ইয়েমেনের দক্ষিণাঞ্চলীয় হাদরামাউত প্রদেশে বিমান হামলা চালিয়েছে সৌদি আরব—এমন অভিযোগ করেছে দেশটির বিচ্ছিন্নতাবাদী গোষ্ঠীগুলো। শুক্রবার ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি এ তথ্য জানিয়েছে।
বিচ্ছিন্নতাবাদীদের দাবি, সৌদি আরব তাদের সাম্প্রতিক দখল করা এলাকা ছেড়ে দিতে আহ্বান জানানোর একদিন পরই হাদরামাউতে তাদের অবস্থান লক্ষ্য করে বিমান হামলা চালানো হয়। তবে হামলায় তাৎক্ষণিকভাবে হতাহত বা ক্ষয়ক্ষতির কোনো তথ্য পাওয়া যায়নি।
ইয়েমেনের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সরকারের প্রধান সমর্থক দেশ সৌদি আরব। দীর্ঘদিন তুলনামূলক শান্ত থাকা ইয়েমেনে এই হামলার ঘটনায় নতুন করে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে।
ইয়েমেনের বিচ্ছিন্নতাবাদীদের ঘনিষ্ঠ সংবাদমাধ্যম অ্যাডেন ইন্ডিপেনডেন্ট সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে জানায়,
“হাদরামাউতের ওয়াদি নাহব এলাকায় হাদরামি এলিট ফোর্সেসের অবস্থানে সৌদি বিমান বাহিনী বোমা হামলা চালিয়েছে।”
আমিরাত-সমর্থিত সাউদার্ন ট্রানজিশনাল কাউন্সিল (এসটিসি) এএফপিকে জানিয়েছে, ওই এলাকায় সৌদি বাহিনী দুটি বিমান হামলা চালিয়েছে। তবে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোট এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে হামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেনি।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বৃহস্পতিবার ওই এলাকায় বিচ্ছিন্নতাবাদীদের সঙ্গে সৌদি আরবঘনিষ্ঠ এক উপজাতীয় নেতার সংঘর্ষ হয়। সংঘর্ষের পরই বিমান হামলা চালানো হয়। হাদরামাউতের এক সামরিক কর্মকর্তা এএফপিকে বলেন, সংঘর্ষের পর ওই উপজাতীয় নেতা এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন।
এর আগে সৌদি আরব বিচ্ছিন্নতাবাদীদের হাদরামাউত ও মাহরা প্রদেশ থেকে সরে যাওয়ার আহ্বান জানায়। চলতি মাসের শুরুতে এই দুই প্রদেশের নিয়ন্ত্রণ নেয় বিচ্ছিন্নতাবাদীরা।
বিচ্ছিন্নতাবাদীদের অগ্রযাত্রায় ইয়েমেনের সরকারকে সমর্থন দেওয়া সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের ওপর চাপ বেড়েছে। যদিও সাম্প্রতিক সংঘর্ষে ভিন্ন ভিন্ন পক্ষকে সমর্থন দিলেও দুই উপসাগরীয় মিত্র দেশ উত্তেজনা প্রশমনে ঐক্যবদ্ধ অবস্থান দেখানোর চেষ্টা করছে।
শুক্রবার সংযুক্ত আরব আমিরাত ইয়েমেনে নিরাপত্তা জোরদারে সৌদি আরবের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে। রিয়াদ জানিয়েছে, চলতি মাসের শুরুতে সৌদি-আমিরাতি সামরিক প্রতিনিধিদল অ্যাডেন সফর করে এসটিসিকে দখল করা এলাকা ফিরিয়ে দেওয়ার অনুরোধ জানায়। তবে এসটিসি সেই অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে।
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত সপ্তাহে সতর্ক করে বলেন, এসটিসির অগ্রযাত্রা ‘বৃহত্তর উত্তেজনা এবং আরও বিভাজনের’ ঝুঁকি তৈরি করছে। তিনি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধ ফের শুরু হলে তা আঞ্চলিক শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য ভয়াবহ হতে পারে বলে মন্তব্য করেন।
২০১৪ সালে ইরান-সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা রাজধানী সানা দখল করার পর থেকে ইয়েমেন কার্যত বিভক্ত হয়ে পড়ে। ২০১৫ সাল থেকে সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের সমর্থনে সরকার বাহিনীর সঙ্গে হুথিদের যুদ্ধ চলছে। এই সংঘাতে কয়েক লাখ মানুষ নিহত হয়েছে এবং দেশটিতে ভয়াবহ মানবিক সংকট তৈরি হয়েছে।
শু/সবা


























