০৪:১৮ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৩ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
বাজেট পেশ

ভারতে সংসদের ভেতরে ও বাইরে ব্যাপক বিক্ষোভ

বাজেটকে মোদির ‘সরকার বাঁচানোর বাজেট’ অভিহিত করেছে বিরোধী দলগুলো

তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর প্রথম বাজেট ঘোষণা করেছে মোদি সরকার। গত মঙ্গলবার ২০২৪-২৫ অর্থবছরের নতুন বাজেট পেশ করেন দেশটির কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। তবে বাজেট পেশের পরপরই ক্ষোভ ও প্রতিবাদের মুখে পড়েছে মোদি সরকার। বাজেটে বিহার ও অন্ধ্রপ্রদেশের উন্নয়নে বিপুল বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ নিয়ে বিরোধীদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি ও অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। গত বুধবার কেন্দ্রীয় বাজেটকে মোদির ‘সরকার বাঁচানোর বাজেট’ অভিহিত করে বিরোধীপক্ষ সংসদ ভবনের ভেতরে ও বাইরে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। পশ্চিমবঙ্গের প্রতি ‘ব নার বাজেট’ বলে অভিহিত করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংসদ ভবন চত্বরে বিক্ষোভে সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধীদের পাশে দাঁড়িয়ে অন্য রাজ্যগুলোকে ব নার অভিযোগ তোলেন অখিলেশ যাদব, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়সহ বিরোধী দলের নেতা ও সংসদ সদস্যরা। বিরোধীদের অভিযোগ, এই বাজেটের মূল লক্ষ্য অন্ধ্র প্রদেশ ও বিহারকে খুশি রাখা, যাতে দুই শরিক তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) ও জনতা দল সংযুক্ত (জেডিইউ) সরকার থেকে সমর্থন তুলে না নেন। পরবর্তীসময়ে লোকসভা ও রাজ্যসভায় বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার হন তারা। রাজ্যসভায় বিরোধী নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, দুটি রাজ্যকে ঢালাওভাবে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। বাকিদের কিছুই দেওয়া হয়নি। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
বিরোধীরা এই বাজেটকে ‘লজ্জার’, ‘জনবিরোধী’ ও ‘ধ্বংসাত্মক’ বর্ণনা করে বলেন, মোদির চিন্তায় সরকারের অস্তিত্ব রক্ষা ছাড়া আর কিছু ছিল না। তাই সবার স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে শুধু দুই শরিকের কথা তিনি ভেবেছেন। রাহুল বলেন, ‘এটা মোদির কুর্সি বাঁচানোর বাজেট।’
এই ব নার প্রতিবাদে আগামীকাল নীতি আয়োগের বৈঠকে কংগ্রেসের কোনো মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন না। এমনকি তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিনও ওই বৈঠক বর্জন করবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। গত মঙ্গলবার দিল্লিতে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের বাসভবনে বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

কোচবিহারকে নিয়ে পৃথক রাজ্য গড়ার দাবি বিজেপির নেতার
কোচবিহারকে নিয়ে পৃথক রাজ্য গড়ার দাবি তুলেছেন বিজেপির রাজ্যসভার সংসদ সদস্য অনন্ত মহারাজ। গত বুধবার ভারতের সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় এই দাবি তোলেন তিনি। অবশ্য তার দাবিকে গতকালই নাকচ করেছেন বিজেপির রাজ্যসভার সংসদ সদস্য ও রাজ্য (পশ্চিমবঙ্গ) মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, বিজেপি বাংলা ভাগের নীতিতে বিশ্বাসী নয়। বিজেপি ঐক্যবদ্ধ বাংলায় বিশ্বাসী।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গের উত্তরা লের আট জেলাকে আলাদা করে উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার দাবি করেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। গতকাল লোকসভা অধিবেশনে যোগ দিয়ে তিনি এ দাবি করেন। এমনকি তিনি তার প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছেও জমা দিয়েছেন। বিজেপির এই দুই নেতার এমন দাবির জেরে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য মুখপাত্র কুনাল ঘোষ বলেছেন, ‘বাংলা ভাগ হবে না। বাংলা থাকবে বাংলাতেই। পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনে হারের পর বিজেপি এই মুহূর্তে হতাশার মধ্যে আছে। হতাশা থেকে তৈরি হওয়া অবসাদ কাটাতে তারা এখন এ ধরনের আজেবাজে কথা বলছে।

জনপ্রিয় সংবাদ

বাজেট পেশ

ভারতে সংসদের ভেতরে ও বাইরে ব্যাপক বিক্ষোভ

আপডেট সময় : ০৯:১১:৩৫ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪

তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় আসার পর প্রথম বাজেট ঘোষণা করেছে মোদি সরকার। গত মঙ্গলবার ২০২৪-২৫ অর্থবছরের নতুন বাজেট পেশ করেন দেশটির কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। তবে বাজেট পেশের পরপরই ক্ষোভ ও প্রতিবাদের মুখে পড়েছে মোদি সরকার। বাজেটে বিহার ও অন্ধ্রপ্রদেশের উন্নয়নে বিপুল বরাদ্দ রাখা হয়েছে। এ নিয়ে বিরোধীদের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি ও অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমণ। গত বুধবার কেন্দ্রীয় বাজেটকে মোদির ‘সরকার বাঁচানোর বাজেট’ অভিহিত করে বিরোধীপক্ষ সংসদ ভবনের ভেতরে ও বাইরে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। পশ্চিমবঙ্গের প্রতি ‘ব নার বাজেট’ বলে অভিহিত করে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সংসদ ভবন চত্বরে বিক্ষোভে সোনিয়া গান্ধী, রাহুল গান্ধীদের পাশে দাঁড়িয়ে অন্য রাজ্যগুলোকে ব নার অভিযোগ তোলেন অখিলেশ যাদব, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়সহ বিরোধী দলের নেতা ও সংসদ সদস্যরা। বিরোধীদের অভিযোগ, এই বাজেটের মূল লক্ষ্য অন্ধ্র প্রদেশ ও বিহারকে খুশি রাখা, যাতে দুই শরিক তেলেগু দেশম পার্টি (টিডিপি) ও জনতা দল সংযুক্ত (জেডিইউ) সরকার থেকে সমর্থন তুলে না নেন। পরবর্তীসময়ে লোকসভা ও রাজ্যসভায় বিষয়টি নিয়ে সোচ্চার হন তারা। রাজ্যসভায় বিরোধী নেতা মল্লিকার্জুন খাড়গে বলেন, দুটি রাজ্যকে ঢালাওভাবে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। বাকিদের কিছুই দেওয়া হয়নি। এটা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
বিরোধীরা এই বাজেটকে ‘লজ্জার’, ‘জনবিরোধী’ ও ‘ধ্বংসাত্মক’ বর্ণনা করে বলেন, মোদির চিন্তায় সরকারের অস্তিত্ব রক্ষা ছাড়া আর কিছু ছিল না। তাই সবার স্বার্থ জলাঞ্জলি দিয়ে শুধু দুই শরিকের কথা তিনি ভেবেছেন। রাহুল বলেন, ‘এটা মোদির কুর্সি বাঁচানোর বাজেট।’
এই ব নার প্রতিবাদে আগামীকাল নীতি আয়োগের বৈঠকে কংগ্রেসের কোনো মুখ্যমন্ত্রী উপস্থিত থাকবেন না। এমনকি তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী এমকে স্ট্যালিনও ওই বৈঠক বর্জন করবেন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। গত মঙ্গলবার দিল্লিতে কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গের বাসভবনে বিরোধী জোট ইন্ডিয়ার এক বৈঠকে এই সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়।

কোচবিহারকে নিয়ে পৃথক রাজ্য গড়ার দাবি বিজেপির নেতার
কোচবিহারকে নিয়ে পৃথক রাজ্য গড়ার দাবি তুলেছেন বিজেপির রাজ্যসভার সংসদ সদস্য অনন্ত মহারাজ। গত বুধবার ভারতের সংসদের উচ্চকক্ষ রাজ্যসভায় এই দাবি তোলেন তিনি। অবশ্য তার দাবিকে গতকালই নাকচ করেছেন বিজেপির রাজ্যসভার সংসদ সদস্য ও রাজ্য (পশ্চিমবঙ্গ) মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, বিজেপি বাংলা ভাগের নীতিতে বিশ্বাসী নয়। বিজেপি ঐক্যবদ্ধ বাংলায় বিশ্বাসী।
এদিকে পশ্চিমবঙ্গের উত্তরা লের আট জেলাকে আলাদা করে উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার দাবি করেছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি ও কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। গতকাল লোকসভা অধিবেশনে যোগ দিয়ে তিনি এ দাবি করেন। এমনকি তিনি তার প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছেও জমা দিয়েছেন। বিজেপির এই দুই নেতার এমন দাবির জেরে পশ্চিমবঙ্গের ক্ষমতাসীন দল তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্য মুখপাত্র কুনাল ঘোষ বলেছেন, ‘বাংলা ভাগ হবে না। বাংলা থাকবে বাংলাতেই। পশ্চিমবঙ্গে নির্বাচনে হারের পর বিজেপি এই মুহূর্তে হতাশার মধ্যে আছে। হতাশা থেকে তৈরি হওয়া অবসাদ কাটাতে তারা এখন এ ধরনের আজেবাজে কথা বলছে।