পরিবর্তিত রাজনৈতিক বাস্তবতায় আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৬ অনুষ্ঠিতব্য ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গোপালগঞ্জের রাজনীতিতে উত্তাপ ছড়াতে শুরু করেছে। গোপালগঞ্জ-২ আসন (গোপালগঞ্জ সদর ও কাশিয়ানীর আংশিক) থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার ঘোষণা দিয়ে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে উঠে এসেছেন সাবেক সফল উপজেলা চেয়ারম্যান কামরুজ্জামান ভূঁইয়া লুটুল।
বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে আসনটি দীর্ঘদিন সাবেক সংসদ সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের দখলে থাকলেও ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থান-পরবর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে দলটির সাংগঠনিক স্থবিরতা নতুন রাজনৈতিক সমীকরণ তৈরি করেছে। এই সুযোগে গোপালগঞ্জের ভোটের মাঠে নতুন মেরুকরণ স্পষ্ট হয়ে উঠছে।
গোপালগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালনকালে জনসেবা ও প্রশাসনিক দক্ষতার মাধ্যমে কামরুজ্জামান ভূঁইয়া লুটুল এলাকায় ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। সেই অভিজ্ঞতা, জনসম্পৃক্ততা ও পরিচ্ছন্ন ভাবমূর্তিকে পুঁজি করেই তিনি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেওয়ার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।
প্রাথমিকভাবে বিএনপি ও জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থীদের মধ্যে দ্বিমুখী লড়াইয়ের সম্ভাবনা দেখা দিলেও, লুটুলের স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে আবির্ভাবে নির্বাচনী চিত্র বদলে গেছে। এরই মধ্যে আরও কয়েকজন স্বতন্ত্র ও বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের প্রার্থী মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা আরও বহুমাত্রিক ও আকর্ষণীয় হয়ে উঠছে।
নবীন ভোটারদের মধ্যে লুটুলের উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ড ও সৎ ভাবমূর্তির প্রভাব ইতিবাচকভাবে লক্ষ করা যাচ্ছে। প্রবীণ ভোটারদের মধ্যেও দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ধারা পরিবর্তনের বিষয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া থাকলেও, যোগ্য নেতৃত্বের প্রশ্নে তাকে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখছেন অনেকেই।
আওয়ামী লীগের কার্যত অনুপস্থিতিতে যেখানে একসময় নির্বাচনী মাঠ কিছুটা নিস্তেজ ছিল, সেখানে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কামরুজ্জামান ভূঁইয়া লুটুলের ঘোষণা নতুন প্রাণ সঞ্চার করেছে। ভোটারদের মতে, এবার নির্বাচনটি প্রকৃত অর্থেই অংশগ্রহণমূলক ও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ হতে যাচ্ছে।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের ধারণা, ১২ ফেব্রুয়ারির এই নির্বাচন গোপালগঞ্জের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক ইতিহাসে গুরুত্বপূর্ণ মোড় নিতে পারে। এখন দেখার বিষয়, স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে কামরুজ্জামান ভূঁইয়া লুটুল শেষ পর্যন্ত ভোটারদের আস্থা অর্জন করে জাতীয় সংসদের পথে পৌঁছাতে পারেন কি না।
এমআর/সবা























