০৭:২২ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

উত্তাপের উপজেলা ভোট শুরু কাল

➢১ম দফার ১৫০ উপজেলায় প্রার্থী ১৫৮৮ জন
➢ম্যাজিস্ট্রেটসহ থাকছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা
➢আজ পৌঁছাবে ব্যালট পেপার
➢সংসদ সদস্যদের চেয়ে সম্পদ বেশি উপজেলা চেয়ারম্যানদের : টিআইবি

রাত পেরুলেই শুরু হচ্ছে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। প্রথমদফায় মোট ১৫০টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে বিভিন্ন স্থানে প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘাত-সহিংসতার ঘটনা ঘটায় নির্বাচন সুষ্ঠু করতে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

 

নির্বাচন ঘিরে সব ধরনের প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর মধ্যে ২২টি উপজেলায় ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনী এলাকায় ভোটের দিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে ইসি।

 

ইসি সূত্র জানায়, নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা গতকাল সোমবার রাত ১২টায় শেষ হয়েছে। নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হবে আগামীকাল সকাল ৮টা থেকে। চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। এবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে ১ হাজার ৫৮৮ জন প্রার্থী।

 

ইসি সূত্র জানায়, সংঘাত, সহিংসতা প্রতিরোধে নির্বাচনী এলাকায় সবধরনের অস্ত্র ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইসি। নির্বাচনী এলাকায় বন্ধ থাকবে মোটরসাইকেল চলাচল। নির্বাচনে ১০টি জেলার ২৪টি উপজেলার ৪২৪টি দুর্গম কেন্দ্রে আজ মঙ্গলবার অন্যান্য মালামালের সঙ্গে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে। আর ১১ হাজার ১৩২ কেন্দ্রে ব্যালট যাবে আগামীকাল অর্থাৎ ভোটের দিন সকালে।

 

প্রথম ধাপে ২৬ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। চেয়ারম্যান পদে সাতজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে নয়জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ জন।
এবার উপজেলা নির্বাচন কোনো দলীয় প্রতীকে হচ্ছে না। প্রার্থীরা নিজস্ব প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপি। ফলে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে আওয়ামী লীগের মধ্যেই। দলীয় নির্দেশ অমান্য করে প্রথম ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ৭২ জন নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি।

 

এদিকে সারা দেশে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে যারা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করবে তাদের কোনো না কোনোভাবে শাস্তির মুখোমুখি হতেই হবে বলে সাফ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা শেষে তিনি এ কথা জানিয়েছেন। ইসি সূত্র জানায়, এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে থাকবে ১৭ থেকে ১৮ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। যা অতীতের যেকোনো উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের তুলনায় বেশি। এ ছাড়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো উপজেলা নির্বাচনেও জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে অভিযোগ জানানো যাবে।

 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোস্তাফিজুর রহমান জানান, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের জন্য আগে যে পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ছিল, সেটা যথেষ্ট পরিমাণে বাড়ানো হয়েছে। প্রতিটি বুথ ব্যবস্থাপনার জন্য সর্বনিম্ন ১০ আনসার সদস্য থাকবেন। যেসব কেন্দ্রে ৬টির বেশি বুথ আছে, এমন জায়গাগুলোতে একজন করে অতিরিক্ত আনসার থাকবে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে অস্ত্রসহ চার পুলিশ সদস্য থাকবে। আনসার থাকবে তিনজন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মোট ১৭ থেকে ১৮ জন সদস্য থাকবে। প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে। প্রতিটি উপজেলায়ও একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। ভোটের আগের দিন ও পরের দিন পর্যন্ত তারা দায়িত্ব পালন করবেন। গড়ে ৫টি সেন্টারের জন্য স্ট্রাইকিং ফোর্স ও মোবাইল ফোর্স থাকবে। আনসার, পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব ও কোস্ট গার্ডের সমন্বয়ে এই মোবাইল ফোর্স গঠন করা হবে। আর উপকূলীয় এলাকাগুলোতে বিজিবির বদলে কোস্টগার্ড বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। পার্বত্য এলাকার কিছু দুর্গম সেন্টারে হেলিকপ্টারে পোলিং কর্মকর্তা ও ভোটের উপকরণ পৌঁছানো হবে।

 

ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান জানিয়েছেন, যাতায়াতের অসুবিধার জন্য দুর্গম এলাকায় ভোটের আগের দিন ব্যালট পাঠানোর জন্য সিদ্ধান্ত দিয়েছে ইসি। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ইতোমধ্যে পাঠানো হয়েছে।

 

আসন্ন ৪ ধাপের উপজেলা নির্বাচনে দলীয়ভাবে অংশ নেয়নি বিএনপি। সাধারণ মানুষকে এ ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে লিফলেট বিতরণ করছে দলটি। তারই অংশ হিসেবে রাজধানীতে কয়েকজন নেতাকর্মী নিয়ে লিফলেট বিতরণ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

 

নির্বাচনে নিরাপত্তা প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আগে ও পরে কোন ধরনের সহিংসতা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। যারা সহিংসতার কাজে জড়িত থাকে, তাদের কাউকে কখনই ছেড়ে দেয়া হয় না। এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে যদি কোন কর্মকর্তা ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে সেই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ইসি ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। সব ধরনের সংঘর্ষ কিংবা সহিংসতা ফেরানো সম্ভব না। পুলিশের একার পক্ষে ঘরে ঘরে পাহারা দেয়া সম্ভব না। এতো পুলিশ আমাদের দেশে নেই। একটি দেশের সুখ-শান্তি নির্ভর করে, দেশের জনগণের উপর। পৃথিবীর কোনো দেশেই শুধুমাত্র পুলিশ দিয়ে শান্তি রক্ষা করতে পারে না। জনগণের দায়িত্ব আছে, কোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটতে পারে, সেই তথ্য প্রশাসনকে জানালে, প্রশাসন তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিবে।

 

তফসিল অনুযায়ী, দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলায় ২১ মে, তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় ২৯ মে ও চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ৫ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে ২২টি, দ্বিতীয় ধাপে ২৪টি, তৃতীয় ধাপে ২১ ও চতুর্থ ধাপে দুটি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ হবে।

 

এদিকে, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) জানিয়েছে, জাতীয় নির্বাচনের মতো স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও ব্যবসায়ী প্রার্থীদের দাপট বেড়েই চলেছে। ব্যবসায়ী প্রার্থীদের সংখ্যা চতুর্থ নির্বাচনের তুলনায় ৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬ শতাংশ। চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের ৬৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ, ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের প্রায় ৬৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের ২৪ দশমিক ৩৭ শতাংশের পেশা ব্যবসা। আবার গৃহিণী/গৃহস্থালীকে পেশা হিসেবে দেখানো প্রার্থীদের সাড়ে ১৯ শতাংশের আয় আসে ব্যবসা থেকে।

 

উপজেলা নির্বাচনের ১ম ধাপের প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে টিআইবি দেখিয়েছে, অস্থাবর সম্পদ বৃদ্ধির হারে সংসদ সদস্যদের পেছনে ফেলেছেন উপজেলা পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা। ৫ বছরে সংসদ সদস্যদের অস্থাবর সম্পদ বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ ছিল তিন হাজার ৬৫ শতাংশ। সেখানে একটি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সম্পদ বেড়েছে ৪ হাজার ২০০ শতাংশের বেশি। একইভাবে, ৫ বছরে একজন চেয়ারম্যানের আয় বেড়েছে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৩১৯ শতাংশ, ১০ বছরে এই বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ২৩৩ শতাংশ। অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ২৫১ শতাংশ, স্ত্রী ও নির্ভরশীলদের সম্পদ বৃদ্ধির সর্বোচ্চ হার ১২ হাজার ৪০০ শতাংশ।

জনপ্রিয় সংবাদ

দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য করায় রুমিন ফারহানাসহ ৯ নেতা বহিষ্কার

উত্তাপের উপজেলা ভোট শুরু কাল

আপডেট সময় : ০৭:১০:৫০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৭ মে ২০২৪

➢১ম দফার ১৫০ উপজেলায় প্রার্থী ১৫৮৮ জন
➢ম্যাজিস্ট্রেটসহ থাকছে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা
➢আজ পৌঁছাবে ব্যালট পেপার
➢সংসদ সদস্যদের চেয়ে সম্পদ বেশি উপজেলা চেয়ারম্যানদের : টিআইবি

রাত পেরুলেই শুরু হচ্ছে ষষ্ঠ উপজেলা পরিষদ নির্বাচন। প্রথমদফায় মোট ১৫০টি উপজেলায় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর থেকে বিভিন্ন স্থানে প্রার্থীদের কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘাত-সহিংসতার ঘটনা ঘটায় নির্বাচন সুষ্ঠু করতে কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

 

নির্বাচন ঘিরে সব ধরনের প্রস্তুতি ইতিমধ্যে সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এর মধ্যে ২২টি উপজেলায় ইভিএম পদ্ধতিতে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচনী এলাকায় ভোটের দিন সরকারি ছুটি ঘোষণা করেছে ইসি।

 

ইসি সূত্র জানায়, নির্বাচনের আনুষ্ঠানিক প্রচার-প্রচারণা গতকাল সোমবার রাত ১২টায় শেষ হয়েছে। নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হবে আগামীকাল সকাল ৮টা থেকে। চলবে বিকাল ৪টা পর্যন্ত। এবার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে ১ হাজার ৫৮৮ জন প্রার্থী।

 

ইসি সূত্র জানায়, সংঘাত, সহিংসতা প্রতিরোধে নির্বাচনী এলাকায় সবধরনের অস্ত্র ব্যবহারের নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে ইসি। নির্বাচনী এলাকায় বন্ধ থাকবে মোটরসাইকেল চলাচল। নির্বাচনে ১০টি জেলার ২৪টি উপজেলার ৪২৪টি দুর্গম কেন্দ্রে আজ মঙ্গলবার অন্যান্য মালামালের সঙ্গে ব্যালট পেপার পাঠানো হবে। আর ১১ হাজার ১৩২ কেন্দ্রে ব্যালট যাবে আগামীকাল অর্থাৎ ভোটের দিন সকালে।

 

প্রথম ধাপে ২৬ প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন। চেয়ারম্যান পদে সাতজন, ভাইস চেয়ারম্যান পদে নয়জন ও মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে ১০ জন।
এবার উপজেলা নির্বাচন কোনো দলীয় প্রতীকে হচ্ছে না। প্রার্থীরা নিজস্ব প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে। নির্বাচন বর্জন করেছে বিএনপি। ফলে, প্রতিদ্বন্দ্বিতা হচ্ছে আওয়ামী লীগের মধ্যেই। দলীয় নির্দেশ অমান্য করে প্রথম ধাপের নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় ৭২ জন নেতাকে বহিষ্কার করেছে বিএনপি।

 

এদিকে সারা দেশে আসন্ন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে যারা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করবে তাদের কোনো না কোনোভাবে শাস্তির মুখোমুখি হতেই হবে বলে সাফ জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। আওয়ামী লীগ সভাপতির কার্যালয়ে দলের সম্পাদকমণ্ডলীর সভা শেষে তিনি এ কথা জানিয়েছেন। ইসি সূত্র জানায়, এবারের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতিটি ভোটকেন্দ্রে থাকবে ১৭ থেকে ১৮ জন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য। যা অতীতের যেকোনো উপজেলা পরিষদের নির্বাচনের তুলনায় বেশি। এ ছাড়া দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতো উপজেলা নির্বাচনেও জাতীয় জরুরি সেবা ৯৯৯ নম্বরে অভিযোগ জানানো যাবে।

 

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের জ্যেষ্ঠ সচিব মোস্তাফিজুর রহমান জানান, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রের জন্য আগে যে পরিমাণ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য ছিল, সেটা যথেষ্ট পরিমাণে বাড়ানো হয়েছে। প্রতিটি বুথ ব্যবস্থাপনার জন্য সর্বনিম্ন ১০ আনসার সদস্য থাকবেন। যেসব কেন্দ্রে ৬টির বেশি বুথ আছে, এমন জায়গাগুলোতে একজন করে অতিরিক্ত আনসার থাকবে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলোতে অস্ত্রসহ চার পুলিশ সদস্য থাকবে। আনসার থাকবে তিনজন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর মোট ১৭ থেকে ১৮ জন সদস্য থাকবে। প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবে। প্রতিটি উপজেলায়ও একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট থাকবেন। ভোটের আগের দিন ও পরের দিন পর্যন্ত তারা দায়িত্ব পালন করবেন। গড়ে ৫টি সেন্টারের জন্য স্ট্রাইকিং ফোর্স ও মোবাইল ফোর্স থাকবে। আনসার, পুলিশ, বিজিবি, র‌্যাব ও কোস্ট গার্ডের সমন্বয়ে এই মোবাইল ফোর্স গঠন করা হবে। আর উপকূলীয় এলাকাগুলোতে বিজিবির বদলে কোস্টগার্ড বাহিনী দায়িত্ব পালন করবে। পার্বত্য এলাকার কিছু দুর্গম সেন্টারে হেলিকপ্টারে পোলিং কর্মকর্তা ও ভোটের উপকরণ পৌঁছানো হবে।

 

ইসির নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার উপ-সচিব মো. আতিয়ার রহমান জানিয়েছেন, যাতায়াতের অসুবিধার জন্য দুর্গম এলাকায় ভোটের আগের দিন ব্যালট পাঠানোর জন্য সিদ্ধান্ত দিয়েছে ইসি। এ সংক্রান্ত নির্দেশনা রিটার্নিং কর্মকর্তাদের ইতোমধ্যে পাঠানো হয়েছে।

 

আসন্ন ৪ ধাপের উপজেলা নির্বাচনে দলীয়ভাবে অংশ নেয়নি বিএনপি। সাধারণ মানুষকে এ ভোট বর্জনের আহ্বান জানিয়ে গত এক সপ্তাহ ধরে লিফলেট বিতরণ করছে দলটি। তারই অংশ হিসেবে রাজধানীতে কয়েকজন নেতাকর্মী নিয়ে লিফলেট বিতরণ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।

 

নির্বাচনে নিরাপত্তা প্রসঙ্গে নির্বাচন কমিশনার মো. আলমগীর বলেছেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের আগে ও পরে কোন ধরনের সহিংসতা হলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। যারা সহিংসতার কাজে জড়িত থাকে, তাদের কাউকে কখনই ছেড়ে দেয়া হয় না। এসব অপরাধীদের বিরুদ্ধে যদি কোন কর্মকর্তা ব্যবস্থা না নেয়, তাহলে সেই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ইসি ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। সব ধরনের সংঘর্ষ কিংবা সহিংসতা ফেরানো সম্ভব না। পুলিশের একার পক্ষে ঘরে ঘরে পাহারা দেয়া সম্ভব না। এতো পুলিশ আমাদের দেশে নেই। একটি দেশের সুখ-শান্তি নির্ভর করে, দেশের জনগণের উপর। পৃথিবীর কোনো দেশেই শুধুমাত্র পুলিশ দিয়ে শান্তি রক্ষা করতে পারে না। জনগণের দায়িত্ব আছে, কোনো অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটতে পারে, সেই তথ্য প্রশাসনকে জানালে, প্রশাসন তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিবে।

 

তফসিল অনুযায়ী, দ্বিতীয় ধাপে ১৬০ উপজেলায় ২১ মে, তৃতীয় ধাপে ১১২ উপজেলায় ২৯ মে ও চতুর্থ ধাপে ৫৫ উপজেলায় ৫ জুন ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম ধাপে ২২টি, দ্বিতীয় ধাপে ২৪টি, তৃতীয় ধাপে ২১ ও চতুর্থ ধাপে দুটি উপজেলায় ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোটগ্রহণ হবে।

 

এদিকে, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি) জানিয়েছে, জাতীয় নির্বাচনের মতো স্থানীয় সরকার নির্বাচনেও ব্যবসায়ী প্রার্থীদের দাপট বেড়েই চলেছে। ব্যবসায়ী প্রার্থীদের সংখ্যা চতুর্থ নির্বাচনের তুলনায় ৮ শতাংশ বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৫৬ শতাংশ। চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের ৬৯ দশমিক ৮৬ শতাংশ, ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের প্রায় ৬৬ দশমিক ৫৯ শতাংশ এবং নারী ভাইস চেয়ারম্যান পদপ্রার্থীদের ২৪ দশমিক ৩৭ শতাংশের পেশা ব্যবসা। আবার গৃহিণী/গৃহস্থালীকে পেশা হিসেবে দেখানো প্রার্থীদের সাড়ে ১৯ শতাংশের আয় আসে ব্যবসা থেকে।

 

উপজেলা নির্বাচনের ১ম ধাপের প্রার্থীদের হলফনামা বিশ্লেষণ করে টিআইবি দেখিয়েছে, অস্থাবর সম্পদ বৃদ্ধির হারে সংসদ সদস্যদের পেছনে ফেলেছেন উপজেলা পরিষদের জনপ্রতিনিধিরা। ৫ বছরে সংসদ সদস্যদের অস্থাবর সম্পদ বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ ছিল তিন হাজার ৬৫ শতাংশ। সেখানে একটি উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের সম্পদ বেড়েছে ৪ হাজার ২০০ শতাংশের বেশি। একইভাবে, ৫ বছরে একজন চেয়ারম্যানের আয় বেড়েছে সর্বোচ্চ ৩ হাজার ৩১৯ শতাংশ, ১০ বছরে এই বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ ১৮ হাজার ২৩৩ শতাংশ। অস্থাবর সম্পদ বেড়েছে সর্বোচ্চ ৪ হাজার ২৫১ শতাংশ, স্ত্রী ও নির্ভরশীলদের সম্পদ বৃদ্ধির সর্বোচ্চ হার ১২ হাজার ৪০০ শতাংশ।