ্রাম, হাজার খানেক (জুলাই গণঅভ্যুত্থান) মানুষের আত্মদান, বহু লোকের অভিজ্ঞতা, বহুলোক এখনো নিখোঁজ। এর সঙ্গে আপনাদের কর্মী, সংগঠন প্রাণ দিয়েছেন, নিপীড়িত হয়েছেন। এ জন্য আমরা এখানে আসতে পারলাম। না হলে আসতে পারতাম না। এটা বিবেচনায় রেখে কোন জায়গায় আমরা একমত হতে পারি, কোন জায়গায় আমরা কতদূর এগিয়ে যেতে পারি, একটু ছাড় দেওয়ার জায়গায় আসুন। আপনারা আসছেন, আরেকটু আগান। আরেকটু আগালে দ্রুত জুলাই সনদ করার মাধ্যমে এ অংশ (সংলাপ) শেষ করতে পারি।
তিনি বলেন, পাশাপাশি নির্বাচন ও বিচারের প্রক্রিয়া সমান্তরালভাবে চলবে, চলতে দিতে হবে। কিন্তু এটা আমাাদের দ্রুত করার দিতে হবে। আমাদের অনুরোধ আরেকটু ছাড় দিতে হবে, তাহলে এক জায়গায় আসতে সহজ। আমরা সবাই মিলে এক। এটা আমাদের মেনে নিতে হবে যে, অনেক বিষয়ে আলোচনার পরে নীতিনির্ধারকদের (দলীয়) কাছে ফিরতে হয়। কারণ আলোচনায় নতুন নতুন বিষয় আসে, যাতে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছাকাছি আসার সুযোগ রয়েছে। আমাদের যেহেতু সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কিছু বিষয়ে এক জায়গায় আসতে হবে, ঐকমত্য পৌঁছাতে হবে। সে জন্য সবাইকে ছাড় দেওয়ার প্রয়োজন হবে। সে ক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলুন। তিনি বলেন, গত কয়েকদিনের আলোচনায় কয়েকটি বিষয় অমীমাংসিত থেকে গেছে, বিশেষ করে উচ্চ-কক্ষ গঠন ও প্রক্রিয়া, নারীদের প্রতিনিধিত্ব কীভাবে হবে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে এক জায়গায় আসতে পারিনি। এগুলো নিয়ে আরও গুরুত্বের সঙ্গে কথা বলা দরকার।

জনপ্রিয় সংবাদ

নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে সামান্তা শারমিনের নতুন বার্তা

প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নিয়ে দুই ভাগ রাজনৈতিক দলগুলো

আপডেট সময় : ০৮:২৫:১২ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৩ জুন ২০২৫
  • প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ নিয়ে একমত জামায়াত-এনসিপি, সায় নেই বিএনপির
  • দুই মেয়াদের ১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকার বিপক্ষে বেশিরভাগ দল
  • ঐকমত্যের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোকে ছাড় দেওয়ার অনুরোধ আলী রীয়াজের

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর আলোচনায় প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ প্রস্তাবনা প্রশ্নে ভিন্ন ভিন্ন অবস্থান নিয়েছে রাজনৈতিক দলগুলো। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে একজন ব্যক্তির সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে ১০ বছর দায়িত্ব পালন করার বিষয়ে ঐকমত্য কমিশনের প্রস্তাবে জামায়াত-এনসিপিসহ অধিকাংশ রাজনৈতিক দল একমত পোষণ করেছে। তবে এতে সায় দেয়নি বিএনপিসহ তিনটি রাজনৈতিক দল। অন্য দুটি দল হলোÑ বাংলাদেশ লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিএলডিপি) ও ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (এনডিএম)। তবে কয়েকটি দল দুবারের পর একবার বিরতি দিয়ে আবার হতে পারবেন বলে মত দিয়েছে। গতকাল রোববার সকালে রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমির মিলনায়তনে জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের দ্বিতীয় ধাপের পঞ্চম দিনের সংলাপে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদবিষয়ক আলোচনায় এসব প্রস্তাবনা তুলে ধরা হয়।
আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমদ বলেন, গণতান্ত্রিক প্র্যাকটিস বন্ধ করা ঠিক হবে না। আলাদা আলাদা আলোচনা করে সমাধানে আসা কঠিন। আমরা তো সংস্কার চাই। তবে প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রের কোনো একটি বিভাগকে দুর্বল করে ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব হবে না। একজন স্বৈরাচার হয়েছিল, সেটি চিন্তা করে সংস্কার করে হাত-পা বেঁধে দেওয়া হলে সেটি ঠিক হবে না। দুই মেয়াদ হোক বা পাঁচ বছরের জন্য প্রধানমন্ত্রী হোক, বরং প্রধানমন্ত্রী কত বছর প্রধানমন্ত্রী থাকবেন, সেটা আলোচনা করা যেতে পারে।
জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির ড. আবদুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, সর্বোচ্চ দুবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু সেটি পূর্ণ মেয়াদ হতে হবে। কিন্তু কেউ মেয়াদ পূর্ণ না করতে পারলে সেটি অন্যভাবে বিবেচনায় নিতে হবে। বাংলাদেশ লেবার পার্টির চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান ইরান বলেন, পরপর দুবার প্রধানমন্ত্রী হবেন। এরপর একবার গ্যাপ দিয়ে দুবার হবেন, আবার একবার গ্যাপ দিয়ে আবার দুবার হবেন। যতবার খুশি ততবার হবেন। আমজনতা দলের কার্যনির্বাহী সদস্য সাধনা মহল বলেন, এক ব্যক্তি দুবার প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন। একবার গ্যাপ দিয়ে আরেক মেয়াদে থাকতে পারবেন। এনপিপির চেয়ারম্যান ফরিদুজ্জামান ফরহাদ বলেন, একজন ব্যক্তি পরপর দুবার প্রধানমন্ত্রী থাকবেন, তারপর একবার গ্যাপ দিয়ে আবার থাকতে পারবেন। ইসলামী আন্দোলনের মুখপাত্র গাজী আতাউর রহমান বলেন, ঐকমত্যের স্বার্থে আমরা সর্বোচ্চ দুবারের পক্ষে। সংকটের মূল জায়গা নিম্নকক্ষ নির্বাচন পদ্ধতি। বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল-বাসদের সাধারণ সম্পাদক বজলুর রশিদ ফিরোজ বলেন, পুরো মেয়াদ সম্পন্ন না করা নিয়ে বিতর্ক আছে, তা বাদ দিয়ে প্রধানমন্ত্রীর মেয়াদ সর্বোচ্চ দুবার বিবেচিত হবে। গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দুই মেয়াদের সমর্থন আছে। এটায় সিদ্ধান্তে আসা উচিত।
আলোচনা শেষে গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, আজকের আলোচনার বিষয় ছিল প্রধানমন্ত্রী কয় মেয়াদ দায়িত্ব পালন করতে পারবেন। প্রস্তাব ছিল, সর্বোচ্চ দুইবার শপথ নিতে পারবেন। বার ও মেয়াদ নিয়ে সংকট তৈরি হয়েছে। মেয়াদ একটা সময়কালকে বোঝায়। বার বলতে এক মেয়াদে একাধিকবার হতে পারে। সর্বশেষ অধিকাংশ দল সম্মত হয়েছে, একজন ব্যক্তি জীবদ্দশায় সর্বোচ্চ ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী হতে পারবে। এই প্রস্তাবে তিনটি দল দ্বিমত পোষণ করেছেন। বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, সংবিধানকে কীভাবে জবাবদিহিমূলক এবং ক্ষমতাকে কীভাবে ভারসাম্যমূলক করা যায় এ নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। একজন ব্যক্তি দশ বছরের বেশি থাকতে পারবেন বলে আমরা চাচ্ছি। গণ অধিকার পরিষদের সভাপতি নুরুল হক নুর বলেন, ভগ্নাংশ হোক আর পরিপূর্ণ হোক দুই মেয়াদের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী হবে না, এটা আগে প্রস্তাবনা ছিল। এনসিসি, দ্বিকক্ষ পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষে সংখ্যানুপাতিক হবে কিনা, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মতো বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা হবে। আমরা বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের পজিশন থেকে সরে আসছি ঐকমত্যের স্বার্থে। কিন্তু দুই তিনটি দল রিজিট পজিশনে আছে। এভাবে চলতে থাকলে কিয়ামত পর্যন্তও শতভাগ ঐকমত্য হবে না। এখানে ঐকমত্যের একটা মাপকাঠি নির্ধারণ করতে হবে।
এদিকে জাতীয় ঐকমত্যের স্বার্থে রাজনৈতিক দলগুলোকে ছাড় দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সহসভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজ। তিনি বলেছেন, একটু ছাড় দেওয়ার জায়গায় আসুন। আপনারা আসছেন, আরেকটু আগান। আরেকটু আগালে দ্রুত জুলাই সনদ করার মাধ্যমে এ অংশ (সংলাপ) শেষ করতে পারি। প্রত্যেকে একটু বিবেচনা করুন। আমরা এখানে এসেছি বিশেষ পরিস্থিতিতে, সে পরিস্থিতিটা অন্তত কঠিন ও কঠোর। ১৬ বছরের সংগ্রাম, হাজার খানেক (জুলাই গণঅভ্যুত্থান) মানুষের আত্মদান, বহু লোকের অভিজ্ঞতা, বহুলোক এখনো নিখোঁজ। এর সঙ্গে আপনাদের কর্মী, সংগঠন প্রাণ দিয়েছেন, নিপীড়িত হয়েছেন। এ জন্য আমরা এখানে আসতে পারলাম। না হলে আসতে পারতাম না। এটা বিবেচনায় রেখে কোন জায়গায় আমরা একমত হতে পারি, কোন জায়গায় আমরা কতদূর এগিয়ে যেতে পারি, একটু ছাড় দেওয়ার জায়গায় আসুন। আপনারা আসছেন, আরেকটু আগান। আরেকটু আগালে দ্রুত জুলাই সনদ করার মাধ্যমে এ অংশ (সংলাপ) শেষ করতে পারি।
তিনি বলেন, পাশাপাশি নির্বাচন ও বিচারের প্রক্রিয়া সমান্তরালভাবে চলবে, চলতে দিতে হবে। কিন্তু এটা আমাাদের দ্রুত করার দিতে হবে। আমাদের অনুরোধ আরেকটু ছাড় দিতে হবে, তাহলে এক জায়গায় আসতে সহজ। আমরা সবাই মিলে এক। এটা আমাদের মেনে নিতে হবে যে, অনেক বিষয়ে আলোচনার পরে নীতিনির্ধারকদের (দলীয়) কাছে ফিরতে হয়। কারণ আলোচনায় নতুন নতুন বিষয় আসে, যাতে রাজনৈতিক দলগুলোর কাছাকাছি আসার সুযোগ রয়েছে। আমাদের যেহেতু সুনির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কিছু বিষয়ে এক জায়গায় আসতে হবে, ঐকমত্য পৌঁছাতে হবে। সে জন্য সবাইকে ছাড় দেওয়ার প্রয়োজন হবে। সে ক্ষেত্রে প্রয়োজন হলে নীতিনির্ধারকদের সঙ্গে কথা বলুন। তিনি বলেন, গত কয়েকদিনের আলোচনায় কয়েকটি বিষয় অমীমাংসিত থেকে গেছে, বিশেষ করে উচ্চ-কক্ষ গঠন ও প্রক্রিয়া, নারীদের প্রতিনিধিত্ব কীভাবে হবে, রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে এক জায়গায় আসতে পারিনি। এগুলো নিয়ে আরও গুরুত্বের সঙ্গে কথা বলা দরকার।