০৪:১৭ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

শঙ্কা বাড়াচ্ছে শিশুদের ডায়াবেটিস

ইনসুলিনেই চলছে শৈশবের জীবন

ওজন, ফাস্টফুড ও অলসতা ত্রিমুখী হুমকি

সচেতনতায়ই রুখে দেওয়া যায় বিপদ

‘টাইপ-১ ডায়াবেটিস জন্মগত ও পরিবেশগত নানা কারণে হতে পারে। বাংলাদেশে এর প্রকোপ অনেক কম হলেও শিশুদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে’- ডা. শাহজাদা সেলিম, সহযোগী অধ্যাপক, বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়

‘আগে টাইপ-২ ডায়াবেটিস ৩০ বছরের পরে দেখা যেত, এখন ১৫-১৬ বছর বয়সেও দেখা যাচ্ছে। এটা খুবই উদ্বেগজনক’- ডা. এ কে আজাদ খান, সভাপতি, বাংলাদেশ ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন

 

ডায়াবেটিস রোগকে অনেকেই শুধু বড়দের সমস্যা মনে করেন। কিন্তু দেশে যেমন বড়দের মধ্যে ডায়াবেটিসের হার ক্রমেই বাড়ছে, তেমনি শিশু-কিশোরদের মধ্যেও এই রোগ দ্রুত ছড়াচ্ছে। ফলে শঙ্কা জাগাচ্ছে শিশুদের ডায়াবেটিস। ছয় বছর বয়সী ফারদিন।ছয় বছর বয়সে সে টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। তার মতো আরও অনেক শিশুই আজ এই রোগের সঙ্গে লড়াই করছে। ফারদিনের বাবা আহমেদ এলাহী জানান ফারদিনের ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার কারণে তারা চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলাম। রক্ত পরীক্ষায় তার ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। তখন থেকেই তার জীবন ইনসুলিনের ওপর নির্ভর হয়ে গেছে। চিকিৎসকরা বলছেন, বাংলাদেশ, ভারত, চীনসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো ছোট বয়সেই টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে রয়েছে। তারা বলছেন, আগে টাইপ-২ ডায়াবেটিস ৩০ বছরের পরে দেখা যেত, এখন ১৫-১৬ বছর বয়সেও দেখা যাচ্ছে। এটা খুবই উদ্বেগজনক।
জানা গেছে, ডায়াবেটিস দুই প্রকারের টাইপ-১ ও টাইপ-২। টাইপ-১ ডায়াবেটিস মূলত শিশু ও কিশোরদের বেশি হয়। এতে দেহের অগ্ন্যাশয়ের বিটা কোষ ধ্বংস হয়ে যায় এবং শরীর ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না। তাই আক্রান্ত রোগীকে জীবনভর ইনসুলিন নিতে হয়। বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম জানান, “টাইপ-১ ডায়াবেটিস জন্মগত ও পরিবেশগত নানা কারণে হতে পারে। বাংলাদেশে এর প্রকোপ অনেক কম হলেও শিশুদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে।” অন্যদিকে, টাইপ-২ ডায়াবেটিস সাধারণত বড়দের রোগ। তবে এখন শিশু-কিশোররাও এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এর অন্যতম কারণ হলো আধুনিক জীবনযাত্রার পরিবর্তন। বাড়ছে ওজন, কমছে শারীরিক পরিশ্রম, বাড়ছে ফাস্ট ফুড ও জাঙ্ক ফুডের ব্যবহার। ডা. সেলিম বলেন, “বাংলাদেশ, ভারত, চীনসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো ছোট বয়সেই টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে রয়েছে।
এদিকে, আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের (আইডিএফ) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রায় ২০ হাজার শিশু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। তবে সঠিক পরিসংখ্যান এখনও পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ ডায়বেটিক সমিতি জানায়, প্রতি বছর ৩০০ থেকে ৪০০ শিশুর ডায়াবেটিস শনাক্ত হচ্ছে, যা আগের তুলনায় বেশি। দেশে মোট ডায়াবেটিস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৩১ লাখ। যারা বিভিন্ন বয়সের, তবে বেশিরভাগই ২০ থেকে ৮০ বছর বয়সী। বিশ্বের তুলনায় বাংলাদেশের ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা অষ্টম স্থানে রয়েছে। দ্রুত এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে ২০৪৫ সালের মধ্যে দেশের ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ২৩ লাখে পৌঁছাবে। অন্যদিকে, ৪৩.৫ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগীর রোগ নির্ণয় হয় না। টাইপ-১ ডায়াবেটিস মূলত ৩০ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। টাইপ-২ ডায়াবেটিসের রোগী দেশের সংখ্যায় অনেক বেশি।
বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি জানায়, গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের হার ৬ থেকে ১৪ শতাংশ। গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নারীদের ৫০ শতাংশের বেশি ভবিষ্যতে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস থাকলে শিশুরও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এদিকে, বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আধুনিক জীবনযাত্রার বদল এবং খাবারের ধরণ পরিবর্তনই এর মূল কারণ। শহরায়ণের কারণে, কম্পিউটার ও টেলিভিশনের সামনে বেশি সময় কাটানো, খেলাধুলার অভাব, ফাস্ট ফুড ও কোমল পানীয়ের প্রতি আসক্তি এসবই শিশু-কিশোরদের শরীরে ওজন বাড়াচ্ছে। এ থেকে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেক বেড়ে গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো জীবনযাত্রার পরিবর্তন। টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ৭০ শতাংশ প্রতিরোধযোগ্য। তাই শিশুরা ছোট থেকেই স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। বাড়িতে পুষ্টিকর খাবার খেতে উৎসাহিত করতে হবে, ফাস্ট ফুড ও জাঙ্ক ফুড থেকে দূরে থাকতে হবে। নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম ও খেলাধুলার অভ্যাস গড়ে তোলা খুবই জরুরি। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা, দৌড়ানো, খেলাধুলা ইত্যাদি শিশুদের শরীর সুস্থ রাখে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়। তারা বলছেন, শিশুদের ডায়াবেটিস প্রতিরোধে পরিবারের ভূমিকা অপরিহার্য। বাবা-মা ও অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে তাদের সন্তানের খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার বিষয়ে। স্কুলগুলোতেও স্বাস্থ্যকর খাদ্য ও খেলাধুলার সুযোগ বাড়ানো জরুরি। শিশুদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করতে হবে, যাতে প্রাথমিক পর্যায়ে ডায়াবেটিস শনাক্ত করা যায়। সময়মতো চিকিৎসা শুরু করলে জটিলতা কমানো সম্ভব।
তারা আরো বলছেন, সরকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগকে শিশু-কিশোরদের মধ্যে ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে হবে। স্কুল, কমিউনিটি সেন্টার এবং গণমাধ্যমের মাধ্যমে প্রচার-প্রচারনা চালানো প্রয়োজন। সরকারি স্বাস্থ্য নীতিতে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণকে অগ্রাধিকার দেওয়া দরকার। এছাড়া ইনসুলিন ও ডায়াবেটিসের ওষুধ সহজলভ্য করতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডায়াবেটিস প্রতিরোধের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হলো সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. এ কে আজাদ খান বলেন, আগে টাইপ-২ ডায়াবেটিস ৩০ বছরের পরে দেখা যেত, এখন ১৫-১৬ বছর বয়সেও দেখা যাচ্ছে। এটা খুবই উদ্বেগজনক।

 

জনপ্রিয় সংবাদ

একটি নিরাপদ বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলতে চাই : তারেক রহমান

শঙ্কা বাড়াচ্ছে শিশুদের ডায়াবেটিস

আপডেট সময় : ০৭:৩০:৪০ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫

ইনসুলিনেই চলছে শৈশবের জীবন

ওজন, ফাস্টফুড ও অলসতা ত্রিমুখী হুমকি

সচেতনতায়ই রুখে দেওয়া যায় বিপদ

‘টাইপ-১ ডায়াবেটিস জন্মগত ও পরিবেশগত নানা কারণে হতে পারে। বাংলাদেশে এর প্রকোপ অনেক কম হলেও শিশুদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে’- ডা. শাহজাদা সেলিম, সহযোগী অধ্যাপক, বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়

‘আগে টাইপ-২ ডায়াবেটিস ৩০ বছরের পরে দেখা যেত, এখন ১৫-১৬ বছর বয়সেও দেখা যাচ্ছে। এটা খুবই উদ্বেগজনক’- ডা. এ কে আজাদ খান, সভাপতি, বাংলাদেশ ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশন

 

ডায়াবেটিস রোগকে অনেকেই শুধু বড়দের সমস্যা মনে করেন। কিন্তু দেশে যেমন বড়দের মধ্যে ডায়াবেটিসের হার ক্রমেই বাড়ছে, তেমনি শিশু-কিশোরদের মধ্যেও এই রোগ দ্রুত ছড়াচ্ছে। ফলে শঙ্কা জাগাচ্ছে শিশুদের ডায়াবেটিস। ছয় বছর বয়সী ফারদিন।ছয় বছর বয়সে সে টাইপ-১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। তার মতো আরও অনেক শিশুই আজ এই রোগের সঙ্গে লড়াই করছে। ফারদিনের বাবা আহমেদ এলাহী জানান ফারদিনের ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার কারণে তারা চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলাম। রক্ত পরীক্ষায় তার ডায়াবেটিস ধরা পড়ে। তখন থেকেই তার জীবন ইনসুলিনের ওপর নির্ভর হয়ে গেছে। চিকিৎসকরা বলছেন, বাংলাদেশ, ভারত, চীনসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো ছোট বয়সেই টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে রয়েছে। তারা বলছেন, আগে টাইপ-২ ডায়াবেটিস ৩০ বছরের পরে দেখা যেত, এখন ১৫-১৬ বছর বয়সেও দেখা যাচ্ছে। এটা খুবই উদ্বেগজনক।
জানা গেছে, ডায়াবেটিস দুই প্রকারের টাইপ-১ ও টাইপ-২। টাইপ-১ ডায়াবেটিস মূলত শিশু ও কিশোরদের বেশি হয়। এতে দেহের অগ্ন্যাশয়ের বিটা কোষ ধ্বংস হয়ে যায় এবং শরীর ইনসুলিন তৈরি করতে পারে না। তাই আক্রান্ত রোগীকে জীবনভর ইনসুলিন নিতে হয়। বাংলাদেশ মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক ডা. শাহজাদা সেলিম জানান, “টাইপ-১ ডায়াবেটিস জন্মগত ও পরিবেশগত নানা কারণে হতে পারে। বাংলাদেশে এর প্রকোপ অনেক কম হলেও শিশুদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে।” অন্যদিকে, টাইপ-২ ডায়াবেটিস সাধারণত বড়দের রোগ। তবে এখন শিশু-কিশোররাও এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন। এর অন্যতম কারণ হলো আধুনিক জীবনযাত্রার পরিবর্তন। বাড়ছে ওজন, কমছে শারীরিক পরিশ্রম, বাড়ছে ফাস্ট ফুড ও জাঙ্ক ফুডের ব্যবহার। ডা. সেলিম বলেন, “বাংলাদেশ, ভারত, চীনসহ দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো ছোট বয়সেই টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকিতে রয়েছে।
এদিকে, আন্তর্জাতিক ডায়াবেটিস ফেডারেশনের (আইডিএফ) তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশে প্রায় ২০ হাজার শিশু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত। তবে সঠিক পরিসংখ্যান এখনও পাওয়া যায়নি। বাংলাদেশ ডায়বেটিক সমিতি জানায়, প্রতি বছর ৩০০ থেকে ৪০০ শিশুর ডায়াবেটিস শনাক্ত হচ্ছে, যা আগের তুলনায় বেশি। দেশে মোট ডায়াবেটিস আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৩১ লাখ। যারা বিভিন্ন বয়সের, তবে বেশিরভাগই ২০ থেকে ৮০ বছর বয়সী। বিশ্বের তুলনায় বাংলাদেশের ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা অষ্টম স্থানে রয়েছে। দ্রুত এমন পরিস্থিতি চলতে থাকলে ২০৪৫ সালের মধ্যে দেশের ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা ২ কোটি ২৩ লাখে পৌঁছাবে। অন্যদিকে, ৪৩.৫ শতাংশ ডায়াবেটিস রোগীর রোগ নির্ণয় হয় না। টাইপ-১ ডায়াবেটিস মূলত ৩০ বছরের কম বয়সীদের মধ্যে বেশি দেখা যায়। টাইপ-২ ডায়াবেটিসের রোগী দেশের সংখ্যায় অনেক বেশি।
বাংলাদেশ ডায়াবেটিক সমিতি জানায়, গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের হার ৬ থেকে ১৪ শতাংশ। গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত নারীদের ৫০ শতাংশের বেশি ভবিষ্যতে টাইপ-২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি থাকে। গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস থাকলে শিশুরও এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এদিকে, বিশ্বজুড়ে ডায়াবেটিস রোগীর সংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। বাংলাদেশের স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, আধুনিক জীবনযাত্রার বদল এবং খাবারের ধরণ পরিবর্তনই এর মূল কারণ। শহরায়ণের কারণে, কম্পিউটার ও টেলিভিশনের সামনে বেশি সময় কাটানো, খেলাধুলার অভাব, ফাস্ট ফুড ও কোমল পানীয়ের প্রতি আসক্তি এসবই শিশু-কিশোরদের শরীরে ওজন বাড়াচ্ছে। এ থেকে টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি অনেক বেড়ে গেছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো জীবনযাত্রার পরিবর্তন। টাইপ-২ ডায়াবেটিসের ৭০ শতাংশ প্রতিরোধযোগ্য। তাই শিশুরা ছোট থেকেই স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। বাড়িতে পুষ্টিকর খাবার খেতে উৎসাহিত করতে হবে, ফাস্ট ফুড ও জাঙ্ক ফুড থেকে দূরে থাকতে হবে। নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম ও খেলাধুলার অভ্যাস গড়ে তোলা খুবই জরুরি। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটা, দৌড়ানো, খেলাধুলা ইত্যাদি শিশুদের শরীর সুস্থ রাখে এবং ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমায়। তারা বলছেন, শিশুদের ডায়াবেটিস প্রতিরোধে পরিবারের ভূমিকা অপরিহার্য। বাবা-মা ও অভিভাবকদের সচেতন হতে হবে তাদের সন্তানের খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার বিষয়ে। স্কুলগুলোতেও স্বাস্থ্যকর খাদ্য ও খেলাধুলার সুযোগ বাড়ানো জরুরি। শিশুদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষাও করতে হবে, যাতে প্রাথমিক পর্যায়ে ডায়াবেটিস শনাক্ত করা যায়। সময়মতো চিকিৎসা শুরু করলে জটিলতা কমানো সম্ভব।
তারা আরো বলছেন, সরকার এবং স্বাস্থ্য বিভাগকে শিশু-কিশোরদের মধ্যে ডায়াবেটিস সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে হবে। স্কুল, কমিউনিটি সেন্টার এবং গণমাধ্যমের মাধ্যমে প্রচার-প্রচারনা চালানো প্রয়োজন। সরকারি স্বাস্থ্য নীতিতে ডায়াবেটিস প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণকে অগ্রাধিকার দেওয়া দরকার। এছাড়া ইনসুলিন ও ডায়াবেটিসের ওষুধ সহজলভ্য করতে হবে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ডায়াবেটিস প্রতিরোধের সবচেয়ে বড় হাতিয়ার হলো সঠিক খাদ্যাভ্যাস, নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রম এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন।
এ বিষয়ে বাংলাদেশ ডায়াবেটিস অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ডা. এ কে আজাদ খান বলেন, আগে টাইপ-২ ডায়াবেটিস ৩০ বছরের পরে দেখা যেত, এখন ১৫-১৬ বছর বয়সেও দেখা যাচ্ছে। এটা খুবই উদ্বেগজনক।