সোহাগ রহমান, ভালুকা (ময়মনসিংহ)
৫ বছর ধরে ভালুকা উপজেলার পশ্চিম সীমান্তবর্তী এলাকা উথুরা ইউনিয়নের কৈয়াদী গ্রামের যুবক লাভলু মিয়া বাণিজ্যিক ভিত্তিতে ড্রাগন ফলের চাষ করে ব্যাপক সফলতা পেয়েছেন। লাভলু মিয়া ওই গ্রামের আইনাল হকের ছেলে। ড্রাগন চাষি লাভলু মিয়া জানান, ৫ বছর আগে পাশর্^বর্তী গ্রাম টাঙ্গাইলের
ঘাটাইল উপজেলার করিমগঞ্জে একটি এগ্রো ফার্মে ড্রাগন বাগানে কাজ করতেন তিনি। সেখানে দুই বছর কাজ করার পর নিজেই এই ফলের চাষ করার উদ্যোগ নিলেন। পরে বাড়ির চতুর পাশে নিজস্ব ৬ কাঠা জমিতে ড্রাগন ফলের চাষ শুরু করেন তিনি। প্রথমে ২শত গাছ রোপন করেন। এতে তার প্রায় আড়াই লাখ টাকা খরচ হয়।
রোপনের প্রথম বছর ফলন কম হয়। ওই বছর ফল বিক্রি করে তিনি পান ৩০ হাজার টাকা। পরের বছর খরচের পুরোটাই উঠে আসে তার। এরপর প্রতিবছরই দুই থেকে আড়াই লাখ টাকার ড্রাগন ফল বিক্রি করছেন তিনি। তিনি আরও জানান, এ ফল জানুয়ারী-ফেব্রুয়ারী মাসে লাগাতে হয়। মে-জুন
মাসে গাছ থেকে এর ফলন পাওয়া যায়। একবার গাছ রোপন করলে পরবর্তীতে বাগানে তেমন খরচ করতে হয়না। ঠিকমতো গাছের যত্ন নিলে এবং সময়মতো কীটনাশক দিতে পারলে ভালো ফলন পাওয়া যাবে।
তিনি বলেন, সঠিক পরিচর্যা করতে পারলে একটি ড্রাগন গাছ থেকে ২০ থেকে ২৫ বছর পর্যন্ত ফল পাওয়া যায়। ৫ বছর যাবত ড্রাগনের চাষ করে দুই বছরের মাথায় লাভের মুখ দেখতে পেয়েছি। ভবিষ্যতে এ বাগান থেকে আরো অধিক লাভের আশা করছি।
লাভলু মিয়া আরও জানান, ফল বিক্রির উপযোগী হলে গাছ থেকে ফল উত্তোলন করে ট্রাক যোগে ঢাকায় আড়তে নিয়ে নিজেই বিক্রি করেন তিনি। অল্প গাছ হওয়ায় ফলনও হয় অল্প। তাই অন্যের পন্যবাহী ট্রাকে ঢাকায় নিয়ে যেতে হয়। বাজার অনুপাতে প্রতি কেজি দেড়শ থেকে আড়াইশ টাকা বিক্রি করা যায়।
তিনি বলেন, ড্রাগন বাগানে কাজ করার সুবাদে এই ফলের চাষ করতে পেরেছি। আমাদের উপজেলার কৃষি অফিসের কোনো লোককে আমি চিনিনা। তারাও আমারএ বাগান কখনও দেখতে আসেনি। তাদের সহযোগিতা পেলে হয়তো আরো সুবিধা হতো। ভবিষ্যতে এর চাষ আরো বাড়াতে চান তিনি। ইতোমধ্যে ড্রাগনের চাষ করে তার জীবন চাকা ঘুরতে শুরু করছে। তার দেখা দেখি পাশের অনেকেই অল্প জায়গায় ড্রাগন চাষ শুরু করছে। এতে করে গ্রামীণ অর্থনৈতিক চাকা আরো সচল হবে বলে আশা তার।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা জেসমিন জাহান বলেন, গত দুই বছর কৈয়াদী এলাকার দায়িত্বে কোনো উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা ছিল না। কিছুদিন হয়
জাহিদকে সেখানের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। জাহিদ অ্যাকটিভ লোক। চাষির সমস্যা হচ্ছে বা পরামর্শের প্রয়োজন এ ব্যাপারে আমাকে বা আমার কোনো
কর্মকর্তাকে জানায়নি। ফলে ওই চাষি সফলতার সাথেই তার চাষাবাদ চালিয়ে যাচ্ছে। তারপরও যদি কোনো পরামর্শের প্রয়োজন হয় তাহলে উনাকে সর্বাত্মক পরামর্শসহ সহযোগিতা প্রদান করা হবে। তাছাড়া ইতোমধ্যে আমাদের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাসহ আমরা উপজেলা কৃষি অফিস কৈয়াদী গ্রামে বিভিন্ন কৃষি বাগান ও ক্ষেত পরিদর্শন করেছি।


























