১১:৫০ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৫, ১২ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

চট্টগ্রামে এমপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলি, সহযোগী নিহত

চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ এলাকায় বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর গণসংযোগ চলাকালে সশস্ত্র দুর্বৃত্তদের হামলায় এক সহযোগী নিহত এবং প্রার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সারোয়ার হোসেন বাবলাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন; তিনি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং অবস্থাটি স্থিতিশীল বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এরশাদ উল্লাহ দুপুরে চালিতাতলী বাজার এলাকায় নির্বাচনী প্রচার পরিচালনা করছিলেন। তখন মোটরসাইকেলযোগে কয়েকজন সশস্ত্র ব্যক্তি সেখানে এসে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। ঘটনাস্থল মুহূর্তেই আতঙ্কে ভরে যায়; মানুষ দিকভ্রান্ত হয়ে ছুটোছুটি শুরু করে। গুলিতে এরশাদ উল্লাহ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং তার সঙ্গে থাকা সারোয়ার হোসেন বাবলা গুরুতর আহত হন। আশেপাশের লোকজন তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।

ঘটনার পরপরই পুলিশ ও র‍্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে, এলাকা ঘিরে তল্লাশি শুরু করে এবং সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা এটি পূর্বপরিকল্পিত হামলা। স্থানীয় আধিপত্য বিস্তার, নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা ব্যক্তিগত শত্রুতা—যেকোনো একটি কারণেই ঘটনা ঘটতে পারে বলে তদন্তকারীরা বলছেন। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা শুরু করেছে।

পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানিয়েছেন, হামলাকারীর সনাক্তকরণে তদন্ত চলছে এবং এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা প্রস্তুত করা হচ্ছে; সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আশ্বাস দেয়া হয়েছে। এদিকে বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের লোকজনই পরিকল্পিতভাবে তার ওপর হামলা চালিয়েছে এবং তার নির্বাচনী কার্যক্রম ব্যাহত করার উদ্দেশ্য ছিল।

স্থানীয়রা বলছেন, পাঁচলাইশ ও আশপাশে দীর্ঘদিন ধরেই সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, আধিপত্য বিস্তার ও বিরোধ চলে আসছে। এর আগেও ওই এলাকায় গুলির ঘটনা ঘটেছে; আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি বাড়ানো হলেও মাঝে মাঝে এমন আকস্মিক হামলা আতঙ্ক ছড়ায়। সারোয়ার হোসেন বাবলার মৃত্যু এলাকায় গভীর শোক নেমে এসেছে; পরিবারের পক্ষ থেকে দ্রুত এবং ন্যায়সংগত বিচারের দাবি উঠেছে। বাবলার জানাজা ও দাফনের প্রস্তুতি চলছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ঘটনার ব্যাপক আলোচনা চলছে; অনেকেই নিহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন এবং এরশাদ উল্লাহর দ্রুত আরোগ্য কামনা করছেন। প্রশাসন জানিয়েছে, এ ধরনের সহিংসতা বরদাস্ত করা হবে না—ঘটনার ন্যায্য তদন্ত করে দোষীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার ও স্থায়ীভাবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বিরত রাখার জন্য স্থানীয় জনগণও ব্যবস্থা দাবি করছেন।

এমআর/সবা

জনপ্রিয় সংবাদ

মেঘনায় দুই লঞ্চের সংঘর্ষে ৮ জন নিহত

চট্টগ্রামে এমপি প্রার্থীর গণসংযোগে গুলি, সহযোগী নিহত

আপডেট সময় : ০৮:০৫:১৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ৫ নভেম্বর ২০২৫

চট্টগ্রাম নগরীর পাঁচলাইশ এলাকায় বুধবার (৫ নভেম্বর) দুপুরে বিএনপি মনোনীত প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর গণসংযোগ চলাকালে সশস্ত্র দুর্বৃত্তদের হামলায় এক সহযোগী নিহত এবং প্রার্থী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে আহতদের দ্রুত উদ্ধার করে এভারকেয়ার হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সারোয়ার হোসেন বাবলাকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। প্রার্থী এরশাদ উল্লাহ পায়ে গুলিবিদ্ধ হয়েছেন; তিনি বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন এবং অবস্থাটি স্থিতিশীল বলে জানা গেছে।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, এরশাদ উল্লাহ দুপুরে চালিতাতলী বাজার এলাকায় নির্বাচনী প্রচার পরিচালনা করছিলেন। তখন মোটরসাইকেলযোগে কয়েকজন সশস্ত্র ব্যক্তি সেখানে এসে এলোপাতাড়ি গুলি চালাতে শুরু করে। ঘটনাস্থল মুহূর্তেই আতঙ্কে ভরে যায়; মানুষ দিকভ্রান্ত হয়ে ছুটোছুটি শুরু করে। গুলিতে এরশাদ উল্লাহ মাটিতে লুটিয়ে পড়েন এবং তার সঙ্গে থাকা সারোয়ার হোসেন বাবলা গুরুতর আহত হন। আশেপাশের লোকজন তাদের উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যান।

ঘটনার পরপরই পুলিশ ও র‍্যাব সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে, এলাকা ঘিরে তল্লাশি শুরু করে এবং সিসিটিভি ফুটেজ সংগ্রহ করা হয়। পুলিশের প্রাথমিক ধারণা এটি পূর্বপরিকল্পিত হামলা। স্থানীয় আধিপত্য বিস্তার, নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা ব্যক্তিগত শত্রুতা—যেকোনো একটি কারণেই ঘটনা ঘটতে পারে বলে তদন্তকারীরা বলছেন। পুলিশ ঘটনার সাথে জড়িতদের শনাক্ত করে গ্রেফতারের চেষ্টা শুরু করেছে।

পাঁচলাইশ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জানিয়েছেন, হামলাকারীর সনাক্তকরণে তদন্ত চলছে এবং এ ঘটনায় একটি হত্যা মামলা প্রস্তুত করা হচ্ছে; সন্ত্রাসীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের আশ্বাস দেয়া হয়েছে। এদিকে বিএনপি প্রার্থী এরশাদ উল্লাহর পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে যে, রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের লোকজনই পরিকল্পিতভাবে তার ওপর হামলা চালিয়েছে এবং তার নির্বাচনী কার্যক্রম ব্যাহত করার উদ্দেশ্য ছিল।

স্থানীয়রা বলছেন, পাঁচলাইশ ও আশপাশে দীর্ঘদিন ধরেই সন্ত্রাসী কার্যকলাপ, আধিপত্য বিস্তার ও বিরোধ চলে আসছে। এর আগেও ওই এলাকায় গুলির ঘটনা ঘটেছে; আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি বাড়ানো হলেও মাঝে মাঝে এমন আকস্মিক হামলা আতঙ্ক ছড়ায়। সারোয়ার হোসেন বাবলার মৃত্যু এলাকায় গভীর শোক নেমে এসেছে; পরিবারের পক্ষ থেকে দ্রুত এবং ন্যায়সংগত বিচারের দাবি উঠেছে। বাবলার জানাজা ও দাফনের প্রস্তুতি চলছে।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ঘটনার ব্যাপক আলোচনা চলছে; অনেকেই নিহতের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানিয়েছেন এবং এরশাদ উল্লাহর দ্রুত আরোগ্য কামনা করছেন। প্রশাসন জানিয়েছে, এ ধরনের সহিংসতা বরদাস্ত করা হবে না—ঘটনার ন্যায্য তদন্ত করে দোষীদের কঠোর শাস্তি নিশ্চিত করা হবে। এলাকায় নিরাপত্তা জোরদার ও স্থায়ীভাবে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড বিরত রাখার জন্য স্থানীয় জনগণও ব্যবস্থা দাবি করছেন।

এমআর/সবা