০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

তাপপ্রবাহে রংপুরে হাঁসফাঁস অবস্থা

প্রচন্ড রোদ আর তাপপ্রবাহে প্রভাব পড়েছে রংপুরের জনজীবনে। অসহনীয় গরমে নাকাল নাগরিক জীবন। রোদের উত্তাপে ঘরের বাইরে যাওয়াই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে। এতে শহরে মানুষের আনাগোনা কমেছে। জীবন জীবিকায় প্রভাব পড়েছে। তিন চাকার বাহনগুলো যাত্রী সংকটে ভুগছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও বেচাকেনা কম। আবহাওয়া অফিস সুত্রে জানা যায়, তাপমাত্রা আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকবে। আপাতত বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তীব্র গরমে রংপুরে হিটস্ট্রোক, জ্বর, সর্দি, কাশি ও ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা আক্রান্তহচ্ছে। এ অবস্থায় চিকিৎসকরা তাপপ্রবাহে প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। তবে নিম্ন আয়ের মানুষ চরম বিপাকে পড়েছে।

সংসার চালাতে বাধ্য হয়ে কাজে যাচ্ছেন তারা। অনেকে গরম সইতে না পেরে অসুস্থও হয়ে পড়ছেন। রংপুর নগরীর জাহাজ কো¤পানি এলাকায় বিক্সা চালক আব্দুস কুদ্দুস বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে আকাশ থেকে মনে হচ্ছে আগুনের ফুলকি মাথায় পড়ছে। এই অসহ্য গরমে আধাঘণ্টা রিক্সা চালানো মুশকিল। পাঁচ জনের সংসারের আহার যোগাতে তীব্র রোদ মাথায় নিয়ে রিক্সা চালাতে হচ্ছে। গরমে যাত্রী কমে আয় অর্ধেকে নেমেছে। নগরীর মর্ডাণ মোড়ের বটতলায় কিছু লোককে বিশ্রাম নিতে দেখা যায়। সেখানে কথা হয়ব্রঅটারি চালিত ইজিবাইক চালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, এই গরমে বাইরে বের হলে মাথাব্যথা শুরু হয়। পিপাসায় গলা শুকিয়ে যায়। সড়ক থেকে তীব্র তাপে হাঁসফাঁস অবস্থা। কিছুক্ষণ জিরিয়ে নিতে তারা বটতলায় এসেছি। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলাস্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত দুই সপ্তাহে ডায়রিয়া, জ্বর, সর্দি রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাছাড়া প্রতিদিন কম-বেশি রোগি চিকিৎসা নিচ্ছেন। তীব্র গরমের কারণে নিম্ন আয়ের দিনমজুর, শ্রমিক, ক্ষেত মজুররা হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে। তিন দিন আগে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত এক জনের রমেক হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রচন্ড গরমের কারণে হিটস্ট্রোকসহ জ্বর, সর্দি ও ডায়রিয়া রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে।

গত তিন দিনে অন্তত ৩০ জন হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আব্দুল আহাদ বলেন, গরমে অনেকে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে। এ সময় সাবধানে চলাফেরা করতে হবে।বেশি করে পানি পান, ঠান্ডা জাতীয় পানীয় বিশেষ করে লেবুর শরবত, ডাবের পানি বেশি করে পান করতে হবে। রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ ও সহকারী আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান বলেন, রংপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। তাপপ্রবাহ আরও চার থেকে পাঁচ দিন অব্যাহত থাকবে। আপাতত বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।

জনপ্রিয় সংবাদ

শীতে বাড়ছে রোগ-বালাই

তাপপ্রবাহে রংপুরে হাঁসফাঁস অবস্থা

আপডেট সময় : ০১:২৬:২৬ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪

প্রচন্ড রোদ আর তাপপ্রবাহে প্রভাব পড়েছে রংপুরের জনজীবনে। অসহনীয় গরমে নাকাল নাগরিক জীবন। রোদের উত্তাপে ঘরের বাইরে যাওয়াই এখন বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়িয়েছে। এতে শহরে মানুষের আনাগোনা কমেছে। জীবন জীবিকায় প্রভাব পড়েছে। তিন চাকার বাহনগুলো যাত্রী সংকটে ভুগছে। ব্যবসা প্রতিষ্ঠানেও বেচাকেনা কম। আবহাওয়া অফিস সুত্রে জানা যায়, তাপমাত্রা আরও কয়েক দিন অব্যাহত থাকবে। আপাতত বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। তীব্র গরমে রংপুরে হিটস্ট্রোক, জ্বর, সর্দি, কাশি ও ডায়রিয়াসহ নানা রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে চলেছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়স্করা আক্রান্তহচ্ছে। এ অবস্থায় চিকিৎসকরা তাপপ্রবাহে প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের না হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন। তবে নিম্ন আয়ের মানুষ চরম বিপাকে পড়েছে।

সংসার চালাতে বাধ্য হয়ে কাজে যাচ্ছেন তারা। অনেকে গরম সইতে না পেরে অসুস্থও হয়ে পড়ছেন। রংপুর নগরীর জাহাজ কো¤পানি এলাকায় বিক্সা চালক আব্দুস কুদ্দুস বলেন, গত এক সপ্তাহ ধরে আকাশ থেকে মনে হচ্ছে আগুনের ফুলকি মাথায় পড়ছে। এই অসহ্য গরমে আধাঘণ্টা রিক্সা চালানো মুশকিল। পাঁচ জনের সংসারের আহার যোগাতে তীব্র রোদ মাথায় নিয়ে রিক্সা চালাতে হচ্ছে। গরমে যাত্রী কমে আয় অর্ধেকে নেমেছে। নগরীর মর্ডাণ মোড়ের বটতলায় কিছু লোককে বিশ্রাম নিতে দেখা যায়। সেখানে কথা হয়ব্রঅটারি চালিত ইজিবাইক চালক আবুল কালাম আজাদ বলেন, এই গরমে বাইরে বের হলে মাথাব্যথা শুরু হয়। পিপাসায় গলা শুকিয়ে যায়। সড়ক থেকে তীব্র তাপে হাঁসফাঁস অবস্থা। কিছুক্ষণ জিরিয়ে নিতে তারা বটতলায় এসেছি। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ বিভাগের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলাস্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গত দুই সপ্তাহে ডায়রিয়া, জ্বর, সর্দি রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিয়েছেন। তাছাড়া প্রতিদিন কম-বেশি রোগি চিকিৎসা নিচ্ছেন। তীব্র গরমের কারণে নিম্ন আয়ের দিনমজুর, শ্রমিক, ক্ষেত মজুররা হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে। তিন দিন আগে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত এক জনের রমেক হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে। রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগ সূত্রে জানা যায়, প্রচন্ড গরমের কারণে হিটস্ট্রোকসহ জ্বর, সর্দি ও ডায়রিয়া রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে।

গত তিন দিনে অন্তত ৩০ জন হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছে। হাসপাতালের মেডিসিন ওয়ার্ডের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আব্দুল আহাদ বলেন, গরমে অনেকে হিটস্ট্রোকে আক্রান্ত হচ্ছে। এ সময় সাবধানে চলাফেরা করতে হবে।বেশি করে পানি পান, ঠান্ডা জাতীয় পানীয় বিশেষ করে লেবুর শরবত, ডাবের পানি বেশি করে পান করতে হবে। রংপুর আবহাওয়া অফিসের ইনচার্জ ও সহকারী আবহাওয়াবিদ মোস্তাফিজার রহমান বলেন, রংপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৩৭ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। তাপপ্রবাহ আরও চার থেকে পাঁচ দিন অব্যাহত থাকবে। আপাতত বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই।