০২:১৮ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৪ পৌষ ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

৩০৫ আসনে জয় পাবে বিজেপি : মার্কিন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী

➢লোকসভার আসনসংখ্যা ‘৪২০’ নম্বর কেন নেই?
➢ভোটে সবচেয়ে ধনী প্রার্থী চন্দ্র শেখর

এবারের নির্বাচনে বিজেপি ৩০৫টি আসনে জয় লাভ করবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ইয়ান ব্রেমার। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে ম্যাক্রো স্তরের ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তা রয়েছে। বিশ্বায়নের সঙ্গে যে সামঞ্জস্যতা প্রয়োজন তা সেখানে নেই। মার্কিন রাজনীতি এখন বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে আগের চেয়ে আরো বেশি সরব হয়েছে। এসময় তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও চীন সম্পর্ক এবং মার্কিন নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গত মঙ্গলবার ভারতীয় টিভি চ্যানেল এনডিটিভি’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব বলেন। মার্কিন ওই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইউরেশিয়া গ্রুপের একজন পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করছেন। তিনি ভারতীয় নির্বাচনকে বৈশ্বিক রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে স্থিতিশীল এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ মনে করেন। ভারত ছাড়া বিশ্বের সকল নির্বাচন সমস্যাযুক্ত বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। এমনকি নিজের দেশের নির্বাচন নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন ওই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী। ভারতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, রাজনৈতিকভাবে এখানের নির্বাচন অনেক গোছালো এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ। ভারত বৈশ্বিকভাবে নিজেদের ইতিবাচক রাজনৈতিক অবস্থান দাঁড় করিয়েছে। ভারতের রাজনীতি স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে বলেও মনে করেন ইয়ান ব্রেমার। তার কাছে এবারের নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি মনে করি এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ২৯৫ থেকে ৩১৫ আসনে জয় লাভ করবে।

 

লোকসভার আসনসংখ্যা ‘৪২০’ নম্বর কেন নেই?
ভারতের সংসদ ভবনের দুটি কক্ষ, রাজ্যসভা এবং লোকসভা। ভারতের লোকসভায় আসনসংখ্যা ৫৪৫টি হলেও নেই ৪২০ নম্বর আসনটি। এর পেছনে রয়েছে একটি অদ্ভুত কারণ। ভারতীয় দণ্ডবিধিতে কোনো প্রতারণা বা জালিয়াতি করলে ৪২০ ধারায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। তাই দেশটিতে এই সংখ্যাটি প্রতারণা বা জালিয়াতির প্রতীক বলে মনে করা হয়। আবার এই সংখ্যা কারো উদ্দেশে কটাক্ষ করেও ব্যবহার করে অনেকে। এখানেই বেধেছে বিপত্তি। লোকসভার সদস্যদের আপত্তির মুখেই ওই আসন নম্বরটি বাতিল করা হয়েছিল। তবে আসনটি বাতিলের প্রসঙ্গ উঠলেই আসামের ধুবড়ি লোকসভার সদস্য মাওলানা বদরুদ্দিন আজমলের নাম প্রথমেই চলে আসে। ১৫তম লোকসভায় সংসদে আসন বণ্টনের সময় আসাম ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (এইউডিএফ) প্রধান বদরুদ্দিন আজমলকে ৪২০-এর পরিবর্তে ৪১৯ নম্বর আসন দেওয়া হয়। তিনিই দেশটির প্রথম সংসদ সদস্য, যাকে ৪১৯ নম্বরে আসন দেওয়া হয়েছিল।

লোকসভার ৪২০ নম্বর আসনটি বরাদ্দ দেওয়ার পর বদরুদ্দিন আজমল লোকসভা সেক্রেটারিয়েটের কাছে নম্বরটি নিয়ে আপত্তি জানান। তারপর থেকে সেই সংখ্যার আসনটি বাতিল করা হয়। ১৪তম লোকসভা থেকে এই সংখ্যাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। আজমলই প্রথম লোকসভা সদস্য নন, তার আগেও অনেকে ৪২০ নম্বরটি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন।

 

ভোটে সবচেয়ে ধনী প্রার্থী চন্দ্র শেখর:
ভারতে চলমান লোকসভা নির্বাচন রাজনৈতিক লড়াইয়ের পাশাপাশি ভোটের মাঠে নজর কাড়ছে প্রার্থীদের সম্পত্তির পরিমাণ। এবারের নির্বাচনে মোট ৮৩৬০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রত্যেক দফাতেই একাধিক কোটিপতি প্রার্থী রয়েছেন। তবে চলমান লোকসভা নির্বাচনের ধনীতম প্রার্থী অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুর কেন্দ্রের ড. চন্দ্র শেখর পেম্মাসানি। তেলুগু দেশম পার্টির প্রার্থীর হাতে রয়েছে ৫৭০৫ কোটি টাকার সম্পত্তি। নির্বাচনী হলফনামা অনুযায়ী, স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে ৫৭৮৫ কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে প্রার্থীর হাতে। ব্যক্তিগতভাবে তার সম্পত্তির পরিমাণ ২৪৮৮ কোটি টাকা। তার স্ত্রীর মালিকানায় ২৩৪৩ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে এক হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে পেম্মাসানির সন্তানদেরও।

ধনীতম প্রার্থীদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন বিজেপির কোন্ডা বিশ্বেশ্বর রেড্ডি। তেলেঙ্গানার চেভেল্লা কেন্দ্রের প্রার্থী ছিলেন তিনি। তার মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৪৫৬৮ কোটি টাকা। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন দক্ষিণ গোয়ার বিজেপি প্রার্থী পল্লবী শ্রীনিবাস ডেম্পো। তার মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১৩৬১ কোটি। সদ্য কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া নবীন জিন্দল রয়েছেন ধনীতম প্রার্থীদের তালিকায় চতুর্থ স্থানে। কুরুক্ষেত্র কেন্দ্রের প্রার্থীর মোট সম্পত্তি ১২৪১ কোটি টাকা। এই তালিকার পঞ্চম স্থানে রয়েছেন কংগ্রেসের নকুল নাথ। ৭১৬ কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক লড়ছেন মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়া থেকে। নির্বাচনে একদিকে যেমন রয়েছেন আর্থিক হেভিওয়েট প্রার্থীরা, অন্যদিকে সম্বলহীন প্রার্থীরাও শামিল হয়েছেন রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। চতুর্থ দফার ভোটে ২৪ জন এমন প্রার্থী ছিলেন, যাদের হাতে কোনো সম্পত্তি নেই। ১০০ টাকারও কম সম্পদ নিয়েও ভোটের ময়দানে নেমেছেন অনেক প্রার্থী। আমজনতার রায় শেষ পর্যন্ত কাদের দিকে যায়, উত্তর মিলবে ৪ জুন।

জনপ্রিয় সংবাদ

৩০৫ আসনে জয় পাবে বিজেপি : মার্কিন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী

আপডেট সময় : ০৬:৪১:০৭ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৪ মে ২০২৪

➢লোকসভার আসনসংখ্যা ‘৪২০’ নম্বর কেন নেই?
➢ভোটে সবচেয়ে ধনী প্রার্থী চন্দ্র শেখর

এবারের নির্বাচনে বিজেপি ৩০৫টি আসনে জয় লাভ করবে বলে জানিয়েছেন মার্কিন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ইয়ান ব্রেমার। তিনি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রে ম্যাক্রো স্তরের ভূরাজনৈতিক অনিশ্চয়তা রয়েছে। বিশ্বায়নের সঙ্গে যে সামঞ্জস্যতা প্রয়োজন তা সেখানে নেই। মার্কিন রাজনীতি এখন বৈশ্বিক পরিস্থিতিতে আগের চেয়ে আরো বেশি সরব হয়েছে। এসময় তিনি যুক্তরাষ্ট্র ও চীন সম্পর্ক এবং মার্কিন নির্বাচন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। গত মঙ্গলবার ভারতীয় টিভি চ্যানেল এনডিটিভি’কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব বলেন। মার্কিন ওই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী গবেষণা প্রতিষ্ঠান ইউরেশিয়া গ্রুপের একজন পরামর্শদাতা হিসেবে কাজ করছেন। তিনি ভারতীয় নির্বাচনকে বৈশ্বিক রাজনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে স্থিতিশীল এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ মনে করেন। ভারত ছাড়া বিশ্বের সকল নির্বাচন সমস্যাযুক্ত বলেও মন্তব্য করেছেন তিনি। এমনকি নিজের দেশের নির্বাচন নিয়েও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন মার্কিন ওই রাষ্ট্রবিজ্ঞানী। ভারতীয় নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেছেন, রাজনৈতিকভাবে এখানের নির্বাচন অনেক গোছালো এবং সামঞ্জস্যপূর্ণ। ভারত বৈশ্বিকভাবে নিজেদের ইতিবাচক রাজনৈতিক অবস্থান দাঁড় করিয়েছে। ভারতের রাজনীতি স্থিতিশীল অবস্থায় রয়েছে বলেও মনে করেন ইয়ান ব্রেমার। তার কাছে এবারের নির্বাচনের ফলাফল নিয়ে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, আমি মনে করি এবারের লোকসভা নির্বাচনে বিজেপি ২৯৫ থেকে ৩১৫ আসনে জয় লাভ করবে।

 

লোকসভার আসনসংখ্যা ‘৪২০’ নম্বর কেন নেই?
ভারতের সংসদ ভবনের দুটি কক্ষ, রাজ্যসভা এবং লোকসভা। ভারতের লোকসভায় আসনসংখ্যা ৫৪৫টি হলেও নেই ৪২০ নম্বর আসনটি। এর পেছনে রয়েছে একটি অদ্ভুত কারণ। ভারতীয় দণ্ডবিধিতে কোনো প্রতারণা বা জালিয়াতি করলে ৪২০ ধারায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়। তাই দেশটিতে এই সংখ্যাটি প্রতারণা বা জালিয়াতির প্রতীক বলে মনে করা হয়। আবার এই সংখ্যা কারো উদ্দেশে কটাক্ষ করেও ব্যবহার করে অনেকে। এখানেই বেধেছে বিপত্তি। লোকসভার সদস্যদের আপত্তির মুখেই ওই আসন নম্বরটি বাতিল করা হয়েছিল। তবে আসনটি বাতিলের প্রসঙ্গ উঠলেই আসামের ধুবড়ি লোকসভার সদস্য মাওলানা বদরুদ্দিন আজমলের নাম প্রথমেই চলে আসে। ১৫তম লোকসভায় সংসদে আসন বণ্টনের সময় আসাম ইউনাইটেড ডেমোক্রেটিক ফ্রন্টের (এইউডিএফ) প্রধান বদরুদ্দিন আজমলকে ৪২০-এর পরিবর্তে ৪১৯ নম্বর আসন দেওয়া হয়। তিনিই দেশটির প্রথম সংসদ সদস্য, যাকে ৪১৯ নম্বরে আসন দেওয়া হয়েছিল।

লোকসভার ৪২০ নম্বর আসনটি বরাদ্দ দেওয়ার পর বদরুদ্দিন আজমল লোকসভা সেক্রেটারিয়েটের কাছে নম্বরটি নিয়ে আপত্তি জানান। তারপর থেকে সেই সংখ্যার আসনটি বাতিল করা হয়। ১৪তম লোকসভা থেকে এই সংখ্যাকে নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। আজমলই প্রথম লোকসভা সদস্য নন, তার আগেও অনেকে ৪২০ নম্বরটি নিয়ে আপত্তি জানিয়েছিলেন।

 

ভোটে সবচেয়ে ধনী প্রার্থী চন্দ্র শেখর:
ভারতে চলমান লোকসভা নির্বাচন রাজনৈতিক লড়াইয়ের পাশাপাশি ভোটের মাঠে নজর কাড়ছে প্রার্থীদের সম্পত্তির পরিমাণ। এবারের নির্বাচনে মোট ৮৩৬০ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। প্রত্যেক দফাতেই একাধিক কোটিপতি প্রার্থী রয়েছেন। তবে চলমান লোকসভা নির্বাচনের ধনীতম প্রার্থী অন্ধ্রপ্রদেশের গুন্টুর কেন্দ্রের ড. চন্দ্র শেখর পেম্মাসানি। তেলুগু দেশম পার্টির প্রার্থীর হাতে রয়েছে ৫৭০৫ কোটি টাকার সম্পত্তি। নির্বাচনী হলফনামা অনুযায়ী, স্থাবর-অস্থাবর মিলিয়ে ৫৭৮৫ কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে প্রার্থীর হাতে। ব্যক্তিগতভাবে তার সম্পত্তির পরিমাণ ২৪৮৮ কোটি টাকা। তার স্ত্রীর মালিকানায় ২৩৪৩ কোটি টাকা। সবমিলিয়ে এক হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি রয়েছে পেম্মাসানির সন্তানদেরও।

ধনীতম প্রার্থীদের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে রয়েছেন বিজেপির কোন্ডা বিশ্বেশ্বর রেড্ডি। তেলেঙ্গানার চেভেল্লা কেন্দ্রের প্রার্থী ছিলেন তিনি। তার মোট সম্পত্তির পরিমাণ ৪৫৬৮ কোটি টাকা। তৃতীয় স্থানে রয়েছেন দক্ষিণ গোয়ার বিজেপি প্রার্থী পল্লবী শ্রীনিবাস ডেম্পো। তার মোট সম্পত্তির পরিমাণ ১৩৬১ কোটি। সদ্য কংগ্রেস ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেওয়া নবীন জিন্দল রয়েছেন ধনীতম প্রার্থীদের তালিকায় চতুর্থ স্থানে। কুরুক্ষেত্র কেন্দ্রের প্রার্থীর মোট সম্পত্তি ১২৪১ কোটি টাকা। এই তালিকার পঞ্চম স্থানে রয়েছেন কংগ্রেসের নকুল নাথ। ৭১৬ কোটি টাকার সম্পত্তির মালিক লড়ছেন মধ্যপ্রদেশের ছিন্দওয়াড়া থেকে। নির্বাচনে একদিকে যেমন রয়েছেন আর্থিক হেভিওয়েট প্রার্থীরা, অন্যদিকে সম্বলহীন প্রার্থীরাও শামিল হয়েছেন রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতায়। চতুর্থ দফার ভোটে ২৪ জন এমন প্রার্থী ছিলেন, যাদের হাতে কোনো সম্পত্তি নেই। ১০০ টাকারও কম সম্পদ নিয়েও ভোটের ময়দানে নেমেছেন অনেক প্রার্থী। আমজনতার রায় শেষ পর্যন্ত কাদের দিকে যায়, উত্তর মিলবে ৪ জুন।