০৯:০৩ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৬ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

মায়ের পরলোকগমনে একা হয়ে গেলেন তারেক রহমান

বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক গভীর শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে। তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপির চেয়ারপারসন এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের প্রতীক খালেদা জিয়া ছিলেন শুধু একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান নন—তিনি ছিলেন একটি সময়, একটি আদর্শ এবং একটি সংগ্রামের নাম। সেই সঙ্গে তিনি ছিলেন তারেক রহমানের জীবনের সবচেয়ে কাছের মানুষ, সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য আশ্রয় ও রাজনৈতিক অভিভাবক। মায়ের পরলোকগমনে সেই আশ্রয় হারিয়ে আজ সত্যিকার অর্থেই একা হয়ে গেলেন তারেক রহমান।
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর পরিবার ও দলকে যেভাবে দৃঢ় হাতে আগলে রেখেছিলেন খালেদা জিয়া, তা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিরল দৃষ্টান্ত। কঠিন সেই সময় থেকেই তারেক রহমানকে তিনি ধীরে ধীরে রাজনীতির বাস্তবতায় প্রস্তুত করেন। মায়ের কাছ থেকেই তিনি শিখেছেন সংকটে স্থির থাকা, চাপের মুখে আপসহীন থাকা এবং জনগণের অধিকারকে রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রাখার শিক্ষা।
তারেক রহমানের রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়গুলোতে খালেদা জিয়া ছিলেন তার শক্তির প্রধান উৎস। গ্রেপ্তার, মামলা, নির্বাসন ও রাজনৈতিক নিপীড়নের দীর্ঘ সময়ে দূরে থেকেও তিনি জানতেন—‘মা আছেন’। সেই মানসিক নিশ্চয়তাই তাকে দল পুনর্গঠন, আন্দোলন পরিচালনা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলার সাহস দিয়েছে। অসুস্থ শরীর, কারাবাস ও চিকিৎসাবঞ্চনার মধ্যেও খালেদা জিয়ার অবিচল মনোবল ছিল তারেক রহমানের কাছে এক জীবন্ত প্রেরণার নাম।
আজ সেই মায়ের শূন্যতা তারেক রহমানের জীবনে শুধু পারিবারিক বেদনার বিষয় নয়, এটি এক গভীর রাজনৈতিক বাস্তবতাও। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে বিএনপির নেতৃত্ব, কর্মীদের প্রত্যাশা এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের দায় এখন তাকে বহন করতে হচ্ছে মায়ের সরাসরি উপস্থিতি ছাড়া। এমন এক সময়ে, যখন দেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে, তখন খালেদা জিয়ার অভিজ্ঞতা ও দিকনির্দেশনার অভাব আরও তীব্রভাবে অনুভূত হচ্ছে।
তবুও ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়—খালেদা জিয়ার উত্তরাধিকার শুধু স্মৃতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তাঁর ত্যাগ, সংগ্রাম ও আদর্শ বিএনপির রাজনীতির গভীরে প্রোথিত। সেই আদর্শের প্রধান বাহক এখন তারেক রহমান। শোকের এই ভারী মুহূর্তে তিনি একা হলেও, এই একাকিত্ব থেকেই জন্ম নিতে পারে নতুন দৃঢ়তা ও পরিণত নেতৃত্ব।
মায়ের দেখানো পথ অনুসরণ করেই তারেক রহমানকে সামনে এগোতে হবে—গণতন্ত্র, জনগণের অধিকার ও রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষার সংগ্রামে। বেগম খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতি পূরণ করা অসম্ভব, তবে তাঁর রেখে যাওয়া আদর্শ ও সংগ্রামের ইতিহাসই হয়তো তারেক রহমানের সবচেয়ে বড় শক্তি হয়ে উঠবে আগামী দিনের রাজনীতিতে।

শু/সবা

জনপ্রিয় সংবাদ

খালেদা জিয়ার মৃত্যুতে ভারতের কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর শোক

মায়ের পরলোকগমনে একা হয়ে গেলেন তারেক রহমান

আপডেট সময় : ০৪:২৯:০৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫

বেগম খালেদা জিয়ার ইন্তেকালের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতিতে এক গভীর শূন্যতার সৃষ্টি হয়েছে। তিনবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বিএনপির চেয়ারপারসন এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের প্রতীক খালেদা জিয়া ছিলেন শুধু একটি রাজনৈতিক দলের প্রধান নন—তিনি ছিলেন একটি সময়, একটি আদর্শ এবং একটি সংগ্রামের নাম। সেই সঙ্গে তিনি ছিলেন তারেক রহমানের জীবনের সবচেয়ে কাছের মানুষ, সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য আশ্রয় ও রাজনৈতিক অভিভাবক। মায়ের পরলোকগমনে সেই আশ্রয় হারিয়ে আজ সত্যিকার অর্থেই একা হয়ে গেলেন তারেক রহমান।
শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের মৃত্যুর পর পরিবার ও দলকে যেভাবে দৃঢ় হাতে আগলে রেখেছিলেন খালেদা জিয়া, তা বাংলাদেশের রাজনৈতিক ইতিহাসে বিরল দৃষ্টান্ত। কঠিন সেই সময় থেকেই তারেক রহমানকে তিনি ধীরে ধীরে রাজনীতির বাস্তবতায় প্রস্তুত করেন। মায়ের কাছ থেকেই তিনি শিখেছেন সংকটে স্থির থাকা, চাপের মুখে আপসহীন থাকা এবং জনগণের অধিকারকে রাজনীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রাখার শিক্ষা।
তারেক রহমানের রাজনৈতিক জীবনের সবচেয়ে কঠিন সময়গুলোতে খালেদা জিয়া ছিলেন তার শক্তির প্রধান উৎস। গ্রেপ্তার, মামলা, নির্বাসন ও রাজনৈতিক নিপীড়নের দীর্ঘ সময়ে দূরে থেকেও তিনি জানতেন—‘মা আছেন’। সেই মানসিক নিশ্চয়তাই তাকে দল পুনর্গঠন, আন্দোলন পরিচালনা এবং আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের গণতন্ত্রের পক্ষে কথা বলার সাহস দিয়েছে। অসুস্থ শরীর, কারাবাস ও চিকিৎসাবঞ্চনার মধ্যেও খালেদা জিয়ার অবিচল মনোবল ছিল তারেক রহমানের কাছে এক জীবন্ত প্রেরণার নাম।
আজ সেই মায়ের শূন্যতা তারেক রহমানের জীবনে শুধু পারিবারিক বেদনার বিষয় নয়, এটি এক গভীর রাজনৈতিক বাস্তবতাও। দলের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হিসেবে বিএনপির নেতৃত্ব, কর্মীদের প্রত্যাশা এবং গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনের দায় এখন তাকে বহন করতে হচ্ছে মায়ের সরাসরি উপস্থিতি ছাড়া। এমন এক সময়ে, যখন দেশ একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে, তখন খালেদা জিয়ার অভিজ্ঞতা ও দিকনির্দেশনার অভাব আরও তীব্রভাবে অনুভূত হচ্ছে।
তবুও ইতিহাস সাক্ষ্য দেয়—খালেদা জিয়ার উত্তরাধিকার শুধু স্মৃতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তাঁর ত্যাগ, সংগ্রাম ও আদর্শ বিএনপির রাজনীতির গভীরে প্রোথিত। সেই আদর্শের প্রধান বাহক এখন তারেক রহমান। শোকের এই ভারী মুহূর্তে তিনি একা হলেও, এই একাকিত্ব থেকেই জন্ম নিতে পারে নতুন দৃঢ়তা ও পরিণত নেতৃত্ব।
মায়ের দেখানো পথ অনুসরণ করেই তারেক রহমানকে সামনে এগোতে হবে—গণতন্ত্র, জনগণের অধিকার ও রাষ্ট্রীয় সার্বভৌমত্ব রক্ষার সংগ্রামে। বেগম খালেদা জিয়ার অনুপস্থিতি পূরণ করা অসম্ভব, তবে তাঁর রেখে যাওয়া আদর্শ ও সংগ্রামের ইতিহাসই হয়তো তারেক রহমানের সবচেয়ে বড় শক্তি হয়ে উঠবে আগামী দিনের রাজনীতিতে।

শু/সবা