০৬:০৪ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ১১ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
গুমের মামলা

এবার শেখ হাসিনার পক্ষে লড়বেন জেডআই খান পান্না

  • প্লট দুর্নীতি মামলার রায় ২৭ নভেম্বর
  • ওবায়দুল কাদেরের ‘পালিত পুত্র’ হিরুর দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদক

গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’সহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি ৩ ডিসেম্বর নির্ধারণ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গতকাল রোববার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই দিন ধার্য করেন। একইসঙ্গে এই মামলায় শেখ হাসিনাসহ অন্য পলাতকদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্নাকে “স্টেট ডিফেন্স হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল”। এছাড়া ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে সরকারি জমি বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে করা পৃথক তিন মামলার রায়ের দিন ২৭ নভেম্বর ধার্য করেছেন আদালত। এদিকে পতিত আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কথিত ‘পালিত পুত্র’ আসাদুজ্জামান হিরুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল রোববার আদালত ও দুদক সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা যায়, গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’সহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি ৩ ডিসেম্বর নির্ধারণ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গতকাল রোববার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই দিন ধার্য করেন। একইসঙ্গে এই মামলায় শেখ হাসিনাসহ অন্য পলাতকদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্নাকে “স্টেট ডিফেন্স হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল”। এদিন বেলা সাড়ে ১১টার পর গুমের দুই মামলার শুনানি শুরু হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। পরে টিএফআই সেলে গুমের মামলায় ১৭ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানির জন্য আগামী ৩ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেন ট্রাইব্যুনাল। অপর মামলায় ১৩ আসামির বিরুদ্ধে শুনানির জন্য ঠিক করা হয় ৭ নভেম্বর। তবে মামলার তারিখ নির্ধারণের আগে শেখ হাসিনার হয়ে স্টেট ডিফেন্সে লড়তে আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেডআই খান পান্না। পরে তার আবেদন মঞ্জুর করে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল। পাশাপাশি আরেক আইনজীবী এম হাসান ইমামকেও এ মামলায় স্টেট ডিফেন্স হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
এই দুই মামলায় বর্তমানে গ্রেফতার রয়েছেন ১৩ সেনা কর্মকর্তা। তারা হলেন- র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।
এদিকে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে সরকারি জমি বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে করা পৃথক তিন মামলার রায়ের দিন ২৭ নভেম্বর ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এ তারিখ ঘোষণা দেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাবলিক প্রসিকিউটর খান মোহাম্মদ মাইনুল হাসান লিপন এটি নিশ্চিত করেন।
এদিন দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর খান মো. মাইনুল হাসান (লিপন) যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। তিনি শেখ হাসিনাসহ অপর আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন প্রত্যাশা করেন। মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকা একমাত্র আসামি রাজউকের সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের পক্ষে অ্যাডভোকেট শাহীনুর রহমান যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন। অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি মর্মে তার খালাসের প্রার্থনা করেন। এদিন শুনানিকালে খুরশীদ আলমকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে করা ৬ মামলায় গত ৩১ জুলাই এ তিন মামলাসহ পৃথক ছয় মামলায় শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা পরিবারের সাত সদস্যসহ অপরদের বিরুদ্ধে গঠন করেন আদালত।
এসব মামলার শেখ পরিবারের অন্য আসামিরা হলেন- শেখ রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও অপর মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক। শেখ পরিবার ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদ, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মো. নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সজর (ইঞ্জিনিয়ার) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন।
অন্যদিকে, পতিত আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কথিত পালিত পুত্র আসাদুজ্জামান হিরুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল রোববার বিকেলে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন দুদকের জনসংযোগ বিভাগের উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম।
তিনি জানায়, পতিত আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কথিত ‘পালিত পুত্র’ আসাদুজ্জামান হিরুর বিরুদ্ধে চোরাচালান, হুন্ডি ব্যবসা, শুল্ক ফাঁকি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগ রয়েছে।
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, হিরু বর্তমানে ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের (এনডিই) পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি গুলশান-১ ডিএনসিসি মার্কেটের সভাপতি এবং প্যারাগন, লন্ডন টাচ, প্যারিস গ্রুপ ও ওয়েস্ট ফিল্ড নামীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক তিনি।
অভিযোগে আরও বলা হয়, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এসব ব্যবসার আড়ালে তিনি অবৈধপথে বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন। হিরু ও তার স্ত্রী ইসরাত জাহান চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি এবং ট্যাক্স জালিয়াতির মাধ্যমে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
অভিযোগের প্রাথমিক মূল্যায়ন শেষে দুদক এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দুই সদস্য নিয়ে একটি টিম গঠন করা হয়েছে। টিমের দলনেতা হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন দুদকের সহকারী পরিচালক নাছরুল্লাহ হোসাইন। সদস্য হিসেবে রয়েছেন উপসহকারী পরিচালক আবু তালহা।
পুলিশ জানায়, আসাদুজ্জামান নিজেকে পতিত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ‘পালিত পুত্র’ বলে পরিচয় দিতেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে আসাদুজ্জামান ওরফে হিরুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জুলাই আন্দোলন চলাকালে একটি হত্যার ঘটনায় করা মামলায় তাকে আসামি করা হয়।

জনপ্রিয় সংবাদ

বঙ্গোপসাগরে শক্তিশালী মিসাইল পরীক্ষা করল ভারত

গুমের মামলা

এবার শেখ হাসিনার পক্ষে লড়বেন জেডআই খান পান্না

আপডেট সময় : ০৭:১৯:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ২৪ নভেম্বর ২০২৫
  • প্লট দুর্নীতি মামলার রায় ২৭ নভেম্বর
  • ওবায়দুল কাদেরের ‘পালিত পুত্র’ হিরুর দুর্নীতি অনুসন্ধানে দুদক

গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’সহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি ৩ ডিসেম্বর নির্ধারণ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গতকাল রোববার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই দিন ধার্য করেন। একইসঙ্গে এই মামলায় শেখ হাসিনাসহ অন্য পলাতকদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্নাকে “স্টেট ডিফেন্স হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল”। এছাড়া ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে সরকারি জমি বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে করা পৃথক তিন মামলার রায়ের দিন ২৭ নভেম্বর ধার্য করেছেন আদালত। এদিকে পতিত আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কথিত ‘পালিত পুত্র’ আসাদুজ্জামান হিরুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল রোববার আদালত ও দুদক সূত্রে এসব তথ্য পাওয়া গেছে।
ট্রাইব্যুনাল সূত্রে জানা যায়, গুম ও নির্যাতনের ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দুই মামলায় ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’সহ ৩০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের শুনানি ৩ ডিসেম্বর নির্ধারণ করেছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। গতকাল রোববার বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদারের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১ এই দিন ধার্য করেন। একইসঙ্গে এই মামলায় শেখ হাসিনাসহ অন্য পলাতকদের পক্ষে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্নাকে “স্টেট ডিফেন্স হিসেবে নিয়োগ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল”। এদিন বেলা সাড়ে ১১টার পর গুমের দুই মামলার শুনানি শুরু হয়। প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। পরে টিএফআই সেলে গুমের মামলায় ১৭ আসামির বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের ওপর শুনানির জন্য আগামী ৩ ডিসেম্বর দিন ঠিক করেন ট্রাইব্যুনাল। অপর মামলায় ১৩ আসামির বিরুদ্ধে শুনানির জন্য ঠিক করা হয় ৭ নভেম্বর। তবে মামলার তারিখ নির্ধারণের আগে শেখ হাসিনার হয়ে স্টেট ডিফেন্সে লড়তে আবেদন করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী জেডআই খান পান্না। পরে তার আবেদন মঞ্জুর করে নিয়োগ দেন ট্রাইব্যুনাল। পাশাপাশি আরেক আইনজীবী এম হাসান ইমামকেও এ মামলায় স্টেট ডিফেন্স হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়।
এই দুই মামলায় বর্তমানে গ্রেফতার রয়েছেন ১৩ সেনা কর্মকর্তা। তারা হলেন- র‌্যাবের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল তোফায়েল মোস্তফা সারোয়ার, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. কামরুল হাসান, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহাবুব আলম, ব্রিগেডিয়ার কেএম আজাদ, কর্নেল আবদুল্লাহ আল মোমেন, কর্নেল আনোয়ার লতিফ খান (অবসরকালীন ছুটিতে), র‌্যাবের গোয়েন্দা শাখার সাবেক পরিচালক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. মশিউর রহমান, লেফটেন্যান্ট কর্নেল সাইফুল ইসলাম সুমন, লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. সারওয়ার বিন কাশেম, ডিজিএফআইয়ের সাবেক পরিচালক মেজর জেনারেল শেখ মো. সরওয়ার হোসেন, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. মাহবুবুর রহমান সিদ্দিকী ও ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আহমেদ তানভির মাজাহার সিদ্দিকী।
এদিকে, ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে সরকারি জমি বরাদ্দ নেওয়ার অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ প্লট বরাদ্দে জালিয়াতির ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়ের বিরুদ্ধে করা পৃথক তিন মামলার রায়ের দিন ২৭ নভেম্বর ধার্য করেছেন আদালত। গতকাল রোববার ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ এর বিচারক মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মামুন এ তারিখ ঘোষণা দেন। দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) পাবলিক প্রসিকিউটর খান মোহাম্মদ মাইনুল হাসান লিপন এটি নিশ্চিত করেন।
এদিন দুদকের পক্ষে প্রসিকিউটর খান মো. মাইনুল হাসান (লিপন) যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। তিনি শেখ হাসিনাসহ অপর আসামিদের সর্বোচ্চ সাজা যাবজ্জীবন প্রত্যাশা করেন। মামলায় গ্রেফতার হয়ে কারাগারে থাকা একমাত্র আসামি রাজউকের সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলমের পক্ষে অ্যাডভোকেট শাহীনুর রহমান যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন। অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি মর্মে তার খালাসের প্রার্থনা করেন। এদিন শুনানিকালে খুরশীদ আলমকে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে করা ৬ মামলায় গত ৩১ জুলাই এ তিন মামলাসহ পৃথক ছয় মামলায় শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা পরিবারের সাত সদস্যসহ অপরদের বিরুদ্ধে গঠন করেন আদালত।
এসব মামলার শেখ পরিবারের অন্য আসামিরা হলেন- শেখ রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও অপর মেয়ে আজমিনা সিদ্দিক। শেখ পরিবার ছাড়া অন্য আসামিরা হলেন- জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদ, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মো. নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সজর (ইঞ্জিনিয়ার) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক মো. হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন।
অন্যদিকে, পতিত আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কথিত পালিত পুত্র আসাদুজ্জামান হিরুর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। গতকাল রোববার বিকেলে গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানিয়েছেন দুদকের জনসংযোগ বিভাগের উপপরিচালক আকতারুল ইসলাম।
তিনি জানায়, পতিত আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের কথিত ‘পালিত পুত্র’ আসাদুজ্জামান হিরুর বিরুদ্ধে চোরাচালান, হুন্ডি ব্যবসা, শুল্ক ফাঁকি, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজিসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও দুর্নীতির মাধ্যমে বিপুল পরিমাণ অবৈধ সম্পদ অর্জন এবং বিদেশে অর্থপাচারের অভিযোগ রয়েছে।
দুদকের অভিযোগে বলা হয়, হিরু বর্তমানে ন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডের (এনডিই) পরিচালক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। পাশাপাশি গুলশান-১ ডিএনসিসি মার্কেটের সভাপতি এবং প্যারাগন, লন্ডন টাচ, প্যারিস গ্রুপ ও ওয়েস্ট ফিল্ড নামীয় ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের মালিক তিনি।
অভিযোগে আরও বলা হয়, রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এসব ব্যবসার আড়ালে তিনি অবৈধপথে বিপুল সম্পদ গড়ে তুলেছেন। হিরু ও তার স্ত্রী ইসরাত জাহান চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি এবং ট্যাক্স জালিয়াতির মাধ্যমে হাজার কোটি টাকার মালিক হয়েছেন।
অভিযোগের প্রাথমিক মূল্যায়ন শেষে দুদক এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক অনুসন্ধানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। অনুসন্ধান কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দুই সদস্য নিয়ে একটি টিম গঠন করা হয়েছে। টিমের দলনেতা হিসেবে দায়িত্ব পেয়েছেন দুদকের সহকারী পরিচালক নাছরুল্লাহ হোসাইন। সদস্য হিসেবে রয়েছেন উপসহকারী পরিচালক আবু তালহা।
পুলিশ জানায়, আসাদুজ্জামান নিজেকে পতিত আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের ‘পালিত পুত্র’ বলে পরিচয় দিতেন। চলতি বছরের জানুয়ারিতে আসাদুজ্জামান ওরফে হিরুকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জুলাই আন্দোলন চলাকালে একটি হত্যার ঘটনায় করা মামলায় তাকে আসামি করা হয়।