রাবি প্রতিবেদক
মেয়ে হয়ে নয়, মানুষ হয়ে বাঁচতে হবে’ বলে মন্তব্য করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম। রোকেয়া দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হলে এক আলোচনায় সভায় তিনি কথা বলেন। এর আগে, হল গেইটে রোকেয়ার প্রতিকৃতিতে মোমবাতি প্রোজ্জ্বল করার পর হলের মিলনায়তনে অনুষ্ঠান শুরু হয়।
সভায় উপ-উপাচার্য আরও বলেন, রোকেয়ার কথা শুনলেই যেন আমরা আলোর রেখা দেখতে পাই। আমাদের সমাজ যখন নারীর ক্ষেত্রে অন্ধকার যুগে পড়েছিল ঠিক তখনই তিনি সব বাধা ডিঙিয়ে নারীদের সামনে আলোর রেখা তুলে ধরেন। নারী আন্দোলনের অগ্রদূত বেগম রোকেয়া অত্যন্ত দূরদৃষ্টি সম্পন্ন ছিলেন। তিনি বলেছিলেন মেয়ে মানুষ নয়, মানুষ হয়ে বাঁচতে হবে। তবেই মানবজনম স্বার্থক হবে। একজন মানুষকে যখন শিক্ষাদান করা হয় তখন মানুষ তার অধিকার সম্পর্কে সচেতন হয়। এজন্যই তিনি শিক্ষাকে প্রধান হাতিয়ার হিসেবে ধরে নিয়েছিলেন।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার, বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ উপাচার্য অধ্যাপক সুলতান উল ইসলাম এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ওবায়দুর রহমান প্রামাণিক।
অনুষ্ঠানে ওবায়দুর রহমান প্রামাণিক বলেন, বেগম রোকেয়া যেভাবে নারীদের জাগরণ করেছেন তার আন্দোলনের মাধ্যমে, তার লেখনীর মাধ্যমে তা-না হলে নারীরা এতদূর আসতে পারতো কি না সন্দেহ আছে। নারী যে শুধু বন্দী থাকবে, সেবা দিবে তা নয় এটাই তিনি তার লেখনীতে তুলে ধরেছেন। নারী যে শাসন করতে পারে সেটাও তিনি করে দেখিয়েছেন। তিনিই প্রথম নারীদের স্কুল খুলেছিলেন। তিনি সংগ্রাম করে ২৪ সেখানে শিক্ষতা করেছেন। এই মহীয়সী নারীর স্বামীও তাকে যথেষ্ট সাহায্য করেছিলেন। তিনি সবসময় নারীদের আদর্শ হয়ে থাকবেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, নারী শিক্ষার ক্ষেত্রে কিছু কিছু পুরুষ আছে নারীদের ক্ষেত্রে তাদের অনেক অবদান থাকে। বেগম রোকেয়া ঘরে বন্ধী থেকে তার ভাইয়ের কাছে এবং পরবর্তীতে স্বামীর কাছে পড়াশোনার গন্ডি এগিয়ে নেন। পারিবারিক শোক বুকে নিয়েও তিনি যে এত উজ্জ্বলভাবে আলো ছড়িয়ে সমাজে যে বার্তা দিয়ে গেছেন তা আমাদের ধরে রাখতে হবে। ২০০৪ সালে বিবিসির একশো জনের ওপর করা শ্রেষ্ঠ বাঙালির জরিপে বেগম রোকেয়া ষষ্ঠ অবস্থানে ছিলেন। তিনি যে চিন্তাচেতনা ধারন করেছেন তা বিশ্বসভা এবং বাংলাদেশ স্বীকৃতি দিয়েছে। কাজেই তার রেখে যাওয়া আলো যুগ যুগ ধরে জ্বলছে।
রোকেয়া হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক জয়ন্ত রানী বসাকের সভাপতিত্বে এবং হলের হাউজ টিউটর ড. ফেরদৌস আক্তারের সঞ্চালনায় বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষগণ উপস্থিত ছিলেন।
আলোচনা শেষে রোকেয়া দিবস উপলক্ষে প্রতিযোগিতার পুরষ্কার বিতরণের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শেষ হয়।























