০১:২৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

আশা ও সম্ভাবনার বিশ্বকাপ

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শুরু হতে বাকী ৬ মাস। তবে শুক্রবার রাতে জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে যৌথভাবে অনুষ্ঠিতব্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পূর্ণাঙ্গ সূচি প্রকাশ করেছে খেলাটির নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। সূচি প্রকাশ হওয়ায় ক্রীড়ামোদীদের মাঝে আনন্দের ঘনঘটা শুরু হয়ে গেছে। প্রতিটি দল তার বিপক্ষ দল নিয়ে ভাবা শুরু করেছে।

ডালাসে ১ জুন উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হবে স্বাগতিক যুক্তরাস্ট্র ও কানাডা। পরের দিন পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে মাঠে নামবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২৯ জুন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বার্বাডোজে ফাইনাল দিয়ে পর্দা নামবে বিশ্বকাপে। টুর্নামেন্টের ‘ডি’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলংকা, নেদারল্যান্ডস ও নেপাল। অন্যগ্রুপগুলোর তুলনায় বেশ কঠিন জায়গায় স্থান পেয়েছে শান্তরা।

তাছাড়া গ্রুপ ‘এ’তে আছে ভারত, পাকিস্তান, আয়ারল্যান্ড, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র। গ্রুপ ‘বি’তে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের সাথে আছে অস্ট্রেলিয়া, নামিবিয়া, স্কটল্যান্ড ও ওমান। স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের গ্রুপ ‘সি’তে থাকছে নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান, উগান্ডা ও পাপুয়া নিউগিনি। প্রথমবারের মতো আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ২০টি দল অংশ নিবে। ৪টি গ্রুপে ৫টি করে দল খেলবে। গ্রুপ পর্বের খেলা চলবে ১৭ জুন পর্যন্ত। প্রতি গ্রুপ থেকে শীর্ষ দুই দল সুপার এইট পর্বে খেলার সুযোগ পাবে। সেখানে আটটি দল দু’টি গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে। ১৯ থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত সুপার এইট পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। ২৬ ও ২৭ জুন দু’টি সেমিফাইনালের পর ২৯ জুন হবে ফাইনাল। ৯ জুন নিউইয়র্কে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে হাইভোল্টেজ ম্যাচে মুখোমুখি হবে ভারত ও পাকিস্তান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ছয় ও যুক্তরাষ্ট্রের তিন ভেন্যুতে মোট ৫৫টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে হবে ৪১টি ম্যাচ।

আগামী ৭ জুন শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর শুরু করবে বাংলাদেশ। যে ম্যাচে চোখ থাকবে দুই দেশের কোটি সমর্থকদের। কেননা সাম্প্রতিককালে টাইগারদের সাথে লঙ্কার লড়াইয়ের উত্তেজনা প্রবল। শুধু মাঠ নয়, মাঠের বাহিরের নানা ঘটনাও থাকে কেন্দ্রবিন্দুতে। গত ৫ বছরে দুইদলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা মাঠ ছাপিয়ে মাঠের বাহিরে গিয়েছে বহুবার। তাইতো দর্শকদের পাশাপাশি আইসিসিরও নজর থাকবে বাঘ-সিংহের লড়াইয়ে। দু’দলের মোট ৯ দেখায় শ্রীলঙ্কার জয়ের পাল্লা ভারী। তাদের ৫ জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশ জিতেছে কেবল ৪টিতে।

ডালাসে গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলার পর ১০ জুন নিউইয়র্কে শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। যেটা গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং ম্যাচ। এইডেন মাকরামের আফ্রিকা ছোট ফরমেটে শক্তিধর দল। তাদের অধিকাংশ ক্রিকেটার বিভিন্ন লিগগুলোতে নিয়মিত খেলে থাকেন। তাদের সাথে ভালো খেলাটা সাকিবদের জন্য সহজ হবে না। কেননা এখনও পর্যন্ত তাদের বিপক্ষে ৮ বারের দেখায় কোন জয় পায়নি বাংলাদেশ। ১৩ জুন নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেন্ট ভিনসেন্টে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে লড়বে টাইগাররা। অপেক্ষাকৃত সহজ প্রতিপক্ষ বলে ধরলে ডাচদের দ্বারা ম্যাচ খোয়াতে পারে বাংলাদেশ। কারণ বড় ইভেন্টে প্রতিবারই চমক দেয় নেদারল্যান্ডস। দু;দণের মোট ৪ দেখায় ৩টি জয় পাওয়া বাংলাদেশ যদি ম্যাচচি জয় না পায় তবে আক্ষেপের শেষ থাকবে না। এরপর গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচ ১৬ জুন একই ভেন্যুতে নেপালের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। যেখানে নিশ্চিত জয়ে চোখ থাকবে টাইগারদের। তবে নেপালও বাংলাদেশকে হারিয়ে চমক দেখালে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কেননা ২০১৪ সালে ঘরের মাঠে বিশ^কাপে হংকংয়ের কাছে পরাজিত হয়েছিল বাংলাদেশ। তবে আশঙ্কা সত্যি না হোক, সেটাই টাইগার ভক্তদের চাওয়া। দু’দলের একমাত্র দেখায় নেপালকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ।

তারুণ্যনির্ভর বাংলাদেশ ২০২৩ সালে কোন টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারেনি। ঘরের মাঠে শক্তিশালী ইংল্যান্ড,আফগানিস্তান,আয়ারল্যান্ডের সাথে সিরিজ জয়ের পর তাসমান পাড়ে কিউইদের সাথে সমতায় সিরিজ শেষ করে। ব্যাটে বলে সাফল্যের ফুলঝুড়িতে বছর পার করা বাংলাদেশের সামনে নতুন বছরে থাকবে নতুন চ্যালেঞ্জ। বিশ^কাপে নিজেদের সেরাটা দিয়ে দেশের ষোল কোটি মানুষের মন জয় করতে চাইবে। তবে কাজটা বেশ কঠিন। এখনও পর্যন্ত ১৫৮ ম্যাচে ৫৯ জয় পাওয়া টাইগারদের স্বপ্নটা বিশ^জয় হলেও বাস্তবের নিরিক্ষে তা করে দেখানো কঠিন। বিশ^কাপে মোট ৩৭ ম্যাচ খেলে মাত্র ৯টি জয় আশাবাদী না করলেও গতবছরের পাফর্ম্যান্স ভক্তদের আশা জাগাচ্ছে। তাই এবারের বিশ^কাপে নতুন কিছু দেখার প্রত্যাশায় দর্শকরা।

২০২৪ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ম্যাচ

তারিখ ও প্রতিপক্ষ ভেন্যু

৭ জুন,শুক্রবার              শ্রীলঙ্কা ডালাস
১০ জুন,সোমবার           দক্ষিণ আফ্রিকা নিউইয়র্ক
১৩ জুন, বৃহস্পতিবার   নেদারল্যান্ডস সেন্ট ভিনসেন্ট
১৬ জুন, রোববার          নেপাল সেন্ট ভিনসেন্ট

জনপ্রিয় সংবাদ

আশা ও সম্ভাবনার বিশ্বকাপ

আপডেট সময় : ০৭:৩৩:২২ অপরাহ্ন, শনিবার, ৬ জানুয়ারী ২০২৪

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শুরু হতে বাকী ৬ মাস। তবে শুক্রবার রাতে জুনে ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে যৌথভাবে অনুষ্ঠিতব্য টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের পূর্ণাঙ্গ সূচি প্রকাশ করেছে খেলাটির নিয়ন্ত্রক সংস্থা ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল (আইসিসি)। সূচি প্রকাশ হওয়ায় ক্রীড়ামোদীদের মাঝে আনন্দের ঘনঘটা শুরু হয়ে গেছে। প্রতিটি দল তার বিপক্ষ দল নিয়ে ভাবা শুরু করেছে।

ডালাসে ১ জুন উদ্বোধনী ম্যাচে মুখোমুখি হবে স্বাগতিক যুক্তরাস্ট্র ও কানাডা। পরের দিন পাপুয়া নিউগিনির বিপক্ষে মাঠে নামবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ২৯ জুন ওয়েস্ট ইন্ডিজের বার্বাডোজে ফাইনাল দিয়ে পর্দা নামবে বিশ্বকাপে। টুর্নামেন্টের ‘ডি’ গ্রুপে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা, শ্রীলংকা, নেদারল্যান্ডস ও নেপাল। অন্যগ্রুপগুলোর তুলনায় বেশ কঠিন জায়গায় স্থান পেয়েছে শান্তরা।

তাছাড়া গ্রুপ ‘এ’তে আছে ভারত, পাকিস্তান, আয়ারল্যান্ড, কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্র। গ্রুপ ‘বি’তে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ডের সাথে আছে অস্ট্রেলিয়া, নামিবিয়া, স্কটল্যান্ড ও ওমান। স্বাগতিক ওয়েস্ট ইন্ডিজের গ্রুপ ‘সি’তে থাকছে নিউজিল্যান্ড, আফগানিস্তান, উগান্ডা ও পাপুয়া নিউগিনি। প্রথমবারের মতো আগামী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ২০টি দল অংশ নিবে। ৪টি গ্রুপে ৫টি করে দল খেলবে। গ্রুপ পর্বের খেলা চলবে ১৭ জুন পর্যন্ত। প্রতি গ্রুপ থেকে শীর্ষ দুই দল সুপার এইট পর্বে খেলার সুযোগ পাবে। সেখানে আটটি দল দু’টি গ্রুপে ভাগ হয়ে খেলবে। ১৯ থেকে ২৪ জুন পর্যন্ত সুপার এইট পর্ব অনুষ্ঠিত হবে। ২৬ ও ২৭ জুন দু’টি সেমিফাইনালের পর ২৯ জুন হবে ফাইনাল। ৯ জুন নিউইয়র্কে টুর্নামেন্টের সবচেয়ে হাইভোল্টেজ ম্যাচে মুখোমুখি হবে ভারত ও পাকিস্তান। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ছয় ও যুক্তরাষ্ট্রের তিন ভেন্যুতে মোট ৫৫টি ম্যাচ অনুষ্ঠিত হবে। এরমধ্যে ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জে হবে ৪১টি ম্যাচ।

আগামী ৭ জুন শ্রীলংকার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের নবম আসর শুরু করবে বাংলাদেশ। যে ম্যাচে চোখ থাকবে দুই দেশের কোটি সমর্থকদের। কেননা সাম্প্রতিককালে টাইগারদের সাথে লঙ্কার লড়াইয়ের উত্তেজনা প্রবল। শুধু মাঠ নয়, মাঠের বাহিরের নানা ঘটনাও থাকে কেন্দ্রবিন্দুতে। গত ৫ বছরে দুইদলের প্রতিদ্বন্দ্বিতা মাঠ ছাপিয়ে মাঠের বাহিরে গিয়েছে বহুবার। তাইতো দর্শকদের পাশাপাশি আইসিসিরও নজর থাকবে বাঘ-সিংহের লড়াইয়ে। দু’দলের মোট ৯ দেখায় শ্রীলঙ্কার জয়ের পাল্লা ভারী। তাদের ৫ জয়ের বিপরীতে বাংলাদেশ জিতেছে কেবল ৪টিতে।

ডালাসে গ্রুপ পর্বে নিজেদের প্রথম ম্যাচ খেলার পর ১০ জুন নিউইয়র্কে শক্তিশালী দক্ষিণ আফ্রিকার মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ। যেটা গ্রুপ পর্বে বাংলাদেশের জন্য সবচেয়ে চ্যালেঞ্জিং ম্যাচ। এইডেন মাকরামের আফ্রিকা ছোট ফরমেটে শক্তিধর দল। তাদের অধিকাংশ ক্রিকেটার বিভিন্ন লিগগুলোতে নিয়মিত খেলে থাকেন। তাদের সাথে ভালো খেলাটা সাকিবদের জন্য সহজ হবে না। কেননা এখনও পর্যন্ত তাদের বিপক্ষে ৮ বারের দেখায় কোন জয় পায়নি বাংলাদেশ। ১৩ জুন নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সেন্ট ভিনসেন্টে নেদারল্যান্ডসের বিপক্ষে লড়বে টাইগাররা। অপেক্ষাকৃত সহজ প্রতিপক্ষ বলে ধরলে ডাচদের দ্বারা ম্যাচ খোয়াতে পারে বাংলাদেশ। কারণ বড় ইভেন্টে প্রতিবারই চমক দেয় নেদারল্যান্ডস। দু;দণের মোট ৪ দেখায় ৩টি জয় পাওয়া বাংলাদেশ যদি ম্যাচচি জয় না পায় তবে আক্ষেপের শেষ থাকবে না। এরপর গ্রুপ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচ ১৬ জুন একই ভেন্যুতে নেপালের বিপক্ষে খেলবে বাংলাদেশ। যেখানে নিশ্চিত জয়ে চোখ থাকবে টাইগারদের। তবে নেপালও বাংলাদেশকে হারিয়ে চমক দেখালে অবাক হওয়ার কিছু নেই। কেননা ২০১৪ সালে ঘরের মাঠে বিশ^কাপে হংকংয়ের কাছে পরাজিত হয়েছিল বাংলাদেশ। তবে আশঙ্কা সত্যি না হোক, সেটাই টাইগার ভক্তদের চাওয়া। দু’দলের একমাত্র দেখায় নেপালকে হারিয়েছিল বাংলাদেশ।

তারুণ্যনির্ভর বাংলাদেশ ২০২৩ সালে কোন টি-টোয়েন্টি সিরিজ হারেনি। ঘরের মাঠে শক্তিশালী ইংল্যান্ড,আফগানিস্তান,আয়ারল্যান্ডের সাথে সিরিজ জয়ের পর তাসমান পাড়ে কিউইদের সাথে সমতায় সিরিজ শেষ করে। ব্যাটে বলে সাফল্যের ফুলঝুড়িতে বছর পার করা বাংলাদেশের সামনে নতুন বছরে থাকবে নতুন চ্যালেঞ্জ। বিশ^কাপে নিজেদের সেরাটা দিয়ে দেশের ষোল কোটি মানুষের মন জয় করতে চাইবে। তবে কাজটা বেশ কঠিন। এখনও পর্যন্ত ১৫৮ ম্যাচে ৫৯ জয় পাওয়া টাইগারদের স্বপ্নটা বিশ^জয় হলেও বাস্তবের নিরিক্ষে তা করে দেখানো কঠিন। বিশ^কাপে মোট ৩৭ ম্যাচ খেলে মাত্র ৯টি জয় আশাবাদী না করলেও গতবছরের পাফর্ম্যান্স ভক্তদের আশা জাগাচ্ছে। তাই এবারের বিশ^কাপে নতুন কিছু দেখার প্রত্যাশায় দর্শকরা।

২০২৪ টি–টোয়েন্টি বিশ্বকাপে বাংলাদেশের ম্যাচ

তারিখ ও প্রতিপক্ষ ভেন্যু

৭ জুন,শুক্রবার              শ্রীলঙ্কা ডালাস
১০ জুন,সোমবার           দক্ষিণ আফ্রিকা নিউইয়র্ক
১৩ জুন, বৃহস্পতিবার   নেদারল্যান্ডস সেন্ট ভিনসেন্ট
১৬ জুন, রোববার          নেপাল সেন্ট ভিনসেন্ট