টাঙ্গাইলের ভূঞাপুর উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির দুই গ্রুপ এখন মুখোমুখি অবস্থানে। এতে করে মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতি ভূঞাপুর শাখার বিভক্তি সৃষ্টি হয়েছে। শিক্ষক সমিতির বর্তমান কমিটির বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ করেছেন সাধারণ শিক্ষকরাও। কিছু দিন আগে শিক্ষকদের বড় একটি গ্রুপ (সেলিম- খায়রুল) সাংবাদিক সম্মেলন করে (জাফর – কাজী জহুরুল) কমিটির বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির কিছু চিত্র তুলে ধরেন। বর্তমান মেয়াদ উত্তীর্ণ কমিটি সভাপতির দায়িত্বভার নিয়ে জালিয়াতি ও নানা অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। বর্তমানে ভূঞাপুরের প্রানকেন্দ্রে শিশু পার্ক সংলগ্ন শিক্ষক সমিটির ৫ তলা বিশিষ্ট একটি নিজস্ব বহূতল ভবন নির্মান করা হয়েছে। নির্মিত ভবনের নিচতলায় এক অংশে অফিস বানিয়ে জাফর- কাজী জহুরুলের নেতৃত্বাধীন গ্রুপের সদস্যরা দীর্ঘ দিন ধরে বসেন। আরেক অংশে হোটেল ব্যবসার কাজে ভাড়া দেওয়া ছিল। বর্তমানে সেলিম-খায়রুল গ্রুপের শিক্ষকেরা সেখানে শিক্ষক সমিতির অফিস বানিয়েছেন। এ নিয়ে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় দুই গ্রুপের মধ্যে ধাক্কা-ধাক্কির ঘটনা ঘটে।
জানা যায় গত বুধবার (১৮ এপ্রিল) সেলিম-খায়রুল গ্রুপের শিক্ষকেরা ভাড়া দেওয়া (বর্তমানে পরিত্যক্ত) রুমটি ঝাড়া, মুছা ও ধৌত করে চলে যায় । পরবর্তীতে জাফর- কাজী জহুরুলের গ্রুপের শিক্ষককেরা এসে তাতে তালা লাগিয়ে দেন। তালা দেওয়ার সংবাদ পেয়ে সেলিম-খায়রুল গ্রুপের শিক্ষকেরা এসে তালা খুলে রুমটি দখলে নেন বলে জানান শিক্ষক নেতা মোঃ খায়রুল ইসলাম। এ নিয়ে দু’পক্ষে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। ভূঞাপুরে মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির দুটি ভাগে বিভক্ত থাকলেও সেটি এখন প্রকাশ্যে রুপ নিল। এর এক পক্ষে রয়েছে কার্যকরী কমিটির সদস্য ও তার অনুসারী গুটি কয়েক শিক্ষক। অপর পক্ষে রয়েছে কমিটির বাহিরে থাকা শিক্ষকের একটি বৃহৎ অংশ। একই ছাদের নিচে পাশা-পাশি দুই গ্রুপের অফিস নেওয়ায় বড় ধরনের অঘটনের আশঙ্কা রয়েছে বলে জানান সাধারণ শিক্ষকেরা।
পাশাপাশি অফিস নেওয়া ও বর্তমান পরিস্থিতি জানতে চাইলে মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাজী জহুরুল ইসলাম বলেন, “যে রুমটি অপর পক্ষ দখলে নিয়ে অফিস করেছে সে রুমটি হোটেল ব্যবসায়ী মুসার কাছে ৫ বছরের জন্য ভাড়া দেওয়া হয়েছে। ভাড়ার মেয়াদ এখনও চার বৎসর বাকী আছে। কেন তারা ভাড়া দেওয়া রুমটি এভাবে দখলে নিল বিষয়টি আমার বোধগম্য হয়নি । শিক্ষক সমিতির অফিস রয়েছে সেখানে তারা বসতে পারতো। আলাদা অফিস নিয়ে বসার কি প্রয়োজন ছিল। ” হাতাহাতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “একটু কথা কাটাকাটি হয়েছে, কিন্ত এ ধরনের কোনো ঘটনা ঘটেনি।”
অপরদিকে বৃহৎ অংশের নেতৃত্ব দানকারী শিক্ষক নেতা টেপিবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ খায়রুল ইসলাম জানান, ” দীর্ঘ দিন যাবৎ শিক্ষক সমিতির চেয়ারে বসে ইচ্ছামত দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারীতা করে যাচ্ছে ঐ শিক্ষক নামধারী নেতারা। ২০২১ সালে কমিটি গঠন হলেও এখনও গায়ের জোরে শিক্ষক সমিতির নামে লক্ষ লক্ষ টাকা অবৈধ খরচ দেখিয়ে দুর্নীতি করে যাচ্ছে। আবার শিক্ষক সমিতির গঠিত সভাপতি মারা যাওয়ার পর অবৈধভাবে সভাপতি করা হয়েছে মোঃ জাফর আহম্মেদ শাহীনকে। এভাবে একের পর এক দুর্নীতি করে যাচ্ছে তারা। আমরা শিক্ষক সমাজ এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ স্বরুপ ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। এক সঙ্গে বসার কোনো প্রশ্নই আসেনা। তাই আমরা আলাদা অফিস নিয়েছি”।”


























