১০:২৫ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইউরোপেও পড়ছে মস্কোর হামলার প্রভাব

 

🔴 সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করল ফ্রান্স

🔴 ৪ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ রাশিয়ার

🔴 রাশিয়ার ২ জাহাজে ইউক্রেনের হামলা

 

 

মস্কোর ঘটনার পর সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় ফ্রান্স সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে। ব্রিটেনও ইউরোপে আইএস গোষ্ঠীর হামলার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না। জার্মানি রাশিয়ার আচরণও ইউরোপের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে। গত শুক্রবার মস্কোর কনসার্ট হলে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার জের ইউরোপেও পড়তে পারে বলে আশঙ্কা বাড়ছে। ফ্রান্সও এমন ধরনের সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় সর্বোচ্চ সতর্কতার মাত্রা ঘোষণা করেছে।গত রোববার সে দেশের প্রধানমন্ত্রী গাব্রিয়েল আটাল উচ্চপদস্থ নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সেই সিদ্ধান্তের কথা জানান। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁও সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। ফ্রান্স গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক আয়োজনের ঠিক আগে ইসলামিক স্টেট সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হুমকির আশঙ্কা যে হালকাভাবে নিচ্ছে না, সরকার তা স্পষ্ট করে দিচ্ছে।

 

ফ্রান্সে সন্ত্রাসী হামলা সম্পর্কে সতর্কতার তিনটি পর্যায় রয়েছে। দেশে বা বিদেশে এমন আশঙ্কার মাত্রা স্পষ্ট হলে সীমিত সময়ের জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা ঘোষণা করা হয়। সরকার সেই সিদ্ধান্ত নিলে সশস্ত্র বাহিনী প্রকাশ্যে টহলদারি আরো বাড়াতে পারে। সেইসঙ্গে নিরাপত্তা জোরদার করতে প্রশাসন ব্যায়ের তোয়াক্কা না করে বাড়তি পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতাও রাখে। সংকটের সময়ে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে জরুরি ভিত্তিতে নাগরিকদের তথ্যও পাঠানো যায়।

 

মস্কোর হামলার জন্য রাশিয়া যেভাবে ইউক্রেনকে পরোক্ষভাবে দায়ী করছে, তার ফলেও ইউক্রেন তথা ইউরোপে বিপদের আশঙ্কা বাড়ছে। জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেসার রাশিয়ার বেড়ে চলা আগ্রাসী আচরণকে জার্মানির জন্যও বিশাল হুমকির কারণ হিসেবে দেখছেন। গুপ্তচরবৃত্তি থেকে শুরু করে মিথ্যাচারের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টার নতুন মাত্রা দেখা যাচ্ছে। ফিনল্যান্ডের সীমান্তে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে রাশিয়া ইউরোপের স্থিতিশীলতা বিপন্ন করার চেষ্টা করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এক সাক্ষাৎকারে জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পশ্চিম ইউরোপে রাশিয়ার প্রভাব মোকাবিলা করতে জার্মান সরকার আগামী সপ্তাহগুলিতে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।

 

অন্যেিদক মস্কোয় কনসার্ট হলে মুখোশ পরা বন্দুকধারীদের হামলার ঘটনায় আটক চারজনের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসবাদে’ জড়িত থাকার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ এনেছে রাশিয়া। অভিযুক্ত চারজন হলেন- দালেরদজন মিরজোয়েভ, সাইদাকরামি মুরোদালি রাচাবালিজোদা, সামসিদিন ফারিদুনি এবং মোহাম্মদসোবির ফায়জোভ। রবিববার তাদের আদালতে তোলা হয়েছে। দুজনের ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা এএফপি বলছে, ছবি প্রকাশ করা দুজনের একজন মিরজোয়েভ তাজিকিস্তানের নাগরিক। আর অন্যজন রাচাবালিজোদার জাতীয়তা সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। ফারিদুনি ও ফায়জোভের জাতীয়তা সম্পর্কেও জানা যায়নি। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় মস্কোর ক্রোকাস সিটি হলে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় বন্দুকধারীরা কনসার্ট হলে ঢুকে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল দিয়ে ভিড়ের মধ্যে এলোপাতাড়ি গুলি চালান। সেই সঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে ওই হলে আগুন ধরে যায়। ধসে পড়ে ছাদ। এ ঘটনাকে ‘রক্তাক্ত সন্ত্রাসী হামলা’ বলে উল্লেখ করে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। হামলার পরপরই এর দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)। তবে রুশ কর্তৃপক্ষ মস্কোর কনসার্ট হলে হামলার পেছনে ইউক্রেনের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে দাবি করেছে। যদিও কোনো তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। মস্কোর এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইউক্রেন।

 

এেিদক ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপে নোঙর করে রাখা রাশিয়ার দুটি জাহাজে হামলা চালানোর দাবি করেছে ইউক্রেন সেনাবাহিনী। একই সঙ্গে কৃষ্ণ সাগরে রাশিয়ার নৌবাহিনীর অবকাঠামোতেও হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। ইউক্রনের সেনাবাহিনী বলেছে, রুশ অধিকৃত ক্রিমিয়ায় নোঙর করে রাখা আজভ ও ইয়ামালে নামের দুটি জাহাজে সফলভাবে হামলা চালানো হয়েছে। এছাড়া কৃষ্ণ সাগরে রশু নৌবাহিনীর একটি যোগাযোগকেন্দ্রসহ বেশ কয়েকটি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। তবে কীভাবে হামলা চালানো হয়েছে, তা বিবৃতিতে স্পষ্টভাবে বলেনি ইউক্রেন।

 

হামলার কথা স্বীকার করে মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে এক পোস্টে রাশিয়ার নিয়োগ করা ক্রিমিয়ার সেভাস্তোপোলের গভর্নর মিখাইল রাজভোঝায়েভ লিখেছেন, ইউক্রেন বাহিনী রাতভর হামলা চালিয়েছে। তবে তাদের অন্তত ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে রুশ বাহিনী। সাম্প্রতিক সময়ে এটিই ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় হামলা। ইউক্রেনের হামলায় ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি নিহত হওয়ার পাশাপাশি চারজন নিহত হয়েছেন। এসব হামলায় কয়েকটি নৌযানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

ইউরোপেও পড়ছে মস্কোর হামলার প্রভাব

আপডেট সময় : ০৭:৩৩:০৩ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ মার্চ ২০২৪

 

🔴 সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করল ফ্রান্স

🔴 ৪ জনের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ রাশিয়ার

🔴 রাশিয়ার ২ জাহাজে ইউক্রেনের হামলা

 

 

মস্কোর ঘটনার পর সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় ফ্রান্স সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে। ব্রিটেনও ইউরোপে আইএস গোষ্ঠীর হামলার আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছে না। জার্মানি রাশিয়ার আচরণও ইউরোপের জন্য হুমকি হিসেবে দেখছে। গত শুক্রবার মস্কোর কনসার্ট হলে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলার ঘটনার জের ইউরোপেও পড়তে পারে বলে আশঙ্কা বাড়ছে। ফ্রান্সও এমন ধরনের সন্ত্রাসী হামলার আশঙ্কায় সর্বোচ্চ সতর্কতার মাত্রা ঘোষণা করেছে।গত রোববার সে দেশের প্রধানমন্ত্রী গাব্রিয়েল আটাল উচ্চপদস্থ নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে সেই সিদ্ধান্তের কথা জানান। প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাক্রোঁও সেই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। ফ্রান্স গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক আয়োজনের ঠিক আগে ইসলামিক স্টেট সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর হুমকির আশঙ্কা যে হালকাভাবে নিচ্ছে না, সরকার তা স্পষ্ট করে দিচ্ছে।

 

ফ্রান্সে সন্ত্রাসী হামলা সম্পর্কে সতর্কতার তিনটি পর্যায় রয়েছে। দেশে বা বিদেশে এমন আশঙ্কার মাত্রা স্পষ্ট হলে সীমিত সময়ের জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা ঘোষণা করা হয়। সরকার সেই সিদ্ধান্ত নিলে সশস্ত্র বাহিনী প্রকাশ্যে টহলদারি আরো বাড়াতে পারে। সেইসঙ্গে নিরাপত্তা জোরদার করতে প্রশাসন ব্যায়ের তোয়াক্কা না করে বাড়তি পদক্ষেপ নেওয়ার ক্ষমতাও রাখে। সংকটের সময়ে সুরক্ষা নিশ্চিত করতে জরুরি ভিত্তিতে নাগরিকদের তথ্যও পাঠানো যায়।

 

মস্কোর হামলার জন্য রাশিয়া যেভাবে ইউক্রেনকে পরোক্ষভাবে দায়ী করছে, তার ফলেও ইউক্রেন তথা ইউরোপে বিপদের আশঙ্কা বাড়ছে। জার্মানির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ন্যান্সি ফেসার রাশিয়ার বেড়ে চলা আগ্রাসী আচরণকে জার্মানির জন্যও বিশাল হুমকির কারণ হিসেবে দেখছেন। গুপ্তচরবৃত্তি থেকে শুরু করে মিথ্যাচারের মাধ্যমে প্রভাব বিস্তারের প্রচেষ্টার নতুন মাত্রা দেখা যাচ্ছে। ফিনল্যান্ডের সীমান্তে অভিবাসনপ্রত্যাশীদের অনুপ্রবেশ ঘটিয়ে রাশিয়া ইউরোপের স্থিতিশীলতা বিপন্ন করার চেষ্টা করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। এক সাক্ষাৎকারে জার্মান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, পশ্চিম ইউরোপে রাশিয়ার প্রভাব মোকাবিলা করতে জার্মান সরকার আগামী সপ্তাহগুলিতে আরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে।

 

অন্যেিদক মস্কোয় কনসার্ট হলে মুখোশ পরা বন্দুকধারীদের হামলার ঘটনায় আটক চারজনের বিরুদ্ধে ‘সন্ত্রাসবাদে’ জড়িত থাকার আনুষ্ঠানিক অভিযোগ এনেছে রাশিয়া। অভিযুক্ত চারজন হলেন- দালেরদজন মিরজোয়েভ, সাইদাকরামি মুরোদালি রাচাবালিজোদা, সামসিদিন ফারিদুনি এবং মোহাম্মদসোবির ফায়জোভ। রবিববার তাদের আদালতে তোলা হয়েছে। দুজনের ছবিও প্রকাশ করা হয়েছে। সংবাদ সংস্থা এএফপি বলছে, ছবি প্রকাশ করা দুজনের একজন মিরজোয়েভ তাজিকিস্তানের নাগরিক। আর অন্যজন রাচাবালিজোদার জাতীয়তা সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। ফারিদুনি ও ফায়জোভের জাতীয়তা সম্পর্কেও জানা যায়নি। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় মস্কোর ক্রোকাস সিটি হলে হামলার ঘটনা ঘটে। এ সময় বন্দুকধারীরা কনসার্ট হলে ঢুকে স্বয়ংক্রিয় রাইফেল দিয়ে ভিড়ের মধ্যে এলোপাতাড়ি গুলি চালান। সেই সঙ্গে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এতে ওই হলে আগুন ধরে যায়। ধসে পড়ে ছাদ। এ ঘটনাকে ‘রক্তাক্ত সন্ত্রাসী হামলা’ বলে উল্লেখ করে রাশিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। হামলার পরপরই এর দায় স্বীকার করেছে ইসলামিক স্টেট (আইএস)। তবে রুশ কর্তৃপক্ষ মস্কোর কনসার্ট হলে হামলার পেছনে ইউক্রেনের সম্পৃক্ততা রয়েছে বলে দাবি করেছে। যদিও কোনো তথ্য-প্রমাণ উপস্থাপন করা হয়নি। মস্কোর এমন অভিযোগ অস্বীকার করেছে ইউক্রেন।

 

এেিদক ইউক্রেনের ক্রিমিয়া উপদ্বীপে নোঙর করে রাখা রাশিয়ার দুটি জাহাজে হামলা চালানোর দাবি করেছে ইউক্রেন সেনাবাহিনী। একই সঙ্গে কৃষ্ণ সাগরে রাশিয়ার নৌবাহিনীর অবকাঠামোতেও হামলা চালিয়েছে ইউক্রেন। ইউক্রনের সেনাবাহিনী বলেছে, রুশ অধিকৃত ক্রিমিয়ায় নোঙর করে রাখা আজভ ও ইয়ামালে নামের দুটি জাহাজে সফলভাবে হামলা চালানো হয়েছে। এছাড়া কৃষ্ণ সাগরে রশু নৌবাহিনীর একটি যোগাযোগকেন্দ্রসহ বেশ কয়েকটি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। তবে কীভাবে হামলা চালানো হয়েছে, তা বিবৃতিতে স্পষ্টভাবে বলেনি ইউক্রেন।

 

হামলার কথা স্বীকার করে মেসেজিং অ্যাপ টেলিগ্রামে এক পোস্টে রাশিয়ার নিয়োগ করা ক্রিমিয়ার সেভাস্তোপোলের গভর্নর মিখাইল রাজভোঝায়েভ লিখেছেন, ইউক্রেন বাহিনী রাতভর হামলা চালিয়েছে। তবে তাদের অন্তত ১০টি ক্ষেপণাস্ত্র ভূপাতিত করেছে রুশ বাহিনী। সাম্প্রতিক সময়ে এটিই ইউক্রেনের সবচেয়ে বড় হামলা। ইউক্রেনের হামলায় ষাটোর্ধ্ব এক ব্যক্তি নিহত হওয়ার পাশাপাশি চারজন নিহত হয়েছেন। এসব হামলায় কয়েকটি নৌযানও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।